The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 19

আরাবী বেশ অবাক হচ্ছে আর্ভিন মাহবুব লোকটার আচরনে।আগে আসতো তবে একা কিন্তু এখন একাই আসে কিন্তু হাতে থাকে এক তোড়া লাল সাদা গোলাপ আর চকলেট ভরা বক্স আবার কোন সময় দামি জামা কিংবা গহনা।লোকটা কি চায় বুঝতে পারছেনা আরাবী।কেন সে এমন করছে কিসের কল্যানে?মাথাটা ভার লাগছে আরাবীর।এককাপ গরম কফি হলো মন্দ হয়না।আরাবী উঠে দাঁড়িয়ে ওর রুমে রাখা কফি মেশিনটার দিকে এগোয়।তারপর মগ মেশিনের সামনে রেখে কফি নিয়ে নিজের আসনে বসতেই দেখলো আর্ভিন মাহবুব।আর্ভিন প্রতিবারের মতোই একতোড়া ফুল আর একটি বক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মুখে তার দুষ্টু হাসি।আরাবী ভ্রু কুঁচকে বসে আছে।তারপর আর্ভিনের দিকে তাকিয়ে বলল বসুন।আর্ভিন থ্যাংকস দিয়ে বসে আরাবীর সামনে ফুলের তোড়া আর প্যাকেটটি রাখলো।তারপর জোরপূর্বক আরাবীর হাত ধরে একটা আংটি পরিয়ে দিতেই লাফিয়ে উঠে আরাবী।তারপর দ্রুততার সাথে আংটি খুলতে গেলো আর্ভিন ওকে থামিয়ে দেয়।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-প্লিজ ডোন্ট ডু দিস।
-আমি এটা এক্সেপ্ট করতে পারবোনা সরি।খুলে আর্ভিনের হাতে আংটিটি ধরিয়ে দিলো আরাবী।
-বড় নিশ্বাস টেনে নিলো আর্ভিন তারপর বলল ওকে। অন্তুত ফুল আর চকলেটটাতো এক্সেপ্ট করতেই পারেন।
-ইয়াহ শিওর।মুখে হালকা হাসি এনে বলল আরাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আর্ভিন চুপচাপ বসে আছে।আরাবী নিজের মতো কাজ করতে থাকলো।আমার সাথে ডিনার করলে ভালো লাগতো।বলে উঠে আর্ভিন।আরাবী চুপ করে কাজ করে যাচ্ছে।আর্ভিন আবার ও চুপ হয়ে ফোনে নিজের কাজ সামলাচ্ছে।হঠাৎ আর্ভিন বক্স থেকে একটা চকলেট বের করে খেতে লাগলো।আরাবী আড়চোখে ব্যাপারটা দেখে একটু হাসলো।আর্ভিন বেশ রুডলি চকলেট খাচ্ছে।আরাবী বেশ বুঝলো আর্ভিন রেগে আছে।মিস চৌধুরী!!!শক্ত গলায় ডাকলো আর্ভিন।জি বলুন কাজ করার মাঝেই বলল আরাবী।আপনি কালই আসছেন আমার সাথে ডিনারে।কিছুটা শক্ত গলায় বলল আর্ভিন।
ওকে তো কাল বিকেল চারটায় আমার কেবিনে দেখা হচ্ছে আপনার সাথে তারপর ডিনারে যাবো আমরা।শান্ত ভাবে বলল আরাবী।
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল আর্ভিন তারপর বলল,ফাইনালি রাজি হলেন।আরাবী মুচকি হেসে বলল তো কাল দেখা হচ্ছে আবার।আপনি আসতে পারেন।বলে উঠে আরাবী।ওকে মিস আরাবী চৌধুরী মিট ইউ টুমোরো।ওকে সি ইউ।বলে কাজে মন দিলো আরাবী।আর্ভিন বেরিয়ে গেলো। এদিকে ইয়ারাবী কোন ভাবেই আরাভ থেকে আলাদা হতে পারছিলোনা।আরাভ কোথা ও গেলেই ভয় লাগা শুরু হতো।মনে হতো ওর আশেপাশে কেউ আছে।কেউ ওকে দেখছে।কেউ ওর ক্ষতি করতে চাইছে।
