The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 72

রুহী পুরো জমে গেছে। কি জবাব দেবে ও?কি বলবে ও?মুখ দেখাবে কি করে লোকটাকে?সে জানলো কি করে লোকটা জানলো ও এখানে?অবশ্যই শামীম ভাই জানিয়েছে।রুহীর চোখ মেলাতে কষ্ট হচ্ছে ওর।লোকটার চোখের রহস্যময়তা রুহীকে ভীত করছে।রোয়েন ভিতরে ঢুকেই রুহীকে দেখে শয়তানি হাসে।রুহী মাথা নিচে নামিয়ে নেয়।এদিকে আশফিনার বাবা রোয়েন কে দেখে ভয় পেয়ে যান।রোয়েন বলল,
.
.

-”কেমন আছেন মিঃ আলম খান।”
-”এ এ এইতো আছি।”
-”চিনেছেন তো আমাকে?আমি রোয়েন চৌধুরী কোব্রা লিডার এবং রুহীর হাসবেন্ড।এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন আমি কি করে এলাম এখানে?
সেটা জেনে যাবেন আপনি।তার আগে আমাকে ওয়েলকাম করুন।”
.
.
আলম খান কিছু বলবেন তার আগে আশফিনার মা রোয়েনকে ভিতরে আসতে বলে।রোয়েন ভিতরে আসে।আশফিনার মা ওকে বসতে বলে।রোয়েন বসে বলল,
.
.
-”আমার মিসেস কই?”
-”জি ডাকছি।রুহী কই তুমি?”
.
.
আশফিনার মায়ের ডাকে রুহী নিচে নেমে আসে।
আশফিনার মা বলল,
.
.
-”তোমার হাসবেন্ড এসেছে।বলোনি যে আমাদের কে?”
.
.
রুহী রোয়েনের দিকে তাকায়।কি বলবে ও?নিজেই জানতো না যে সে আসবে।রুহী কিছু বলতে গেলে রোয়েন বলল,
.
.
-”এক্চুয়ালি বৌ কে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম।রুহী বসো এসে।”
.
.
রুহী ভয়ে ভয়ে রোয়েনের পাশে বসে পড়ে।রোয়েন রুহীর হাত ধরে সবার সাথে একটু কথা বলে নেয়।রুহী রোয়েনের দিকে তাকাতে থাকে।লোকটাকে কাছ থেকে অসম্ভব সুন্দর লাগে। লোকটার থেকে আর দূরে থাকবেনা ও।অনেক ভালবাসবে ও।আর রাগ করে থাকবেনা।রোয়েন হঠাৎ উঠে বলল,
.
.
-”মিঃ আলম খান খুব ইম্পরট্যান্ট কথা আছে।”
.
.
রোয়েনের ইম্পরট্যান্ট কথায় আলম খান অনেক ভড়কে যান।তারপর নিজেকে নরমাল করে বললেন,
.
.
-”জি বলেন!”
-”পার্সোনালি বলতে হবে।”
.
.
ঘামতে শুরু করেন আলম খান।ওনাকে ভয় পেতে দেখে রোয়েনের বেশ মজা লাগে।তারপর ও বলল,
.
.
-”জি চলেন??”
-”এ এ জি চলুন!!!!”
.
.
আলম খান রোয়েনে কে নিয়ে স্টাডি রুমে চলে গেলেন।দুজনে সামনা সামনি দাঁড়ান।রোয়েন বলল,
.
.
-”আইজানের সাথে কি হয়েছিলো বলুন।”
-”ছেলের সাথে রাগ করে ঘরে আসতে দেইনি।তাই শত্রুরা ওকে মেরে ফেলেছিলো।”
-”আর ইউ শিওর?”
-”জি হ্যা।”
-”আইজান কিছু পাঠিয়েছিলো আমাকে।শুনতে চাইবেন নিশ্চয়ই।”
-”কি পাঠিয়েছে ও?”
.
.
