The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 13

আরাভ চলে যাওয়ার সময় একটা বার ও পিছে তাকায়নি।ওর ঠিক পিছনেই ছিলো ইয়ারাবী।হয়ত মেয়েটা একটা বার আরাভের দেখা পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।কিন্তু সেটা আর হলোনা।চলে গেলো আরাভ।মনটা না চাইতে ও ভীষন খারাপ হয় ইয়ারাবীর।ঠোঁট কামড়ে আরাভের যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে ও।রোয়েন রুহীর রেহান রুপন্তী বসে আছে রোয়েনের রুমে।রোয়েনের পুরো শরীর বেয়ে দরদর করে ঘাম ঝড়ছে।চোখ বন্ধ করে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে রোয়েন।আরাবী বাবার মাথার কাছে বসে আছে।রুহী পানি ঢালছে।
-ভাবি এমন কি আগে হয়েছিলো কখনো? জিজ্ঞেস করে উঠে রেহান।
-না ভাইয়া।আগে হয়নি।প্রেসার সবসময় কন্ট্রোলেই থাকে।কিন্তু আজ হঠাৎ রুমে এসেই বিছানায় পড়ে গেলো।বলে কাঁদতে থাকে রুহী।
-রুপন্তী বোনের কাঁধে হাত রাখলো।আপি চিন্তা করিসনা।জিজু ঠিক হয়ে যাবে।মন খারাপ করে বলল রুপন্তী।
প্রেশারের মেশিন দিয়ে প্রেশার মাপা হলো রোয়েনের।প্রেশার লো ওর।মাথা পানি দেয়ার কিছু সময় পর চোখ খুলে রোয়েন।চোখজোড়া দূর্বল দেখাচ্ছে।রুহী রোয়েনের বুকে আলতো করে হাত রাখে।
-কেমন লাগছে এখন?জিজ্ঞেস করলো রুহী।
-খুব খারাপ লাগছে।আস্তে বলল রোয়েন।
-ভাবি আমরা বের হয়ে যাই।রুমের লাইট অফ করে এসি টা ছেড়ে দেন।রুম কে একদম কোলাহল মুক্ত রাখেন।বলে রুপন্তী কে নিয়ে উঠে দাঁড়ায় রেহান।আসি তাহলে।
-রুহী ও উঠে দাঁড়ালো।থেকে যান ভাইয়া।রুপন্তী থাক না?
-না আপি ওর অফিস আছে।ইয়ারাবীর ও সামনে পরীক্ষা।পড়াশুনা হয়না এমনি। আরেকদিন এসে থাকবো নে।বলে উঠে রুপন্তী।
রুহী আর আরাবী রুপন্তী আর রেহানকে এগিয়ে দিতে বেরিয়ে পড়লো।ইয়ারাবী খালাকে জড়িয়ে ধরে আছে।ভাগনীর মাথায় হাত বুলায় রুহী,
-কিরে আম্মু??কি হলো?জিজ্ঞেস করে রুহী।
-খালামনি কেন জানি ভালোই লাগছেনা।বলে উঠে ইয়ারাবী।
.
-কেন মা।কি হয়েছে আমার মা টার?মেয়েকে সামনে এনে ওর দুগালে হাত রেখে বলল রুহী।
জানি না খালামনি।রুহী কে আবার জড়িয়ে ধরলো ইয়ারাবী রুহী ও মেয়েকে পরম মায়ায় জড়িয়ে ধরে আছে।ইয়ারাবী মা বাসায় চলো।জেঠু অসুস্থ খালামনি রুমে যাবে।খালামনিকে ছাড়ো মা।মেয়েকে সরিয়ে বলল রুপন্তী।ইয়ারাবী সরে এলো।খালামনি আসি তাহলে।আপু আসি আরাবীর থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুপন্তী রেহান আর ইয়ারাবী।আরাভ ঘরে এসে রুমের কাঁচের শোপিজ গুলো ভেঙ্গে একাকার করে ফেলেছে।ভাঙ্গচুরের শব্দে আকরাম আজহার দৌড়ে রুমে এলো।আরাভ অনবরত চিৎকার করছে আর জিনিস পত্র ভাঙ্গচুর করছে।ওর বোনের দিকে লোকগুলো তাকানোর সাহস পায় কই?ইচ্ছে হচ্ছিলো দুজনকে মেরে দিতে তখনই।ভীষন রাগ হচ্ছে আরাভের।আকরাম আজহার আরাভ কে জড়িয়ে ধরলো।
-আব্বু কি করছো এসব?রাখো এগুলো।বলে উঠে আকরাম।
-আঙ্কেল প্লিজ আমাকে ছাড়েন।শক্ত গলায় বলল আরাভ।
-না আব্বু প্লিজ।আরাভকে বসালো আকরাম আজহার।মাথা ঠান্ডা করো।কি হয়েছে বলবে?কি আরাবীর জন্য খারাপ লাগছে?