সময় গুলো ভীষন ভয়ে কাঁটতে থাকে ইয়ারাবীর।এখানে এসে কোথায় ঘুরবে কিন্তু না ভয়টাই ওর ওপর চেঁপে বসেছে।পুরো সময় রুমেই থাকে।আরাভ থাকে সাথে আর নাহলে স্নিগ্ধা।আরাভই বেশি থাকে।খাটে শুয়ে ভাবছিলো কথা গুলো ইয়ারাবী।কানে কোন একটা জুতোর শব্দ ভেসে আসছে।ওর দরজার কাছে এসে জুতোর শব্দ থামলো।তারপর দরজা খুলতেই জোরে চিৎকার করে উঠে ইয়ারাবী। আরাভ লাঞ্চ নিয়ে আসছিলো ইয়ারাবীর জন্য।ওর চিৎকার শুনে রুমে ঢুকে পড়লো দ্রুত।চোখ খিচে বুজে আছে ইয়ারাবী।ওর শরীর থরথর করে কাঁপছে।ভাতের প্লেট টেবিলে রেখে ইয়ারাবীর পাশে বসলো আরাভ।ওর হাত ধরে আরাভ বলল কি হলো ইয়ারাবী।চোখ খুলে তাকায় ইয়ারাবী।তারপর আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করে নিলো ও।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কি হলো আশেপাশে কাকে খুঁজছো?জিজ্ঞেস করলো আরাভ।
-না মানে তেলাপোকা ছিলো।মন খারাপ করে বলল ইয়ারাবী।
-আচ্ছা তেলাপোকা চলে গেছে।খেয়ে নাও।বলে উঠে রেহান।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
খেতে আরম্ভ করলো ইয়ারাবী।আরাভ ফোন চালানোয় মন দিলো।আপনি খেয়েছেন?জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
ইয়ারাবীর কথায় পাশ ফিরে তাকায় আরাভ।জি খেয়েছি।তুমি খাও।মলিন হাসলো ইয়ারাবী।খাবার শেষে হাত ধুয়ে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসলো ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে এক হাত দিয়ে ওর চুলের ক্লিপ খুলে দিতেই চুল গুলো পুরো পিঠে ছড়িয়ে গেলো।আরাভ মুখ বাড়িয়ে চুলে ঠোঁট ছুঁইয়ে কানে চুমু দিতেই দরজায় নক হলো।সরে এলো আরাভ।ইয়ারাবী ও বেশ কাছে চলে এসেছিলো তার।সরে এলো ইয়ারাবী।চুল ঠিক করে সোজা হয়ে বসে পড়েছে ও।আরাভ উঠে দরজা খুলে দেখলো স্নিগ্ধা।আরাভ কে দেখে অবাক হয়ে যায় স্নিগ্ধা।তারপর একটু হেসে আরাবীর দিকে তাকায়।আবার আরাভের দিকে তাকিয়ে স্নিগ্ধা বলল ভাইয়া স্যার বলল বের হবে এখন।
ওহ ওকে। ইয়ারাবী কে রেডি হতে বলো। বলে বেরিয়ে গেলো আরাভ।স্নিগ্ধা ইয়ারাবী কে রেডি হতে বলল।ইয়ারাবী ভাইয়াটাকি তোকে পছন্দ করে?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।চুল আঁচড়াচ্ছিলো ইয়ারাবী।স্নিগ্ধার কথায় পুরো শরীর কেঁপে উঠলো ওর।ক কি বলছিস এসব?পাগল তুই?কেন মনে হলো তোর এসব?আরেহ ঐদিন যখন তোকে পাওয়া যাচ্ছিলোনা ভীষন অস্থির ছিলো সে।আর সেখান থেকে আসার পর তোকে নিয়ে খুব চিন্তিত থাকে ওনি।তোর সাথে থাকার চেষ্টা করে।একনাগাড়ে বলল স্নিগ্ধা।ইয়ারাবী চুপচাপ কাজ করছে।কি বলবে ও?আরাভের সেই প্রথম সিক্ত ছোঁয়া এখনো যে ওর ঠোঁটে লেগে আছে।এগুলোর মানে জানে না ও।এ ছোঁয়ার নাম কি দিবে ও?
