The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 80

সেদিন একসাথে অনেকটা সময় কাঁটায় ওরা।রুহী আশফিনাকে দেখে বুঝতে পারেনা ও কি আদৌ বিয়েতে খুশি কি না?তেমন একটা কথাই বলেনি আশফিনা।কিন্তু রামীন কে বেশ খুশি দেখাচ্ছে।ওর মুখ থেকে হাসি সরছেইনা।সন্ধ্যায় চলে গেলো রামীন আর আশফিনা।আশফিনা কথাই বলছেনা রামীনের সাথে।রাগে ওর শরীর গিজগিজ করছে।রামীন গাড়িতে জড়িয়ে ধরে বসেছিলো আশফিনাকে।আশফিনা বারবার সরাতে গিয়ে ও পারছিলোনা।একপর্যায়ে রামীন রেগে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকাতেই আশফিনা বলল,
.
.
-”এভাবে তাকাবেননা।আমাকে ছাড়ুন।”
-”লিসেন বিয়ে করেছি তোমাকে মাথায় তুলিনি।আমি যেভাবে চাইবো সেভাবে থাকবে।”
-”আমাকে কিনে নেন নাই আপনি।ছাড়েন ডিসগাস্টিং।”
-”ডিসগাস্টিং বলো আর যাই বলো আমার বৌ তুমি।”
-”বয়েই গেছে আমার।”
.
.
রামীন হেসে অপরদিকে তাকায়।এদিকে কফি আর এক গ্লাস দুধ নিয়ে রুহী কে নিয়ে রুমে আসে রোয়েন।রুহী আচারের একটা কৌটা নিয়ে বসলো।রোয়েন একটু বিরক্ত হয়ে কৌটা টেনে নেয়।রুহী কৌটা টা আবার কেড়ে নেয়।রোয়েন রুহীর হাত থেকে কৌটা টা নিয়ে বলল,
.
.
-”এখন আবার আচার নিয়ে বসলে কেন?”
-”আচার দিন।”
-”তোমাকে কি বলছি আমি?ভাতের সাথে আচার দিনে দুপুরে আচার এখন আবার আচার নিয়ে বসলে যে?পেট খারাপ হলে কি করবে পরে?এখন যেন তেন ঔষধ ও নেয়া যাবেনা।”
-”অতোসতো বুঝিনা আপনি দিবেন তো দিবেন।দিন এক্ষুনি দিন।”
-”রুহী এখন আচার খাওয়ার টাইম না।দুধটুকু খেয়ে নাও।”
-”আচার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে দিন না প্লিজ।”
-”বুঝার চেষ্টা করো।বাচ্চা না তুমি।মা হতে যাচ্ছো এতোটুকু তো বুঝা উচিৎ তোমার।”
.
.
রুহী মন খারাপ করে দুধটুকু খেয়ে রোয়েনের বুকে মাথা গুঁজে দেয়।এদিকে রামীন আর আশফিনাকে সাদরে বরন করে রামীনের ভাই আর ভাবি।আশফিনা অবাক তাদের রিয়্যাকশান দেখে।রামীন না বলে বিয়ে করে নিয়েছে কিন্তু তাদের চেহারায় বিন্দুমাত্র রাগ ক্ষোভ কিংবা অভিমান নেই।আশফিনাকে দেখেই বড় ভাই বলল,
.
.
-”ছোট বৌতো বেশ সুন্দরী। আসো ভিতরে আসো।”
.
.
রামীন আশফিনাকে ফিসফিসিয়ে বলল,
.
.
-”ভাইয়াকে সালাম দাও।”
.
.
আশফিনা ভাই আর ভাবি কে সালাম দেয়।ওনারা আশফিনাকে ভিতরে ঢুকায়।রামীনের ভাই বলছিলো,
.
.
-”আব্বা কল করেছিলো। ওনারা বৌকে দেখতে চায়।”
-”ভাই ওখানে ভোর পাঁচটা এখন।ওনারা ঘুমাচ্ছে। কাল দেখাবোনে।”
-”ঠিকই বলেছিস।আম্মা অনেক উৎসুক হয়ে আছে আশফিনাকে দেখার জন্য।”
-”হ্যা এটাতো প্রথম থেকেই যখন শুনেছিলো মা।”
.
.
কথা বলার এক পর্যায়ে বড় ভাবি খেয়াল করেন আশফিনা দাঁড়িয়ে কথা শুনছে।ওনি বললেন,
.
.
