The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 91

→আনিলার নম্বর বারবার বাজছে।ওনি ফোনের কাছে গিয়ে সেটাকে হাতে তুলে কিছুটা অবাক হন।এ নম্বর আগে কখনো কল আসেনি।আনিলা চিন্তিত মুখেই কল রিসিভ করেন।অপর পাশ থেকে রুহী বলল,
.
.
-”আর কতো ভালো লাগে আপনার?আমার জীবনে ইন্টারফেয়ার করতে কতো ভালো লাগে?”
-”জি!! রুহী কি বলছো মা?”
-”দরদ দেখাবেননা।আপনার কথা শুনলে গা জ্বলে।
-”রুহী কি বলছো আম্মু?কি হয়েছে?”
-”উফফ প্লিজ।আমাকে আম্মু ডাকবেননা।জানেন না আপনাকে সহ্য করতে পারিনা।কেন বুঝেননা?আমার বাবার মন পাওয়ার জন্য আমাকে আদর দেখান?কি লাভ?আমার মায়ের জায়গা তো নিয়েছেন আ্মাকে আদর দেখায় কি লাভ?এতো দরদ থাকলে বিয়ের আগে আমার কথা ভাবতেন।আপনার কারনে আমার বাবা ও আমার কথা ভাবলোনা।ব্রেইন ওয়াশ করেছেন বাবার।তাইতো আমাকেই ভুলে গেলো আমার বাবা।বিয়ে করে আমাকে আমার বাবার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।আপনি কেমন মহিলা বলেন তো?আমার লাইফে আর ইন্টারফেয়ার করবেননা আর কথা ও বলার চেষ্টা করবেননা।”
.
.
রুহী কল কেঁটে রাগে ফুঁসতে থাকে।এই মহিলাকে ওর সহ্য হয়না।এমনকি ওর জামাইটার মাথাও খেয়ে রেখেছে।রুহী মোবাইলটা শব্দ করে টেবিলে রেখে বসে থাকে।চোখ জ্বলছে ওর পুরো শরীর জ্বলছে।ঘন্টা খানেক আগে ও কতোটা খুশি ছিলো ও।কিন্তু নিমিষেই পানি হয়ে গেলো সব খুশি।এই মহিলার কারনে ওর জীবনের অর্ধেক খুশি শেষ।ঘন্টা খানেক আগে ও তো খুশিতে স্বামীকে জড়িয়ে ধরেছিলো ও।যখন সেই সুন্দর সাজানো রুমটায় নিয়ে যায় ওকে।রুমটার পুরো দেয়ালে কার্টুন স্টিকার লাগানো।মনে হচ্ছিলো পেইন্ট করা।রুমে একটি দোলনা,ছোট টেবিল আর দুটো চেয়ার,একটা রকিং চেয়ার,অনেক খেলনা ছিলো।রুহী কেঁদে দিয়েছিলো রুমটা দেখে।পেটে হাত রেখে কেঁদে দিলো।রোয়েন ওকে জড়িয়ে ধরে বলছিলো,
.
.
-”আমাদের বাবুর রুম রুহী।
-”থ্যাংকস রোয়েন।খুব সুন্দর হয়েছে।বাবু এখানে থাকবে খেলবে।আমি আর তুমি ওকে দেখবো ওর সাথে খেলবো।”
-”হুম।অবশ্যই খেলবো।”
-”আর পড়ে গিয়ে যখন কাঁদবে আমরা দুজন কোলে নিয়ে আদর দিবো।ওকে খুব আদর করে বড় করবো।ভাল মানুষ করবো ঠিক তোমার মতো।”
-”আমার মতো নয়।আদর্শ মানুষ গড়ে তুলবো।”
-”হুম।তা এতোদিন এজন্য সরে ছিলে?”
-”হুম।সারপ্রাইজ ছিলো তাই।”
-”এমন করলে কষ্ট হয় আমার।তোমার থেকে দূরে থাকতে ভালো লাগেনা।”
-”জানি।জানো প্ল্যান টা কার ছিলো?”
-”নিশ্চয়ই রামীন ভাইয়ার।”
-”নাহ এটা আনিলা মার প্ল্যান ছিলো।”
.
.
রুহী রেগে যায় রোয়েনের কথায়।তবুও চুপ করে থাকে।রাতে খাবার শেষ করে রোয়েন ঘুমো তে যায়।রুহীর পুরো শরীর জ্বলছে।এনাকে কিছু না বললে হচ্ছেনা।শুধু ওর জীবনে আসছে কথা বলছে ওর বিষয়ে।তাই ফোন হাতে নিয়ে আনিলাকে কল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রুহী।আর কল করেই একগাদা শুনিয়ে ক্ষান্ত হলো।ওয়াশরুমে গিয়ে মাথায় পানি ঢেলে রুমে আসে।ঘুমে কাতর রোয়েন।রাগ মুহূর্তেই পানি হয়ে গেলো।লোকটার চেহারায় এতোটা মায়া আছে রাগ করে থাকতে পারেনা ও।রুহী গিয়ে রোয়েনের বুকের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নিজের মাথা রাখে।রোয়েন ঘুমের মাঝেই রুহীকে জড়িয়ে ধরে।ওর পেটে আলতো হাত বুলিয়ে কাঁধে চুমু খায়।রুহী পাশ ফিরে বলল,
.
