1. নতুন গল্পঃ4. রোমান্টিক উপন্যাস গুলোঃThe Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)লেখাঃ তাবাসসুম রাইনা

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) লেখাঃ তাবাসসুম রাইনা

The Mysterious Man

ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার একটা স্বনামধন্য রাজ্য ফ্লোরিডার মিয়ামি শহরে এসময়টায় প্রচুর শীত পড়ে।ঘর থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়ে।তারপর ও মানুষ বের হয়।জীবিকার তাগিদে,নয়তো স্কুলে আর নয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে।বের হতে গেলে ও অনেক গুলো জামা পরা ছাড়া বের হওয়া যায়না।দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।
কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তেমন টা নয়।কেউ এই শীতটাকে খুব বেশি ইন্জয় করে,কেউ হয়তো স্কেটিং করে,কেউ আবার হট পপকর্নের সাথে মুভি দেখে কেউ তার প্রিয় মানুষটাকে স্মরন করে অথবা রোম্যান্স করে আর কেউ কনকনে ঠান্ডা পানিতে সুইমিং করে।
সবাই শুনলে নিশ্চয় বলবে এমন পাগল ও কি আছে?যে এমন দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়া শীতে সুইমিং করবে?
কিন্তু সে পারে, এবং করে ও।

(বিঃ দ্রঃ “ The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) লেখাঃ তাবাসসুম রাইনা ” উপন্যাসর সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)

