The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 34

পরদিন সকাল ছয়টায় সেন্টমার্টিন যাওয়ার বাস পৌছিয়ে গেলো আরাবী আর্ভিনের রিসোর্ট।এই রিসোর্টে বসবাসকারী অনেকেই যাচ্ছেন সেন্টমার্টিন।আরাবী আর আর্ভিন প্রস্তুত হয়ে নিচে নেমে এলো বাস ধরার জন্য।আরাবী আজ হালকা হলুদ রংয়ের একটা গাউন পরেছে।অতোটা গর্জিয়াস না হলে ও আরাবীকে বেশ মানিয়েছে গাউনটা। আর্ভিন সাদা শার্ট পরেছে। শার্টের হাতা গুলো কুনুই পর্যন্ত ফোল্ড করে রেখেছে আর সাথে ব্লাক ডেনিম প্যান্ট।বাসে নিজেদের বরাদ্দকৃত জায়গায় বসে পড়লো ওরা।প্রায় বাস ভরে গেছে রিসোর্টের অতিথিদের দিয়ে।বাস চলছে।বাসের ভিতর ভিডিও গান চলছে ক্যাটরিনা কাইফের।আর্ভিন মুচকি হেসে গান দেখছে।আরাবী আর্ভিনের দিকে রাগ মাখা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে।আর্ভিন দুষ্টুমির হাসি দিয়ে ক্যাটরিনাকে দেখছে।ক্যাটরিনার টপস টা এতোই ছোট যে ওর পেটের বেশির ভাগ অংশ দৃশ্যমান।আর্ভিন আরাবীর তাকানোয় খুব মজা পেয়ে বলল,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-ইসস কি ফিগার ক্যাটের।কোন মেদ নেই।খুব আকর্ষনীয় তাইনা আরাবী?আরাবীর দিকে তাকায় আর্ভিন।
-হুম।আসলেই খুব আকর্ষনীয়।বেশ নরমালি বলল আরাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আর্ভিন হেসে জানালার বাহিরে তাকায়।সকাল আটটায় গাড়িতেই ওদের নাস্তা দেয়া হয়।নাস্তায় ছিলো দুটো পরটা আর এগ অমলেট আর একটা ফ্রুটিকা।আরাবী আর্ভিন গল্প করে জার্নিটা কাঁটিয়ে দিলো।টাকা অনুযায়ী খাবারটা ভালো মানের ছিলোনা।বাসের কোন যাত্রীই নাস্তাটা করে সন্তুষ্টিই পেলোনা।দীর্ঘ জার্নির পর ওরা পৌছে গেলো সেন্টমার্টিন।সেখানকার ব্লু মারিন রিসোর্টে চলে এলো ওরা।সেখানে অতিথিরা ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিবে।আরাবী আর্ভিন একটা রুমে চলে এলো।আর্ভিন ফ্রেশ হতে গেছে।আরাবী খাটে শুয়ে ফোন চালাচ্ছে।আর্ভিন বেরিয়ে এসে আরাবীকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য বলল।আরাবী হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আরেকটু সেজে নিলো।একটু পর ওদের বীচে নেয়া হবে।হোটেল রুমে আধঘন্টা থাকার পর ওরা বেরুলো বীচে যাওয়ার জন্য।বীচে যাওয়ার সময় ওদের বলা হলো ফ্ল্যাট স্যান্ডেল সাথে নিতে।কারন সেখানে উঁচু হিল ওয়ালা জুতা পরা যাবেনা।আরাবী আর্ভিন ওদের স্যান্ডেল নিয়ে নিলো।সেখানে গিয়ে ওরা খেয়াল করলো শামুক ঝিনুক জমে বড় বড় পাথর তৈরি হয়েছে।সেখানে খালি পায়ে হাঁটলে পা কেঁটে যাবে।আরাবী পাথর দিয়ে হাঁটার সময় আর্ভিনের হাত শক্ত করে ধরে।সেখানে ওরা সমুদ্রের সামনে থামলো।সমুদ্রটাকে কতোটা সুন্দর লাগছে তা হয়ত বলে বুঝানো যাবেনা।আর্ভিন আরাবীর দিকে তাকায়।এভাবে যদি সারাজীবন এখানে কাঁটিয়ে দিতে পারতো ওরা।
আর্ভিন ভাবছে বিয়ের পর ওরা সমুদ্রের কাছে বাড়ি বানিয়ে সেখানে থাকবে।সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আর ভালোবাসাময় দাম্পত্য জীবন ভাবতেই মনটা বেশ ভালো হয়ে যায় আর্ভিনের।আরাবীর হাত ধরে অন্যমনষ্ক হয়ে যায় আর্ভিন।আরাবী একটু হেসে সমুদ্র দেখতে থাকে।দুজনে অনেক গুলো কাপল ছবি তুলল।দুপুরের লাঞ্চের জন্য ওদের হোটেলে নিয়ে আসা হলো।সেখানে ছিলো তিন চার আইটেমের ভর্তা,নাম না জানা সামুদ্রিক মাছ ভাজি,ডাল,সবজি আর ভাত।খাওয়ার সময় একটা লোক চেঁচিয়ে উঠলো।সে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলল,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-এখানকার দায়িত্বে কে আছে?
