The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 16

আরাবী উঠে দাঁড়ালো তারপর হালকা গলা পরিষ্কার করে বলল,
-I think our meeting has ended today.
-Oh.It’s done? নিরাশ হওয়ার মতো হেসে বলল আর্ভিন।
-Yeah.Don’t you think both of us should leave now.জিজ্ঞেস করলো আরাবী।
আর্ভিন ঘড়ি চেক করলো তৎখনাৎ।Oh its 12.00 am.নেক্সট খুব জলদি দেখা হচ্ছে।শয়তানি হেসে বলল আর্ভিন।
-আই ডোন্ট থিংক সো মিঃ আর্ভিন মাহবুব।হেসে বলল আরাবী।
-আর্ভিন উঠে দাঁড়িয়ে আরাবীর কাছে এসে দাঁড়ালো।তারপর একটু মুড নিয়ে বলল সময়ই সব বলে দিবে পরী।আর সাথে ছিল মুচকি হাসি।
তারপর আরাবীর কাছে মুখটা এগিয়ে নিয়ে আবার পিছিয়ে এসে আরাবীকে পার করে বেরিয়ে গেলো।আরাবী অবাক চোখে আর্ভিনের যাওয়ার পথে চেয়ে আছে।পরী!!!কাকে বলল এই লোক???ভাবতে থাকে আরাবী।
-ম্যাম দৌড়ে এলো আরাবীর ড্রাইভার।
-কি হলো কামাল কিছু বলতে?জিজ্ঞেস করলো আরাবী।
-বড় স্যারে কল দিছে।আপনারে নাকি কল দিছিলো আপনি ধরেন নাই।বলে উঠে ড্রাইভার।
আরাবী দ্রুত পার্স থেকে ফোন বের করলো।বাবাইয়ের ৩০ টা মিসড কল।ওর খেয়ালই ছিলোনা।লোকটার সাথে যতক্ষন মিটিং এ ছিলো ততক্ষন যেন হারিয়ে গেছিলো।আরাবী দ্রুত রোয়েনের নম্বরে কল করতেই অপরপাশ থেকে কল রিসিভ হলো।
-হ্যালো আরাবী কোন খবর নাই কেন?এতো বার কল দিচ্ছি ধরিস না কেন?কয়টা বাজে?ঘড়িটা চেক কর।চিৎকার করে বলছে রোয়েন।
-বাবাই আ’ম সরি।একটা মিটিং এ ছিলাম।তাই খেয়াল ছিলোনা।
-ঠিক আছে।জলদি ঘরে চলে আয়।কিছুটা রেগে বলল রোয়েন।
-ওকে বাবাই।বলতেই অপরপাশ থেকে কল কেঁটে গেলো।সিট বাবাই ভীষন রেগে গেছে।এতো দেরি কখন হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।
এদিকে গেস্টরা চলে যাচ্ছে।পিএস আরাবীর কাছে এসে বলল ম্যাম গেস্টরা চলে যাচ্ছে।আরাবী পিএসের সাথে গেস্ট দের কাছে গেলো।সবাই আরাবীকে বলে বিদায় হলো।আরাবী বেরিয়ে পড়লো বাসার উদ্দেশ্যে।
ঘরে পৌছুতেই দেখলো সোফায় রোয়েন আর রুহী বসা।রাত একটা বেজে গেছে অলরেডি।বাবাই মা কখনো এতো দেরিতে ঘুমায়না।কিন্তু আজ ওর জন্য ঘুমায়নি এখনো? খুব খারাপ লাগছে আরাবীর।আরাবী ঘরে ঢুকে বাবাই মায়ের সামনে এসে দাঁড়ালো।
-ভুল হয়ে গেছে মাফ করে দাও।মন খারাপ করে বলল আরাবী।
-ইটস ওকে।যাহ ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়।বলে উঠে রোয়েন।
-ওকে বাবাই।রুমে চলে যায় আরাবী।
বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে আরাবী।আজ কেমন যেন ঘুম আসছেনা ওর চোখে।আরাবী উঠে সোজা হয়ে বসে দু হাঁটুর ওপর হাত রেখে মেডিটেশনের মতো হয়ে বসলো।তারপর চোখজোড়া বুজে নিলো।
আর্ভিনের সাথে কাঁটানো মুহূর্ত গুলো চোখের সামনে ভাসছে।বন্ধ চোখজোড়া বন্ধ থাকতে চাইছেনা।তারপর ও জোর করে আধঘন্টা সেভাবে বসে রইলো আরাবী।
পরদিন ইয়ারাবীর কলেজে চলে আসে আরাভ।প্রিন্সিপ্যাল আরাভকে দেখা করতে বলেছে।এদিকে ইয়ারাবীর দুজন বান্ধুবী আরাভকে প্রিন্সিপ্যালের রুমে ঢুকতে দেখে।
ক্লাশে এসে ওরা বলাবলি করছিলো আরাভের কথা।
ইয়ারাবী ওদের কাছে এসে বসলো।
-কিরে আসার পর থেকেই দুজনে কি ফুসুরফাসুর করছিস।কাহিনী কি?জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
-প্রিন্সিপ্যালের রুমে একজনকে যেতে দেখলাম।ইশশশয় কি হ্যান্ডসাম ছিলো ছেলেটারে ইয়ারাবী।আমার তো খেয়েই ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো।বলে উঠলো স্নিগ্ধা।