-আরাভ আকরাম আজহারের দিকে তাকায়।আপনি কি করে বুঝলেন?
-আমি ও ভাই।আমার ও বোন আছে ঐযে তোমার সেলিনা ফুপি।ওকে ও খুব ভালোবাসি আমি।আজ ওর সাথে এমন কিছু হলে তুমি যা করেছো আমি ও ঠিক তেমন টাই করতাম।জানো অতিরিক্ত রাগ তোমার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।আর কখনো এমন করোনা।একনাগাড়ে বলতে লাগলেন আকরাম আজহার।
-আরাভ এখনো রাগে ফুঁসফুঁস করছে।ওর পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে।আকরাম আরাভের মাথায় হাত বুলিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।
আরাভ ফুঁসছে।চোখ বন্ধ করে রাগকে বশে আনার চেষ্টা করলো কিন্তু হচ্ছেনা।এখন কাউকে দরকার যার সাথে কথা বললে রাগ একটু হলে ও কমে আসবে।ঘরে ফিরে রুমে চলে আসে ইয়ারাবী।একটা পিংক থ্রিকোয়াটার ট্রাউজার আর কালো টিশার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো ইয়ারাবী।
শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসে ভিজা চুল গুলো তোয়ালের মাঝে রেখে আলতো হাতে ঘষে ঘষে মুছতে শুরু করলো।চুল গুলো হাওয়ায় উড়িয়ে খাটে বসে ফোন হাতে নিতেই
Ar chowdhury Is calling
ইয়ারাবী চোখ গুলো বলের মতো করলো।এ আবার এখন ফোন দেয় কেন?ইয়ারাবী ফোনের দিকে চেয়ে আছে।
চোখ জোর করে বন্ধ করে নিলো ইয়ারাবী।
কান থেকে ফোন সরায় আরাভ।রাগে ওর কপালের রগ খাড়া হয়ে আসছে।
আবার ও কল দিলো ইয়ারাবীকে।কিন্তু ইয়ারাবী তো ভয়েই কল ধরতে পারছেনা।
আজ যা হলো তারপর থেকে বুকের ধুকপুকানি লেগেই আছে।
চোখ বন্ধ করতেই ছাদের দৃশ্য আর কাপল ড্যান্সের সময়টুকু ভেসে উঠে ইয়ারাবীর চোখের সামনে।হৃদয় স্পন্দনের গতিবেগ বেড়ে যায়।কিছুসময় পর ইয়ারাবীর ফোনে মেসেজ এলো।
Ami jani apnii ghumanni.phone er samne boshe achen.Call recieve korun nahole khub kharap hobe.
