The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 08

ফোনে আরাভের ম্যাসেঞ্জার খুলে বসে আছে ইয়ারাবী।লোকটা সবসময় দুপুর তিনটা আর রাত ১১টার মধ্যেই নক করে কিন্তু আজ দুপুর ৩.৩০ বাজে।এখনো করলোনা।মনটা কেমন করছে অজানা পুরুষের জন্য।একয়েকদিনে লোকটা যেন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।মন টা ভীষন খারাপ হয়ে যায় ইয়ারাবীর।দুপুর পেরিয়ে রাত হলো।আরাভের কোন খবর না পেয়ে মনটা ভীষন খারাপ হয়ে যায় ইয়ারাবীর।
আরাভকে একটা মেসেজ পাঠাতে গিয়ে ও পারলোনা।এমনিতে কম বেহায়াপনা দেখায়নি ও লোকটার সাথে। আর দেখাবেনা।ওর ও পার্সোনালিটি বলতে কিছু তো আছে।ফোন পাশে রেখে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয় ইয়ারাবী।৮ ঘন্টা আগে সে অনলাইন ছিলো কিন্তু আজ নেই।কি হলো?হয়ত ব্যাস্ত খুব।ঘুম আসছেনা ইয়ারাবীর।চোখের কোনা এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো বালিশে।গালে হাত রাখে ইয়ারাবী।তার চোখে পানি এলো কেন?ও কি কাঁদছে?কেন কাঁদছে?কাঁদার মতো কি কিছু হয়েছে?সেই অজানা পুরুষটির জন্য কি তার মন টানছে?কেন হবে এমন?হঠাৎ রুমে কারোর প্রবেশ পেয়ে চোখ মুছে নেয় দ্রুত।
রুপন্তি আজ মেয়ের সাথে ঘুমুবে ঠিক করেছে।রেহানের সাথে ঝগড়া হলেই মেয়ের কাছে আসে রুপন্তী।তবে আজ অন্য ব্যাপার।কেন যেন মনে হচ্ছিলো মেয়েটার কথা।তাই দেখতে চলে এলো।
মেয়েরা পাশে বসে রুপন্তী।ইয়ারাবী মাকে দেখে মিষ্টি হাসলো।
-কিরে আম্মু ঘুম আসছেনা তোর?জিজ্ঞেস করে উঠে রুপন্তী।
-না মাম্মা আসছেনা ঘুম।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-কেন মা কি হয়েছে হঠাৎ?জিজ্ঞেস করে রুপন্তী।
-ভালো লাগছেনা মাম্মা।বলে উঠে ইয়ারাবী।
রুপন্তী মেয়ের পাশে শুয়ে ওর চুলে বিলি কাটতে শুরু করে।চোখ বন্ধ কর ঘুম এসে যাবে।মায়ের কথায় মলিন হেসে চোখ বুজে ইয়ারাবী।
ঘরে ফিরেই আরাভের রুমে আসে অর্পন।আরাভ প্যাকিং শেষ করে লাগেজ গুলো কাবার্ডের পাশে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।
ঘরে এসে এমনটা মোটেই আশা করেনি অর্পন।তারওপর আবার বাহিরে মিস ফেন্সিডিল কে দেখলো।কেঁদে কেঁটে একাএকার করে চলে যাচ্ছিলো ও।
-ভাই কিসের জন্য প্যাকিং করছো?মানে কোথা ও যাবে কি?জিজ্ঞেস করে অর্পন।
-আরাভ নিজের কাজ করেই যাচ্ছে।
ভাইয়ের উত্তর না পেয়ে অর্পন বলল ফেন্সি কি কিছু করেছে?যার জন্য প্যাকিং করছো?আরাভ অর্পনের দিকে রাগী চোখে তাকায়।ভাই মজা করছিলাম আমি।কই যাচ্ছো তুমি?আরাভের কাছে এসে দাঁড়ায়।এগুলো প্যাকিং করছো কেন?কই যাচ্ছো?জিজ্ঞেস করতে থাকে অর্পন।
-আমি দেশে ফিরছি অর্পন।বলে উঠে আরাভ।
-দ দেশে!!! হঠাৎ?কেন ভাই?জিজ্ঞেস করে অর্পন।
-আমাকে দরকার আমার পরিবারের।খুব জলদি ফিরবো তোর কাছে।আমার ফিরার আগ পর্যন্ত তুই সব দেখা শুনা করবি ওকে?বলে উঠে আরাভ।
-করবো ভাই।কোন সমস্যা হয়নি তো?জিজ্ঞেস করে অর্পন।
-আমার বাবা অনেক অসুস্থ।বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো আরাভ।
ভাই তোমাকে ছাড়া কেমন করে থাকবো জানিনা।কিন্তু তোমার বাবার কাছে যাওয়াটাই অনেক বেশি ইম্পরট্যান্ট এখন।আমি চাই আমাদের যেন খুব শীঘ্রই সাক্ষাৎ হয়।নিজেই কথা গুলো বলে আরাভের রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রাত একটায় বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয় আরাভ।চোখজোড়া প্রচন্ড জ্বালা করছে।হঠাৎ ফোনটার দিকে চোখ যায় আরাভের।
ফোনটা হাতে নিয়ে অনকরতেই খেয়াল হলো ইয়ারাভের কথা।তখনই আরাভের মনে পড়লো,
ইয়ারাভকে কিছু দিন আগে জিজ্ঞেস করছিলো ও কেন আপসেট?কিন্তু ইয়ারাভ কিছু বলে নি।তবে এখন আরাভ বুঝতেই পারছে ইয়ারাভের সেদিন মন খারাপের কারন বাবাই ছিলো,কিন্ত ও লুকিয়েছে কথা গুলো।নাহলে ও আরো আগেই বাংলাদেশ যেতে পারতো।ভীষন রাগ হয় আরাভের মেয়েটার প্রতি।
মেয়েটা ওর কাছে কথা গুলো না লুকালে কি পারতোনা?
