The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 17

ইয়ারাবী রুমে এসে হাত জোড়া দুপাশে ছড়িয়ে লম্বা শ্বাস নিলো।রুমটা বেশ ঠান্ডা।খুব সুন্দর একটা স্মেল ওর নিশ্বাসের সাথে মিশে যাচ্ছে।চোখ খুলে পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়ে নেয় ইয়ারাবী।রুমটার ছাদ টা দেখলে মনে হয় খড়ের তৈরি কিন্তু আসলে নয়।খুব সুন্দর ভিতরে।ইয়ারাবী গায়ের উড়না খুলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে।ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসিটা লেগেই আছে।চুল গুলো একবার সামনে এনে দেখলো আসলেই খোলা চুলে কেমন লাগে ওকে।নট সো ব্যাড।চুল গুলোকে নিজের মুখের ওপর ফেললো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
-হাউ মাউ খাউ মানুষের গন্ধ পাউ”!!!ভৌতিক গলায় বলছিলো ইয়ারাবী।
-What the hell!!!!!!হঠাৎ করে রাগী গলায় বলল আরাভ।
,
,
,
,
,
,
পুরুষালী কন্ঠের আভাস পেয়ে দ্রুত পিছনে ফিরে ইয়ারাবী।তবে চুল পিছনে ফিরালো না।আরাভ কিছুটা অবাক হয় ইয়ারাবীর কান্ডে।তারপর এক পা একপা করে ইয়ারাবীর সামনে এলো আরাভ।ইয়ারাবীর কাঁধ চেঁপে ধরে ওর মুখের ওপর থেকে চুল সরালো আরাভ।
ইয়ারাবী চোখ খিচে বন্ধ করে আছে।
,
,
,
,
,
,
-চুল খোলা রাখতে বলেছি বলে এই না যে ভুত সাজবে।তোমার চুল গুলো নেশার মতো লাগে আমার।হারিয়ে যাই আমি তোমার চুলের গভীরে। নেশা লাগানো কন্ঠে বলল আরাভ।
ইয়ারাবী সরে আসতে চাইতেই আরাভ অপর হাতে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরলো।ইয়ারাবীর চুলগুলো ঠিক করে দিচ্ছে পিছন থেকে।ইয়ারাবীর পুরো শরীর কাঁপছে।
,
,
,
,
,
,
-প্লিজ ছেড়ে দিন।
,
,
,
,
,
,
শশশশ কোন কথা বলোনা বিউটিফুল। আজ নিজেকে তোমার নেশায় হারাতে চাই।বলে ইয়ারাবীর ঠোঁটের কোনায় চুমু দিলো আরাভ।তারপর গালে চুমু দিয়ে ওর নাকের ডগায় ঠোঁট ছুঁয়ালো।একটু সরে এলো আরাভ।তারপর ঠোঁট এগিয়ে নিলো ইয়ারাবীর ঠোঁটের কাছে নিয়ে এলো।দুজোড়া ঠোঁট ছুঁই ছুঁই।তখন ইয়ারাবী বলল প্লিজ ছেড়ে দিন না।আমি ছোট মানুষ।
আরাভ চোখ খুলে ভ্রু কুঁচকিয়ে সরে এলো ছিটকে।ছোট মানুষ!!!কলেজে পড়ুয়া মেয়ে ছোট হয় কেমনে? কিছুটা রেগে গেলো আরাভ।ইয়ারাবী মাথা নোয়ায়।একি বলল ও?