রাগ করলি?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।নাহ রাগ করিনি।পিছনে ফিরলো ইয়ারাবী।খয়েরী বর্নের স্যালোয়ার কামিজ পরেছে ইয়ারাবী।চুল গুলো ছেড়ে সাইডে ছোট্ট একটা পাথরের ক্লিপ লাগিয়েছে ও।এমনিতেই সুন্দরী ইয়ারাবী।তারওপর আজ আরো বেশি মায়াময়ী লাগছে ওকে। স্নিগ্ধা আর ইয়ারাবী বেরিয়ে পড়লো।আজ হিরন পয়েন্ট যাবে ওরা।দুটো বাস এসে ওদের নিয়ে চলল হিরন পয়েন্টের উদ্দেশ্যে।আরাভ প্রিন্সিপালকে বলিয়ে ইয়ারাবীকে ওর সাথে বসিয়েছে।
,
,
,
,
,
,
,
,
জানালার কাছে বসে আছে ইয়ারাবী।পাশে আরাভ বসে চোখ বুজে সিটে মাথা রেখে আছে।বাসে উঠার অভ্যাস ওর নেই।কেমন যেন মাথা ঘুরাচ্ছে।ইয়ারাবী পাশে তাকিয়ে আরাভ কে দেখলো।ওর কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে।হয়ত ভালো লাগছেনা ওনার।জানালার দিকে তাকালো ও।দুপাশে অনেক গাছপালা নদী নালা।খুব সুন্দর।ঘন্টাখানেক পর হিরন পয়েন্ট পৌছালো ওরা।
ঘুরে ঘুরে দেখছে ওরা।সাথে তো গাইডরা আছেই।সামনে নদী আছে।নদী পার হতে হবে।স্পীডবোট ভাড়া করলো ওরা।স্পীড বোটে উঠার সময় আরাভ ইয়ারাবীর হাত ধরে উঠিয়ে নিজের পাশে বসালো।ইয়ারাবী বাহিরে তাকিয়ে আছে।মাঝে মধ্যে ওর মুখে পানির ঝাপটা এসে লাগছে।চুল গুলো বাতাসে খুব উড়ছে।আরাভ একমনে ওকে দেখছে।কি অপরুপ লাগছে মেয়েটাকে।ওর চোখে মুখ আলোকিত হয়ে উঠেছে। হঠাৎ একজন গাইড বলল ঐ দেখেন সাপ।সবাই সেদিকে তাকায়।এটা হলো দাঁড়াশ কোন বিষ নাই এর।বলে উঠলো গাইড।তারপর গাইড গাছ চিনাতে লাগলো।ছোট ছোট পাহাড় দেখছে ওরা। ইয়ারাবীর চুল আরাভের মুখে বাড়ি খাচ্ছে।লম্বা শ্বাস চুল গুলোর স্পর্শ উপভোগ করছে আরাভ।আরাভ ইয়ারাবীর কোমড়ে হাত রেখে ওকে কাছে টেনে নিলো কিছুটা।আকস্মিকতায় অবাক হয়ে যায় ইয়ারাবী।আরাভের দিকে তাকাতেই আরাভ সবার নজর উপেক্ষা করে ইয়ারাবীর গালে ঠোঁট ছুঁয়ালো।ইয়ারাবী গালে হাত রেখে নিচে তাকায়।স্পীডবোট থেকে নেমে সামনে হাঁটতে শুরু করে ওরা।হঠাৎ ফোন বেজে উঠে আরাভের।ইয়ারাবীকে দাঁড়াতে বলে ফোন নিয়ে একটু দূরে সরে যায় আরাভ।
আরাবীর অফিসে পরদিন ঠিক চারটায় চলে আসে আর্ভিন।আরাবী আজ কালো একটা শাড়ী পরে এসেছো সাথে হালকা সাজ।আর্ভিন আরাবীর কেবিনে এসে যেন থমকে গেলো।পরীটা ওকে খেয়াল করেনি।কাজে মগ্ন সে।গলা পরিষ্কার করলো আর্ভিন।আরাবী মাথা উঠিয়ে সামনে আর্ভিনকে দেখতে পায়।ওর হার্ট মিস হবে মনে হচ্ছে।লোকটাকে এতোটা হ্যান্ডসাম লাগছে।চোখ সরাতে পারছেনা আরাবী।কালো শার্টের ওপর সিলভার কালার ব্লেজার আর ব্লাক ডেনিম প্যান্ট।আর্ভিন আরাবীর সামনে এসে বসলো।আরাবী নড়ে চড়ল বসলো।রাইট টাইমিং!! আই লাইক ইট।বলে উঠে আরাবী।আর্ভিন বলে উঠলো,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-Shall we?