রাগে গা জ্বলছে আরাভের।তবে কাল সকাল ১১ টায় ফ্লাইট ঘুমিয়ে যাওয়া উচিৎ।এই ভেবে ঘুমিয়ে যায় আরাভ।
এদিকে ইয়ারাবী আরাভকেই ভাবতে থাকে।কলেজে স্যারের লেকচারেও মন বসাতে পারছিলোনা ইয়ারাবী।
কাকে বলবে এই কষ্ট গুলো।নিজের ভিতরেই দমিয়ে রাখতে হচ্ছে কষ্টগুলো।কতো বার মেসেজ পাঠাতে গিয়ে ও পারলোনা ইয়ারাবী।
আরাভের লাগেজ গুলো সার্ভেন্টসরা নামাতে শুরু করেছে।হোয়াইট কালারের একটা শার্ট পরেছে আরাভ।
শার্টেরস্লিভ গুলোকে কুনুই পর্যন্ত ভাজ করা।হাতে কালো বেল্টের একটি দামি ঘড়ি।আর সাথে আছে কালো প্যান্ট।
রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে আসতেই অর্পন আরাভ কে জোরে জড়িয়ে ধরলো।
আরাভ কে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি ঝরাতে থাকে অর্পন।
আরাভ অর্পন সরাতে থাকলে দ্রুত চোখের পানি মুছে নেয় দুজনেই।
-ভালো থাকিস।কথা হবে আমাদের।(আরাভ)
-তোমাকে ছাড়া কি ভালো থাকা হবে ভাই?বলে উঠে অর্পন।
আরাভ আবার ও অর্পন কে জড়িয়ে ধরলো।আমি খুব জলদি ব্যাক করবো।অফিসের সব কিছু দেখে রাখবি ওকে?বলতে থাকে আরাভ।
ভাই।আই উইল মিস ইউ ভাই?অর্পনের চোখ জোড়া বেয়ে অশ্রু গড়াতে থাকে।
-মিস ইউ টু।আরাভ সরে এসে বাহিরে যেতে থাকে।অর্পন ও ভাইয়ের পিছু পিছু বের হয়ে যায়।আরাভকে এয়ারপোর্টে পৌছে দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয় অর্পন।
★★★★
তিনদিন পার হয়ে যায়।আরাভ বাংলাদেশে পৌছালো সবে।
সকল ফর্মালিটিস শেষ করতে করতে প্রায় দুঘণ্টা লেগে গেলো।সেগুলো শেষ করে টার্মিনালের কাছে আসতেই আকরাম আজহার কে দেখতে পায় আরাভ।
আকরাম আজহার দ্রুত এসে আরাভ কে বুকে জড়িয়ে নিলেন,
-কেমন আছো আরাভ?বলে উঠেন আকরাম।
-ভালো।আপনার কি খবর?জিজ্ঞেস করে অারাভ।
-তোমাকে দেখে অনেক ভালো লাগছে।তা বাবা গাড়িতে আসো।যেতে যেতে কথা বলি।বলেন আকরাম আজহার।
-ওকে।আকরাম আজহারের সাথে গাড়িতে উঠে বসলো আরাভ।
আকরাম আজহার কে ওনার পরিবারের সবার কথা জিজ্ঞেস করে আরাভ।ওনি জানালেন সবাই ভালো আছে।
ঘরে পৌছুতেই সাদিয়া আন্টি আরাভকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে আরম্ভ করলেন। আজ অর্পন এলে খুব বেশি খুশি হতে ওনি।তবে আরাভ ওনার ছেলেই।আরাভকে যখন আকরাম আজহার নিয়ে আসেন।তখন সাদিয়া আন্টিই ওকে নিজের ছেলের মতো ভালবেসেছেন।
-কি করছো সাদি?ঘরে তো ঢুকতে দাও।ছেলেটা খুব টায়ার্ড।বলে উঠেন আকরাম আজহার।