ইয়ারাবীর হাত টেনে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।এসব কথা বলে যদি ভাবো আমার হাত ছাড়া পাবে তাহলে ইউ আর রং বিউটিফুল।এতো সহজে ছাড় পাবেনা সুইটহার্ট।
ইয়ারাবী ভয়ার্ত কন্ঠে তাকিয়ে আছে আরাভের দিকে।আরাভ সরে এলো।দুটো প্যাকেট ইয়ারাবীর দিকে ধরে বলল এখানে কালো ড্রেসটা পরবে বিকেলে। যদি না পরেছো তাহলে পরানোর ব্যাবস্থা আছে।বলে ইয়ারাবীর গায়ে উড়না পরিয়ে বেরিয়ে গেলো আরাভ।ইয়ারাবী দেয়ালের সাথে লেগে রইলো অনেক্ষন।উড়না টা কাঁধ থেকে সরে গেছে।আজ আরাভ আর ইয়ারাবী খুব কাছাকাছি ছিলো ওদের ঠোঁট জোড়া ছুঁইছুঁই করছিলো।তার শরীর থেকে অদ্ভুত সুন্দর একটা ফ্রেগনেন্স পাচ্ছিলো ইয়ারাবী।ইচ্ছে হচ্ছিলো সেভাবেই মরে যেতে সেই নেশা ধরানো গন্ধে। লোকটার ঠোঁটের ছোঁয়াটা পেলে কেমন হতো?ছি কি ভাবছি এসব?ঠিক না এসব।ওনি কে চিনি না আমি।তারপর ও প্রত্যেকটা সময় ওনাকে ভাবা হয়।কারন টা অজানা ইয়ারাবীর।দেয়াল থেকে সরে আসতেই উড়নাটা ওর পায়ের ওপর পড়লো।হুঁশ হলো ইয়ারাবীর।তখন আরাভ ওর গায়ে উড়না জড়িয়ে দিয়ে গেছিলো।লজ্জায় কুঁকড়ে যায় ইয়ারাবী।লোকটার সামনে উড়না ছাড়া ছিলো।কি করে পারলো ও?দ্রুত উড়না উঠিয়ে গায়ে জড়ালো ইয়ারাবী।দরজায় নক পড়লো।
মাথায় ঘোমটা দিয়ে দরজা খুলল ইয়ারাবী।স্নিগ্ধা দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।ওরা দুজন এরুমে থাকবে।
স্নিগ্ধা অবাক চোখে ইয়ারাবীকে দেখছে।
,
,
,
,
,
,
-তোর মাথায় ঘোমটা কেন?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।
-এমনিই দিলাম।বলে সরে দাঁড়ালো ইয়ারাবী।
-স্নিগ্ধা রুমে ঢুকে বলল ঐ লোকটার সাথে কি কানেকশান তোর?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।
-কার কথা বলছিস?কোন লোক?অবাক হওয়ার ভান করে বলল ইয়ারাবী।
-যার জন্য সিট থেকে উঠালি।বলে উঠে স্নিগ্ধা।
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী কিছু বলতে পারলো না।ওর গাল জোড়া লাল হয়ে এলো।হঠাৎ স্নিগ্ধা হেসে দিলো।তোর চেহারা দেখার মতো হয়েছে ইয়ারাবী তোর গাল দুটো লাল টমেটো হয়ে গেছে।যেভাবে লজ্জা পাচ্ছিস দেখে আমার মায়া লাগছে বান্ধবী।কাহিনী কি?হাসতে হাসতে বলল স্নিগ্ধা।এফবি ফ্রেন্ড।বলে উঠে ইয়ারাবী।এফবি ফ্রেন্ড
এখানে ও চলে এলো।কাহিনী বল না দোস্ত।প্লিজ।জোর করতে লাগলো। ইয়ারাবী সব কাহিনী খুলে বলল।তবে এখানে কেন এসেছেন জানিনা।
বাহ হোয়াট এ লাভস্টোরি ইয়ারাবী!!!!বহৎ খুব বলে উঠে স্নিগ্ধা।মাথা নিচু করে লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে থাকে ইয়ারাবী।আচ্ছা সোনাপাখি এতো লজ্জা পেতে হবেনা।ফ্রেশ হয়ে নেয়।ফ্রেকফাস্ট করতে যেতে হবে।বলে উঠে স্নিগ্ধা।
ইয়ারাবী একটু হেসে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো একটা গেঞ্জী আর ট্রাউজার নিয়ে।
আরাভ গোলটেবিলের একটা চেয়ারে বসে আছে।জায়গাটা নদীর ওপর করা।উপরে ছাউনি দেয়া।এখানে ব্রেকফাস্ট অর বিকেলের টি টাইমে আসে গেস্টরা।বেশ সুন্দর জায়গাটা।
