The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 32
সময় গুলো বেশ যাচ্ছে আরাবীর আর্ভিনের সংস্পর্শে।প্রত্যেকটা মুহূর্ত কে রাঙ্গিয়ে তু্লে ভালোবাসার রং এ।কাজের ফাঁকে আরাবীর অফিসে চলে যায় আর্ভিন।আড্ডায় মেতে উঠে দুজনে।অবসরে অফিসের ক্যাফিটেরিয়ায় চলে যায় ওরা। সেখানে একসাথে দুকাপ কফি আর সাথে মিষ্টি দুএকটা কথা না বললেই নয়।আরাবী আর্ভিনের প্রত্যেকটা জিনিসের বেশ খেয়াল রাখছে।দুজন দুজনের মিটিং অফিশিয়াল পার্টি গুলোর রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করছে।আর্ভিন কোনদিন কি পরবে সেটার সিলেকশন ও আরাবীই করতো।দুজনের মাঝে মিঃ মিস ভাবটা ও কেঁটে তুমিত্বটা জায়গা করে নিয়েছে।একেঅপরকে তুমি করে বলতেই স্বস্তি পায়।
সেদিন অফিস শেষে আর্ভিনের পাশে বসলো আরাবী।তারপর মুখে ক্লান্তি ভাব এনে বলল কোথা ও যাওয়া হয়না।জীবনটা যান্ত্রিক হয়ে গেছে।শুধু কাজ আর কাজ।আর্ভিন আরাবীর হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল চলো।
আরাবী বেশ অবাক হয় কই যাবো?চলো তো গেলেই দেখবা।বলে উঠে আর্ভিন।আরাবী ভাবছিলো হয়ত কাছে কোথা ও যাবে।আরাবী উঠে পড়ে আর্ভিনের সাথে।আর্ভিন আরাবীকে নিয়ে বেরিয়ে এসে গাড়ির কাছে দাঁড়ালো।আরাবী একটা কাজ আঙ্কেল আন্টিকে বলো আজ রাত বাসায় যাচ্ছোনা।অফিশিয়াল ট্যুরে কক্সবাজারে যাচ্ছো তুমি।কেয়ারলেস ভাবে বলল আর্ভিন।পাগল তুমি?কক্সবাজার!!!!কখনোনা।এতো বড় মিথ্যা বলতে পারবোনা।কাছে কোথা ও গেলে যাবো।সিরিয়াস মুডে বলল আরাবী।চুপচাপ কল দাও আরাবী।নাহলে ওনারা টেনশন করবেন।না আর্ভিন আমি পারবোনা।বলে উঠে আরাবী।আর্ভিন আরাবীর ফোন নিয়ে রোয়েনের নম্বরে কল দিলো।তারপর আরাবীর দিকে ফোন দিয়ে বলল নাও কথা বলো।আর্ভিন!!! ফিসফিসিয়ে বলল আরাবী।আরাবী ভয় পাচ্ছো কেন?বাসর করতে যাচ্ছিনা আমরা।সো প্লিজ রিল্যাক্স।ধীরে বলল আর্ভিন।বাসরের কথায় লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে কানে ফোন রাখলো আরাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-হ্যালো অপরপাশ থেকে বলল রোয়েন।
-জি বাবাই।ভালো আছো?জিজ্ঞেস করে আরাবী।
-হ্যারে মা।তুই কেমন আছিস?একটু অবাক হয়ে বলল রোয়েন।
-এই তো বাবাই।লাঞ্চ করেছো?জিজ্ঞেস করে আরাবী।
-সেটা তো অনেক আগেই।তাড়াতাড়ি বল কি বলবি?পেশেন্ট বসে আছে।তাড়াহুড়া করে বলল রোয়েন।
-বাবাই অফিশিয়াল মিটিং আছে কক্সবাজারে।আমাকে যেতে হবে।আজ রাত আসবোনা।মনে হয় তিনদিন থাকতে হতে পারে।আর্ভিনের দিকে মুচকি হেসে বলল আরাবী।
-ওকে মা।তো কখন বের হবি?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-এক্ষুনি বের হবো।
-ওকে মা।সাবধানে যাস ঠিক আছে?