-”তোমরা গল্প করছো কিন্তু মেয়েটাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছো।আক্কেল জ্ঞান হবেনা তোমাদের।”
-”আরে হ্যা আশফিনা বসো আপু।তোমার কথা মনেই ছিলোনা।বসে যাও।”
.
.
আশফিনাকে নিয়ে ওরা বসলো সোফায়।রামীনের ভাবি ফ্রাইড রাইস রান্না করেছিলো আর সাথে চিকেন কারি,ভেজিটেবল।ওদের নিয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে বসেন।আশফিনার এক পাশে রামীন আর অপরপাশে ভাবি বসে আছে।আশফিনা কে একটু তুলে খাওয়ান ভাবি।ভাই খাওয়ার টেবিলে হাসির কথা বলছে।প্রচুর হাসাতে পারেন ওনি।আশফিনা চেয়ে ও হাসতে পারেনা লজ্জা লাগছে ওর।মাথা নিচু করে হাসি আটকায় আশফিনা।রাত বারোটায় রুমে দেয়া হয় ওদের।এতক্ষন সবাই গল্প করছিলো।ডিনার সেড়ে রুহীকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।রুহীর গায়ে সিল্কের পাতলা একটা নাইট গাউন।রোয়েন অবচেতন মনেই রুহীর গাউনের ওপর থেকেই রুহীর পেট স্পর্শ করে।রুহী ঘুম ঘুম চোখেই রোয়েনের হাত ছোঁয়।রোয়েন হাত সরাতে চায় কিন্তু রুহী হাত আঁকড়ে ধরে রোয়েনের।রোয়েন এসে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।রুহী ও রিসপন্স করছে রোয়েনের ভালবাসায়।রুহীর ঠোঁট থেকে সরে এসে ওর গলায় চুমু খেতে থাকে।রুহী জড়িয়ে ধরে রোয়েনকে।রোয়েন নেমে এসে রুহীর পেটে নাক ডুবায়।একে অপরকে কাছে পেতে থাকে ওরা।রামীন আর আশফিনা রুমে ঢুকিয়ে দেখলো রুমটা বেশ সুন্দর করে সাজানো।আশফিনা দেখতে থাকে রুমটাকে।হঠাৎ ও কেঁপে উঠে রামীনের ছোঁয়ায়।রামীন ওকে জড়িয়ে ধরেছে পিছন থেকে।আশফিনা রামীনের হাত সরিয়ে ছিটকে আসে।
.
.
-”ধরবেননা আমাকে।দূরে থাকুন।”
-”বাহবারে মামা বাড়ির আবদার নাকি?দূরে থাকুন, কাছে আসবেননা।বিয়ে করেছি কাছে আসবোনা আবার?”
-”একদম দূরে থাকুন।কাছে আসলে খবর করে দিবো মেরে ফেলবো।”
-”তোমার সামনে আসলে এমনিতেই ঘায়েল হয়ে যাই।নতুন করে মারতে হবেনা।
-”ধুর যত্তসব!”
.
.
আশফিনা রেগে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।রামীন হাসতে হাসতে খাটে বসে পড়ে।কিছুক্ষন পর আশফিনা বেরিয়ে আসে।গায়ে হলুদ কালারের একটা ফতুয়া আর লাল প্লাজো।রামীন বিস্ময়ের চোখে দেখতে থাকে বৌকে।মেয়েটা আজ ওর বৌ ওর নিজের বৌ।আশফিনা চোখ রাঙ্গিয়ে রামীনের দিকে তাকিয়ে বলল,
.
.
-”কি হলো?এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?খেয়ে নিবেন নাকি?(জিভে কামড় দেয়)
-”খেয়ে ফেলতেই তো চাই।আসো তোমাকে খাবো।”
.
.
খাট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আশফিনার কাছে এগুতে থাকে রামীন।আশফিনা সরে যেতে যেতে বলল,
.
.
-”আসবেননা কাছে।”
-”শশশ আর পিছুবে না।আটকে যাবে।”
-”একদম চুপ।আমার সামনে থেকে চলে যান।”
.
.
বলতে বলতে আশফিনা আলমারির সাথে আটকে যায়।আশেপাশে তাকিয়ে সরে যেতে নিলে রামীন ওকে জাপটে ধরে।
আশফিনা চোখ গরম করে তাকায় রামীনের দিকে।
.
.
-”উফফ কি চোখ!!!কি চাহনি!!!!!অনেক ভালবাসতে ইচ্ছে হচ্ছে বৌ।”
.