আরাভলর সামনে কফি আর এক প্লেট ক্যাসিউনাট সালাদ রেখে গেলো ওয়েটার।
কফিতে সিপ দিয়ে একটা জাপানিজ কলিগের সাথে ভিডিওতে মিটিং করছে।জাপানিজ কথা বলছে আরাভ।আশেপাশের সবাই ওকে দেখছে।হালকা পেস্ট কালারের একটা শার্ট পরে আছে আরাভ আর সাথে সাদা ধবধবে প্যান্ট।শার্টের কলারটা উড়াউড়ি করছে।আশেপাশের স্টুডেন্টদের কানা কানি লেগে গেছে।আরাভের বিন্দুমাত্র নজর নেই কারোর দিকে।
মাঝে মধ্যে অর্পনের সাথে ব্লুটুথে কথা বলছে আরাভ।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো আরাবী।
আকাশী রং এর একটা স্যালোয়ার কামিজ পরে নিলো ও।ঠোঁটে হালকা পিংক লিপস্টিক।চোখের নিচে চিকন কাজল।চুল গুলো পিঠের ওপর ছড়িয়ে দিলো ইয়ারাবী।
স্নিগ্ধা ফ্রেশ হয়ে ইয়ারাবীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
ব্রেকফাস্টের জায়গায় এসে স্নিগ্ধা আর ইয়ারাবী একটা টেবিলের দুটো চেয়ারে বসলো।স্টুডেন্টদের নাস্তার কথা আগেই বলা হয়েছিলো তাই আর অর্ডার করতে হয়নি।
ওদের সামনে নাস্তা দিয়ে গেলো ওয়েটার।আরাভ কাজের ফাঁকেই ইয়ারাবীকে দেখলো।অদ্ভুত মায়াময়ী লাগছে মেয়েটাকে।আরাভ মিটিং শেষ করে উঠে দাঁড়ায়।তারপর রেলিং ধরে নদীর দিকে মুখ করে দাঁড়ায়।
আরাবী অফিসে এসে নিজের কেবিনে ঢুকতেই পিছন থেকে কারোর ডাকে থেমে যায়।
,
,
,
,
,
,
-কি পরী বলেছিলাম সময় সব বলে দিবে।জোরালো কন্ঠে আর্ভিন বলল।
-পিছনে তাকায় আরাবী।এ লোকটা অফিস পর্যন্ত চলে এলো।বিড়বিড় করে বলল আরাবী।
-আর্ভিন আরাবীর সামনে এসে দাঁড়ায়।মিস আরাবী সো স্মার্ট লুকিং ইন ফরমাল গেট আপ।আই এপ্রেশিয়েট ইউ।
-এগেইন?গম্ভীর গলায় বলল আরাবী।
-আর্ভিন একটু শব্দ করে হাসলো।এ ডিনার টুনাইট?
-নো আ’ম বিজি।বলে ভিতরে ঢুকে গ্লাস লাগিয়ে দিতেই বাঁধা দিলো আর্ভিন।গেস্টকে এভাবে তাড়িয়ে দেয়া ভদ্রতা নয় মিস আরাবী চৌধুরী।
,
,
,
,
,
আর্ভিনকে ভিতরে ঢুকতে দিলো আরাবী।আর্ভিন এসে আরাবীর সামনের চেয়ারে বসলো।আরাবী নিজের জায়গায় এসে বসলো।সো কি মনে করে আসলেন আপনি?জিজ্ঞেস করলো আরাবী।
এসেছিলাম তো কাজে বাট পোস্টপন্ড হয়ে গেলো কাজটা।তাই ভাবলাম আপনার সাথেই কিছু সময় কাঁটাই।
হাসলো আরাবী।সময় কাঁটানোর জন্য আমাকেই পেলেন।কি করবো বলুন আপনার দিকেই যে আগে মন চলে এলো।বলে হাসলো আর্ভিন।লজ্জা পেয়ে যায় আরাবী।টি অর কফি?জিজ্ঞেস করলো আরাবী।কফি!!!বলে উঠলো আর্ভিন।ওকে,ফোন দিয়ে দুকাপ কফি পাঠাতে বলল আরাবী।
আমার ডিনারের কি হলো?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।আমার সময় হবেনা।বলে উঠে আরাবী।একসময় না একসময় তো সময় হবেই।সময় কি বের করতে পারবেননা?বলে উঠে আর্ভিন।আমি চেষ্টা করবো বলল আরাবী।
আপনার অপেক্ষায় থাকবো।বলে উঠে আর্ভিন।আরাবী আর্ভিনের দিকে তাকায়।চাইনিজে বসে আছে রোয়েন আর রুহী।রুহী কালো একটা সুতির শাড়ী পরে আছে আর রোয়েন কালো কম্পলিট সুট।রুহী মুচকি হাসলো আজ হঠাৎ এখানে এলে?
