The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 06
মুহূর্তের মধ্যে হৃদপিন্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয়।নিশ্বাস দ্রুত গতিতে চলছে।আজ যেন আর আপন(নিজ) দুনিয়াতে নেই ও।আশেপাশের কোন শব্দই কানে আসছে না ইয়ারাবীর।পুরো শরীরে এক অজানা কাঁপন ফিল করছে ।কেউ যেন বুকে হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে।দুম দুম শব্দ হচ্ছে।গার্ডেন থেকে দৌড়ে আয়নার কাছে আসে ইয়ারাবী।ওর রুমের সামনেই ছোট্ট একটা সুইমিংপুল আর চারপাশে অজস্র ফুল গাছ লাগানো।
এ অজানা অনুভূতির কারনটা জানা নেই ইয়ারাবীর।সে লোকটাকে চিনে না জানে না কথা ও হয়নি কিন্তু কেন মনে হচ্ছে অনেক বছরের চেনা পরিচিত সে?কেন এমন অনুভূতি?ভেবে পায়না ইয়ারাবী।তারওপর প্রোফাইল নেম চেঞ্জ করে লোকটার নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছে।তার আইডিতে নাম না থাকলে ও তার পিকে অনেকের কমেন্ট ছিলো এমন”Looking Handsome Arav.সেখান থেকেই তার নাম জেনেছে ইয়ারাবী।তবে লোকটার সাথে কেন মিলিয়েছে নিজের নাম ইয়ারাবীর জানা নেই।
ইয়ারাবী অফলাইন হয়ে যায়।হৃদয় জুড়ে অজানা এক অনুভূতির সঞ্চার হয়েছে।
ইয়ারাবী মা এদিকে আয়?পাশের রুম থেকে রুপন্তীর ডাকে ইয়ারাবীর ঘোর কাঁটে।তারপর ফোনের দিকে আবার তাকায় যদি সে কোন মেসেজ দেয় তারপর ফোন টাকে রেখে খাট থেকে নেমে বেরিয়ে যায় ইয়ারাবী।
-ছক্কা!!!আরেকটা ছক্কা!!আবার ছক্কা ধুর!!!!!
রেহানের চালে রুপন্তী আর ইয়ারাবী হেসে উঠে একসাথে।
-পাপার তিনছক্কা উঠেছে এবার আমাকে দাও।রেহানের হাত থেকে কিউব টা নিয়ে কৌটয় রেখে নাড়িয়ে লুডুর বোর্ডে মারে ইয়ারাবী।এইতো পাঁচ উঠেছে।দেখিতো কার টা কাঁটা যায়?পাপা তোমার টা সরাও।বলে ইয়ারাবী।
-মানে কি ইয়ারাবী এটা কাঁটা যায়না দেখো ১,২,৩,৪…….ইসস কাঁটা যায় দেখি।ইয়ারাবী দেখ পাপার একটাই বাকি আছে।কাঁটবি তুই?নিরীহ মুখে বলে রেহান।
-পাপা সরাও।কোন কথা হবেনা। সরাও বলছি।রেহানের একটা মাত্র গুটি কেঁটে দেয় ইয়ারাবী।
-এবার রুপন্তীর চাল।এভাবেই অনেক্ষন চলতে থাকে খেলা।প্রায় এই পরিবার তাদের অবসর সময় কাঁটাতে লুডু খেলায় মেতে উঠে।অবশ্য সবসময়কার মতো জয়ী হলো ইয়ারাবী।
তবে সবসময়
হঠাৎ খেয়াল হলো মেসেজ টার কথা।দৌড়ে খাটের ওপর থেকে ফোন হাতে নেয় ইয়ারাবী।কিন্তু অনলাইন হলোনা।
আরাভ কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে নাস্তা সেড়ে।কাজের ফাঁকে ফোনটা হাতে নেয় আরাভ।ফেসবুকে ঢুকেই খেয়াল করলো ইয়ারাভ নামের আইডিটা ওকে রিকোয়েস্ট পাঠায়নি এখনো।ইয়ারাবীর ম্যাসেঞ্জারে ঢুকে আরাভ।আজ এতো বাজে ভাবে ধরা খেলো লোকটার কাছে।ওরই বা কি দরকার ছিলো তাকে এতো বার রিকোয়েস্ট দিয়ে ক্যান্সেল করার?ধুর ইজ্জতের ফালুদা হয়ে গেলো।সেদিন আর সারাক্ষনেই অনলাইন হয়নি ইয়ারাবী।যেন অনলাইন হলেই তার কাছে ধরা খাবে।শুয়ে পড়ে ইয়ারাবী।সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেড়ে রুমে আসে ইয়ারাবী।ফোনের ওয়াইফাই অন করতেই খেয়াল করলো একটা মেসেজ লোকটার আইডি থেকে,
-Hi(Arav).