রোয়েন ছোট্ট মোবাইলের মতো একটা ডিভাইস বের করে।সেটা অন করতেই আইজানের কন্ঠস্বর শুনা যায়।”আসসালামু আলাইকুম বন্ধু আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।সময় খুব কম।তুমি জানো আমি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গেছি।আমার বিরোধী দলের লোকেরা দরিদ্র তহবিল থেকে ধান গম ভুট্টা চুরি করে নিজেদের গুদামে ভরছে।আমি আজকের লাইভে সব বলে দিয়েছি।আমাকে মেরে ফেলা হবে কাল রাত এগারোটায়।তুমি হয়ত অবাক হচ্ছো আমি কিভাবে জানলাম।বিকেলে বাবা কাকে যেন কল করে বলছিলো আমাকে ওরা শেষ করে দিবে।রোয়েন তোমাকে পাঠিয়েছি এই কথা গুলো কারন সত্য কখনো লুকিয়ে থাকেনা।তারমানে আমার বাবার শাস্তি একসময় হবেই।এরপর আমার মা আর বোন একা হয়ে যাবে।তখন তুমি ওদের ওপর খেয়াল রেখো।
আমি কারোর ওপর ভরসা করতে পারছিনা তুমি ছাড়া।কারন একবছরের বন্ধুত্বে তোমাকে অনেকটা চিনেছি।ওদের খেয়াল রেখো আর খুব ভালো পাত্র দেখে আশফিনা কে বিয়ে দিও।আল্লাহ তোমার সহায় হোন।এই বন্ধুটিকে মাফ করে দিও।বিদায় বন্ধু।”
আইজানের রেকর্ডিং শোনার মুহূর্তে রোয়েনের চোখ ভরে আসে।এদিকে আলম খানের চেহারা মুহূর্তে ফ্যাকাশে হয়ে আসে।ওনার চেহারায় কোন কষ্ট না বরং ভয় দেখতে পায় রোয়েন।ওনি বললেন,
.
.
-”আমি তো,,,,,,”
-কি আপনি?জানোয়ার!!!নিজের ছেলেকে কিভাবে মারতে পারেন?”
-”প্লিজ রোয়েন কাউকে বলবেননা।আমার ক্ষমতা চলে যাবে।যা চান পাবেন।বলুন কি চান?”
-”দিতে পারবেন তো?”
-”বলেন!!”
-আশফিনা কে আমি নিয়ে যাবো।না করার সাহস করবেননা কারন আমার লোক আপনার পুরো বাসা ঘিরে আছে।উল্টাপাল্টা কিছু করলে আপনাকে শেষ করে দিবো।আপনার কুকীর্তি সবাই জানবে।”
-”না এমন করবেননা। নিয়ে যান আমার মেয়েকে।”
.
.
আলম খানের কথা শুনে রোয়েন ওনাকে নিয়ে সবার সামনে আসে।আলম খান খেয়াল করে ওনার ঘর ভর্তি রোয়েনের লোকেরা।আলম খান স্ত্রীর সামনে যান।রোয়েনের লোকেরা তখনই ওনাকে ধরে ফেলে।আশফিনার মা বললেন,
.
.
-”আমার হাসবেন্ডকে ধরলেন কেন রোয়েন?”
-”আপনার ছেলে আইজানের মৃত্যুতে ওনার হাত আছে।ইনফ্যাক্ট ওনিই সেটার মাস্টার প্ল্যান।”
-”কি বলছেন এসব?”
.
.
রোয়েন পুনরায় রেকর্ডার অন করে।আশফিনা আর ওর মা রেকর্ডার শুনে কাঁদতে থাকে।নিজেকে আর আটকাতে আটকাতে পারেননা।প্রবল জোরে থাপড় মারতে থাকেন আলম খানের স্ত্রী তার স্বামীকে। রুহীও কাঁদতে শুরু করেছে।রোয়েনের লোকেরা আলম খান কে নিয়ে যায়।আশফিনা ও তার মা কাঁদতে থাকে।রুহী দুজনকে স্বান্তনা দিচ্ছে।রোয়েন আবার বলল,
.
.
-”আপনারা আমার সাথে আসবেন বাংলাদেশে।আজ থেকে আপনাদের সব দায়িত্ব আমার।”
-”বাবা কোন ভুল করেছিলাম বলো তো?কেন আমার ভাগ্যটা এমন হলো।তুমি না আসলে শয়তানকে চিনতে পারতাম না।”
-”আন্টি বন্ধুর ইচ্ছে পূরন ব্যাতীত কিছু করিনি।আশফিনা শুধু আইজান ভাইয়ের বোন না আমার ও।চলুন আপনারা প্লিজ।”
.
.
অবশেষে রোয়েন তিনজনকে নিয়ে রওনা হয়।এয়ারপোর্টে আসে ওরা।আশফিনা আর মা বসে আছে।রুহী রোয়েনের পাশে বসে আছে।রোয়েন রুহীর দিকে একবার তাকিয়ে সামনে তাকায়।তারপর জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-”কেমন আছো?”
-”ভালো।আপনি?”
-”আমার কথা বাদ দাও।না বলে কেন এসেছো?”
-”আসলে আমি কিভাবে জানাতাম বুঝতেই পারছিলাম না।”
-”বুঝে গেছি।কিছু বলার দরকার নেই।নিজের খেয়াল খুশি মতো চলা তোমার অনেক পছন্দ।আমি তো বারবার ভুলে যাই।”
.
.
