The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 79

রুহীর প্রেগন্যান্সির কয়েকদিন পার হতেই রোয়েন খেয়াল করতে থাকে ওদের কেউ ফলো করে।যখনই ও বের হয় তখনই।বেশ চিন্তুিত রোয়েন নিজের জন্য না ওর মায়াবতীর জন্য।
পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে এলো রুহী।শরীরটা বড্ড ক্লান্ত লাগছে।কপালের ঘাম উড়না দিয়ে মুছে বোতল থেকে একটু পানি খেয়ে নেয়।ফিদা ওর সাথে অপেক্ষা করছিলো।কিন্তু ওর আন্টি এসে ওকে নিয়ে গেলো।রুহী এখন একা।দারোয়ান টাও বড্ড ফালতু লোক বের হলে আর ভিতরে বসতে ও দেয়না।এভাবে কতক্ষন অপেক্ষা করা যায়?রুহী আবার দারোয়ানকে বলে ভিতরে বসবে কিন্তু লোকটা না করে দেয়।চলে আসে রুহী।এরই মাঝে রোয়েনকে আসতে দেখা যায়।রুহীর সামনে থামে গাড়ি।রুহী ভিতরে ঢুকেনা।লোকটা এতো দেরি করে আসলো।ওর কষ্ট হয় এতসময় দাঁড়াতে।রুহীর রাগ বুঝতে পেরে বেরিয়ে আসে রোয়েন।তারপর ওর সামনে এসে বলল,
.
.
-”পরীক্ষা কেমন হলো?”
-”জানিনা।”
-”আরে এতো রেগে যে?”
-”রাগবোনা কেন? এতসময় অপেক্ষা করছিলাম।পা ব্যাথা করছে।গরম ও লাগছে।এত দেরি করলে কেন?”
-”সরি রুহী।আগেই বেরিয়ে ছিলাম।প্রচুর জ্যাম ছিলো রাস্তায়।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে।আমাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসাও।”
-”এটা কি কথা অনেক মানুষ এখানে।”
-”তো কি হলো?আরেক জনের বৌ তো না আপনারই।তিনবার কবুল বলে কাবিননামায় সই করে বিয়ে করেছো।কোলে তো নিতেই পারো।”
-”ঘরে গিয়ে নিবো।আসো!!!”
-”না কোলে নিবেন নয়ত এখানে দাঁড়িয়ে আমার ঠোঁটে চুমু খাবে।”
-”হোয়াট রুহী!!!আর ইউ ম্যাড?”
-”পাগলের কি হলো?ইললিগ্যাল তো কিছুনা।আসো চুমু দাও নয়তো কোলে নাও নয়ত যাবোনা।”
.
.
রোয়েন ভ্রু কুঁচকে রুহীর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে।গাড়িতে বসেই রোয়েনের গালে চুমু খায় রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে আড়চোখে তাকাতেই রুহী ঠোঁটজোড়া চোখা চুমু খাওয়ার মতো করে দুষ্টুমিষ্টি হাসি দেয়।রোয়েন কিছুনা বলে সামনে তাকিয়ে গাড়িতে স্টার্ট দেয়।রুহী সারা গাড়িতে রোয়েনের সাথে ফাজলামো করছিলো।রোয়েনের গালে চুমু খাচ্ছিলো,রোয়েনের গালে আঙ্গুল দিয়ে হালকা টেনে দিচ্ছিলো।রোয়েন রুহীর দিকে বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছিলো।হঠাৎ পিছন থেকে প্রচন্ড ধাক্কা অনূভব করে রোয়েন।রুহীর মাথা গিয়ে বাড়ি খায় গাড়িতে।রোয়েন দ্রুত বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে।ইতোমধ্যে গাড়িটা চলে যায় পিছন থেকে।রোয়েন রেগে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”এই অন্ধ নাকি?ইউ ব্লাডি ইডিয়ট!!!!!”
.
.
গাড়িতে ঢুকে বসে রোয়েন।রুহীর মাথা ফেঁটে রক্ত বেরুচ্ছে।রোয়েন রুহীকে জড়িয়ে ধরে।হাত দিয়ে ওর কপাল চেঁপে ধরে।কিছু বলতে পারেনা রুহী।জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ও।রোয়েন দ্রুত গাড়ি চালিয়ে রুহীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।রুহীকে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হলো।ঘরে চলে আসে ওরা।রুহীকে ফ্রেশ করিয়ে দেয় রোয়েন।তারপর নিজে ফ্রেশ হয়ে নেয়।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রোয়েন।রুহীকে এক গ্লাস দুধ এনে দেয় রোয়েন।রুহী বলল,
.
.