-কেমন যেন লজ্জা পাচ্ছে ইয়ারাবী।কি করবে ও?রিপ্লাই না দিলে ও ভালো দেখা যায়না। তাই কোন মতে লজ্জা শরমকে এক পাশে রেখে ইয়ারাবী রিপ্লাই দিলো
Hello.
-so Miss Yarav right?মেসেজ দিলো আরাভ।
-Any doubt?অবাক ইমোজি
-No. Doubt keno thakbe?(আরাভ)
-hmm(ইয়ারাবী)
-Request dilenna je?(Arav)
-actually phone ta off hoye gechilo.(Yarabi)
-Oh.To ki koren?(Arav)
-Student.College e Admit holam.(Yarabi)
-Oh. Subject?(Arav)
-Commerce. (Yarabi)
-Good.Family te k k achen?(Arav)
-Ma papa ar ami??
-Apnar parents er name?
-Ma Ruponti ar papa Rehan.
নাম গুলো দেখে ভীষন অবাক হয় আরাভ।এদের কে ও চিনে।এটা তো চাচ্চু আর ছোট খালা।তারপর আরাভ আবার জিজ্ঞেস করলো,
-Ar keu nei?
-Ache to.Boro khalamoni,jethu Ar Arabi api.Boro khalamoni Ruhi,jethu Doctor Royen chowdhury. (Yarabi)
-Ok.Valo laglo apnar family somporke jene.(Arav)
-লজ্জা মাখা হাসির ইমোজি।
-Lojja pacchen mone hocche?(Arav)
-Nah ta na.Accha apnar profile pic e apnar face ta deya nai i mean apnar back side er pic deya.Keno?(Yarabi)
-Ami o to eki question ta korte pari apnar chul er arale mukhta lukiye rekhechen kno?(Arav)
-Actually evabe pic tulte valo lage.(Yarabi)
-My answer is same.(Arav)
-oh accha.
এভাবে ওদের মাঝে অনেক্ষন পর্যন্ত কথা চলতে থাকে।ইয়ারাবী জানতে পারে আরাভ ফ্লোরিডার মিয়ামী শহরে থাকে।অনেক্ষন কথা চলার পর
হঠাৎ সে অফলাইন হয়ে গেলো।ঠোঁট চোখা করে বসে আছে ইয়ারাবী।এটা কি হলো।লোকটা এভাবে অফলাইন হয়ে গেলো কেন?হতভম্ব হয়ে বসে আরাভ।এতক্ষন কি করছিলো সে?যতক্ষন কথা বলছিলো মনে হচ্ছিলো অজানা এক ঘোরে চলে গেছে ও?তার উপর আরাভ কখনোই এমনটা করেনি।কখনো কোন মেয়ের সাথে কথা বলা দূরের কথা।কখনো কাছে ঘেঁষেনি।কিন্তু এই মেয়ের প্রতি অজানা এক টান ফিল হচ্ছে আরাভের।কতো মেয়েই চোখে পড়েছে,কিন্তু এমন ফিল হচ্ছে কেন তাও আবার বোনের প্রতি।ইয়ারাভ মেয়েটা তো ওরই কাজিন।
.
.
.
.
.
★★★★
এদিকে রোয়েন মানসিক ভাবে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।হাঁটতে ও পারছেনা ঠিকমতো। হাঁটতে গিয়ে হেলে দুলে পড়ে যাচ্ছে।খেতে গেলে খাওয়াও হাত থেকে পড়ে যায়।
খুবই অস্বাভাবিক আচরন করছে। রুহী খুব ভেঙ্গে পড়েছে।সারা রাত কাঁটিয়ে দেয় কেঁদে কেঁটে।প্রায়ই বেশির ভাগ সময় শুয়ে থাকে রোয়েন।এদিকে আরাবী পড়েছে মহাবিপদে।বাবাইয়ের হাসপাতালের কাহিনী শুনার পর থেকে অনেক গুলো ডিল মিস হয়ে গেছে।অনেক টাকার লস হচ্ছে।চারিদিকে অন্ধকার দেখছে আরাবী।
এইতো সেদিন রেহান ভাইয়ের খবর শুনে রুপন্তী আর ইয়ারাবীকে নিয়ে চলে এলো।
ভাইকে এভাবে দেখে মন টা ভীষন খারাপ হয়ে যায়।রোয়েনের পাশে বসে ওর হাত ধরে রেহান,
-ভাইয়া!!!এতো চিন্তা করছো কেন?একটা না একটা ব্যাবস্থা হবে।সবাই জানে তুমি অনেস্টলি তোমার দায়িত্ব পালন করছিলে।
-আমার কিছু ভালো লাগেনা রেহান।কি দোষ করেছিলাম রে আমি?