সুইমিংয়ের প্রতি তার এট্রাকশন অনেক আগের থেকেই।শীত গ্রীস্ম বর্ষা সব ঋতুতেই সুইমিংপুলে নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করে।আরাভ রোয়েন চৌধুরী দা মোস্ট পার্ফেক্ট ম্যান,সাকসেসফুল বিজনেস ম্যান ইন ফ্লোরিডা।
করিডোর পার করে সামনের সাদা থাইগ্লাসের বাহিরে চোখ চলে যায় অর্পনের।মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে থাকে দৃশ্যটির দিকে।সকাল সকাল এমন দৃশ্য ভালোই লাগে।
কিন্তু এমন শীত ভাবতেই হাতজোড়া বুকে ভাজ করে কাঁপতে শুরু করে অর্পন।
ভাই পারে ও বটে।কি করে এমন হাড় কাঁপানো পানি তে নেমে পড়ে এই লোক উহু উহু উহু শীতে বরফ হচ্ছে অর্পন।
হঠাৎ কলিংবেলের সাউন্ডের ইরিটেট হয় অর্পন।কি যে বিরক্ত লাগে এই সময়টায় কলিংবেলের শব্দটাকে।
তাও রাগকে ধামাচাঁপা দিয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে চলে যায় অর্পন।
গ্লাসের ডোরটার বাহিরে চোখ পড়তেই রাগে শরীর জ্বলে উঠেছে অর্পনের।এই চুড়েল কে তো ভাই আজ সেইরকম অপমান করবে।
এতো ইগনোর করার পর ও বেহায়ার মতো ভাইয়ার দরজার সামনে চলে আসে ছুঁটে ধুর।
দরজা না খুলে অর্পন পিছু চলে যাচ্ছিলো।হঠাৎ দরজায় খুব জোরে নক করতে শুরু করে ফেন্সি নামের মেয়েটা।
-হেই কান্ট ইউ হেয়ার মি?প্লিজ ওপেন দা ডোর অর্পন।আই নিড টু মিট হিম।ফেন্সি আহ্লাদী কন্ঠ শুনে আত্মা জ্বলে উঠে অর্পনের।
দ্রুত হেটে দরজা খুলে দেয় অর্পন।
-হোয়াটস ইউর প্রবলেম মিস ফেন্সিডিল???
-হেই আ’ম ফেন্সি মানে আমি ফেন্সি নট।আমি কোন নেশা দ্রব্য না আজিব।অবশ্য আমাকে দেখলে সব ছেলেদের নেশা হয়েই যায় কারন আমি এতো গর্জিয়াস এতো বিউটিফুল,এতো সে,,,,,,,ইশানা কে থামিয়ে দেয় অর্পন
-হেই আমি তোমার বিবরন শুনতে চাইনি।রানের ওপর জামা পরে কি বুঝাতে চাইছো যে স্যার তোমার দিকে এট্রাক্ট হবে?ভুলে যাও মিস ফেন্সিডিল এমন কিছু হচ্ছে না ওকে?
কালো বুল ডগদের কাছে যাও ওরা নিশ্চিত তোমার প্রেমে পড়ে যাবে।হা হা হা হা!!!!!হাসতে শুরু করে অর্পন।
এদিকে ইশানা তো রেগে আগুন।হাউ ডেয়ার ইউ!!!আরাভ যদি আমাকে ভালো না বাসে তাহলে আমার নাম ও ফেন্সি না।চিৎকার করে বলে ফেন্সি।
-তোমার নাম এমনিতে ও ফেন্সি না মিস ফেন্সিডিল।ভাই তোমাদের মতো এমন ছ্যাচড়া টাইপের মেয়ে লাইক করে না।
-হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ছ্যাঁচড়া?রেগে জ্বলে উঠে ফেন্সি।
-ছ্যাঁচড়া মিনস ছ্যাঁচড়া!!! যে মেয়ে এতো অপমানিত হওয়ার পর ও সেধে সেধে চলে আসে সে ছ্যাঁচড়া না তো কি। গেট আউট,রেগে যায় অর্পন।
ফেন্সি অর্পন কে জোরে সরিয়ে ভিতরে যেতে থাকে।আরাভ ডার্লিং হোয়ার আর ইউ?আরাভ বেইবি প্লিজ অর্পন কে কিছু বলো।দেখো ও আমাকে বাজে বকছে।ন্যাকা কান্না সুইমিংপুলের দিকে যেতে থাকে ফেন্সি।
এদিকে অর্পন ফেন্সি থামানোর চেষ্টায় লেগে আছে।কিন্তু কি মেয়েরে বাবা পার্সোনালিটি বলতে কিছুই নেই।
হার মানা মেয়ে না ফেন্সি। জোর করে সাদা থাইগ্লাসটা সরিয়ে সুইমিংপুলের সামনে চলে আসে ফেন্সি।আর ওর পিছন পিছন অর্পন।
