The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 95

ঘরে আসে রামীন কাজ সেড়ে।আশফিনা পাকঘর থেকে রামীনের পিছু নিতে নিতে রুমে চলে আসে।রামীন রুমে ঢুকে গোসল সেড়ে নেয়।আশফিনা খাবার গরম করে।একটু পর ভাই ভাবি ও আসবে।ওনাদের অবশ্য দেরিই হবে।বাবুকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে আশফিনা।এখন ওরা দুজন খেলে হয়ে যাবে।রামীন বেরিয়ে কাপড় চেঞ্জ করে।আশফিনা খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছে।অনেকটা সময় হয়ে যায়।রামীনের আসার নাম নেই।আশফিনা ভাবছে এমন হয়না কখনো।সে কি খেয়ে এসেছে।আর যদি খেয়ে থাকে ওকে বলার দরকার ছিলো।নিজেতো এসেই ওয়াশরুমে চলে গেলো কোনরুপ কথা বার্তা ছাড়াই।আশফিনা রুমে চলে আসে। রামীন শুয়ে আছে।রেগে গিয়ে বলল,
.
.
-”এমন করার মানে কি?”
-”কেমন করলাম?”
-”কেমন করলেন না?নিচে না এসে শুয়ে পড়লেন কেন?”
-”আমার ভালো লাগছেনা।আসো এখানে।”
-”আমার খিদে পেয়েছে।নিচে এসে খেয়ে নিন।”
-”তুমি খেয়ে আসো।”
-”আপনি খাবেননা?”
-”না।”
.
.
আশফিনার অবাক লাগে।এমন করেনা লোকটা।কি হলো তার হঠাৎ করে।মুখটাও লালচে হয়ে আছে।আশফিনা রামীনের পাশে এসে বসে বলল,
.
.
-”কি হয়েছে আপনার?”
-”কিছু না।তুমি গিয়ে খেয়ে নাও।”
-”আমার খাওয়া বাদ দিন।আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?শরীর ভালো নেই আপনার?”
-”ঐ তো একটু মাথা ব্যাথা আরকি।”
.
.
আশফিনা রামীনের গা চেক করলো।জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।আশফিনা অস্থির হয়ে গেলো।ও বলতে শুরু করলো,
.
.
-”কি হলো জ্বর আসলো কখন আপনার?”
-”বিকেলে খারাপ লাগছিলো।”
-”ঘরে আসেননি যে?”
-”একটু কাজ ছিলো।”
-”আর কেউ ছিলো না বুঝি?”
-”ছিলো।কিন্তু যেটা আমার দায়িত্ব সেটা আমাকে করতে হবে তাইনা?”
-”আচ্ছা বাদ দিন।আপনার জ্বর চেক করছি।”
.
.
আশফিনা দৌড়ে ফাস্ট এইড বক্সটা নিয়ে আসে।সেখান থেকে থার্মোমিটার বের করে রামীনের মুখে ঢোকায়।একশ দুই ডিগ্রি জ্বর।আশফিনা জোর করে একবাটি স্যুপ খাইয়ে দেয় রামীনকে তার পর নাপা এক্স্ট্রা খাইয়ে দিয়ে শুইয়ে দেয় ওকে।তারপর মাথার চুল টেনে দিতে থাকে আশফিনা।সারারাত জেগে ছিলো রামীনের মাথার কাছে।ভোর রাতে জ্বর ছেড়ে দেয় ঘাম দিয়ে।আশফিনা গিয়ে শুয়ে পড়ে রামীনকে জড়িয়ে ধরে।এদিকে রুহীর পাঁচমাস শুরু হয়েছে।রাতে রোয়েনকে বিরক্ত করতে শুরু করে ছবি তুলবে পাঁচমাসের।রোয়েনের অবশ্য কাজ ছিলো না তবু ও ভেবেছিলো সকালে ছবি তুলবে।কিন্তু রুহীর হাজারো অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে।সেগুলো এমন,আগের মতো ভালবাসোনা,নিশ্চয়ই খারাপ লাগে এখন আমাকে।মোটা হয়ে গেছি তাইনা?এখন তো সুন্দর মেয়েদের তোমার ভালো লাগবে,সকালে তো অফিসেই চলে যাও।সেখানে তো আমার থেকে ছাড়া পাও। বুঝি বুঝি সব বুঝি এখন তো আর আগের মতো আমাকে কাছে নিতে পারোনা তাই এখন ভালো লাগেনা।একনাগাড়ে কথা বলেই দম নেয় রুহী।রোয়েন শোয়া থেকে উঠে বসে রুহীর হাত টেনে ধরে নিজের কোলে বসায়।রুহীর কপালের চুল গুলো সরিয়ে গালে কপালে তারপর গলায় চুমু খেয়ে সেখানে মাথা রেখে রোয়েন আদুরে নেশাযুক্ত কন্ঠে বলল,
.