হুম ভাবছিলাম বৌটাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া হয়না।তাই তোমাকে নিয়ে এলাম।অতীতের স্মৃতিচারন করা হচ্ছে মায়াবতী।এই রেস্টুরেন্টেই রুহী রোয়েন কে সাত সকালে ডেকেছিলো হাজারো অভিযোগ নিয়ে।এখানে রোয়েন রুহীর হাতে ব্রেসলেট পরিয়ে দিয়েছিলো।অনেক সময়ের ব্যাবধান।প্রায় ২৮ বছর হতে চলল সময়টার।খুব ব্যাস্ত পড়েছিলো রোয়েন পড়াশুনা আর ফ্রেন্ড সার্কেল নিয়ে তারওপর শ্বাশুড়ির স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনানোয়।রুহীর চোখের কোনা জ্বলজ্বল করে উঠে।
,
,
,
,
,
,
-রুহী কাঁদছো কেন?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-কিছু মনে পড়ে গেলো।চোখের পানি মুছে বলল রুহী।
-খুব কাঁদিয়েছিলাম।সরি!!!!বলল রোয়েন।
-রোয়েনের হাত চেঁপে ধরলো রুহী।সরি বলোনা।এখন আমরা একসাথে আছি অনেক বছর ধরে।এই সাতাশ বছরে কাঁদতে দাওনি তুমি।ভালোবাসি তোমাকে।
-রোয়েন রুহীর কপালে চুমু দিলো।ভালোবাসি বৌ।
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী নাস্তা সেড়ে আরাভের থেকে খানিকটা দুরুত্ব বজিয়ে দাঁড়ালো।নদীতে ঢেউ আসছে আর সেই সাথে স্নিগ্ধ বাতাস।ইয়ারাবীর খুলে বাতাসের তালে দোল খাচ্ছে।ইয়ারাবী চুল ঠিক করায় ব্যাস্ত।আরাভ আড়চোখে মায়াময়ী কে দেখে নিলো একবার।দুজনেই একেঅপরকে আড়চোখে দেখছে দুজনের অগোচরে ইয়ারাবীর সাদা উড়না বাতাসে উড়ছে।আরাভের ব্যাপারটা বেশ লাগছে।
“ইচ্ছে হয় বাতাস হয়ে তোমাকে ছুঁয়ে দিতে, অপূর্ন চাহিদা গুলো মিটিয়ে নিতে।তোমার ঘ্রানে মাতাল হয়ে পাখির মতো উড়ে বেড়াতে।তোমার নামেই লিখবো হাজারো কবিতা গান।তোমাকেই গানের পাতায় চিত্রায়িত করে নিজের হৃদয়ের গহীনে বেঁধে রেখে দিতাম চিরকাল।”
ইয়ারাবী আরাভের দিকে আড় চোখে তাকালো।কিছু বললেন?নাহ বলিনি কিছু চোখ বুজে বাতাসের ঘ্রান নিতে ব্যাস্ত থাকা আরাভ বলল।
ইয়ারাবী মুখ লুকিয়ে হাসলো। কথা গুলো ওর হৃদয় খুব করে নাড়া দিয়েছে।ইসসস কি প্রেম প্রেম লাগছে।আরাভ ইয়ারাবীকে দেখছে।এতো সুন্দর কেন ওর মায়াময়ী?বিকেলে বেরিয়ে পড়লো ওরা ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশ্যে।ইয়ারাবী আরাভের দেয়া কালো স্লিভলেস হাতার স্যালোয়ার কামিজ টা পরে নিয়েছে।সেই সাথে ছোট্ট কালো পাথরের কানের দুল আর হাতে চিকন ব্রেসলেট। চুল গুলো আটকাতে গিয়ে ও পারেনি ইয়ারাবী।আরাভের পছন্দকে অজান্তেই প্রাধান্য দিচ্ছে ইয়ারাবী।স্নিগ্ধা রুমে এসে ইয়ারাবীকে দেখেই বলল ওয়াও ইয়ারাবী জামাটাতো বেশ!!তোকে ও ভীষন মানিয়েছে।ইয়ারাবী একটু হাসলো।সবাই রেডি হয়ে যে যার রুম থেকে বেরুলো।আরাভ তার কালো শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বেরুলো রুম থেকে।প্রিন্সিপ্যালের সাথে কথা বলতে বলতে চোখ চলে যায় মায়াময়ীর দিকে।