.
-”ঘুমাও নি?”
-”তুমি আসতেই ঘুম ভাঙ্গলো।”
-”সরি।”
-”ইটস ওকে।মাত্রই চোখ লেগে এসেছিলো।কি করছিলে?”
-”কাজ শেষ করে এলাম।”
-”হুম।”
.
.
রুহীকে এবার ওপরে টেনে এনে ওর চুলে হাত বুলাতে থাকে রোয়েন।রুহী শুয়ে থাকে।ভাবছে এখন যেন অানিলা ওর লাইফে আর না আসে।ঘুমিয়ে যায় রুহী।এদিকে পর দিন থেকে রোয়েন খেয়াল করে আনিলা মা আসেনা অফিসে।এমনকি ওদের ঘরে প্রায়ই রুহীকে দেখতে আসতো কিন্তু সপ্তাহখানিকের মাঝে আর আসেননি।রোয়েন অনেকটা অবাক হয়।সেদিন না পেরেই রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে হাজির হয় রোয়েন।সেখানে গিয়ে দেখলো ওনি রান্না করছেন।রোয়েন কে রেজোয়ান হাত মুছে রুমে এলো।
.
.
-”বাবা আপনি?”
-”জি।আপনি রান্না করছেন।আনিলা মা কোথায়?”
-”আছে। ও আশেপাশে।”
-”আশেপাশে মানে?কাজে যাচ্ছেনা রুহীকে দেখতে ও যায়নি।কোথায় ওনি।”
-”শরীর ভালো ছিলোনা।ওর বাবাকে নিয়ে একটু ব্যাস্ত।বুঝেনইতো ওর বাবা ক্যান্সারের রোগী।”
-”এভাবে কথা বলছেন।ঠিক মতো মেলাতে পারছেননা কথা।কি লুকাচ্ছেন?”
.
.
রেজোয়ান মাহবুব বুঝলেন আর লুকাতে পারবেননা।ওনি বললেন,
.
.
-”আসলে ও চলে গিয়েছে।”
-”চলে গিয়েছে মানে কই গেলো?”
-”ওর বাবার কাছে।”
-”কেন?”
-”যেদিন রুহীকে বাবুদের রুম দেখালে সেদিন রুহীর সাথে ওর কথা হয়েছিলো।কথার পরপরই খুব ভেঙ্গে পড়ে আনিলা।আমাকে কিছু বলেনি।পরদিন চলে যায় ও।”
.
.
প্রচন্ড রাগ উঠে রোয়েনের।ও রেগে বলল,
.
.
-”আগে কেন জানালেননা?”
-”আসলে বাবা!!!”
-”আসলে নকলে কি?কথাটা আমাকে জানানো উচিৎ মনে করেননি। ”
-”আসলে এভাবে হয়ে যাবে।আর রুহীটাও অসুস্থ তাই কিছু বল,,,,,,,
.
.
কথাটা শেষ করতে পারলেননা তার আগেই বেরিয়ে গেলো রোয়েন।রেজোয়ান মাহবুব ভয় পেতে লাগেন রুহীর জন্য।শুয়েছিলো রুহী।তখনই রুমে আসে রোয়েন।ওর হাত টেনে খাটে বসিয়ে রেগে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”কি পেয়েছোটা কি হ্যা?এভাবে কারোর সাথে কথা বলতে পারো কিভাবে তুমি যেখানে সে তোমাকে নিয়ে এতোটা ভাবে।”
-”কি বলছো রোয়েন?”
.
.
কথাটা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে রুহী।রোয়েন চিৎকার করে বলল,
.
.
-”আনিলা মাকে কি বলেছিলে?”