-ওকে বাবাই।ফোন কেঁটে গেলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাবীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো আর্ভিন।কথা হয়েছে সেখানে যেয়ে মার্কেটিং করে নিবে।এখন বাসায় গেলে দেরি হয়ে যেতো।আর্ভিন ড্রাইভ করছে আর আরাবী পাশে বসে আর্ভিনের সাথে গল্প করছে।ইদানীং বৃষ্টির কারনে পরিবেশটা বেশ ঠান্ডা লাগছে।তারওপর আবার গাড়িতে এসি চলছে।আরাবী দুহাতের বাহুতে হাত ঘষছে।আর্ভিন পিছনের সিট থেকে একটা কম্বল বের করে আরাবীর দিকে ধরলো।মুচকি হেসে কম্বলটা গায়ে জড়ালো আরাবী।আর্ভিন বলল এখন ঠিক আছো?
আরাবী হুম বলে আর্ভিনের হাতের ওপর হাত রাখলো।আর্ভিন আরাবীর হাত চেঁপে ধরে অপর হাতে ড্রাইভ করছে।কিছুক্ষনের মাঝেই রাস্তা ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায়।সামনের রাস্তা ভালো না।আর্ভিন স্টিয়ারিং ছেড়ে হেলান দিয়ে বসলো।কারে কক্সবাজার যাওয়াটা গুড আইডিয়া নয় আর্ভিন।বলে উঠে আরাবী।ইটস আ রোমান্টিক আইডিয়া।নেশাজড়ানো কন্ঠে কথাটা বলে আরাবীর দিকে তাকায় আর্ভিন।আরাবী হেসে মাথা নোয়ালো।রাত বাড়তেই শীত বাড়তে লাগলো।আর্ভিন আর আরাবী পিছের সিটে বসে আছে।একে অপরের ছোঁয়ায় শিহরিত হচ্ছে।আর্ভিন আরাবীর একটু কাছে ঘেঁষে ওর চুলে মুখ ডুবায়।বুকটা কেঁপে উঠে আরাবীর।সরে আসতে চায় ও।আর্ভিন কি করছো?কাঁপা গলায় বলল আরাবী।আর্ভিন আরাবীর ঠোঁটে হাত রাখলো।আরাবীর গলায় নাক দিয়ে ঘষা দিতেই শিউরে উঠে আর্ভিনের কাঁধ খামচে ধরলো আরাবী।আর্ভিনের গরম নিশ্বাস আরাবীর কাঁধে পড়তেই ভেতরের সব ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে আরাবীর।আর্ভিন মুখ বাড়িয়ে আরাবীর গলায় ঠোঁট রেখে সামনের চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিলো।আরাভের রুমের দরজা খোলাই ছিলো।আরাভ ভিতরে বসে ভিডিও কলে মিটিং করছিলো।অর্পন আরাভের পাশে বসে ফোনটা আরাভের পাশে রাখলো।তারপর বলল ভাই আই থিংক এখন এসব বন্ধ করা উচিৎ।ল্যাপটপ অফ করে অর্পনের দিকে তাকায় আরাভ কি বন্ধ করা উচিৎ?এই যে ভাবিকে জেলাস ফিল করানো।আরাভের চোখের সামনে ভেসে উঠে ইয়ারাবীর অশ্রুসজল চোখজোড়া।
