The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 35
-প্রফেসর আপনার হার্টে পাঁচটা ব্লক ধরা পড়েছে।বলে উঠেন হার্ট স্পেশালিষ্ট সরোয়ার।
-রোয়েন থমকে গেলো সরোয়ারের কথায়।জি!!!!!
-জি।প্রফেসর আপনি ইমেডিয়েটলি রিং পরিয়ে ফেলেন।বলে উঠেন সরোয়ার।
-রোয়েন কিছুই বলতে পারছেনা।কিছু শুনতে ও পাচ্ছেনা।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
সরোয়ার রোয়েনের চেহারা দেখে বুঝতে পারলো ওর মনের অবস্থা।স্যার আপনি চিন্তা একদমই করবেননা।ভালো হয়ে যাবেন।আমি আসলে আমার না।রুহী আর আরাবীর কথা ভাবছি।আমার কিছু হয়ে গেলে ওদের কি হবে?বলে উঠে রোয়েন।স্যার স্ট্রেস নিবেন না।পারলে সামনের মাসেই ওপেন হার্ট সার্জারিটা করিয়ে নেন।রোয়েনের হাত ধরে বলল সরোয়ার।রোয়েন মাথা ঝাঁকিয়ে ঘরের জন্য বেরিয়ে পড়ে।দরজার সামনে রোয়েনকে দেখে মুচকি হাসে রুহী।রোয়েন মলিন হেসে ঘরে ঢুকতে নিলে রুহী পিছন থেকে রোয়েনের হাত টেনে ধরে বলল শুনো!!!
রোয়েন সামনে তাকিয়ে বলল, বলো। তোমার রিপোর্ট দিয়েছে না?কি এসেছে?জিজ্ঞেস করে রুহী।
রুহী আমার ফ্রেশ হতে হবে।তুমি কষ্ট করে গোসলের গরম পানি করে দাও।বলে সিড়ি বেয়ে উঠে চলে যায় রোয়েন।রুহী গিজারের সুইচ অন করে রুমে চলে এলো।ততক্ষনে রোয়েন ওয়াশরুমে চলে গেছে।রুহী মন খারাপ করে খাটে বসে কাপড় ভাজ করছে।ওয়াশরুম থেকে পানি পড়ার শব্দ ভেসে আসছে রুহীর কানে।কিছুক্ষন পর রোয়েন একটু দরজা খুলে বলল রুহী সাদা পাঞ্জাবী টা দাও তো বলে দরজা লাগিয়ে দেয় রোয়েন।রুহী আলমারি খুলে সাদা পাঞ্জাবীটা বের করতেই ওর পায়ের ওপর রোয়েনের হাসপাতালের একটা ফাইল এসে পড়লো।রুহী দুরুদুরু বুকে ফাইল উঠিয়ে খুলে পড়তে থাকে।
রুহী!!!!পাঞ্জাবীটা দাও!!!ভিতর থেকে চেঁচিয়ে উঠে রোয়েন।রুহী ফাইলটা আলমারিতে রেখে রোয়েনকে পাঞ্জাবী টা দিলো।ওয়াশরুম থেকে রোয়েন বলল রুহী এক কাপ কফি করে রেখো।হুম বলে রুহী বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো রোয়েন।গায়ে পাঞ্জাবী জড়িয়ে খাটের কাছে এসে কফি মগ পেলো।কফিতে চুমুক দিয়ে রোয়েন ওদের বিয়ের ছবিতে নজর দিলো।কি করে ২৭ টা বছর পার হয়ে গেলো বুঝতেই পারলোনা।ভালোবাসার সাতাশ টা বছর।রোয়েনের ঠোঁটের কোনে মলিন হাসি ফুঁটে উঠলো।রোয়েনের খেয়াল হলো রুহী নেই।কারন ও ঘরে আসলে রুহী অন্য দিকে যায়না প্রয়োজন ছাড়া।রোয়েনের ও ব্যাপারটা একদমই পছন্দ না।সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো রোয়েনের। ২৫ বছর আগের কথা যখন রোয়েনের চেম্বার ছিলো সেন্ট্রাল হসপিটালে একজন জুনিয়র সার্জন হিসেবে।রুমে এসে দেখলো ছোট্ট আরাবী আর আরাভ ফ্লোরে বসে খেলছে।রোয়েন ব্যাগ রেখে বাবুদের কোলে নিয়ে খাটে বসালো।আমার বাবারা কি করছিলো?
