The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 22
★★★★
আরাবী গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলো।কপাল ফেঁটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।তখনই গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে আর্ভিন।সামনে এসে আরাবী কে দেখতে পেয়ে থমকে যায় আর্ভিন।পা আর চলতে চাইছে না ওর।আর্ভিন আরাবীর সামনে বসে যায়।আরাবীর মাথাটা কোলে তুলে নিলো।পরী!!!ও পরী!!!কথা বলো পরী!!!!!আরাবী চোখ খুলছেনা।কি হিরো আমাগোর মালরে আমগোরে দিয়া দে।চাইলে তুই ও ভোগ কর আমাগোর লগে।আর্ভিন রক্তাক্ত চোখে লোক গুলোর দিকে তাকায়।তারপর আরাবীকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে এগোতে যাবে তখনই ওদের মাঝে একজন আর্ভিনের হাত ধরতেই জোরে লাথি মারলো আর্ভিন।আরাবী কে গাড়িতে বসিয়ে দরজা লাগায় আর্ভিন।তারপর তাদের খুব মারে।ভয় পেয়ে দুজন পালিয়ে যায় আর বাকি চারজন রাস্তায় পড়ে ব্যাথায় কাতরাতে থাকে।আর্ভিন গাড়িতে ঢুকে বসলো।পাশে আরাবীর কপাল গড়িয়ে রক্ত পড়ছে।ফাস্ট এইড বক্স থেকে একটা মলম তুলোয় নিয়ে আরাবীর কপালে চেঁপে ধরলো।রক্ত পড়া একটু কমলো।আরাবীকে নিয়ে চটজলদি হাসপাতালে রওনা হলো আর্ভিন।আরাবীকে ওটিতে ঢুকানো হলো।আর্ভিনের হাতে আরাবীর ফোন।কন্টাক্ট লিস্টে গিয়ে রোয়েনের নম্বরে কল দিলো আর্ভিন।অপরপাশ থেকে একটু গম্ভীর কিন্তু বেশ ভরাট একটা কন্ঠ ভেসে এলো ফোন রিসিভ হতেই।আর্ভিনের বিশ্বাস হচ্ছে না লোকটার কন্ঠস্বর শুনে যে সে আরাবীর পিতা।কারন তার কন্ঠে বিন্দুমাত্র বার্ধক্যের ছাপ নেই।
,
,
,
,
,
,
,
,
-হ্যালো আরাবী মামনি কই তুই?বলে উঠে রোয়েন।
-জি আমি আর্ভিন মাহবুব।
-তুমি কে বাবা?আমার মেয়ে কই?
-আঙ্কেল একটু কষ্ট করে যদি স্কয়ারে হাসপাতালে আসতেন।বলে উঠে আর্ভিন।
-আমার মেয়ে ঠিক আছে তো?আতঙ্কিত গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
-আগে আসুন। বলে উঠে আর্ভিন।
-আচ্ছা আমি এক্ষুনি আসছি।বলে কল কেঁটে দিলো রোয়েন।
,
,
,
,
,
,
,
,
আর্ভিন ওটির গ্লাস দিয়ে আরাবীকে দেখছে।ভীষন খারাপ লাগছে ওর।কি করে ফেললো? ডাক্তার বেরিয়ে এলো।ইমার্জেন্সি এক ব্যাগ রক্ত লাগবে।আর্ভিন চিন্তায় পড়ে যায়।ওনার ব্লাড গ্রুপ?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।
এবি পজেটিভ।আর্ভিনের মন খুব খারাপ হয়ে যায় ওর তো এ পজেটিভ।ঠিক তখনই খুব স্মার্ট একজন লোককে দেখতে পায় আরাভ।লোকটার সাথে মহিলা ও আছেন।তারা দৌড়ে আর্ভিনের কাছে এলো।আরে স্যার আপনি?হঠাৎ ডাক্তারের কথায় হতবাক হয়ে যায় আর্ভিন।ডাক্তার লোকটাকে স্যার বলছে।জি আমি আমার মেয়ে কই?বলে উঠে রোয়েন।স্যার ওনি ওটিতে আছেন।এক ব্যাগ রক্ত লাগবে।রোয়েন বলল আমি দিবো আমার এবি পজেটিভ।ওকে চলুন ডাক্তার রোয়েন কে নিয়ে গেলো।