-”খাবার গরম করে আসি।”
-”চুপ থাকো।খেয়ে নাও দুধটুকু।”
-”আমার ভালো লাগেনা দুধ খেতে।”
-”রুহী সবসময় এসব বাহানা ভালো লাগেনা।খেয়ে নাও।তোমার এখন সুস্থ থাকতে হবে।খারাপ লাগলে ও খেতে হবে।”
.
.
রুহী জোরপূর্বক দুধটুকু খেয়ে নেয়।ও বলল,
.
.
-”এবার খাবার গরম করে নেই।”
-”নাহ।তমি বসো আমি আসছি।বাহির থেকে খাবার আনাচ্ছি।”
-”শুধু শুধু টাকা নষ্ট করোনা।গরম করছি আমি।”
-”ছোট মাছের তরকারি নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো ফেলে দিতে বলেছি।”
-”মাংস আছেনা?”
-”প্রতিদিন ওসব ভালো লাগেনা রুহী বসতে বলেছি বসো খাবার অর্ডার করছি।”
.
.
আর কিছু বলতে পারেনা রুহী।রোয়েন খাবার অর্ডার করে রুহীর পাশে শুয়ে ওকে কাছে টেনে নেয়।রুহী কিছু বলতে যাবে তখনই ওর ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় রোয়েন।এদিকে রামীন কতোবার আশফিনার সাথে কথা বলতে ওদের বাসায় চলে গিয়েছিলো।আশফিনা ওর সাথে কথা বলতে চায়না।রামীনের কলটাও রিসিভ হয়না।রামীনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে আসছিলো।আশফিনার মাও বুঝতে পারেন রামীনের অস্থিরতা।তিনি নিজ থেকে ও মেয়েকে অনেক বুঝান কিন্তু লাভ হয়না।পরদিন সকাল রামীন অাশফিনার ঘরে চলে আসে।তখন ওরা নাস্তা করতে টেবিলে বসে মাত্র।রামীনকে আসতে দেখে আশফিনা দৌড়ে নিজের রুমে এসে দরজা লাগাতে চায় কিন্তু পারেনা রামীন বাঁধা দেয়।আশফিনা বেশি জোরাজুরি শুরু করলে রামীন রুমে ঢুকে পড়ে।আশফিনা বাথরুমে গিয়ে বসে পড়ে।রামীন জোরে নক করতে শুরু করে।
.
.
-”বের হও বলছি আশফিনা।কি হয়েছে আমাকে বলো।”
-”চলে যান আপনি।কেন বারবার আসেন বলুন তো।কোন সম্পর্ক নেই আমাদের।”
-”বললেই হলো?সম্পর্কের শুরু করেছিলাম আমি।আমার মতামত ছাড়া সম্পর্কের কিছু হতে দেবোনা।”
-”দেখুন আপনার সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই আমার বের হন আপনি।”
-”দেখো আশফিনা তুমি যদি বের না হয়েছো আমি নিজের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলবো।যদি একটু ও ভালবেসে থাকো বের হও।”
.
.
ক্ষতির কথায় আশফিনার ভেতরটা কেঁপে উঠে।ও আর ভিতরে বসে থাকতে পারেনা। বেরিয়ে আসে আশফিনা।বের হতেই রামীন চেঁপে ধরে ওকে বলতে থাকে,
.
.
-”কি হলো তোমার?কেন এমন করছো?কথা বলছোনা, ফোন রিসিভ করোনা,দেখাও করছোনা।কি চাইছো বলো তো?”
-”আমি জাস্ট আপনার কথাই বলতে চাইনা।বের হন আপনি।”
-”তাহলে আমার ক্ষতির কথায় বেরিয়ে এলে কেন?”
.
.
আশফিনা আর কিছু বলতে পারেনা।রামীন ওকে জোর করে টেনে খাটে বসালো।তারপর বলতে লাগলো,
.
.
-”প্লিজ আশফিনা বলো কি হয়েছে?”
-”আপনি চলে যান।আমার ভালো লাগছেনা। ”
-”আশফিনা তুমি জানো তোমার কথা শোনা ছাড়া আমি নড়বোনা।তুমি আগে সব কিছু বলো।কেন এতদিন এমন করছিলে তারপর আমি যাবো।”
-”তাহলে শুনুন আমার বাবাকে আমি মেরেছি।আমি খুনী।তাই আপনার বৌ হবার ক্ষমতা রাখিনা।কারন একজন খুনি কারোর বৌ হতে পারেনা।”
-”সেটা জানি আশফিনা।এ ও জানি কেন খুন করেছিলে?সে নিজে ও খুনি ছিলো আইজান ভাইয়ের।খুনির বিনাশ করেছো তুমি।তোমার ভাইয়ের প্রতিশোধ নিয়েছো আর কিছুনা।আমি তোমাকে ভালবাসি আশফিনা।তুমি যাই করোনা কেন তোমাকে ছাড়বোনা।”
-”পাগলামী করছেন আপনি।এসবের কোন মানে হয় না।আমি খুনি তাই বিয়ে করবোনা আমি আর আপনাকে অবশ্যই না।অনেক ভাল মেয়ে আছে দেশে। একটা খুঁজে নিন।”
-”কথায় কথায় অন্যদের আমার গলায় ঝুলাচ্ছো কেন?আমি তোমাকেই বিয়ে করবো সেটা তুমি জানো।”
-”কিন্তু আমি আপনাকে বিয়ে করবোনা।বের হচ্ছেননা কেন?”