.
আশফিনা মাথা সরিয়ে নেয়।রামীন ওর মুখ নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।আশফিনা মুখ শক্ত করে রেখে ছিলো কিন্তু রামীন জোর করে ওর ঠোঁট শুষে নিতে থাকে।আশফিনা জোরে জোরে মারতে থাকে রামীনের পিঠে কিন্তু এক পর্যায়ে ও নিজে ও রামীনের স্পর্শে মেতে উঠে।রামীন আশফিনাকে কোলে নিয়ে খাটে এসে শুইয়ে দেয়।আশফিনা সরে যেতে নিলেই রামীন ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।আশফিনা বিরক্ত হয়ে শুয়ে থাকে।রামীন ঘুমিয়ে গেলে আশফিনা রামীনের দিকে তাকায়।লোকটার চেহারাটা খুব সুন্দর খুবলো মায়াবী।আশফিনার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে উঠে।পাশ ফিরে তাকায় রোয়েন।রুহী পাশে নেই।ফ্লোরে পড়ে থাকা কাপড় ও নেই।রোয়েন দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।রুহী কই যেতে পারে এমতাবস্থায়।রোয়েন চোখ মুছে নিচে নেমে পড়ে।গায়ে গেঞ্জী জড়িয়ে নিচে এসে দেখলো ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে রুহী কি যেন করছে।রোয়েন এসে কাছে এসে দেখে আচার খাচ্ছে রুহী।রোয়েনের হাসি চলে আসে তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।রুহী খাওয়ার এক পর্যায়ে অনুভব করলো কারোর সাথে ওর গায়ে ধাক্কা খেলো।রুহী চটজলদি আচার লুকিয়ে মুখ হাত দিয়ো মুছে পিছনে তাকিয়ে দেখে রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে।রুহী রথম হাসির চেষ্টা করলে ও আর হাসতে পারেনা ভয়ে থমকে যায়।রোয়েন হেসে রুহীর গালের আচার টুকু মুছে বলল,
.
.
-”ভালোর জন্য খেতে মানা করেছিলাম।কাল ভূনা খিচুরী রান্না করতে বলবো মন ভরে খেয়ো। আসো রুমে।”
.
.
রুহী কিছুটা লজ্জা পেয়ে রুমে চলে যায় রোয়েনের সাথে।এদিকে সকালে নাস্তা শেষে রামীন ওর মা বাবাকে ভিডিও কল দেয়।আশফিনার ফোন ধরে রামীন।পাশে বড় ভাই আর ভাবি ও আছে।আশফি না বাবা মায়ের সাথে কথা বলে এতটুকু বুঝলো ওরা খুব মিশুক আর অত্যন্ত ভালো।আশফিনাকে খুব আদর করে কথা বলেন দুজনে।রামীন কাজে চলে যায়।আশফিনার সময় কাঁটে ভাবি আর তার ছেলের সাথে।এক বছর হলো বাবুটার।খুব সুন্দর বেবিটা।
আশফিনাকে ও বেশ পছন্দ করেছে বাবুটা।এদিকে দুতিনদিন পার হয়ে গেলো এরই মাঝে একদিন রোয়েন ঘরে প্রবেশ করে লুকিয়ে।রোয়েনকে না দেখলে পায়ের শব্দে রুহী বুঝতে পারে ওর লোকটা এসেছে।রুহী জলদি নিচে নেমে আসে।দেখলো রোয়েন কপালে পানি দিচ্ছে।পুরো বেসিন রক্তে ভরে যাচ্ছে।রুহী ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠে,
.
.
-”কি হয়েছে আপনার?”
.
.
রুহীর কথায় রোয়েন পিছনে ফিরে।ওর নাকের ওপর রক্তের ফোঁটা।রুহী কাঁদতে শুরু করে।রোয়েন গিয়ে জড়িয়ে ধরে বৌকে।
.
.
-”নিচে এলে কেন?”
-”আপনার এ অবস্থা কেন?কিভাবে হয়েছে?”
-”মাইনোর এ্যাক্সিডেন্ট। অমন কিছুনা।একটা গাড়ি এসে ধাক্কা দিলো।”
.
.
রুহী রোয়েনের হাত বুক চেক করলো।কিন্তু সবই ঠিক আছে কিন্তু কপালটাই কেঁটে গেছে।রুহী ফাস্ট এইড বক্স এনে রোয়েনের কপালে ঔষধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়।
চলবে