রুহী বুঝতে পারে লোকটা রেগে আছে।এদিকে বাংলাদেশে পৌছে যায় ওরা।রোয়েন আর রুহী ঘরে পৌছে যায়।আশফিনা আর ওর মায়ের জন্য রোয়েনের বাড়ির পাশেরই বড় একটা বাড়ি ঠিক করে দিয়েছে।কাজের লোক ও দিয়েছে কিছু।আশফিনা আর ওর মাকে ঘরে দিয়ে বাসায় আসে রোয়েন আর রুহী।ফ্রেশ হতে চলে যায় রোয়েন।কাজের লোকরা রান্না করে বেরিয়ে গেছে।রুহী ফ্রেশ খাবার গরম করতে থাকে।
রোয়েন ফ্রেশ হয়ে এলে এক সাথে খেয়ে নেয় ওরা।রুহী এসে রোয়েনের বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়ে।
রুহীকে দেখে অবাক হয় রোয়েন।তারপর কিছু না বলে দূরত্ব রেখে শুয়ে পড়ে।রুহী ঘুমায়নি এখনো।রোয়েনকে দূরে শুতে দেখে খারাপ লাগে ওর।তাই নিজেই রোয়েনের পাশে এসে ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়।পরদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের।এবং বেশ অবাক হয় ও।রুহী প্রায় ওর ওপর উঠেই ঘুমাচ্ছে।রুহীকে কিছুক্ষন দেখে ও।মেয়েটা একদম বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে।রোয়েন রুহীকে হালকা করে সরিয়ে দেয় নিজের ওপর থেকে।ঘুম পাতলা ছিলো বলে রুহী জেগে যায়।রোয়েন বলল,
.
.
-”আমার বের হতে হবে।”
.
.
রুহী কিছু না বলে রুমে চলে যায়।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে নেয়।বেরিয়ে এসে চুল শার্ট পরে চুল ঠিক করতে থাকে।তখনই রুহী রুমে আসে কফি নিয়ে।বেশ সেজে আছে ও।রোয়েন নিজেকে সামলাতে পারেনা তারপর ও হাতে মগটা নিয়ে কফি খেতে শুরু করে।রুহী চুপচাপ রোয়েন কে দেখছে।রোয়েন বলল,
.
.
-”এগুলো পাল্টে তোমার স্পেশাল ব্ল্যাক সুটটা পরে নাও।কোব্রা আর কিং কে খাওয়াবো।”
.
.
রুহী জানে রোয়েন কাকে খাওয়াবে।তাই অবাক চোখে রোয়েনের দিকে তাকায় ও কিছুক্ষন।অন্য রুমে চলে যায় রুহী।রোয়েনের দেয়া কালো কোটটা পরে নেয়।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে যায় রোয়েন।ওরা কোব্রা আর কিং এর পুলটার সামনে আসে।রুহী দেখতে পায় আশফিনা ও তার মাকে।সেখানে আলম খান কে আটকে রাখা হয়েছে।আশফিনার মা কাঁদছে।কিন্তু আশফিনার চোখে পানি নেই বরং আছে ঘৃনা।রোয়েন আলম খানকে কাঁটতে নির্দেশ দিলে আশফিনা বলল,
.
.
-”ভাই আমি নিজ হাতে একে শেষ করতে চাই।”
.
.
আশফিনার কথায় রোয়েন মানা করতে পারেনা।আশফিনার হাতে ছুড়ি ধরাতে গেলে আশফিনা সেটা হাতে নেয় না।বাবার কলার চেঁপে ধরে ও।তারপর বলতে লাগলো,
.
.
-”সবসময় তোমার কথা মেনে আসছিলাম।বাবারা সন্তানদের জন্য হিরো হয় কিন্তু আমাদের জন্য আমাদের বাবা খুনি।সে নিজের সম্মান বাঁচাতে।সব করতে পারে।আপনি কোন বাবা না।জানোয়ার আপনি।আমার মায়ের জীবন শেষ করে দিয়েছেন।বাঁচার অধিকার নেই আপনার।”
.
.
আশফিনা বাবাকে ফেলতে নিলে আলম খান বললেন,
.
.
-”মারে এমন করিসনা।মরে যাবো মাফ কর।”
.
.
-”সেদিন আপনার কিংবা আপনার ভাড়াটে গুন্ডাদের মনে আমার ভাইয়ের জন্য দয়া হয়নি।আমার ও হচ্ছেনা।”
.
.
আশফিনা ওর বাবাকে কোব্রা আর কিংয়ের কাছে ফেলে দিলো।সাথে সাথে কোব্রা আর কিংয়ের হুটোপটি শুনা গেলো।পুরো সুইৃমিংপুলের পানি লাল হয়ে গেলো।আশফিনা ও তার মা কাঁদছে।রুহী দুজনকে স্বান্তনা দিতে ওদের ঘরে চলে গেলো।আশফিনার রুম থেকে ওদের রুম দেখতে পায় রুহী।জানালার সামনে এসে দাঁড়ায় ও।লোকটা বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।রুহীর অন্যরকম ভালো লাগছে রোয়েনকে এভাবে দেখতে।একদম অন্যরকম অনুভূতি।
চলবে