বুকটা কেমন যেন করে উঠে আরাভের।তুফান শুরু হয়ে গেছে আরাভের বুকে।প্রিন্সিপ্যাল আর দুজন টিচার সবাইকে বের করে আনলো।রিজার্ভ গাড়িতে সবাই কে বসানো হলো।ড্রাইভারের পাশের সিটে আরাভ বসেছে।অপর গাড়িতে আছে অন্য স্টুডেন্ট আর বাকি টিচাররা।এখানে একজন টিচার আছেন।পুরো জার্নিতে আরাভ ইয়ারাবীকেই দেখে গেছে।আধঘন্টা জার্নির পর ন্যাশনাল পার্কে পৌছালো ওরা।দুজন লোক এসে ওদের সাথে জড়িত হলো।ওরা গাইড।সবাই হাঁটতে শুরু করলো।ইয়ারাবী নিজের মতো করে হাঁটছে।কোন খবর নেই ওর।কেউ নিয়ে গেলে ও বলতে পারবেনা।মেয়েটা এমন কেন?ভেবে পায়না আরাভ।একটু সামনে এগিয়ে ইয়ারাবীর হাত টেনে নিজের কাছে আনলো।ইয়ারাবী পাশে তাকিয়েই আরাভকে দেখতে পায়।
,
,
,
,
,
-এখানে কেন আনলেন?ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
-চুপচাপ হাঁটো।ধমক দিলো আরাভ।
-সবাই দেখবে আমাদের।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-তো???ভ্রু কুঁচকায় আরাভ।
-ছাড়েননা।নিজের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
আরাভ শক্ত করে ইয়ারাবীর হাত ধরে হাঁটতে থাকলো।গাইডরা ওদের গাছপালা চিনাচ্ছে।বিভিন্ন পোকামাকড় চিনাচ্ছে।হঠাৎ ইয়ারাবী সামনে এগুতে নিলেই আরাভ ওকে টেনে বুকের সাথে লাগিয়ে দেয়।অবাক হয়ে যায় ইয়ারাবী।আরাভের দিকে তাকাতে পারছেনা ও।সামনে তাকিয়ে দেখলো কালো একটা সামনে ওদের সামনে থেকে চলে গেলো।হাত পা কাঁপতে শুরু করলো ইয়ারাবীর।আরাভের হাত জোরে ধরে বসলো ইয়ারাবী।
আরাভ ওকে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে।
সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় একটা জায়গায় এসে বসলো ওরা।অনেকগুলো লাকড়ি একত্র করে আগুন জ্বালানো হয়েছে।সবাই বসে পড়লো।ইয়ারাবী ওর ফ্রেন্ডদের সাথে বসে আছে।আরাভ ইয়ারাবী কে দেখছে।সন্ধ্যা হিসেবে বেশ অন্ধকার লাগছে।মনে হচ্ছে যেন অনেক রাত।প্রিন্সিপাল স্যার আরাভ কে গান করতে বললেন।আমি পারিনা গান করতে।বলে উঠে আরাভ।
একটা তো চেষ্টা করুন মিঃ আজহার।বলে উঠেন প্রিন্সিপাল। আরাভের হাতে গিটার ধরিয়ে দিলো একজন স্যার।আরাভ কিছুক্ষন চুপ থেকে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।তারপর গিটারের তারে আঙ্গুল চালাতে চালাতে চোখ বুজে গলা ছেড়ে গান ধরলো,
Tu Nazm Nazm Sa Mere,
Hotho Pe Thehar Ja,
Mein Khwaab Khwaab Sa Tere,
Aakhon Mein Jaagun Re,
Tu Ishq Ishq Sa Mere,
Rooh Mein Aaky Bas Jaa,
Jis Ore Teri Sehnaiyi,
Us Ore Mein Bhaagun Re..
Na Nana..
Nana..
Hath Thaam Le Piya, Krty Hai Waada,
Abse Tu Aarju, Tu Hi Hai Iraada,
Mera Naam Le Piya Mein Teri Rugai,
Tere Hi Toh Peechy Baarsaat Aayi,
Barsaat Aayi..