ইয়ারাবী বুকের ধুকপুকানি নিয়ে ফোন হাতে নেয়। ঠিক তখনই ফোন বেজে উঠে ইয়ারাবীর।
বড় নিশ্বাস নিয়ে কল রিসিভ করলো ইয়ারাবী।
-কি হলো কল রিসিভ করছিলেননা কেন?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করে আরাভ।
-আসলে মানে চোখ লেগে আসছিলো।ইতস্তত করে বলল ইয়ারাবী।
-আপনি বসে ছিলেন তারপর ও কল রিসিভ করেননি।বাজে অভ্যাস।বলে উঠে আরাভ।
★★★★
-কি করে জানলেন?বলে উঠে ইয়ারাবী।
-আপনার চোখ লেগে আসলে কল রিসিভ করতেন সাথে সাথে।কারন তখন চোখে ঘুম থাকতো।আর আপনার কন্ঠ ও সতেজ।তারমানে জেগেই ছিলেন।বলে উঠে আরাভ।
-ঢোক গিলে ইয়ারাবী।
-রেডি হয়ে নিন।আমি আসছি আপনার বাসার নিচে।বলে উঠে আরাভ।
-ক ক কেন?ভয়ে পেয়ে বলল ইয়ারাবী।
-জাস্ট সাট আপ।ডু এজ আই সে।বলে কল কেঁটে দিলো আরাভ।
ইয়ারাবী কান থেকে ফোন সরালো।কি বলল এই লোক।ওনি আসবেন আমাকে নিতে?কেন কই যাবেন?আল্লাহ কি করবো এখন?পাপা মাম্মা কে কি বলবো?ভয়ে বিড়বিড় করতে থাকে ইয়ারাবী।
কি করবে ও?পাপা মাম্মা কে একবার দেখে আসবে যেয়ে?তাই করবে।ইয়ারাবী নিচে নেমে রেহান রুপন্তীর রুমে এলো।দুজনেই ক্লান্তির কারনে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।ইয়ারাবী রুমে এসে ফুল ট্রাউজার পরে নেয়।আর গেঞ্জীর ওপর লম্বা কোটি পরে চুল গুলো শুকিয়ে ঝুঁটি করে নেয়।
কিছুক্ষন পর আরাভের কল এলো ইয়ারাবীর ফোনে।ইয়ারাবী ফোন রিসিভ করে কানে রাখে।
-নিচে নামুন।বলে উঠে আরাভ।
-আপনি কি করে চিনলেন?জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
-বেশি কথা বলেন আপনি।জাস্ট নিচে নামেন।
-রুড!!!ফিসফিসিয়ে বলল ইয়ারাবী।
-কি বললেন?চিৎকার করে উঠে আরাভ।
-ন নানা কিছু না।আসছি আমি।
ইয়ারাবী ফোনের টর্চ লাইট জ্বালিয়ে নিচে নামতে শুরু করলো।পুরো ঘর অন্ধকার।লাইট জ্বালালে সবাই উঠে যাবে।যেন তেন করে ঘর থেকে বেরুতেই পোষা কুকুর টমি চিৎকার করে উঠে।
ইয়ারাবী কুকুরের পাশে বসে ওর গলায় আলতো করে আচড় দিতে লাগলো।মায়াবী স্বরে বলল টমি ইটস মি ইয়ারাবী।ডোন্ট সাউট।
টমি কিছুটা বুঝে চুপ হয়ে গেলো।ইয়ারাবী উঠে দাঁড়িয়ে গেট থেকে বের হতেই দেখলো আরাভ গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার দাঁড়ানোর স্টাইলে হার্ এটাক হয়ে যেতে বেয় ইয়ারাবীর।
আরাভ হাত দুটো প্যান্টের পকেটে ভরে রেখেছে।আর ডান পা টাকে একটু কার্ভ করে রেখেছে।
ইয়ারাবীর পা যেন থেমে আসতে চাইছে।
ইয়ারাবীকে দেখে আরাভ সোজা হয়ে দাঁড়ায়।ইয়ারাবী হেঁটে গাড়ির কাছে আসতেই আরাভ বাঁকা হেসে ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটের দরজা খুলে দিলো।ইয়ারাবী ভিতরে ঢুকে বসলো।আরাভ ড্রাইভিং সিটে বসে বলতে লাগলো,
-খুব ইম্পরট্যান্ট একটা কথা বলতে চাই আপনাকে।
-জি আড় চোখে আরাভকে দেখে নেয় ইয়ারাবী।ইস কি অসাধারন লাগছে লোকটাকে ওহ মাই গড।কালো শার্টের হাতা কুনুই পর্যন্ত গুঁজে রেখেছে।পরনে ডার্ক ব্লু ডেমিন প্যান্ট।হাতে কালো চামড়ার মোটা একটা ঘড়ি।একটা ঘড়ি।উফ কি সাংঘাতিক লাগছে ওনাকে!!ইয়ারাবীর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে উঠে।তারপর সোজা তাকায় ইয়ারাবী আর বলে,
-জি বলুন।
-আমি এখন থেকে তুমি করে বলবো আই মিন তোমাকে।তোমার এখানে প্রবলেম থাকুক আর না থাকুক আই ডোন্ট কেয়ার।মুখ শক্ত করে বলল আরাভ।
-ইয়ারাবী অবাক চোখে আরাভের দিকে তাকিয়ে চারপাশে তাকায়।তারপর বলে উঠে আমরা কই যাচ্ছি?