পা প প পা!!!!!!আধো মুখে বলল আরাভ আর আরাবী।রোয়েন দুজনকে বুকে জড়িয়ে ওদের মুখ চুমোতে ভরিয়ে দিতেই রুহী কোথা হতে যেন দৌড়ে এসে রোয়েনকে সরায়।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ঐ ঐ ঐ কি হচ্ছে কি এসব?চিৎকার করতে থাকে রুহী।তখন ৩মাসের প্রেগন্যান্ট রুহী।
-কি হলো কি আবার বাবুদের আদর করছিলাম ভ্রু কুঁচকে দাঁতে দাঁত চাঁপে রোয়েন।
-রাগ দেখাবিনা!!!মাত্র বাহির থেকে আসছিস।তোর গায়ে জীবানু আছে সেটা ওদের গায়ে যাবেনা?বেকুব লোক কোথাকার।চেঁচিয়ে উঠে রুহী।
-রুহী তুই তোকারি করছো কেন?ভালোমতো বললেই পারতা।আর এসব কি ওয়ার্ড ইউজ করো??ধমকে দেয় রোয়েন।
-চুপ একদম চুপ।ডাক্তার তুই বুঝিস না বাহির থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে বাচ্চাদের কাছে আসতে হয়।রেগে যায় রুহী।
-হুহ।ফ্রেশ হয়ে আসছি।রুমে এসে যেন তোমাকে পাই।বলে ওয়াশরুমে চলে যায় রোয়েন।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রুহী বাবুদের ঠিকমতো বসিয়ে খেয়াল করলো প্রেশার কুকারের শিস বাজছে।রুহী রুম থেকে বেরিয়ে যায়।রোয়েন বেরিয়ে রুহীকে না দেখে অনেক রেগে যায়।হঠাৎ চিৎকারে থমকে যায় রোয়েন।দৌড়ে সিড়ির কাছে এসে দেখলো রুহী ফ্লোরে পড়ে কাতরাচ্ছে।রক্তমাখা হাত দিয়ে রোয়েনকে ডাকছে।পুরো ফ্লোর রক্তে মেখে আছে।রোয়েন ঘোর লাগার মতো দৌড়ে রুহীর কাছে বসে পড়লো।রুহীর মাথা নিজের কোলে রাখে রোয়েন।
আ’ম সরি রোয়েন আমাদের ভালোবাসাটাকে রাখতে পারিনি!!! কেঁদে কেঁদে বলছিলো রুহী।রুহী কিছু হবেনা তোমার অশ্রুসজল চোখে বলল রোয়েন।রোয়েন বেবিদের বেবি কারে বসিয়ে রুহীকে জলদি হাসপাতালে নিয়ে এলো।ওদের বাচ্চাটা আর নেই।আর রুহী ও কখনো মা হতে পারবেনা।সেদিন রুহীকে বলেছিলো যেই হয়ে যাক আমি ঘরে আসলে রুম থেকে বের হবানা।চোখজোড়া ভরে আসে রোয়েনের।দিনটা যেন স্পষ্ট হয়ে ওর চোখের সামনে ভেসে উঠেছে।রুহী!!!!কই গেলো ও।রোয়েন কফি রেখে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে।পুরো ঘরের কোথা ও রুহীকে না পেয়ে রোয়েন চিৎকার করে ডেকে উঠে রুহী!!!!!রুহী ছাদের সিড়ি বেয়ে নামছে।মলিন মুখ ওর।রোয়েন দৌড়ে রুহীর কাছে গিয়ে ওর গালে সজোরে চড় বসালো।রুহী স্বাভাবিক যেন কিছুই হয়নি।রুহীর দুকাঁধ চেঁপে ধরে রোয়েন বলল রুমে ছিলানা কেন?রুহী চুপ।ওর একচোখের কোনায় পানি জমে আছে।চেহারা দেখে মনে হলো খুব কেঁদেছে।রুহী কি হলো কিছু বলো।বলেছিলাম না আমি ঘরে আসলে রুমে থাকতে তোমাকে।রুহী রোয়েনের দিকে তাকায় তারপর বলল কেন বলোনি আমাকে?কি বলিনি আমি?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।রুহী আচমকা রোয়েনের বুকে পড়ে কাঁদতে লাগে পাগলের মতো।