-Wait for 5 mnts please.বলে উঠে আরাবী।
-yeah sure.আর্ভিন বসে রইলো চুপচাপ।
,
,
,
,
,
,
,
,
সারপ্রাইজ!!!!!!হঠাৎ কারোর কথায় আরাবী আর্ভিন দুজনেই পিছে ফিরে তাকায়।তারপর আরাবী চিৎকার করে বলল ইকরাম!!!দৌড়ে এসে ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলো।ছেলেটা আরাবীর পিঠে কোমড়ে হাত রাখলো ইকরাম।আরাবী সরে এসে বলল What a Surprise Dost!!কবে এলি?কালকেই এলাম।আর আজ তোর কাছে।তা ওনি কে(আর্ভিন কে দেখিয়ে)?বলে উঠে ইকরাম।ওনি আর্ভিন মাহবুব লন্ডন থেকে এসেছে।সেখানকার বড় একজন ডন।আর্ভিন উঠে দাঁড়ালো।আর মিঃ আর্ভিন ও আমার চাইল্ড হুড ফ্রেন্ড ইকরাম আহমেদ।একজন রিসার্চার জার্মান থেকে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করে সেখানেই চাকরীরত।বলে উঠে আরাবী।ইকরাম আর আর্ভিন হাত মেলালো।ইকরাম আর আরাবী গল্পে লেগে যায়।আর্ভিনের খুব ইনসাল্টিং ফিল হতে শুরু করে।আরাবী আর্ভিনের দিকে তাকিয়ে বলল,আ’ম সরি মিঃ আর্ভিন।আজ যেতে পারছিনা।ইটস ওকে আমি আসি তাহলে,বেরিয়ে যায় আর্ভিন।ইয়ারাবীর মনে হতে থাকে কেউ যেন ওর পিছে আছে,ওকে ধরতে চাইছে।বারবার পিছে তাকাতে থাকে ইয়ারাবী।মনে হচ্ছে ওকে কেউ ধরতে আসছে।হঠাৎ ইয়ারাবী সামনে দৌড়াতে নিবে।পিছন থেকে ওর হাত টেনে ধরলো আরাভ।ইয়ারাবী পিছনে ফিরে কেঁদে দিয়ে জড়িয়ে ধরলো আরাভকে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কাঁদছো কেন ইয়ারাবী?আতংকিত কন্ঠে প্রশ্ন করলো আরাভ।
-খুব ভয় লাগছে আমার প্লিজ চলুন।কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল ইয়ারাবী।
-আরাভ সরে এসে ওকে জিজ্ঞেস করলো সেদিন থেকে তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে খুব টেনশনে আছো তুমি।বলো কি হয়েছে?সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
-না কিছুনা।নিচে তাকিয়ে বলল ইয়ারাবী।
-দেখো ইয়ারাবী তুমি না বললে সমস্যা সমাধান হবেনা।বলো কি হইছে?
-জানিনা।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-ইয়ারাবী প্লিজ এমন করোনা।নাহলে সমস্যা আরো বড় হয়ে যাবে।তখন আর উপায় থাকবেনা।বলো আমাকে।প্লিজ ট্রাস্ট মি।জোর করতে থাকে আরাভ।
-সব কিছু খুলে বলল ইয়ারাবী।সেদিন রাতে জঙ্গলে যা হয়েছিলো,রুমের সামনে থেকে কারোর পালিয়ে যাওয়ার কথা,সবসময় কারোর উপস্থিতি অনূভব করা সব কিছু বলল ইয়ারাবী।
-দেখো তোমার মনের ভুল। আর কিছুনা।সেদিনের ভয়টা তোমার ওপর চেঁপে বসেছে।কিছু হবেনা।কথা গুলো বলার পর ও আরাভ ঠিকই চিন্তায় পড়ে গেছে।সেদিন ঘরে ফিরেই নিজের দুজন বডিগার্ড কে ইয়ারাবীকে কে ফলো করছে তার সন্ধান করতে বলল।
চলবে