এই মেয়ে এই না করছিনা ভাইয়ের এখানে আসবেনা।বের হও বলছি।চিৎকার করে বলে অর্পন।
ওহ মাই গড!!!আচমকা ফেন্সির চিৎকারে বিরক্ত হয়ে সামনে তাকায় অর্পন।তারপর বলে উঠে ওয়াও।
সামনে আরাভ সুইমিং পুল থেকে হেঁটে হেঁটে সামনে আসছে।শরীরে মেদ নেই বললেই চলে।সিক্সপ্যাক বডি,লোমশহীন বুক ম্যাসকুলিন আর্মস!!ডার্ক ব্রাউন হেয়ার ডার্ক আইজ এক কথায় এমন ফিটনেস বডি সহজে দেখা মেলেনা।
আরাভের ডার্ক আইজ তো ওর এট্রাকশনের মূল অঙ্গ।আরাভ হাত জোড়া উঠিয়ে কপালে নেমে আসা ভিজা চুল গুলো কে পিছনে ফিরিয়ে দিলো।
ফেন্সি তো পারছেনা নিজেকে কন্ট্রোল করতে।আরাভকে যপন খেয়েই ফেলবে ও নিজের চোখ জোড়া দিয়ে।
সুইমিংপুল থেকে বেরিয়ে এসে সাদা গোল টেবিলটার ওপর রাখা অরেঞ্জ জুসের গ্লাসটায় সিপ দিয়ে ফেন্সির কাছে এগিয়ে আসে।ঠোঁটের কোনে মনহরন করা হাসি ওর।কিছুক্ষন ফেন্সির দিকে তাকিয়ে হুহ বলে পাশ কেঁটে ভিতরে চলে যায় আরাভ।
.
.
.
.
.
আরাভ চলে যেতেই পিছু ফিরে রাগান্বিত চোখে তাকায় ফেন্সি।এতো ভাব কিসের হুহ?
ফেন্সির রাগান্বিত চেহারায় বেশ মজা হলো অর্পনের।তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আরাভের পিছু পিছু ঘরে ঢুকে যায় অর্পন।
আরাভ নিজের ক্লসেটের রুমে ঢুকে সেখান থেকে ডার্ক ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
অর্পন আর আরাভের বেরিয়ে যাওয়ার পর পরই ফেন্সি সুইমিংপুলের সামনা থেকে বেরিয়ে ঘরে ঢুকে ডাইনিং টেবিলে এসে বসে পড়লো।
আরাভ ফ্রেশ হয়ে ডার্ক ব্রাউন শার্ট আর হোয়াইট ডেনিম প্যান্ট পরে চুল গুলোকে ড্রায়ারের গরম বাতাসে শুকাতে থাকে।চুল গুলো বাতাসে এপাশ ওপাশ দুলছে।
যতক্ষনে আরাভ তার চুল শুকাচ্ছে পুরো রুমটায় একবার রুমটায় চোখ বুলিয়ে না আসলেই নয়।রুমে ঢুকতেই চোখে পড়বে ডার্ক ব্রাউন কালারের লোমশ পাপোশ। তারপাশে বিশাল আকৃতির রাউন্ড বেড।তারসাথে মিল রেখে বেড সাইড রাউন্ড টেবিল।সেটার ওপর রয়েছে একটা এস্ট্রে,একটা খালি দু পার্ট ওয়ালা পিকচার ফ্রেম।
খালি থাকার কারনটা কেউই বুঝে উঠতে পারেনা।
স্বয়ং অর্পন ও।
পুরো বাড়িতে দেয়ালের বদলে আছে সাদা গ্লাস আর মার্বেলের ফ্লোর আছে।
সব মিলিয়ে খুবই সুন্দর বাড়িটি।চুল শুকিয়ে ড্রায়ার টার তার খুলে ড্রায়ারে রেখে দিলো আরাভ।তারপর বেরিয়ে আসে রুম থেকে।
ডাইনিং টেবিলে এসে একটা চেয়ার টেনে বসে নিউজপেপার হাতে নিলো আরাভ।সামনে বসে থাকা
অদ্ভুত মেয়ে ফেন্সির দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই আরাভের। একমনে পেপার পড়ছে আরাভ।
মেইড সার্ভেন্ট এসে আরাভের নাস্তা আর কফি দিয়ে চলে গেলো।ফেন্সি এসে আরাভের পাশে দাঁড়িয়ে ওর হাত থেকে নিউজ পেপার টেনে নিতে গেলেই রাগান্বীত চোখে সামনে তাকায় আরাভ।আরাভের রক্তচক্ষু দেখে ভয়ে পেপার ছেড়ে দেয় ফেন্সি।
তারপর মিন মিন স্বরে ফেন্সি বলতে থাকে মিট ইউ লেটার।কাঁধে ব্যাগ জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লো ফেন্সি।
আরাভ শান্তির নিশ্বাস ফেলল যেন।স্যালাডে ফ্রকস ঘুরিয়ে ডাকতে লাগলো অর্পন!!অর্পন!!!গাড়ি বের করতে বল ড্রাইভার কে।
