The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 71

শাড়ীতে আচ্ছাদিত পাশে শুয়ে থাকা রুহীর দিকে অপলক চোখে চেয়ে আছে রোয়েন।রুহীর পায়ের অনেকটাই উপরে শাড়ী উঠে আছে।রোয়েন সেদিকে একবার তাকিয়ে শাড়ীটা নামিয়ে দেয়।রুহী ঘুমের মাঝেই জড়িয়ে ধরে রোয়েনকে।এমনিতেই বুকটা দাউদাউ করছে কাউকে বাহুডোরে বাঁধার ইচ্ছায়।তারওপর রুহীর এভাবে ধরায় রোয়েন যেন আরো পাগল হচ্ছে।ওর অস্থিরতা যেন শেষ হবার নয়।কিন্তু পারবেনা ও!!পারবেনা রুহীকে নিজের করে নিতে।কারন ওর হাত পা বাঁধা।রুহীর কথার বাঁধনে বাঁধা রোয়েন।
কারন কিছুক্ষন আগে রুহীকে নিয়ে ভালবাসার সমুদ্রে পা ডুবিয়েছিলো রোয়েন।রুহী না চাইতে ও পিঠ জড়িয়ে ধরে রোয়েনের।নিজের মাঝে মিশিয়ে নিতে চায়।রোয়েন যখনই রুহীর পেটের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে নিতে যাচ্ছিলো তখনই রুহী রোয়েনের হাত সরিয়ে দেয়।রোয়েন ও সরে আসে।রুহী শাড়ী ঠিক করে নেয়।রোয়েন আবার ও রুহীকে চুমু খেতে এলে রুহী বলে,
.
.
-”এর থেকে আরো বেশি আগালে ভাল হবেনা।
আমি বাঁচতে পারবোনা।প্লিজ আর না ।”
.
.
রুহীর কথায় রোয়েন থমকে যায়।রুহীর চোখের দিকে তাকায় ও।ওর চোখের কোনায় অশ্রু জমে আছে।রোয়েন সরে আসে।রুহী ভেবেছিলো হয়ত অন্যরুমে যাবে।কিন্তু যায়নি রোয়েন।রুহীর পাশেই শুয়ে পড়ে একটু সরে।রুহী চোখ বুজে নেয়। ওর ও কি ইচ্ছে হয়না স্বামীর ভালবাসা পাওয়ার?কিন্তু অভিমানটাই ভারি পড়ে গেছে ওর ওপর।এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ে রুহী।রোয়েন সেই তখন থেকেই জেগে আছে।রুহীকে দেখে যাচ্ছে।চোখের কোনা জ্বলজ্বল করে উঠে রোয়েনের।রুহী এসে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলে ভাবনার জগত থেকে বাস্তবে চলে আসে রোয়েন।রুহী বাচ্চাদের মতো জড়িয়ে ধরেছে ওকে।রোয়েন বিবেককে সরিয়ে মনকে জায়গা দিলো।রুহীকে জড়িয়ে নেয় বুকে।ওর কাঁধে মুখ ডুবিয়ে দেয়।ঘুমিয়ে যায় ও।পরদিন বিকেলে ফ্লাইট।সকাল থেকেই গুছানোয় ব্যাস্ত রোয়েন।এটা ওটা করছে।রুহী যাই করছে আড় চোখে রোয়েনকে দেখছে।যতোই অভিমান আছে কিন্তু বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে।সেটা কাউকে না পারছে বলতে না দেখাতে।
দুপুর একটায় লাঞ্চ করে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয় রোয়েন।বাকি কাজ গুলো সেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য দরজা খুলে দাঁড়ায় রোয়েন।রুহী দাঁড়িয়ে আছে পিছনে।রোয়েন দরজা ছেড়ে পিছনে ফিরে রুহীর দিকে ফিরে।
তারপর এগিয়ে এসে রুহীকে বুকে টেনে নেয়।রুহী কিছু বলতে পারছেনা।সবটা পুরো ঘোরের মতো লাগছে।রোয়েন সরে এসে বলল,
.
.
-”খেয়াল রেখো নিজের।ভালো থেকো।কিছু দরকার হলে শামীমকে জানাবে।”
.
.