-ইস কি খারাপ তোরা।একটা লোককে নিয়ে এভাবে বলছিস।বলে উঠে ইয়ারাবী।
স্নিগ্ধা আর অপরজন হেসে দিলো ইয়ারাবীর কথায়।
সেদিন ইয়ারাবীকে আর একবার ও কল দেয়নি আরাভ।ইয়ারাবী ভাবছিলো তাকে কি একবার জানাবে স্টাডি ট্যুরের কথা?সে কি ভাববে?তাকে কি প্রায়োরিটি দিয়ে ফেলছি?নাকি সে নিজেই নিয়ে নিচ্ছে।খাটে শুয়ে ফোন সামনে নিয়ে ভাবছিলো ইয়ারাবী।
কি করবে ও?থাক ওনি ফোন দিলেই জানাবো।খাট থেকে উঠে প্যাকিং সেড়ে শুয়ে পড়লো ইয়ারাবী।
সকালে রেহান মেয়েকে নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।
রাস্তায় মেয়ে কে কিভাবে থাকবে কিভাবে ঘুরবে কিভাবে খাবে কাদের সাথে থাকবে।পানির কাছে যাবেনা।আরো অনেক ইন্সট্রাকশন দিচ্ছিলো রেহান।মেয়েকে কখনো এভাবে দূরে যেতে দেয়নি।কিন্তু আজ দিতে হচ্ছে।মেয়ের আবদারের কাছে হেরে গেছে রেহান।মেয়েটা ছোট এখনো।বড় হলে বাবা মায়ের কষ্ট ঠিকই বুঝবে।কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে থামলো রেহানের গাড়ি।মেয়ের সাথে স্টেশনে ঢুকলো রেহান।ট্রেন খুলনা পর্যন্ত যাবে।সেখানে মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে লঞ্চে উঠে সুন্দরবন যাবে।মেয়েকে বসিয়ে কাছ থেকে চিপস কোক পানি বিস্কিট কিনে আনলো রেহান।
★★★★
-শোন আম্মু উল্টা পাল্টা কিছু খাবানা।পেট খারাপ হলে খুব প্রবলেম হবে।বলে উঠে রেহান।
-ওকে পাপা।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলো রেহান।খুব কষ্ট হচ্ছে মেয়েকে একা ছাড়তে।
-পাপা আমি ভালো থাকবো।প্লিজ চিন্তা করোনা।
রেহান সরে আসতেই ওর ফোন বেজে উঠলো।ফোন বের করে দেখলো রুপন্তী কল করছে।রেহান ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো।
-হ্যালো ইয়ারাবীকে ফোনটা দাও না প্লিজ।বলে উঠে রুপন্তী।
রেহান ফোন নিয়ে মেয়ের সামনে ধরলো।ধরো তোমার মা ফোন দিছে।
ইয়ারাবী কানে ফোন ধরলো,
-হ্যালো মা কি অবস্থা তোর?জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
-ভালো মাম্মা মাত্রই এলাম।আর এখনই চিন্তা করছো?
-তোর খারাপ লাগছেনা।আমাদের তো খুব খারাপ লাগছে।বলে উঠে রুপন্তী।
-মাম্মা আমার ও খারাপ লাগবে তোমাদের জন্য।দ্রুত চলে আসবো।বলে উঠে ইয়ারাবী।
ইয়ারাবীকে ট্রেনে উঠিয়ে দিলো রেহান।খ নম্বর বগি ওদের।এখানে শুধু ওরাই থাকবে।খ গ ঘ নম্বর বগিতেই ওদের কলেজের সবাই থাকবে।ট্রেনের জানালায় দাঁড়িয়ে আছে রেহান।মেয়েকে দেখে নিচ্ছে বারবার।
এদিকে আরাভ খ নম্বর বগিতে উঠতেই রেহানকে দেখতে পেলো।নেমে এলো ও।
রেহানের পিছনে এসে দাঁড়ায় আরাভ।ইয়ারাবী ওর ফ্রেন্ডদের সাথে গল্প করছে।রেহান পিছনে ফিরতেই আরাভকে দেখলো।
-আরে আরাভ তুমি?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
-জি একটা স্টাডি ট্যুরে যাচ্ছি আমার বাবার পরিবর্তে। বলে উঠে আরাভ।
-ওহ আমার মেয়ে ও যাচ্ছে।ইয়ারাবী আমার মেয়ে।ওর একটু খেয়াল রেখো বাবা।বলে উঠে রেহান।
-ওকে আঙ্কেল ডোন্ট ওয়ারি।বলে হাসলো আরাভ।
ট্রেনে উঠে খ নম্বর বগির নিজের সিটে বসলো আরাভ।প্রিন্সিপ্যাল এসে সবাই কে দেখে গেলো।আরাভ কে দেখে প্রিন্সিপাল এগিয়ে এলো।মিঃ আজহার কোন সমস্যা হলে জানাবেন।বলে উঠে প্রিন্সিপ্যাল।
-ওকে বলে উঠে আরাভ।
এদিকে স্নিগ্ধা আর বাকি মেয়েরা আরাভকে দেখে শেষ।ইয়ারাবী কে ডাকছে স্নিগ্ধা দেখ ইয়ারাবী কালকের লোকটা।কিছুটা বিরক্ত হয়ে ইয়ারাবী স্নিগ্ধার পাশে তাকায়।আরাভ ল্যাপটপে কাজ করছে।ইয়ারাবী ভয়ে চোখ বড় করে সরে বসলো।