ইয়ারাবী জেঠুর পাশে বসে আছে।কেঁদে দিয়েছে ইয়ারাবী অসুস্থ জেঠুকে দেখে।এমন স্ট্রং পার্সোনালিটির মানুষটার এমন অবস্থা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না।
জেঠুর বুকে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে ধরলো ইয়ারাবী।
তারপর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল,
-জেঠু দেখো যারা এগুলো করেছে তাদের খুব বড় শাস্তি হবে।প্লিজ সুস্থ হয়ে যাও।
রোয়েন মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলল আমার মেয়েটার কথাই যেন ঠিক হয়।
এদিকে রুপন্তী বোনকে স্বান্তনা দিচ্ছে।বোনতো কেঁদেই যাচ্ছে।
জিজুর মতো এমন একজন মানুষের এ ধরনের পরিনতি মেনে নেয়া সম্ভব নয়।তারপর ও বোনকে শক্ত হতে হবে নাহলে জিজুকে সামলাবে কে?
রুহী কেঁদে কেঁদে বলছে জানিস ঠিক মতো চলতে পারেনা।পড়ে যায় হাঁটতে গিয়ে।প্রেশার ও লো থাকে।যাই খাওয়াই পেটে ও রাখতে পারেনা।
কেমন মানুষটা কেমন হয়ে গেলো।কি করবো রুপন্তী আমি?লোকটার এরুপ যে নিতে পারছিনা আমি।
আপি দেখ জিজু কে এখন তোরই সামলাতে হবে।এভাবে ভেঙ্গে পড়লে চলবেনা।আরাবী ও তো কম ঝামেলায় নেই আপু।
কিন্তু এসব বলে আর কতে টুকু স্বান্তনা দেয়া যায় একটা স্ত্রীকে?
রুপন্তী এসে আরাবীর সামনে বসলো।মেয়েটা কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। দেখ আমি বুঝি তুই কেমন পরিস্থিতিতে আছিস?বসার এ অবস্থা আবার কোম্পানীতে এতো লস।
বিজনেসে লাভ লোকসান আছে।যে লোকসান গুলো হচ্ছে হয়ত একদিন তার থেকে ও খুব বেশি লাভ হবে তোর।কিন্তু নিজের ফেমেলি হারায় গেলে কখনোই ফিরে পাওয়া যাবেনা।তোর বাবা মায়ের দিকে খেয়াল রাখবি আরাবী।এখন ওদের সবচেয়ে বড় সাপোর্ট তুই।
খালামনি এই বিজনেসে বাবাইয়ের অনেক অবদান।অফিসে বাবাইকে নিয়ে অনেকেই আজে বাজে মন্তব্য করে।আমার ভালো লাগছেনা।বাবাই কেমন হয়ে গেছে দেখো?এসব কেন হচ্ছে আমাদের সাথে?কখনো অসৎ পথে যায়নি বাবাই।আমি ও সবসময় সৎ থাকার চেষ্টা করেছি।তাহলে কেন এসব হচ্ছে?
ভাগনীর কথায় কি বলবে বুঝতে পারেনা রুপন্তী।নিজের ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে বেশ কয়েকদিন যাবৎ ইয়ারাভ কে খুব অাপসেট লাগছে আরাভের কাছে।যা জিজ্ঞেস করা হয় সেটাই বলে।নিজে কিছু বলছেনা কয়েকদিন যাবৎ।আরাভ ও কয়েকদিন জিজ্ঞেস করেছিলো মন খারাপের কারন কি?কিন্তু ইয়ারাভ মেয়েটা কিছুই বলেনা।
এদিকে ইয়ারাবী আরাভকে এসবের কিছু বলতে চাইছেনা।নাহলে জেঠুকে খারাপ মনে হবে এই লোকের। কিন্তু জেঠু ভীষন ভালো মানুষ।তার কথা অপরিচিত একজনকে বলে কেন শুধু শুধু বদনাম করতে যাবে।
আরাভ আর ইয়ারাবীর কথা হচ্ছিলো।হঠাৎ পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো,
-ইয়ারাভ টা কে ভাই?আরাভ চমকে উঠে ফোন অফ করে পাশে তাকায়।অর্পন হাসছে।
-তুই না সাতদিন পর আসিস?জিজ্ঞেস করে আরাভ।
-ভাবছিলাম ভাই মিস করছে।তাই চলে এলাম আরকি।এখন বলো ইয়ারাভ কে ভাই।আর তুমি চ্যাট করছো তাও আবার একটা মেয়ের সাথে?ইটস ড্যাম ইম্পসিবল। বল না ভাই মেয়েটাকে?জেদ করতে থাকলো অর্পন।
-আমার কাজিন।বলে আরাভ।
-হঠাৎ এই কাজিনের উদয় হলো কোথা থেকে ভাই?
কোন কানেকশন নেই তো?দুষ্টু হাসে অর্পন।
-নাহ নেই।বলে আরাভ।
-এজন্যই বুঝি এতো মন দিয়ে মেসেজিং হচ্ছিলো তাও আবার মায়াময়ী নিকনেম দিয়ে।বলে দ্রুত বেরিয়ে যায় অর্পন।
চলবে