রুহী চুপ করে শুনে রোয়েনের কথা।কথা শেষ রুহীকে দেখে রোয়েন।তারপর ওর কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায় লাগেজ আর ব্যাগ হাতে নিয়ে।কাজটা এতোই দ্রুত ঘটে গেলো যে রুহী কিছুই বুঝতে পারেনা। রোয়েন চলে যাওয়ার পর যখন দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ হলো তখন ঘোর কাঁটে রুহীর।দৌড়ে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে আসে।কিন্তু আর দেখা পায়না রোয়েনের।দরজার সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে রুহী।ওর অশ্রুসিক্ত চোখজোড়া সবার আড়ালে থাকে।
এদিকে আশফিনা কে প্রতিনিয়তই বাবা মানসিক ভাবে অত্যাচার করছেন।প্রতিনিয়ত ওকে হুমকি দিচ্ছেন।নতুন নতুন ছেলে নিয়ে আসেন ওকে বিয়ে দেয়ার জন্য।
কিন্তু আশফিনা বরাবরের মতোই নিজের সিদ্ধান্তে অটল।সবসময়কারের মতো না করছে আর ফলাফল হিসেবে বাবার অকথ্য ভাষা গুলো গলঃধকরন করতে হচ্ছে।রোয়েন সুইজারল্যান্ডে পৌছে যায়।শামীমের সাথে সবসময়ই কথা হচ্ছে।রুহীর খবর শামীম দিচ্ছে।রুহীকে কল দিলে দুটো কথার বেশি বলেইনা।রোয়েন ওকে কথা বলায় তবে সেটা পাঁচমিনিটের বেশি স্থায়ী হয়না।রোয়েন চলে গেছে চারদিন হয়ে গেলো।রুহী সারাঘরে হাঁটে বেশির ভাগ সময়।ওর মনে হয় রোয়েন আশেপাশেই আছে।ওকে ডাকছে, জড়িয়ে ধরছে।রোয়েনের কথা গুলো মনে হতে থাকে।সেদিন আশফিনা রুহীকে কল দিয়ে কাঁদতে থাকে।রুহী অনেক জিজ্ঞেস করে।কিন্তু আশফিনা শুধু এতটুকুই বলে,
.
.
-”আমাকে নিয়ে যা নাহলে আমাকে মেরে ফেলবে বাবা।”
-”কি বলছিস এসব?আশফিনা!!!!!
.
.
আশফিনার কথা শুনতে পায়না রুহী।ফোন কেঁটে যায়।রুহী কি বলবে বুঝতে পারছেনা।রামীনকে কিছু বলে লাভ নেই।সে আসলে ভালবাসেনা আশফিনাকে।নাহলে আশফিনাকে মেরেছে শুনে ও কতোটা স্বাভাবিক ছিলো।রুহী সেরাত ঘুমাতে পারেনা।পরদিন সকালে শামীমকে কল দিয়ে বাসায় আসতে বলে।রুহীর কল পেয়ে শামীম রোয়েনের বাসায় চলে আসে।রুহী বলল,
.
.
-”ভাইয়া দুবাই যাওয়ার টিকিট করান ইমিডিয়েটলি।”
-”রুহী বলছো কি এসব?স্যার জানেন? ”
-”ভাইয়া স্যারকে পরে জানান।আশফিনা কে আমাদের দরকার।”
-”কি হয়েছে ওর?”
-”ভাইয়া সব পরে বলবো।আগে টিকিট করান আপনি।যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব করান।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে দেখছি।”
.
.
শামীম বেরিয়ে যায়।রুহীর জেদের কাছে হার মেনে গেছে।শামীম ইমার্জেন্সি ভিসা করতে দেয়।দুদিনের মাঝে ভিসা আর টিকিট পেয়ে যায়।এ দুদিনে রুহী পড়াশুনা করে নিয়েছে কারন ওখান থেকে ফিরলে ওর পরীক্ষা শুরু হবে।দুদিন পর শামীম রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে যায় দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে।দুবাই পৌছে আশফিনার লোকশান অনুযায়ী ওরা পৌছে যায় ওদের বাসায়।
আশফিনার মা রুহীকে বেশ আদর করেন।ওর বাবা অনেক অবাক হন রুহীকে দেখে।দুপুরে খেয়ে রুহী আশফিনার রুমে চলে আসে।আশফিনার শরীর ভাল দেখাচ্ছেনা রুহীর কাছে।ও ভাবছে কি করে আশফিনার বাবার সাথে কথা বলা যায়।এদিকে শামীম আশফিনার বাবাকে দেখে কিছুটা চিন্তিত হয়ে যায়।রোয়েনকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় ও।এদিকে রুহী সন্ধ্যায় আশফিনার বাবার কাছে এসে দাঁড়ায়।ওনি চা খাচ্ছিলেন।রুহীকে দেখে বললেন,
.
.