-”বের হবোনা আমি।তোমার মাথায় ভূত চেঁপেছে।কিভাবে বের হবো আমি?”
-”বাজে কথা বাদ দিয়ে বের হন।আমি ঘুমোবো।”
.
.
আশফিনা শুয়ে পড়তে নিলে রামীন ওর হাত টেনে নিয়ে নিজের দিকে ফিরিয়ে বসায়।তারপর বলল,
.
.
-”না তুমি ঘুমোচ্ছো আর না আমি বের হচ্ছি।যদি বের হতেই হয় তোমাকে নিয়ে বের হবো।”
-”কখনো না।কোথাও যাবোনা আপনার সাথে।”
-”যেতে তো তোমাকে হবেই।”
.
.
রামীন কথাটা বলে আশফিনাকে কোলে তুলে নেয়।আশফিনা নিজেকে নামাতে রামীনের পিঠে বুকে এলোপাথাড়ি মারছে।রামীন ওকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এসে আশফিনার মাকে জোরে বলল,
.
.
-”আন্টি আমাদের কলোনির কাজী অফিসে চলে আসেন।আপনাদের বাসার থেকে একটু সামনে তারপর ডানের গেট।’
-”কিন্তু কেন রামীন?অবাক হয় আশফিনার মা।”
-”সেটা এসে দেখবেন আন্টি।”
.
.
আশফিনাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো রামীন।ওদের পিছনে আশফিনার মা ও চলে আসে কাজী অফিসে।আশফিনাকে বিয়ে করবে রামীন ওর মায়ের ইচ্ছায়।আশফিনা বিয়ে করবেইনা কিন্তু ওর মায়ের ধমকে বিয়ে করে নেয় রামীনকে।রামীন আশফিনাকে নিয়ে নিজের শাশুড়ী কে সালাম করে।তারপর রামীন বলল,
.
.
-”আন্টি আপনি বাসায় যান।আমি ওকে নিয়ে রোয়েনের কাছে যাবো।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ও কিন্তু তাড়াহুড়োয় জানাতে পারিনি।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।আমার মেয়ে টাকে ভালো রেখো।আর পরে কল দিবো আমি।”
-”জি আন্টি।”
.
.
আশফিনার মা আশফিনাকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বেরিয়ে গেলো।রামীন আশফিনাকে জোর করে নিয়ে বেরিয়ে এলো।ওরা রোয়েনের বাসায় যাবে।এদিকে রোয়েন আর রুহী লাঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছে।রুহীর গায়ে হালকা জ্বর হয়ত কালকের এ্যাক্সিডেন্টের কারনে।তাই আজ আর বের হয়নি রোয়েন।রুহীর মাথায় জলপট্টি করে ওকে নিয়ে নিচে নেমে আসে রোয়েন।রুহীর ভালো লাগছিলোনা শুয়ে থাকতে।রুহী কে সোফায় বসিয়ে ওর পাশে বসে পড়ে রোয়েন।হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে।কাজের লোক যায় দরজা খুলতে।রোয়েন আর রুহী দরজায় তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।আশফিনা আর রামীন দাঁড়িয়ে আছে।রোয়েন আর রুহী ওদের কাছে এসে দাঁড়ায়।রোয়েন বলল,
.
.
-”ভিতরে আয়।আশফিনা তুমি ও আসো।”
.
.
আশফিনা আর রামীন ভিতরে এসে বসে সোফার ওপর।রামীন বলল,
.
.
-”দোস্ত একটা কাজ করে আসছি।”
-”কি কাজ?”
-সরি তোকে জানাতে পারিনি।আসলে হঠাৎ করে কাজটা করবো ভাবতেই পারিনি।”
-”কি কাজ সেটা তো বল।”
-”বিয়ে করে ফেলেছি আমরা।”
-”হোয়াট???মানে কবে?”
-”এখনই করেই তোর কাছে এলাম।”
.
.
রুহী তো বেজায় খুশি সাথে রোয়েন ও।রুহী এসে আশফিনাকে জড়িয়ে ধরে আর রোয়েন তা দেখতে থাকে।ওর মুখে ও সুখের হাসি।
চলবে