পাশের রুম থেকে অর্পন বলল জি ভাই বলছি।আপনি ব্রেকফাস্ট সেড়ে নিন।আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি।
আরাভ চুপচাপ খেয়ে উঠে দাঁড়ায়।
অর্পন এসে আরাভ কে কালো কোট পরিয়ে দিলো।আরাভ আর অর্পন বেরিয়ে পড়লো অফিসের উদ্দেশ্যে।গাড়িতে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে আরাভ। একটা প্রজেক্ট কম্পলিট করছে ও।
অর্পন একটা কাগজ নিয়ে কিছু বলছে আর অারাভ মন দিয়ে কাজ করছে।
অফিসে চলে আসে আরাভ। বেশ কিছুটা সময় পার করে অফিসে।
কাজের মাঝেই কল আসে আরাভের ফোনে।কানে থাকা ব্লুটুথ টা ফোনের সাথে কানেক্ট করা তাই আর অযথা ফোন কানে দিয়ে টাইম ওয়েস্ট করেনি আরাভ।ব্লুটুথ টা দিয়ে কল রিসিভ করে ও।
হ্যালো আরাভ কেমন আছিস আব্বু?জিজ্ঞেস করে উঠেন আকরাম আজহার।
জি আঙ্কেল ভালো আছি।আপনার কি খবর?হালকা হেসে জিজ্ঞেস করে আরাভ।
এইতো আব্বু ভালো।অর্পন কেমন আছে রে?জিজ্ঞেস করেন আকরাম আজহার।
ভালো আছে ও।বলে উঠে আরাভ।
শয়তানটা তোকে বিরক্ত করে না তো?জিজ্ঞেস করেন আকরাম আজহার।
না আঙ্কেল একদমই না।তা আন্টির কি খবর?জিজ্ঞেস করে আরাভ।
আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছে তোর আন্টি।
ওহ।আচ্ছা আঙ্কেল অফিস থেকে বেরিয়ে কল দিচ্ছি আপনাকে।বলে উঠে আরাভ।
ওকে আব্বু।মন দিয়ে কাজ কর।বলে কল রাখেন আকরাম আজহার।কাজে মন দেয় আরাভ।কিছুক্ষন পর দরজায় নক করে ভিতরে আসে অর্পন।ভাই ডেমিন কোম্পানীর সাথে মিটিং টা চার্মিং বয়েজ ক্লাবে রেখেছে।বলে উঠে অর্পন।
হুম।বলে উঠে আরাভ।
-ওকে ভাই সাতটায় একসাথে বেরোবো আমরা।বলে উঠে অর্পন।
-ওকে।নাউ গো।বিরক্ত করছিস।কিছুটা রেগে বলে আরাভ।
-ওকে সরি সরি।বলে চলে যেতে থাকে অর্পন।
-অর্পন ওয়েট।ডেকে উঠে আরাভ।
-জি ভাই দরজা দিয়ে মাথা বের করে অর্পন।
-আঙ্কেল কল দিয়েছিল।বলে উঠে আরাভ।
-আঙ্কেল!!!কোন আঙ্কেল!!!!!কিছুটা অবাক হয় অর্পন।
-তোর বাবা ইডিয়ট।রেগে বলে আরাভ।
-ওহ আই ফরগেট।বলে উঠে অর্পন।
-কাকে অাঙ্কেলকে?ভ্রু কুঁচকায় আরাভ।
-আরে নাহ এমনিই বললাম।দ্রুত আরাভের রুম থেকে বেরিয়ে আসে অর্পন।
সন্ধ্যায় আরাভ আর অর্পন বেরিয়ে পড়ে চার্মিং বয়েজ ক্লাবের উদ্দেশ্যে।মেয়েরা নাচছে খুব অশ্লীল ভঙ্গিতে।অর্পন এক সুযোগে তিনটি মেয়ের মাঝে ঢুকে নাচতে শুরু করলো।সেদিকে তোয়াক্কা না করে সামনে চলে যেতে থাকে আরাভ।সামনে চার পাঁচ জন ন্যাটিভ আমেরিকানকে দেখতে পেলো আরাভ।সামনের লোকটা ডেমিন।ওনার নামেই কোম্পানীর নামকরন।ডেমিন উঠে আরাভের সাথে হাত মিলায়।
-হ্যালো মিঃ আরাভ রোয়েন চৌধুরী।
-আরাভ হালকা হেসে বলল হ্যালো মিঃ ডেমিন ডিকস্টা।
-লেটস স্টার্ট আওয়ার মিটিং।বলে উঠে ডেমিন।
-ওকে,প্লিজ।বলে উঠে আরাভ।হঠাৎ অর্পন কোথা থেকে ছুটে এলো।ওর শার্ট পুরো আউলে গেছে।মেয়েগুলা পারেও বটে আল্লাহ।
চলবে

The Mysterious Man The Mysterious Man The Mysterious Man The Mysterious Man

বিঃ দ্রঃ নিচে ভালো করে লক্ষ্য করুন পরবর্তী পর্বে দেওয়া আছে

বিঃ দ্রঃ “ লেখাঃ তাবাসসুম রাইনা ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন !!

👉আমাদের ফেসবুক পেজ