-কিরে কি হলো?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।
-ন না না কিছু না।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-লোকটাকে দেখে এমন করছিস কেন?একে অপরকে চিনিস তোরা?জিজ্ঞেস করে স্নিগ্ধা।
ইয়ারাবীৃিছু বললনা।ভয় লাগছে ওর।আরাভ ল্যাপটপ ভাজ করে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে।হঠাৎ পাশে বসা ইয়ারাবীকে দেখলো আরাভ।ফোন বের করলো আরাভ।কল দিলো ইয়ারাবীর নম্বরে।ফোনে আরাভের কল দেখে ঘাবড়ে যায় ইয়ারাবী।পাশে আরাভকে আড় চোখে দেখলো।
চোখ বড় করে ইয়ারাবীকে কল রিসিভ করতে বলল আরাভ।কল রিসিভ করলো ইয়ারাবী।
-হ্যালো!!!ভয়ার্ত কন্ঠে বলল ইয়ারাবী।
-পাশের মেয়েকে উঠে যেতে বলো।বলে উঠে আরাভ।
-মা মানে কেন?ও উঠবেনা।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-যা বলছি করো।ধমক দিলো আরাভ।
-ওকে দেখছি।ফোন কেঁটে দিলো ইয়ারাবী।
স্নিগ্ধা একটু ঐ সিটটায় গিয়ে বোস না প্লিজ।বলে উঠলো ইয়ারাবী।কেন?জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা।মানে আসলে আমার কেমন গরম লাগছে।প্লিজ দোস্ত একটু বস না ঐখানে।ওকে যাচ্ছি।উঠে চলে গেলো স্নিগ্ধা। ইয়ারাবী আরাভের দিকে তাকালো।আরাভ মুচকি হেসে ইয়ারাবীর পাশে বসে পড়লো।ইয়ারাবী হাত চেঁপে ধরে আছে আরাভ।আজিব এখানে কেন এলেন?জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
তোমার খেয়াল রাখতে।বলল আরাভ।খেয়াল রাখবেন মানে?এখানে সবাই আছে আমার খেয়াল রাখার।প্লিজ সরে যান সবাই খারাপ ভাববে।আরাভ ইয়ারাবীর গালে চুমু খেয়ে বলল আমার কাজ করতে দাও আমাকে।চুপ থাকো নাহলে,ইয়ারাবীর ঠোঁটের কাছে ঠোঁট আনতে সরে গেলো ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর চুল গুলো ছেড়ে দিলো।ওর কানের কাছে ঠোঁট এনে ফিসফিসিয়ে বলল বলেছিলামনা এগুলো বাঁধবেনা।
ইয়ারাবী মলিন চোখে তাকিয়ে আছে আরাভের দিকে।রাতে ইয়ারাবী আরাভের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়।আরাভ পুরো জার্নিতে ওকে জড়িয়ে রেখেছিলো নিজের সাথে।
খুলনায় পৌছে লঞ্চে উঠলো ওরা।আর ছয় ঘন্টার পথ বাকি।
লঞ্চের কিনারে দাঁড়িয়ে পানি দেখছে ইয়ারাবী।চাঁদের আলোয় চমৎকার লাগছে পুরো জায়গাটা।হঠাৎ কাঁধে কারোর নিশ্বাস পেতে শুরু করলো ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর কাঁধের চুল সরিয়ে সেখান ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই সরে যেতে চাইলো ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে বেঁধে রাখলো।তারপর ওর কানে ফিসফিস করে বলল,
এই সুন্দর পরিবেশটাকে এঞ্জয় করতে দাও বিউটিফুল।
ইয়ারাবী ধড়ফড় করা বুক নিয়ে আরাভের বুকের সাথে লেগে রইলো।পরদিন সকাল সাতটায় সুন্দরবনে পৌছে গেলো ওরা।সেখান থেকে রিজার্ভ গাড়ি এসে ওদের সাজনেখালীর সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প ওয়াইল্ড লাইফ রিসোর্টে নিয়ে এলো।ন্যাশনাল পার্ক এ রিসোর্ট থেকে বেশ কাছেই।এ রিসোর্টটির সামনেই বয়ে গেছে দত্ত নদী।রিসোর্টটি বাহির থেকে দেখলে মনে হবে কুড়ে ঘর।কিন্তু ভিতরে চমৎকার ব্যাবস্থা আছে।প্রত্যেকটা রুম খুব সুন্দর সাজানো।যে যার রুমে চলে গেলো। বিকেলে বের হবে ওরা ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশ্যে।
চলবে