আরাভ কিছু না বলে উঠে কারোর সাথে ফোনে কথা বলায় লেগে যায়।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাবীর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে ব্যাস্ত থাকা আর্ভিন একসময় ক্লান্ত হয়ে আরাবীর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়।আর্ভিনকে ঠিকমতো বসিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসলো আরাবী।ড্রাইভিং করতে শুরু করলো ও।
সকাল ভোরে ঘুম ভাঙ্গে আর্ভিনের।চোখ খুলে গ্রাম্য বাজার দেখতে পায় ও।চোখজোড়া ডলে আরাবীকে জিজ্ঞেস করলো কই আছি আমরা?আরাবী হেসে বলল চিটাগাং। ওহ বোতলের পানিতে মুখ ধুয়ে নিলো আর্ভিন।দুজনেরই ভীষন ক্ষিদে পেয়েছে।লোকাল একটা হোটেলে নেমে গেলো ওরা।ভাত, রুপচাঁদা মাছ ভাজি, মুগ ডাল, শুটকি ভর্তা আলু ভতা, গোল বেগুন ভাজি আর একটা সবজি নিলো।গরু মাংস ও নিলো আর্ভিনের জোড়াজুড়িতে।একজন ও কখনো এমন হোটেলে খায়নি।তবে এতোটা সুস্বাদু হবে ভাবতেই পারেনি ওরা।অনেক খেলো ওরা একদম পেট পুড়ে।আর্ভিন উঠে দাঁড়িয়ে বড় ঢেকুর তুলল।ছিহ খচ্চর লোক একটা।দামড়ার মতো খাবে আবার ঢেকুর ও তুলে।ইসস।নাক শিটকে বলল আরাবী।আর্ভিন হেসে বলল একটু ডেজার্ট হলে মন্দ হয়না।রাক্ষস লোক।নাও খাও জন্মের মতো খাও।আর্ভিন দুজনের জন্য দই নিলো।আরাবী প্রথমে না করলে ও ঠিকই রাজি হলো খেতে।দুজনেই খাওয়ার সময় চোখ বুজে বলল উমমম।
আবার ও গাড়িতে এসে বসলো ওরা।আর্ভিন ড্রাইভ করছে।আরাবী গাড়িতে হেলান দিয়ে চোখ বুজে আছে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কি হলো পরী ঘুম পাচ্ছে বুঝি?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।
-হুম একটু একটু।ঘুমন্ত গলায় বলল আরাবী।
-আর্ভিন আরাবীকে টেনে ওর কাঁধে আরাবীর মাথা রাখলো।আরাবী ঘুমিয়ে গেলো।আর্ভিন ড্রাইভিং এর ফাঁকে আরাবীকে দেখছে।এ দেখার যেন শেষ নেই।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো।কক্সবাজারে পৌছে গেলো ওরা।দুজনে প্রথমে হোটেলে গিয়ে মুখ ধুয়ে পাশ্ববর্তি মার্কেটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড় কিনে নিলো।
এদিকে ইয়ারাবী প্রায় রাতে শুয়ে বালিশ ভিজায় চোখের পানিতে।আরাভের কল আসেনা। খুব কষ্ট হয় ওর।ফেন্সির সাথে আরাভকে দেখলে বুকটা কেমন যেন করে উঠে ইয়ারাবীর।এ কেমন মায়া?একজন অজানা লোকের প্রতি এ কেমন মায়ায় জড়িয়ে গেছে ও?