রুহী দাঁড়িয়ে কাঁদছে খুব।আর্ভিন রুহীর কাছে এলো।আ’ম সরি আন্টি।বুঝতে পারিনি এমন কিছু হবে।
আমার মেয়েটা কে আল্লাহ বাঁচায় দাও।কাঁদতে কাঁদতে বলছে রুহী।আর্ভিন বুঝতে পারছে মায়ের কষ্ট।আর্ভিন দূরে গিয়ে দেয়ালের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে চোখ বুজে রয়েছে।চোখের কোনা গড়িয়ে অশ্রু পড়ছে।আরাবীকে রক্ত দিয়ে রুহীর পাশে দাঁড়ালো রোয়েন।রুহী স্বামীর বুকে আঁছরে পড়ে কাঁদতে লাগলো।রোয়েনের চোখ জোড়া ও ভিজে এসেছে।ওর যে ভালো লাগছেনা।ওর একটাই তো মেয়ে।ছেলেটা তো কাছে নেই।রুহীকে সামলিয়ে পানি খাওয়ায় রোয়েন।তারপর আর্ভিনের কাছে এসে দাঁড়ায়।আর্ভিনের কাঁধে হাত রাখে রোয়েন।
কারোর ছোঁয়া পেয়ে চোখ খুলে আর্ভিন
তারপর চোখ মুছে মলিন হাসলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
-আপনিই কল করেছিলেন?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-মাথা ঝাঁকায় আর্ভিন।জি আমিই কল দিয়েছিলাম।
-আসলে হয়েছিলো কি?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-আর্ভিন পুরোটা খুলে বলল।
-ধন্যবাদ।আমার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য।বলে উঠে রোয়েন।
-ধন্যবাদ কেন আঙ্কেল?আমার জন্য ওনি এখানে।
-তুমি না আসলে আমার মেয়েটার সাথে কি কি হতো আল্লাহ মালুম।বলে উঠে রোয়েন।
-আর্ভিন রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
সেদিন বেশ রাত করে ঘরে ফিরে আসে আর্ভিন।কিন্তু ঘরে যে মনটাও টিকতে চাইছেনা।কিছু ভালো লাগছেনা।সারারাত ঘুমোয় নি আর্ভিন।পরদিন খুব সকালেই হাসপাতালে আসে আর্ভিন।আরাবীকে ডিসচার্জ করা হবে।আরাবী আর্ভিনকে দেখে মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো।রোয়েন যাওয়ার সময় আর্ভিনকে বাসার ঠিকনা দিয়ে বলল মাঝে দেখা করলে খুশি হবে।আরাবী একবার ও আর্ভিনের দিকে তাকালোনা।
এদিকে ইয়ারাবী খুব কষ্টে আছে।ঢাকায় আসার পর থেকে আরাভ ওকে একটা কল ও দেয়নি।মেসেজ ও দেয়নি।হয়ত সে এমনই।যা নেয়ার নিয়েছে।এখন কি আর ওর খবর নিবে লোকটা?হয়ত সে অনেকের সাথে এমন করেছে?কিন্তু মনটা যে মানতে চাইছে না।খালি ডুকরে কান্না আসে ইয়ারাবীর।আজ জেঠুর বাসায় যাবে ওরা।আরাবী আপুকে দেখতে।আপুকে আজ হাসপাতাল থেকে বাসায় এনেছে।ইয়ারাবী আরাবীর সামনে বসে আছে।রেহান রুপন্তী ও এসেছে আরাবীকে দেখতে।রুপন্তী ভাগনীকে জড়িয়ে বসে আছে।আরাবী ও খালার সাথে ঘেঁষে বসে আছে।