-”কি হলো দাঁড়িয়ে আছো যে?বসো।”
.
.
রুহী হেসে ওনার সামনে বসে পড়ে।তারপর বলল,
.
.
-”আসলে আঙ্কেল একটা কথা বলার ছিলো।”
-”বলো কি বলবে?”
-”আমার সাথে আশফিনাকে নিয়ে যাবো বাংলাদেশে।”
-”কেন আমার মেয়ে কে তুমি কেন নিয়ে যাবে?”
-”আঙ্কেল ও ভালো নেই এখানে।”
-”ভালো থাকবে কি করে?বাংলাদেশে গিয়ে ডো নষ্টামি করে এসেছে।”
-”আঙ্কেল ও,,,,,,,,,,,”
-”একদম চুপ। ঘুরতে এসেছো ঘুরো।ঘুরা শেষ হলে চলে যাও।”
.
.
কথা গুলো বলে রেগে শাঁসাতে শাঁসাতে চলে গেলেন।রুহী কেঁপে উঠে।
শামীম রোয়েনকে কল করে সেদিনই।রোয়েন কাজ করছিলো। তখন শামীমের কল আসে ওর ফোনে।শামীম নেটে কল করেছে।রোয়েন কল রিসিভ করে।শামীম বলল,
.
.
-”স্যার রুহীকে নিয়ে দুবাই এসেছি।আশফিনাদের বাসায় আমরা।”
-”হোয়াট!!!কবে এসেছো?আমাকে কেন জানাও নি?রুহী কই?”
-”স্যার ও ভালো আছে।স্যার একটা প্রবলেম।”
.
.
এমনিতেই প্রচন্ড রাগ হচ্ছে রোয়েনের।তারওপর প্রবলেমের কথায় চিন্তা হতে লাগলো ওর।
ও রেগে বলল,
.
.
-”কি সমস্যা?”
-”স্যার আইজান ভাই ছিলো আপনার বন্ধু।”
-”হ্যা ওর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো।ইনফ্যাক্ট ওর কাজে আমরা হেল্প ও করেছিলাম।কিন্তু ওকে তো ওর বাবা মেরে ফেলেছিলো।”
-”স্যার আশফিনা আইজানের বোন।আশফিনার বাবা ও আছে।”
.
.
রোয়েনকে আশফিনা আর ওর বাবার সম্পর্কিত সব জানায় রামীন।রোয়েন সব শুনে ফোন কেঁটে দেয়।এদিকে রুহী কয়েকবার বোঝাতে চায় আশফিনার বাবা কে কিন্তু ওনি মানবার পাত্র নন।আরো রেগে যাচ্ছেন রুহীর ওপর।রুহী এবার যেন অসহায়।কি করবে?রোয়েনকে বড্ড মনে পড়ছে।লোকটা থাকলে ওর শক্তি থাকত।ওর খেয়াল রাখতো রোয়েন।কিন্তু নিজেকে একেবারেই একা লাগছে।কে ওকে সাহায্য করবে?রোয়েনকে ও তো জানায়নি।সে জানতে পারলে কতোটা রাগ করবে তা ভাবনাতীত।এদিকে রোয়েন সুইজারল্যান্ডে ওর কাজ গুলো ওর ফরেইনার লোকদের বুঝিয়ে দিয়েছে।কারন দুবাই আসতে হবে ওকে। ওর রুহীর জন্য আর পাপীকে শাস্তি দেবার জন্য।সুইজারল্যান্ড থেকে দুবাই আসার জন্য টিকিট করায় রোয়েন।টিকিট ওর হাতে চলে আসে দুদিন পরেই।রুহী প্রতিনিয়ত আশফিনার বাবাকে মানাতে চেষ্টা করছে।কিন্তু লাভ হচ্ছেনা।দুদিন পার হয়ে গেলো কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা।রুহী কি করবে বুঝতে পারছেনা।সেদিন সকালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কলিংবেল বেজে উঠে।বাসার মেইড সার্ভেন্ট গিয়ে দরজা খুলে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”একটা লোক আসছে।চিনি না তো।”
.
.
তখনই আশফিনার বাবার ড্রয়িংরুমের সামনে পার করছিলো।কাজের মেয়ের কথা শুনে ওনি দাঁড়িয়ে যান।ওনার মুখে ফুঁটে উঠে আতঙ্ক।রুহী সিড়ি থেকে দরজায় তাকায় কিন্তু কাউকে দেখতে পারছেনা শুধুমাত্র চকচকে কালো শু জোড়া ছাড়া।
চলবে