সেদিন আরাভের কল এলো।প্রথম তিনবার কল রিসিভ করে নি ইয়ারাবী।আরাভ আবার ও কল করলো কিন্তু ইয়ারাবী রিসিভ করেনি।আরাভ এবার ম্যাসেজ করলো।
“কল রিসিভ না করলে তোমার রুমে চলে আসবো।এতোরাতে কেউ রুমে আসলে ভালো দেখাবেনা নিশ্চয় যদি কোন পুরুষ হয়”
ইয়ারাবী এবার রিসিভ করলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কল রিসিভ করতে এতো দেরি হয় কেন?রেগে বলল আরাভ।
-আপনার ফেন্সি কে সময় দিন আমার সাথে সময় নষ্ট না করে।
-চড় একটা ও মাটিতে পড়বেনা বিউটিফুল।রেগে বলল আরাভ।
-হুহ। বলে উঠে ইয়ারাবী।
-কাল সন্ধ্যা সাতটায় আমার ফার্ম হাউজে থাকবে তুমি সেদিন কালো শাড়ীটা কিনে দিয়েছিলাম সেটা পরে আসবে।বলে উঠে আরাভ।
-নাহ আমার দ্বারা হবেনা।মন খারাপ করে বলল ইয়ারাবী।
-ব্যাপারটা আমি হওয়ালে ভালো হবেনা বিউটিফুল। সো চলে এসো অপেক্ষায় থাকবো।বলে উঠে আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভের কথামতো ইয়ারাবী রেডি হয়ে নিলো।কালো শাড়ীটার সাথে মিলিয়ে ছোট্ট সাদা পাথরের হালকা অর্নামেন্টস আর সাজ।ঠোঁটে গাঢ়ো লাল লিপস্টিক আর চোখে কাজল লাগিয়ে নিজেকে আয়নায় দেখে নিলো ইয়ারাবী।মাম্মা পাপাকে বলেছে ফ্রেন্ডের ভাইয়ের বিয়েতে যাচ্ছে।মাম্মা পাপা ও মেনে নিয়েছে।উ্চু হিলের জুতো পরে বেরিয়ে পড়লো ইয়ারাবী।অপরদিকে আরাভের ফোনে কথাবার্তা শুনে বুঝতে দেরি হলো না ফেন্সির যে আরাভ আজ ইয়ারাবী নামের পিচ্চি মেয়েটাকে নিয়ে ডিনার ডেটে যাবে।আরাভ গাঢ় লাল শার্ট এর সাথে কমপ্লিট ব্ল্যাক স্যুট পরেছে।আজ ওর মায়াময়ী কে জানাবে ওর হৃদয়ের কথা।আরাভের পিছু পিছু ফেন্সি বেরিয়ে পড়লো।নিজের ফার্ম হাউজে পৌছে ডেকোরেশন খাবার, জুস সব চেক করছে আরাভ।এদিকে ফেন্সি আরাভের গাড়ির ডেকিতে বসেছিলো।বেরিয়ে ঘরে ঢুকলো আরাভকে ফলো করতে করতে।বাড়ির ডেকোরেশন দেখে থ হয়ে যায় ফেন্সি।খুব রাগ হচ্ছে ফেন্সির।আরাভ ঐ ইয়ারাবীকে নিয়ে ডিনার করবে কিন্তু ওকে বলল ও না।ইয়ারাবী এসে পৌছুলো।বাড়ির সামনের গার্ডেনে খুব সুন্দর সাজানো।গাড়ি থেকে নেমেই আরাভকে দেখতে পায় ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর কাছে এসে হাত বাড়িয়ে বলল চলো আমার সাথে।ইয়ারাবী মন খারাপ করে অন্যদিকে তাকিয়ে আরাভের পাশে হাঁটতে লাগলো।আরাভ জোর করে ওর হাত ধরে।বাড়ির সামনের গার্ডেনে চলে আসে আরাভ আর ইয়ারাবী।খুব সুন্দর সাজিয়েছে আরাভ।লাইটিং করা,ডিনার টেবিল সাজানো।পুরো গার্ডপন ঝলমল করছে।ইয়ারাবী কে ডিনার টেবিলের চেয়ারে বসালো আরাভ।ইয়ারাবীর সামনে বসে ইয়ারাবীর প্লেটে খাবার বেড়ে দিলো আরাভ।দুজনে খাচ্ছে।খুব সুন্দর একটা রোমান্টিক গান বাজছে কই যেন।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-আ’ম সরি ইয়ারাবী।বলে উঠে আরাভ।
-ইয়ারাবীর চোখ জোড়া টলমল করছে।ইয়ারাবীর হাতের ওপর হাত রাখলো আরাভ।তারপর বলতে লাগলো আই লা,,,,,,,,,, একজন লোক জুস নিয়ে এলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভ রাগী চোখে তাকায় লোকটির দিকে।লোকটি জুস আরাভ আর ইয়ারাবীর সামনে রেখে চলে গেলো।ইয়ারাবী জুসে হাত দিতে যাবে তখনই আরাভ থামায় ওকে।তারপর হাত ধরে নিয়ে আসে কাপল ড্যান্সের জন্য।
চলবে