-একজন যুবক বয়সী ওয়েটার এলো।আমি আছি স্যার।
-তোরা বা* ফালাছ।কি খাবার দিছোস এগুলো?টাকা তো ঠিকই নিছোস ভরি ভরি আর ভাতে তেলাপোকার পা থাকে কেন?কু**বাচ্চারা এখানে আসাটাই ভুল হুলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
হঠাৎ আরাবী বমি করে নিজের জামা আর আর্ভিনের জামা ভরিয়ে দিলো।তেলাপোকার কথায় বেচারীর গা গুলিয়ে এসেছে।ওর বমিতে সামনের ছোট্ট মেয়েটি ও ভাতের প্লেটে বমি করিয়ে দিলো।তা দেখে তিন চারটি ছেলে হাসতে শুরু করেছে।ওয়েটারটি হাসতেই সেই লোক মারতে গেলো ওয়েটারকে।আর্ভিন চটজলদি আরাবীকে নিয়ে রুমে এলো।আরাবীকে খাটে বসিয়ে ওর জামা পরিষ্কার করতে শুরু করলো।আরাবী পলক হীন ভাবে আর্ভিন কে দেখছে।আর্ভিনের চেহারায় বিন্দু মাত্র অস্বস্তি নেই।তোমার খারাপ লাগছেনা আর্ভিন?জিজ্ঞেস করে আরাবী।
উহুম কেন বলতো?জিজ্ঞেস করে আর্ভিন।
এই যে আমার বমি পরিস্কার করছো।তোমার খারাপ লাগছেনা?জিজ্ঞেস করে আরাবী।
উহুম।যখন আমার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট হবে তখন ওর ও বমি হবে।তখন তো আমাকেই এসব করতে হবে তাইনা?তাই মনে করো এটা প্র্যাকটিস।হেসে বলল আর্ভিন।
তাও আবার আমাকে দিয়ে প্র্যাকটিস করছো?বলে উঠে আরাবী।
তুমি কিছু বুঝোনা আরাবী।আমাকে বুঝোনা তুমি।তুমি বুঝোনা কতোটা ভালোবাসি তোমায়।না বুঝলে আমার বুলেট তোমাকে বুঝাবে আমার ভালোবাসা।বেশ রেগে কথা গুলো বলে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায় আর্ভিন।আরাবী হেসে দিলো।লোকটা আস্ত পাগল।রুহী স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে।ওর মুখে চিন্তার ছাপ ফু্টে উঠেছে।বেশ কয়েকদিন লোকটাকে খুব অসুস্থ লাগছে।খুব জলদি ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, সারারাত বিছানায় এপাশ ওপাশ করা,মাঝে মাঝে মনে হয় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় ওর।লোকটার খারাপ বিষয় নিজের কষ্ট কখনোই মুখ ফুঁটে বলেনা রুহীকে।রোয়েনের বুকে মাথা রাখে রুহী।হৃদয় স্পন্দনটা যেন খুব দ্রুত হচ্ছে।রোয়েন বলল রুহী মাথা রেখোনা বুকে।কেমন জানি লাগছে আমার।এপ্রথম রোয়েনের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয় রুহী।যে মানুষটা সবসময় বুকে নিয়ে ঘুমায় আজ সে বলছে মাথা রাখতে না।ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগেনি রুহীর।অবাক দৃষ্টিতে রোয়েনের দিকে তাকায় রুহী।রোয়েনের কপাল ঘামছে।পুরো শরীর ঘেমে শেষ।রুহী লাইট জ্বালিয়ে রোয়েনের দিকে তাকায়।আমার বুক এতো কাঁপছে কেন রুহী?অস্বাভাবিক রকমের লাফাচ্ছে হার্টটা।রুহী দৌড়ে কাপড় ভিজিয়ে রোয়েনের শরীর মুছিয়ে দিলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-একয়দিন ধরে তোমাকে এমন দেখছি রোয়েন।কি হলো তোমার?জিজ্ঞেস করে রুহী।