ইয়ারাবীকে আরাবী দেখছে অনেক্ষন যাবৎ।মেয়েটার মলিন চেহারা আগে কখনো দেখেনি।রুপন্তী আর রেহান নিচে চলে গেলে আরাবী ইয়ারাবী কে বলল কিরে মন খারাপ কেন?না আপু তোমার জন্য একটু খারাপ লাগছে।
নাকি অন্য কোন কারন ও আছে?জিজ্ঞেস করলো আরাবী।না আপু কোন কারন নেই।মলিন হাসলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
নিজেকে কিছুটা রিফ্রেশ করতে ক্লাবে এলো আর্ভিন।ড্রিংক এর অর্ডার করে বসে রইলো।ড্রিংক দেয়ার পর সেদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো।খেতে চাইছেনা ও।ভালো ও লাগছেনা।মাথার চাপ কমাতেই একঢোকে গিলে ফেললো আর্ভিন পুরোটা ড্রিংক।তারপর উঠে দাঁড়িয়ে পুলের সেকশনে গেলো।ভাবছিলো আজ পুল খেলবে ও।পুলের সেকশনে এসে দেখলো চমৎকার এক দৃশ্য।একজন লোক পুল খেলছে।তবে খুব দক্ষতার সাথে।এতো চমৎকার করে কাউকে পুল খেলতে দেখেনি আর্ভিন।বেশ কৌতুহল হলো ওর।এই প্লেয়ারের সাথে এক গেম হলে খারাপ হয়না।বরং আরো ভালো করে শিখা যাবে।এই ভেবে সামনে আগায় আর্ভিন।লোকটা একমনে খেলছে তার সামনে একজন দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে খেয়ালই নেই।
,
,
,
,
,
,
,
,
-ওসাম সট ইয়াং ম্যান!!!! বলে উঠে আর্ভিন।
-উপরে তাকায় আরাভ।থ্যাংকস মিঃ ওল্ড ম্যান।
-হেসে উঠে আর্ভিন ভালোই বললেন।
-আরাভ নিজের মতো খেলে যাচ্ছে।ক্যান আই জয়েন ইউ?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।
-শিওর।বলে উঠে আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভ আর আর্ভিন খেলতে শুরু করে।আরাভের খেলা দেখে আর্ভিন বিস্মিত।কিন্তু আর্ভিন ও কম যায়না।আরাভের জিততে খুব কষ্ট হচ্ছে।শেষমেষ খুব কষ্টে জিতে গেলো আরাভ।আমি অারো অনেকের সাথেই খেলেছি কিন্তু এতো কষ্ট হয়নি কাউকে হারাতে।ইউ আর আমেজিং।একনাগাড়ে বলল আরাভ।আর্ভিন মুগ্ধ হেসে বলল থ্যাংকস। বাট আপনার জবাব নেই।একদম প্রো।আরাভ হাসলো।
ওয়ান মোর গেইম প্লিজ?আর্ভিন বলে উঠলো।আরাভ বলল ওহ শিওর প্লিজ।নাইন বল?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।
ওকে।খেলা শুরু হলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
-তো নাম কি আপনার?জিজ্ঞেস করলো আরাভ।
-আর্ভিন মাহবুব খেলতে খেলতে বলল আরাভ।
-আর্ভিন!!!উপরে তাকায় আরাভ।
-ইয়েস।বলে উঠলো আরাভ।
-আপনার বাবার নাম কি?কি করেন ওনি?জিজ্ঞেস করলো আরাভ।
-আরমান মাহবুব।ওনি আগে প্রিন্সিপাল ছিলেন আমাদের কলেজের।