-সাদিয়া সরে আসেন।আব্বু তোমাকে দেখে খুব ভালো লাগছে।কতো বড় হয়ে গেলো ছেলেটা।আসো আব্বু ঘরে আসো।অশ্রুসজল কন্ঠে বলেন সাদিয়া আক্তার।
আরাভ ওনাদের সাথে ঘরে ঢুকে গেলো।সাদিয়া আন্টি খুব বড় আয়োজন করেছেন আরাভের জন্য।তনে সকল কিছুই লো স্পাইশির।অর্পন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো ভাই অনেক স্পাইশি খাবার খেতে পারেনা।
খাবার শেষে অারাভ রুমে এসে শুয়ে পড়লো।তারপর নিজের বাঙ্গালী কিছু লোকদের লাগিয়ে দিলো কাজে।
কয়েকজনকে রোয়েনের হাসপাতালের কাজে আর কয়েকজনকে আরাবীর অফিসে।
এদিকে আরাভ নতুন টেন্ডার তৈরির কাজে লেগে গেলো।এরই মাঝে ইয়ারাবীকে খুব মনে পড়তো আরাভের।কিন্তু রাগটা যে তার ওপরে ছিলো।
ওর ইগো ওকে বারবার নিষেধ করেছিলো ইয়ারাবীকে ছোট্ট একটি মেসেজ করতে।
এভাবে আরো কয়েকদিন পার হওয়ার পর আরাভের ম্যাসেঞ্জারে মেসেজ আসে,
-Ami ki kono vul korechi?Amar kono kaje koshto peyechen apni?khub jante icche hocche.(Yarav)
ফোন হাতে নিয়ে মুখ শক্ত হয়ে আসে আরাভের।মেসেজ পাঠিয়ে ফোনের দিকে চেয়ে থাকে ইয়ারাবী।
বেশকিছুক্ষন অপেক্ষার ফল হিসেবে আরাভের কল আসে ম্যাসেঞ্জারে।ফোন হাতে নিয়ে চমকে যায় ইয়ারাবী।মাথা ঘুরিয়ে দেখতে লাগলো মাম্মা পাপা আশেপাশে আছে কিনা।
তারপর বারান্দায় চলে আসে ইয়ারাবী।ফোন রিসিভ করে কানে ধরলো ও,
-হ্যালো!!!বলে উঠে ইয়ারাবী।
-কেন বলোনি আমাকে?অপরপাশ থেকে চিৎকার করে উঠে আরাভ।
-হতভম্ব হয়ে যায় ইয়ারাবী।এই লোক হঠাৎ চিৎকার করছে কেন কল দিয়ে?জি কি বলিনি আমি?
-তোমার জ্যেঠু যে এতোবড় সমস্যায় আছে।কেন
জানাওনি? চিৎকার করে আরাভ।
-আ আপনি কি করে জানলেন?জিজ্ঞেস করে ইয়ারাবী।
-থতমত খায় আরাভ।তুমি বলেছিলে তোমার জেঠুর নাম রোয়েন চৌধুরী।আর নিউজে তোমার জেঠুর নামটাই বলেছিলো ।তুমি বলো কেন জানাওনি আমাকে?চিৎকার করতে থাকে আরাভ।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
-আপনাকে জানাবো কেন?আমাদের কয়েকদিনের পরিচয়।এতো অল্পদিনের পরিচয়ে কেন জানাতাম কথা গুলো?আর বড় কথা হলো এগুলো আপনাকে জানালে আমার জেঠুকে খারাপ মনে করতেন আপনি সেটা তো ভালো লাগতো না আমার।অশ্রুজড়িত চোখে বলে ইয়ারাবী।
-শুনো তোমার এই কাজে খুব কষ্ট পেয়েছি আমি।এতো টুকু বিশ্বাস করার দরকার ছিলো আমাকে তোমার।চিৎকার করে বলে আরাভ।
-ইয়ারাবীর চোখের কোনা গড়িয়ে পানি পড়ছে।তাদের অল্প কয়দিনের কথা বার্তায় কেন বিশ্বাস করতো এই লোককে?
হঠাৎ আরাভ কিছু না বলে কল কেঁটে দিলো।ইয়ারাবী ফোন সামনে এনে তাকিয়ে আছে।
চলবে