আরাভ ঘুম থেকে উঠে মুখে প্রশান্তির হাসি ওর।বিছানা খালি পেয়ে উঠে বসে।বাথরুমের দরজা ও খোলা।আরাভ গায়ে কাপড় জড়িয়ে নিচে নামে।ঘরের কোথাও ইয়ারাবীকে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায় আরাভ।রুমে এসে দেখলো বেড সাইড টেবিলের ওপর একটা কাগজ গ্লাস দিয়ে আটকানো।আরাভ কাগজ হাতে নিয়ে দেখলো ইয়ারাবীর একটা চিরকুট,
আরাভ আপনাকে খুব বিশ্বাস করতাম।বাবার মতো আপনার কাছে ও খুব সিকিউর ফিল করতাম।কিন্তু কাল রাতের পর থেকে আপনার ওপর থেকে সমস্ত বিশ্বাস উঠে গেছে।ঘৃনা করি আপনাকে।আর কখনো আমার সাথে কথা বলবেননা।মনে করবেন আজকের পর থেকে আপনার জন্য মারা গেছি।চিঠিটা পড়ে আরাভ ভীষন রেগে চিঠিটা ছিড়ে কুঁটি কুঁটি করলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রিসোর্টে ফিরে এলো আরাবী আর আর্ভিন।আর্ভিন দুটো কোকের বোতল নিয়ে এলো।দুইটাই খুব ঠান্ডা।আরাবী আর আর্ভিন দুজন দুই গ্লাস কোক নিয়ে বারান্দায় বসে পড়লো।আর্ভিন আরাবীর দিকে তাকায় কোক খাওয়ার মাঝেই।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-আরাবী!!ডেকে উঠে আর্ভিন।
-হুম।তারা দেখায় মগ্ন আরাবী বলে উঠে।
-কালকের দিনটা ও থাকবো ভাবছি।বলে উঠে আর্ভিন।
-হেসে উঠে আরাবী পাগল!!!!
-পাগলের কি হলো?কালকের দিন থেকে পরদিন
বিকালেই ঢাকা।
-আরাবী নিশ্চুপ দৃষ্টিতে আর্ভিনের দিকে চেয়ে রইলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
পরদিন ইনানী বিচের জন্য রওনা হয় ওরা।আজ থাকছে বলে ইনানী বিচে যাবে।আজ আরাবী শাড়ী পরেছে আকাশী রং এর।আর আর্ভিন সাদা রং এর পাঞ্জাবী।পানিতে নামবেনা ওরা।ইনানী বিচে কিছু সময় কাঁটিয়ে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে ওরা।আর্ভিন নিচ থেকে হালকা পাতলা নাস্তা নিয়ে এলো।ততক্ষনে আরাবী গোসল সেড়ে কালো স্যালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে।নাস্তা সেড়ে আর্ভিন বেরিয়ে পড়লো।আরাবীর চোখ লেগে এসেছে।বারোটায় ঘুম ভাঙ্গে আরাবীর।আর্ভিন এখনো ঘরে পৌছায়নি।আরাবী আর্ভিনের নম্বরে কল দিলো।ফোন অফ আসছে।আরাবী ভাবছে আর্ভিন কই যেতে পারে।ঠিক তখনই দরজায় নক পড়ে।আরাবী যেয়ে দরজা খুলল। রুম সার্ভিসের একটা ছেলে এসেছে।আরাবীর হাতে ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো ছেলেটা।আরাবী ব্যাগ নিয়ে ভিতরে চলে এলো।ব্যাগের ভিতর থেকে একটা কালো শাড়ী পেলো আরাবী আর একটা চিরকুট।সেখানে লিখা “শাড়ীটা পরে লক্ষী মেয়ের মতো বিচ সাইডে চলে এসো।অপেক্ষায় আছি।আজ একসাথে সমুদ্রের কিনারায় হাঁটার ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছে পরী”
চলবে