.
-”কি হয়েছে?কি বলছো এসব তুমি জানো?”
-”আমাকে ভালোবাসো না।(কাঁদো কন্ঠে বলে রুহী)।
-”ভালবাসিনা সেটা কে বলল?”
-”বলতে হয়না।বুঝতে পারি আমি।”
-”আর কি বুঝো?”
-”আমাকে এখন আর ভালো লাগেনা তোমার।অন্য মেয়ে খু্ঁজবা এখন জানি।”
-”কেউ কি আমার ব্যাপারে এমন কিছু বলেছিলো?”
-”না।”
-”তাহলে এমন বললে যে?”
-”কারন তুমি আমার কথা শুনোনা।”
-”আর? ”
-”আদর করোনা।”
.
.
রোয়েন রুহীর গলায় গরম লম্বা নিশ্বাস ছেড়ে বলল,
.
.
-”রুহী একটা কথা কি জানো তোমার সব কয়টা ঘড়ির সাথে ক্যামেরা লাগানো যেটা আমার ফোন ল্যাপটপ,কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত।কই যাও কি করো। কি করছো সব দেখতে পাই।তুমি এখনো সুন্দর।এখন তো তোমাকে আরো বেশি ভাল লাগে।তোমার গাল গুলো কতো কিউট হয়ে গেছে।তোমাকে চিন্তা করেই সারাটা দিন কেঁটে যায় আমার।চব্বিশ ঘন্টা তোমার কথাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।আমার সারা দুনিয়া জুড়ে তুমি জান।আর কারো কথা মাথায় আনার কল্পনা ও করতে পারিনা।আমার পুরো পৃথিবী তুৃমি আমাদের বাবু।”
-”তাহলে আমাকে আদর করো না আগের মতো।ছবি ও তুলছোনা।আমার তো পাঁচমাস শুরু হয়েছে।”
-”তুলতেই হবে?”
-”হুম।”
-”আচ্ছা চলো।”
.
.
রুহীকে নামিয়ে উঠে দাঁড়ায় রোয়েন।রুহী আলমারি থেকে দুটো ব্যাগ বের করে আনে।সেখানে দুটো টিশার্ট আর কালো প্যান্ট আর একটা কালো স্কার্ট।রোয়েন অবাক চোখে গেঞ্জী গুলো দেখে রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল,
.
.
-”এগুলো?”
-” গেঞ্জীটা খুলে দেখো।”
-”আচ্ছা।”
.
.
রোয়েন গেঞ্জী খুলে দেখলো বুকে লেখা Dad।আর পিঠে ইংরেজিতে King লেখা।রোয়েন হেসে বলল,
.
.
-”খুব সুন্দর।”
-”থ্যাংক ইউ।য়াও চেঞ্জ করে আসো।”
-”আচ্ছা।”
.
.
রোয়েন চেঞ্জ করতে চলে যায়।রুহী ও চেঞ্জ করে নেয়।রুমে এসে রোয়েন দেখলো রুহী রেডি হয়ে আছে।ওর বুকে লিখা Mom আর হাতে ছোট্ট একজোড়া জুতো।রোয়েন এসে ক্যামেরা সেট করে রুহীর পাশে এসে দাঁড়ায়।দুজনে একসাথে ছবি তুলতে থাকে।পরদিন অফিসে এসে একটু অবাক হয় রোয়েন।রামীন এখনো আসেনি।রোয়েন ফোন উঠিয়ে কল করতে যাচ্ছিলো তখন রামীন ঢুকে।রোয়েন বলল,
.
.
-”আজ এতো লেট?”
-”সরি ঘুম ভাঙ্গছিলোনা।”
-”গলার কি হলো তোর।কন্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন?”
-”একটু ফেভার ছিলো রাতে।এখন ঠিক আছি।”
-”কঁচু আছিস।ঘরে গিয়ে রেস্ট নেয়।”
-”না কয়দিক সামলাবি?আমি ঠিক আছি খারাপ লাগলে না হয় ফিরে যাবো।”
-”বস।খেয়েছিস কিছু?”
-”হুম।ব্রেকফাস্ট করলাম।তুই খেয়েছিস?”
-”হুম।বসে কাজ গুলো কর।খারাপ লাগলে বলিস।”
-”আচ্ছা।”
.
.
