The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 43
‘আপনাকে কতোটা ভালোবাসি বলতে পারবোনা।শুধু এতোটুকুই বলতে পারবো আপনার প্রত্যেকটা স্পর্শ ভালোবাসার ছোঁয়া গুলোর স্মৃতি বুকে নিয়ে সারাজীবন কাঁটিয়ে দিতে পারবো।আপনার সাথে কাঁটানো সেই রাতটা আবার ফিরে পেলে নিজ হাতে সব ঠিক করে দিতাম।আপনার সাথে ভালবাসাময় সময় গুলো কে আরো সুন্দরতম দিনে পরিনত করতে পারতাম।আপনার সাথে থাকতে আপনার কথা ভাবতে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে ভীষন ভালো লাগে।কিন্তু আপনাকে অমন অন্যমনষ্ক ভালো লাগেনা।আপনার মনযোগের পুরোটাই যে আমার চাই।আপনার ভালবাসার পুরোটুকুই আমার চাই।আপনি ঘৃনা করুন আর যাই করুন আপনার ঘৃনা গুলো নিয়ে আপনার সাথে সারাটিজীবন কাঁটিয়ে দিবো”কথা গুলো ভাবতে থাকা ইয়ারাবী তাকায় গাড়িতে পাশে বসা আরাভের দিকে।আরাভের সেদিকে খেয়াল নেই।ওর পুরো মনযোগ ডাক্তারের দিকে।
ডাক্তার ফারজানা আলম আরাভকে বললেন ও শারীরিক দিক থেকে খুব দূর্বল।কোন কিছু নিয়ে হয়ত খুব দুশ্চিন্তা করছে।এসময়ে নানারকম দুশ্চিন্তা থাকেই গর্ভস্থ বাচ্চাটাকে নিয়ে।পরিবারের উচিৎ এসময়ের মা টাকে সাপোর্ট করা বুঝতে পারছেন তো মিঃ আরাভ চৌধুরী।
ইয়েস বুঝতে পারছি।বলে উঠে আরাভ।ওর দিকে খেয়াল রাখবেন।ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করলে বাচ্চা মা দুজনেই সুস্থ থাকবে।আমি কিছু ভাইটামিনস আর ক্যালসিয়ামস লিখে দিচ্ছি নিয়মিত খেতে বলবেন।আর হ্যা প্রত্যেক মাসে একবার করে চেকআপ করিয়ে নিবেন।একনাগাড়ে কথা গুলো বলে চশমা চোখে জড়ালেন ফারজানা আলম।তারপর একটা পেজে কিছু লিখতে শুরু করেন।আরাভ চোখ মুখ শক্ত করে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।ইয়ারাবী মাথা নিচু করে নিলো।আরাভ ডাক্তারের সাথে কথা শেষ করে ইয়ারাবীর হাত ধরে বেরিয়ে পড়ে।মেয়েটার মুখটা শুকনো লাগছে।নিশ্চয় কিছু খায়নি।ইয়ারাবীকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-বাসা তো ঐদিকে এদিকে কই যাচ্ছেন?জিজ্ঞেস করে ইয়ারাবী।
-আরাভ নিশ্চুপ।
-পাপা টেনশন করবে।মলিন মুখে বলল ইয়ারাবী।
-হবু বরের সাথে আছে মেয়ে।এখানে টেনশনের কোন কারন থাকার কথা না আই থিংক।শক্ত মুখে বলে আরাভ।
-মাথা ঘুরাচ্ছে আমার বমি পাচ্ছে।মাথা দুই হাতে চেঁপে ধরে বলল ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
দ্রুত গাড়ি সাইড করে থামায় আরাভ।দরজা খুলে ইয়ারাবীকে বের করে একটা ঝোপের কাছে নিয়ে এসে বলল যা করার করো।
ইয়ারাবীর কানে আরাভের কোন কথাই ঢুকেনি।ভরভর করে বমি করে দিলো ও।পেটে খাবার নেই শুধু পানি আর চা বেরিয়েছে।চোখ বন্ধ করে শরীরের দূর্বলতাকে জানান দিলো ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীকে পানি দিলো কুলি করার জন্য ইয়ারাবী কুলি করে নিলো।বোতলের পানি শেষ।আরাভ ইয়ারাবীর হাত ধরে গাড়ির কাছে এনে পানির বোতল দিয়ে ইয়ারাবীর চিবুক ধরে পানি খাওয়ালো আরাভ।ইয়ারাবী এবার যেন একটু সুস্থতা বোধ করছে।মনে মনে আরাভকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়েছে।
আবারও যাত্রা শুরু হলো ওদের।আরাভ গাড়ি থামায় ধানমন্ডি স্টার কাবাবের সামনে।ইয়ারাবী কে নিয়ে দো তলায় উঠে এলো আরাভ।এক প্লেট খিচুড়ির অর্ডার করলো ইয়ারাবীর জন্য আর নিজের জন্য এক কাপ কফি।ইয়ারাবী খিচুড়ি গুলোকে দেখে নাক শিটকিয়ে মলিন চেহারা করে আরাভের দিকে তাকায়।আরাভ দাঁত মুখ খিচে বলল খেয়ে নাও।আমার বাচ্চা টা অনেকসময় পর্যন্ত উপাস আছে।ওর কিছু হলে তোমার খবর আছে।ইয়ারাবী কান্না করতে চেয়ে ও পারলোনা।গলা আটকে আসছে।কোনমতে কান্না চেঁপে খেয়ে নিলো।