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভ শট টা মারতে গিয়ে থেমে গেলো।চোখ লাল হয়ে এসেছে ওর।পুরো শরীর কেমন যেন কাঁপছে।
আপনি আরমান সাহেবের ছেলে তাই না?দাঁতে দাঁত চেঁপে মোটা গলায় বলল আরাভ।জি আমার বাবার নাম আরমান মাহবুব বলে উঠে আরাভ।আপনার বাবা কাউকে মিথ্যা অপরাধে শাস্তি দিতে খুব ভালো পারে।নিজের ছেলের শাস্তি লুকিয়ে আরেকজনের সন্তানের জীবন ভালোই নষ্ট করতে পারে(কথা গুলো বলার মাঝে খুব রুডলি খেলছিলো আরাভ)নিজের ছেলের দোষ তো কখনো প্রকাশই করেনা।তার ছেলে রাস্তাঘাটে যতো ইভটিজিং গুন্ডাগিরি করুক না কেন।অপরের সন্তান কেই দোষের ভার বয়ে বেড়াতে হবে আজীবন।কেন?চিৎকার করে উঠলো আরাভ।আর্ভিন এসে আরাভের কলার চেঁপে ধরলো।আপনার এতো বড় সাহস কি করে হয় আমার বাবা কে নিয়ে এসব বলার?রাগী গলায় বলল আর্ভিন।আমার কলার ছাড়েন।মোটা গলায় বলল আরাভ।ছাড়বোনা,এতো বড় সাহস কি করে হয় আপনার আমার বাবাকে নিয়ে এসব বলার?আরাভ শার্টের কলার থেকে আর্ভিনের হাত জোর করে ছাড়িয়ে ধাক্কা দিয়ে সরালো।আর্ভিন পড়ে যেতে নিয়ে নিজেকে সামলায়।
,
,
,
,
,
,
,
,
-যাকে চিনেন না জানেন না তার বাবাকে নিয়ে কথা বলার সাহস কি করে হয় আপনার?চিৎকার করে বলল আর্ভিন।
-আপনাদের ভার্সিটির কলেজ সেকশনে আরাভ রোয়েন চৌধুরীর কথা মনে আছে?যাকে প্রতিবন্ধী বলে ডাকতেন?রাগী গলায় বলল আরাভ।
-আরাভ রোয়েন চৌধুরী!!!!! কিছুটা অবাক হয় আর্ভিন।
-ভুলে গেছেন?আপনাদের অনার্স শেষ ফেয়ারওয়েলের দিনের কথাটাও ভুলে গেছেন?চিৎকার করে বলল আরাভ।
-কিছু ভুলিনি আমি।আপনি আরাভ?বলে উঠে আর্ভিন?
-আমি আরাভ। আপনার কারনে পুরো লাইফ ধ্বংস হয়ে গেছে।আজ দশ বছর যাবৎ আমার ফেমেলি থেকে দূরে আমি।আপনার আর বাবার জন্য।আপনার বাবা আমার বাবাকে অফিসে ডেকে অপমান করে আমাকে সবার সামনে আমার বাবা থাপড় দেয়।আপনাদের কারনে।চিৎকার করে বলল আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
দেখুন আরাভ আমি আমার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত।সেদিনের পর থেকে আমি অনুশোচনায় ভুগছি।প্লিজ মাফ করে দাও।নেভার বলে আরাভ উঠে চলে আসতে থাকে।
ওয়েট মিঃ আরাভ।বলে উঠে আর্ভিন।থেমে গেলো আরাভ।আপনার বাবার হাসপাতালে সিলগালা পড়েছে।সেটা যে লাগিয়েছে সে পলাতক।তাকে খুঁজতে আমি সবচেয়ে বেশি আপনার সাহায্যে আসবো।হয়ত আমার আর আপনার ক্ষমতা এক কিন্তু দুজনের কাজের ধরন ভিন্ন।আপনি যদি চান আমি খুব সহজেই তাকে বের করতে পারবো।বলতে থাকে আর্ভিন।
আপনি যদি সত্যি একাজটা করে দিতে পারেন।তাহলে আপনাকে আমি মাফ করবো।বলে আর একসেকেন্ড ও দাঁড়ায়না আরাভ।সেখান থেকে চলে গেলো।
চলবে