Tu Itar Itar Sa Mere ,
Saanson Mein Bikhar Jaa,
Mein Fakeer Tere Kurbaat Ka,
Tujhse Tu Maagu Re,
ইয়ারাবী মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে আরাভকে।লোকটার চোখ গুলোর মায়ায় পড়ে যাচ্ছে।কি করে আটকাবে ও নিজেকে।লোকটাতো পাগল করে ছাড়বে ওকে।আডাভ গান করছে আর ইয়ারাবী মুচকি হেসে ওকে দেখছে।
গান শেষ হতেই ইয়ারাবী বলল আমার একটু বাহিরে যেতে হবে।বাহিরে কোথায় যেতে চাও তুমি?জিজ্ঞেস করলেন প্রিন্সিপাল স্যার।স্যার একটু দরকার আছে।বলে উঠে ইয়ারাবী।আমরা কেউ আসি তোমার সাথে।বলে উঠেন একজন ম্যাম।না ম্যাম আমি বেশি দূরে যাবোনা।বলে উঠে ইয়ারাবী।ওকে যাও কিন্তু সাবধানে।বলে উঠেন ম্যাম।
ওকে!!!উঠে দৌড়ে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে যায় ইয়ারাবী।সবাই যে যার মতো বসে আছে কিন্তু আরাভকে বেশ অস্থির দেখাচ্ছে।যতোটা সময় যাচ্ছে কর অস্থিরতা বেড়ে চলছে।ভ্রু কুঁচকে ঘড়ি দেখছে বারবার।হঠাৎ একজন গাইড বলল মাইয়াডা অহনো আইলোনা।সবার মাঝেই আতঙ্ক সৃষ্টি হলো।আরাভ উঠে দাঁড়ায় হঠাৎ।গাইড দুজনকে বলল চলুন আমার সাথে।ইয়ারাবী নিজের কাজ সেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলো ফোনের চার্জ শেষ।লাইট জ্বলছেনা আর।কোন দিকে যাবে ও বুঝতে পারছেনা।সামনে যাবে না পিছনে যাবে বুঝতে পারছেনা ও।কি করবে ও?চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার।কেমন কেমন শব্দ ও আসছে।আল্লাহ রক্ষা করো!!বিড়বিড় করে বলে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো ইয়ারাবী।হঠাৎ কোথাও পাড়া লেগে পা ফঁসকে পড়ে গেলো ও।অনূভব হলো মুখে প্রচুর ব্যাথা লাগছে।পায়ে হাতে ব্যাথা লাগছে।কোন মতে উঠে দাঁড়ালো ও।কেন আসলাম? পাপা নিয়ে যাও আমাকে প্লিজ।ভয় করছে আমার।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো ইয়ারাবী।
এদিকে আরাভ খুঁজছে ইয়ারাবীকে।ওর বুক ধুকধুক করছে। কই গেলো মেয়েটা?ইয়ারাবী!!!!ইয়ারাবী কই তুমি?সাড়া দাও চিৎকার করে ডাকছে আরাভ।ইয়ারাবী কই যাবে কি করবে বুঝতে পারছেনা।আরাভ খেয়াল করলো বেশ দূরে কাউকে দেখা যায়।লম্বা চুল ওয়ালা।লাইট মারলো সেদিকে।কেউ পিছে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে।আরাভ হাঁটছে সেদিকে।একটু এসেই বুঝলো আর কেউ না ওর মায়াময়ী।
,
,
,
,
,
,
-ইয়ারাবী!!!!!ডাকলো আরাভ।
,
,
,
,
,
,
কারোর ডাকে পিছে ফিরলো ইয়ারাবী।তারপর কিছুনা ভেবেই দৌড়ে এসে আরাভকে জড়িয়ে ধরলো ও।কাঁদতে লাগলো জোরে।আরাভ ইয়ারাবীকে জড়িয়ে ধরলো।কেঁদোনা আমি এসে গেছি ইয়ারাবী।বলে উঠে আরাভ।
প্লি্জ আমাকে নিয়ে যান।ভয় লাগছে আমার।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো ইয়ারাবী।আরাভ ওর মুখ সামনে এনে ধরলো তারপর কিছু না ভেবেই ইয়ারাবীর পুরো মুখে অজস্র চুমুর বন্যা বয়ে দিলো।ইয়ারাবীর কান্না বন্ধ হয়ে গেলো।আরাভ একটু সরে এলো।মেয়েটার ঠোঁট ফেঁটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।আরাভ ওর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে ইয়ারাবীর চোখের দিকে তাকায়।ইয়ারাবীর চোখজোড়া কি যেন বলতে চাইছে।আরাভ বুঝতে পারে ওর মনের ভাষা।তারপর ইয়ারাবীর ঠোঁট জোড়ায় আলতো করে চুমু দিয়ে রক্ত গুলো শুষে নিলো আরাভ।তারপর আলতো করে দুতিন বার চুমু দিয়ে ইয়ারাবীর ঠোঁট জোড়াকে নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিলো।
চলবে