-জানিনা।আজ হাসপাতালে ও বুক ধড়ফড় করছিলো।মাথা ঘুরাচ্ছিলো।চোখ বন্ধ করে বলল রোয়েন।
-তুমি কালকেই ডাক্তার দেখাবে।কোন কথা শুনবো না তোমার।জোর দিয়ে বলল রুহী।
-দেখা যাবে।বলল রোয়েন।
-দেখা যাবেনা রোয়েন দেখাতেই হবে।বলে উঠে রুহী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
সকাল নয়টায় ঘুম ভাঙ্গে ইয়ারাবীর।চারপাশে তাকায় ও।কই আছে ও?অচেনা পরিবেশ।সব কিছুই কেমন অচেনা লাগছে।হঠাৎ পাশে তাকাতেই শরীর লোম খাড়া হয়ে যায় ইয়ারাবীর।ও আরাভের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে।দুজনের শরীর সাদা চাদরে ঢাকা।ইয়ারাবীর গায়ে কাপড়ের ছিঁটেফোঁটা ও নেই।মাথা ঘুরাতে শুরু করলো ইয়ারাবীর।কাল কি হয়েছিলো? ও এখানে কেন?ওর এ অবস্থা কেন।খাটের পাশে ওদের জামা পরে আছে।কিছু ভাবতে পারছেনা ইয়ারাবী।ওর চারপাশ ঘুরছে।আরাভের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে কেঁদে দেয় ইয়ারাবী।খুব ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।নাকে মুখে কাপড় পাল্টে বেরিয়ে যায় ইয়ারাবী।সারা রাস্তায় পাথর হয়ে ছিলো ইয়ারাবী।এটা কি হয়ে গেলো ওর সাথে?এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলোনা।লোকটার কাছে এতোটা সিকিউর ফিল করতো আর তার সাথে এ অবস্থায় নিজেকে পাবে বলে ভাবতেই পারেনি ইয়ারাবী।কাল রাতে কি হয়েছিলো কিছুই মনে নেই ওর।কাপল ড্যান্সের পর সব ধোঁয়াশা।মাথা ভার হয়ে আছে ইয়ারাবীর। চোখ জোড়া ভরে আসতে চাইছে।ঘরে পৌছুতেই রুপন্তী রেহান মেয়ের কাছে এলো।কিরে মা কল দিতি আমি নিতে যেতাম।বলে উঠে রেহান।ইয়ারাবী বাবার দিকে তাকায়।বাবা মা তো ওকে খুব বিশ্বাস করে বলেই যেখানে চায় যেতে দেয়।ওনাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেনি ও।কোন মতে নিজেকে সামলে নিলো ইয়ারাবী।আসলে বাবা আদিতির গাড়ি পৌছে দিয়ে গেলো।হুম কাল আদিতি কল করেছিলো আমাকে।বলে উঠে রুপন্তী।আচ্ছা পাপা আমি রুমে।যেয়ে চেঞ্জ করে আসি।বলে দৌড়ে রুমে চলে এলো ইয়ারাবী। ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে চিৎকার করে কেঁদে দিলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রোয়েন আর রুহী দুজনে প্রফেসর সরোয়ারের সামনে বসে আছে।ওনি একজন হার্ট স্পেশালিষ্ট। রোয়েনকে প্রায় জোর করেই নিয়ে এসেছে রুহী।প্রফেসর সরোয়ার ও ভীষন ব্যাস্ত ছিলেন। আজ ওনি হাসপাতালেই আসতেন না।কিন্তু রোয়েনের কথা শুনে রাজি হয়ে গেলেন।
রোয়েন আর রুহীর সব কথা মনযোগ সহকারে শুনলেন সরোয়ার।সব শুনে প্রেসক্রিপশন লিখতে বসলেন।কয়েকটা টেস্ট দিলাম। সেগুলো করিয়ে পরশু আমার চেম্বারে আসবেন।পরশুদিন রাতে আমার ফ্লাইট আছে।সকালে আসবেন।
ঠিক আছে।বলে রোয়েন আর রুহী উঠে বেরিয়ে পড়লো।
চলবে