আরাভ ইয়ারাবীর প্রেসক্রিপশনের মেডিসিন গুলো কিনে নিয়ে ইয়ারাবীকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।এভাবে আরাভ ওর আর ইয়ারাবীর সম্পর্কটাকে নরমাল দেখাতেই মাঝে মধ্যে ইয়ারাবী কে নিয়ে বেরিয়ে পড়তো।তবে হাসপাতাল পর্যন্তই যেতো আর কোথাও না।তবে মাঝে মধ্যে এটা ওটা খাওয়াতো।ঘরে ফিরে খাটের ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে ইয়ারাবী।পেটটায় কেমন যেন লাগছে।পেটের ওপর হাত রেখে চোখ বুজে নিলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কিরে শরীর খারাপ করছে?কিছুটা চিন্তিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে রুপন্তী।
-মায়ের ডাকে চোখ খুলে ইয়ারাবী।না মাম্মা এমনি উঠে বসে ইয়ারাবী।
-রুপন্তী মেয়ের দিকে একগ্লাস গরম দুধ ধরলো।আরাভ বলল তোর নাকি শরীর দূর্বল।তুই নাকি মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেছিলি।তাই খুব খেয়াল রাখতে বলেছে তোর।
-মায়ের কথায় ইয়ারাবী তাকায় রুপন্তীর দিকে।জি?
-হুম।ছেলেটা আসলেই ভালো।তোর খুব কেয়ার করবে ছেলেটা।আমি অনেক খুশি তোর জন্য ইয়ারাবী।আমার মেয়েটাকে বিয়ের আগেই যে এতো কেয়ার করে সে অবশ্যই বিয়ের পরে ও খুব যত্নে রাখবে।মেয়ের গালে চুমু খেলো রুপন্তী।
……মলিন হাসে ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
এদিকে আর্ভিন আরাবীর সাথে কোন প্রকারে যোগাযোগ করতে পারছেনা।যোগাযোগের সকল মাধ্যম বন্ধ করে রেখেছে আরাবী।আর্ভিন অফিসে গিয়ে ও আরাবীর দেখা পাচ্ছেনা।আরাবী কখন অফিসে আসে ও না এখন।খুব দরকারি কোন মিটিং হলে তবেই আসে।আবার কখন চলে যায় বুঝতে পারেনা আর্ভিন।আরাবী কেন এমন করছে? আরাবী ও তো আর্ভিনকে ভালোবাসে।আর্ভিনের ভীষন কষ্ট হয়।আরাবীর দেখা পাওয়া ছাড়া একটা মুহূর্ত ও কাঁটতে চায়না ওর।
আরো দু তিনদিন পার হয়ে গেলো।আরাবীর অফিসের রিসিপশনে এসে আর্ভিন জানতে পেলো আরাবী অফিসে এসেছে কোন একটা মিটিং এর জন্য।আর্ভিন বাহিরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে আরাবীর।
বিকেলে আরাবী অফিস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামতেই আর্ভিন আরাবীকে টেনে গাড়িতে এনে বসালো।
আরাবী নিজেকে রক্ষা করতে চাইছে কিন্তু আর্ভিনের সুঠাম দেহের কাছে ওর শক্তি ফিকে পড়ে যাচ্ছে।
আরাবীকে নিয়ে আর্ভিন নিজের একটা গার্ডেনে এলো।
অনেক ফুলের গাছ দিয়ে ভরে আছে জায়গাটা।আর্ভিন আরাবীর দু কাঁধ চেঁপে ধরে বলল কেন করছো এসব?তুৃমি জানো আমি তোমাকে ভালবাসি তুমি ইকরামকে কেন বিয়ে করছো?আর আমার সাথে কেন যোগাযোগ করছোনা?আরাবী আর্ভিনের হাত ছাড়িয়ে ওর গালে সজোরে চড় বসালো,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-দেখেছেন কাছের মানুষ থেকে দূরে থাকা কতোটা কষ্ট?আপনাকে জাস্ট এটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম যে আপনি আমার ভাইকে আমাদের কাছে থেকে দূরে রেখেছেন ১০ বছর শেষ হতে চলল।আমার,বাবাই মার কতোটা কষ্ট হচ্ছে সে সম্পর্কে কোন আইডিয়া নাই আপনার।আপনার ভুলের কারনে আমার ভাই শাস্তি পাচ্ছে?কেন পাবে?যে ভুলটা ও করেনি সেটার শাস্তি কেন পাবে?চিৎকার করে বলতে থাকে আরাবী।
-আর্ভিন অবাক।চোখে চেয়ে আছে আরাবীর দিকে।
-সেদিন বাবাকে না বললে জানতেই পারতাম না কাকে সাহায্য করছি আমরা।তাই এতো বড় নাটক করলাম আপনার সাথে?আর কখনো আমার সামনে আসবেননা।চিৎকার করে কথা গুলো বলে আর্ভিনকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায় আরাবী।
চলবে