রোয়েন খেয়াল করছে রামীন কলম ঠিক মতো ধরতে পারছেনা।রাগ লাগছে রোয়েনের।এমন কেন রামীন?রোয়েন ডাক্তার কে কল দিয়ে আসতে বলে।ডাক্তার এসে রামীনকে চেক আপ করে।কয়েকদিন কাজের চাপ অনেকছিলো।যার কারনে কারোরই তেমন রেস্ট হয়নি।আর ঋতু পরিবর্তনের কারনে হয়ত এমন হচ্ছে।রোয়েন জোর করে রামীনকে ঘরে পাঠিয়ে দেয় গাড়ি দিয়ে।এদিকে সামায়রা কাপড়ের নিচে বালিশ ঢুকিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখছে।হয়ত রুহী আপুকে এমনই লাগে।রুহী আপুর মতো তো ওর ও একদিন বাবু হবে।বাবুদের আসার জন্য বিয়েটা ও জরুরি।ইসস ওকে কি কিউট লাগছে।পেট টা কতো বড়। বাবু থাকবে এখানে।ওর মা হতে ইচ্ছে হচ্ছে।ইসস এখন যদি মা হতে পারতো।কিন্তু সেজন্য তো বিয়ে টা করতে হবে।নাহলে বাবু কেমনে আসবে?মন খারাপ হয়ে যায় সামায়রার।হঠাৎ নীরা হামিদ এসে বলেন,
.
.
-”এই পাজি মেয়ে কি করছিস?”
.
.
বালিশটা ফেলে পিছনে তাকায় মায়ের দিকে তারপর বলতে লাগলো,
.
.
-”না মা দেখছিলাম আপুকে কেমন লাগে?”
.
.
নীরা হামিদ হেসে ভিতরে ঢুকে মেয়েকে সাথে নিয়ে বসে বলেন,
.
.
-”খুব সুন্দর হয়ে গেছে মেয়েটা জানিস।বাচ্চা লাগে ওকে আগের চেয়ে অনেক বেশি।”
-”মা সবাই কি সুন্দর হয় বাবু হলে?”
-”অনেকের চেহারা ভেঙ্গে যায়।আবার অনেকে সুন্দরী হয়ে যায় মানুষ ভেদে।”
-”আমাকে কেমন দেখাবে মা?”
-”কি বলছিস এসব?”
-”বলো না মা।”
-”সেটা কেমনে বলবো?”
-”বলো না মা। আমার না এখন বাবু নিতে ইচ্ছে হচ্ছে।”
.
.
মেয়ের কথায় নীরা হামিদ হা হয়ে যান।বলে কি এই মেয়ে?এদিকে মিলাদের আগের দিন রাতে রোয়েন গেস্ট লিস্ট চেক করছিলো।সবাইকে বলা হয়েছে।রুহী দু কাপ কফি নিয়ে আসে।রোয়েনকে বসে থাকতে দেখে রুহীর লোভ হয়।কফির মগ দুটো টেবিলে রেখে রোয়েনের কোলে চড়ে বসে।রোয়েন হাত থেকে ট্যাব টা রেখে রুহীকে জড়িয়ে ধরে।রুহী কফির একটি মগ রোয়েনের হাতে দিয়ে নিজে একটি নেয় হাতে।দুজনে কফি খেতে থাকে আর দুচারটে মিষ্টি আলাপ।গল্প করতে করতে রুহী রোয়েনের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।রোয়েন মগ রেখে রুহীকে কোলে নিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে।পরদিন সকালে হুজুর দুজন চলে আসে।আর মাদ্রাসার ছাত্ররা।সেই সাথে আনিলা রেজোয়ান মাহবুব, রামীন আর আশফিনা।সামায়রা নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ ও এসে পড়ে।রুহী ভিষন খুশি।সবাইকে এক সাথে পেয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছে ও।শামীম তার বৌ ও মেয়ে কে নিয়ে চলে এসেছে।রুহীকে নিয়ে মামী আশফিনা আর আনিলা রোয়েনের বেড রুমে চলে গেছে।সবাই গল্প করছে ওরা।সামায়রা সাদা গাউন পরে এসেছে।চোখে একটু কাজ আর কিছুনা।কিছুক্ষন পর শামীম জিলাপী,সমুচা,রোল,মতিচুর লাড্ডু নিয়ে এসে সবাইকে দিয়ে যায়।সামায়রা দুহাতে দুটো নিয়ে খেতে থাকে।নীরা হামিদ রেগে গেলেন।মেয়েটা বড় হয়েছে কিন্তু এতোটুকু বুদ্ধি নেই।রুহী একটু করে রোল নেই।আশফিনা সমুচায় কামড় বসালো।আর মামী তার প্রিয় লাড্ডু খাচ্ছে।এদিকে শামীম নিচে যেতেই রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী কি করে?”
-”নীরা আপা আর আনিলা ম্যামের সাথে গল্প করে।”
-”খেয়েছে কিছু?”
-”হুম।”
-”আচ্ছা বসে দোয়া করো।”
-”জি স্যার।”
.
.
এদিকে ওপরে রুহী, মামী, আনিলা আশফিনা আর সামায়রা ও মোনাজাত ধরেছে।মোনাজাত শেষে ফাহমিন হাত ধুতে গেলো।সামায়রার দুহাত জিলাপীর রসে চিটচিটে হয়ে গেছে।ও নিচে নেমে আসে হাত ধুতে।
চলবে