-আরাভ ভ্রু কুঁচকে বলল জানিনা।
-জানিনা মানে কি?পাপা মাম্মা জানেনা আমি বাহিরে ভয়ে কেঁদে দিবে ইয়ারাবী।
-একটা লোকের সাথে বের হবা তাও তোমার বাবা মাকে জানিয়ে?ড্রাইভিংয়ে মগ্ন আরাভ বলে উঠলো।
-আমি কখনো কারোর সাথে এতো রাতে বের হয়নি।তারপর আবার এমন অচেনা লোক।আমি বাসায় যাবো প্লিজ।বলে উঠে ইয়ারাবী কেঁদে দিয়ে।
-আরাভ টিসু এগিয়ে দিলো ইয়ারাবীর দিকে।ভোরের আগে বাসায় পৌছে যাবে ওকে?
-চোখ মুছে নিলো ইয়ারাবী তারপর বলল ওকে।
গান ছাড়তে নিতেই আরাভ ইয়ারাবীর হাত খপ করে ধরে বলল কি করছো তুমি?
-গান ছাড়বো।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-নাহ ছাড়বেনা গান।ইয়ারাবীর হাত চেঁপে বলল আরাভ।
-প্লিজ একটা!!(ইয়ারাবী)
-না!!!শক্ত গলায় বলল আরাভ।
-প্লিজ!!!নিরীহ মুখ করে ইয়ারাবী।
-ওকে ক্যারি অন।সামনে তাকিয়ে বলল আরাভ।
ইয়ারাবী খুঁজে খুঁজে স্যানোরিটা গানটা ছাড়লো।
গান চলছে
I love it when you call me señorita
I wish I could pretend I didn’t need ya
But every touch is ooh la la la
It’s true, la la la
Ooh, I should be running
Ooh, you keep me coming for you
Land in Miami
The air was hot from summer rain
Sweat dripping off me
Before I even knew her name, la la la
It felt like ooh la la la,,,,,,,,,,,,,,,,
গানটা চলার সময় আরাভ বারবার ইয়ারাবীকে দেখছিলো।ইয়ারাবী মন দিয়ে গান শুনছে।আরাভ একটা হাত এগিয়ে ইয়ারাবীর কপালের চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিতেই ইয়ারাবী চোখ বুজে নেয়।
আরাভ মুখ এগিয়ে ওর কপালের সাইডে চুমু দিলো।কিছুটা কেঁপে উঠে ইয়ারাবী।সরে এলো আরাভ।গাড়ি চলছে আঁকা বাঁকা রাস্তা দিয়ে।হঠাৎ আইস্ক্রিমের দোকান দেখে ইয়ারাবী বলল আইস্ক্রিম খাবো।আরাভ পাশে তাকায়।তারপর চুপচাপ গাড়ি থেকে বেরিয়ে ইয়ারাবীকে বের করলো গাড়ি থেকে।
ইয়ারাবী একটা বেঞ্চিতে বসে আছে।আরাভ দুজনের জন্য দুটো আইসক্রীম নিয়ে এলো।ইয়ারাবীর হাতে একটা ধরিয়ে ওর পাশে বসে খেতে আরম্ভ করলো।আইসক্রীম খেয়ে উঠে পড়লো ওরা।ইয়ারাবী গাড়িতে বসে পড়ে আরাভের পাশে।সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে আরাভ।ইয়ারাবী সামনে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ ইয়ারাবীর দিকে চোখ পড়তেই আরাভ খেয়াল করলো ওর ঠোঁটের কোনে আইসক্রীম লেগে আছে।আরাভ মুখ বাড়িয়ে ঠোঁট থেকে আইসক্রীম টুকু খেয়ে নিলো।
ইয়ারাবী চোখ বড় করে চেয়ে আছে আরাভের দিকে,
-হোয়াট?ডোন্ট কেয়ার ভাবে জিজ্ঞেস করলো আরাভ।
-কি করলেন এইমাত্র এটা?জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।
চুপ থাকো এবার নাহলে পুরোটাই করে দিবো।
ইয়ারাবী কিছুটা বুঝে চুপ হয়ে গেলো।
চলবে