-”যা বলার তাই বলেছি।ওনার যোগ্য কথাই বলেছি।”
-”কতোটা বেয়াদব তুমি ভাবতে পারিনি।এই মানুষ তোমার প্রেগন্যান্সির শুরু থেকে তোমাকে নিয়ে ভাবছে।তোমাকে নিয়ে ভাবাভাবি দূরে থাক সে তোমার বাবার লিগ্যাল ওয়াইফ।তোমার মা তুমি মানো আর না মানো।সে জোর করে তোমার বাবাকে বিয়ে করেনি।ইনফ্যাক্ট ফাস্টে রাজিই ছিলো না সে।আমি রাজি করিয়েছি বিয়ে করিয়েছি আমি।সে তোমার কথা ভেবে না করেছিলো।তাদের বিবাহিত জীবন নষ্ট করার কে তুমি?সে কি তোমার ম্যারিড লাইফে আসছে কথা বলতে?পার্টিতে ও উনিই তোমার জন্য রান্না করে এনেছিলো কিন্তু বেচারী কি জানতো যার জন্য করছে তার কারনে নিজেকে ওনার সংসার ছাড়তে হবে।সেম অন ইউ রুহী।ভাবতে রাগ লাগছে কিভাবে করতে পারলে কাজটা?বাবার কথা একবার ও ভাবতে পারোনি?বুঝোনি কষ্ট পান ওনি?আনিলা মাকে ওনি ভালবাসেন আর আনিলা মাও।ওনি মা হিসেবে নিজের দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করছিলেন।কিন্তু কি করলে তুমি?ওনাকে বের করে দিলে?”
-”মায়ের জায়গা নিয়েছেন ওনি।ওনার কোন অধিকার নেই আমার মায়ের জায়গা নেয়ার।”
.
.
রেগে গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করলো রোয়েন,
.
.
-”বারবার একটা কথা বলে কি বুঝাইতে চাস?সে যদি তোর মায়ের জায়গা নিয়েই নিতো তোর বাপ তোর সাথে কথাই বলতোনা।কিন্তু কি হয়েছে ওই মানুষ তোর কথা চিন্তা করে ফুসকা পাঠালো গভীর রাতে।তোর প্রিয় খাবার রান্না করে পাঠালো।কাউরে জিজ্ঞেস করে দেখিস আপন মা ও এমন করে নাকি?সৎ মা খারাপ হয় রুহী কিন্তু ওনি ভালো মানুষ।তোর কথা চিন্তা করে।লাভ নাই তোরে বলে।কারন তুই বুঝবিই না।বুঝার ক্ষমতাই নাই।”
.
.
কথাটা বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহীর চোখ ভারি হয়ে আসছিলো এতক্ষন এখন তা প্রবল বেগে গড়িয়ে পড়তে লাগলো।গলা ছেড়ে কাঁদতে লাগে ও।এদিকে আশফিনা ভীষন খুশি রামীনকে শেষমেষ পেয়ে গেছে ও।সেদিন বেরিয়ে যাওয়ার সময় একটা চিঠি লিখেছিলো ও।সেখানে ও জানিয়েছে নিজের ভুল বুঝতে পারার কথা,রামীন কে কতোটা ভালোবাসে ও কতোটা চায়।শেষপর্যন্ত ওরা এক হয়েছে।ওর চাওয়া পূরন হয়েছে।রামীন কে কতোটা কষ্ট দিয়েছে তা ও বুঝতে পেরেছিলো সেদিনকার একেএকটি কথায়।রামীন ফিরে আসে কাজ থেকে।আশফিনাকে রুমে দেখে একটু হাসে ও।রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিতেই শব্দে পিছনে ফিরে আশফিনা।
.
.
-”কখন এলেন?”
-”মাত্রই।কি করছিলে?”
-”কিছুনা।ফ্রেশ হয়ে নিন। খাবার রেডি করছি।”
-”হুম।ভাই ভাবও আসেনি?”
-”না।জানিয়েছেন লেট হবে।বাবুকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে এলাম।”
-”ওহ।”
.
.
রামীন ফ্রেশ হতে চলে যায় কাপড় চোপড় নিয়ে।আশফিনা কিচেনে গিয়ে খাবার গরম করতে থাকে।
রামীন ফ্রেশ হয়ে এসে টেবিলে বসে।আশফিনা টেবিলে খাবার সাজিয়েছে।দুজনে খেয়ে রুমে এলো।রামীন আশফিনাকে কোলে নিয়ে ছাদে বসে গল্প করছিলো।হঠাৎ রামীন বলল,
.
.
-”বাবা মা আসবে সামনের মাসের শুরুতে।”
-”ওহ।খুব ভালো।আপনার অনেক বছর পর দেখা হবে তাইনা?”
-”হুম।”
.
.
আশফিনা চুপ হয়ে যায়।রামীন আশফিনাকে দেখে অবাক হলো।মনে হচ্ছে কেমন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো আশফিনা।রামীন বলল,
.
.
-”কি হলো চুপ কেন?”
-”ওনারা যদি আমাকে পছন্দ না করেন।”
-”তুমি পাগল!!!ওনারা তোমাকে খুব পছন্দ করেছেন।তুমি ফোন থেকে সামনাসামনি বেশি সুন্দর।ওনারা তোমাকে অবশ্যই পছন্দ করবেন।এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
-”থ্যাংকস।আমি আশা রাখছি ওনাদের মন জয় করতে পারবো।”
-”অবশ্যই পারবে।”
.
.
আশফিনা হেসে রামীনের গলা জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রাখে।রামীন ও বৌকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে।
চলবে