The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 67
বড় গেটটি গর গর করে খুলে গেলো।প্রচন্ড শব্দ করে ভিতরে ঢুকে পড়ে একটা বিএমডব্লিউ সাদা কার।সামনে বড় ধূসর বর্নের দোতলা বাড়ি।দু ফ্লোরের মালিক একজন আর সে হলো জয় শেখাওয়াত।পুরোর বাড়ির মালিক সে নিজেই।আজ অনেকদিন পর বাড়ি ফিরে এলো সে।গাড়িটি বাড়ির সামনে থামতেই ভিতর থেকে চারজন মেইড নেমে এলো।সবার হাতে ফুলের মালা।তারপরই নেমে এলো একজন বয়স্ক মহিলা।মহিলাটি নেমে আসতেই জয় শেখাওয়াত তাকে জড়িয়ে ধরে।মহিলাটি ও পরম স্নেহে জড়িয়ে ধরে জয়কে।জয় বলে উঠে,
.
.
-”আই মিসড ইউ দাদী।”
-”তোকে ও খুব মিস করেছিরে সোনা।তা তোর ফ্লাইট তো পাঁচ তারিখে ছিলো এতোদিন পর আসলি।তোকে কল করে ও পাচ্ছিলাম না।”
-”অনেক টায়ার্ড দাদী।পরে সব বলবো।লং স্টোরি।”
-ওকে বাট বলতে হবে।আয় ভিতরে।”
.
.
জয় শেখাওয়াত দাদীর সাথে ভিতরে প্রবেশ করে।আজ শেখাওয়াত পরিবারের রান্না করা হয়েছে একমাত্র ওয়ারিশ জয়ের জন্য।শেখাওয়াত পরিবার বলতে জয় আর ওর দাদী বিজলি বেগম।জয় ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে।দাদীর সাথে আজ অনেক গল্প আছে ওর।নাতীকে আদর করে খাওয়ালেন দাদী।এটা ওটা দিচ্ছেন ওর প্লেটে।খাওয়া শেষে জয় দাদীর সাথে তার রুমে গেলো।দাদীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকে ও।বিজলি বেগম বললেন,
.
.
-”বললিনা কই ছিলি এতোদিন?”
-”দাদী আসলে এয়ারপোর্ট থেকে ফেরার পথে এ্যাক্সিডেন্ট হয় আমার।সেখান থেকে দুজন বাঁচায় আমাকে।হাসপাতালে এডমিট করায়।আমার কন্ডিশন ভালো ছিলোনা।যারা বাঁচিয়েছিলো তারা জারাকে কল দেয়।জারা আসে আমার কাছে।ও আমার খেয়াল রেখেছিলো।ও চেয়েছিলো আপনাকে জানাতে কিন্তু আমিই মানা করেছিলাম।আপনি চিন্তা করতেন সেজন্য।”
.
.
এতক্ষন নাতির কথা চুপচাপ শুনলে ও এখন আর চুপ থাকতে পারেননা ওনি।রেগে কেঁদে বলেন,
.
.
-”তোদের কি একবার ও মনে হয়নি আমাকে জানানো উচিৎ ছিলো।”
.
.
দাদীকে কাঁদতে দেখে জয় উঠে বসে।তারপর বিজলি বেগমকে জড়িয়ে ধরে বলল,
.
.
-”দাদী দেখো তখন তোমাকে জানালে অনেক টেনশন করতে তোমার বিপি বেড়ে যেতো।কিন্তু এখন দেখো আমি ঠিক আছি।যেখানে আমার দাদীর এতো ভালবাসা আছে আমার জন্য সেখানে আমার কি কিছু হতে পারে?”
-”যাহ তোর সবসময় ফাজলামো।আমার ভালো লাগেনা।যাক তুই সুস্থ আছিস সেজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শোকর।”
-”হুম।”
.
.
জয় আবার ও বিজলি বেগম কে জড়িয়ে ধরে।ওর চোখে ভেসে উঠে সেই মিষ্টি পাখিটির মায়া ভরা চেহারা।যার চেহারাটা দেখে এতোদিন হাসপাতালে কাঁটিয়েছে।রুহী গোসল সেড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ায়।আজ কাল বেশ গরম পড়েছে।গোসলের কিছুক্ষন পরই আবার গরম লাগতে শুরু করে।ব্যাপারটা বেশ বিরক্তির।তোয়ালে জড়ানো চুল গুলো খুলে ফেলে রুহী।সাথে সাথে লম্বা চুল গুলো কোমড়ের অনেকটা নিচ পর্যন্ত চলে যায়।চুুল গুলো আবার তোয়ালেতে জড়িয়ে হালকা ঘষে মুছতে শুরু করে রুহী।হঠাৎ আয়নায় ওর চোখ চলে যায় রুমের বাহিরে।সেখানে কালো লম্বা কোটে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে চুল মোছায় মন দেয়।রোয়েন রুহীকে দেখছে।মেয়েটা ওকে দুরে সরিয়ে রেখেছে।এর মানে তো এই না যে রোয়েন দূরে থাকবে।রুহী বিবাহিত স্ত্রী ওর।রুহীকে ভালবাসার অধিকার শুধু ওর আর কারোর না।কথা গুলো ভেবে রুহীকে দেখে রোয়েন।রুহীর পেট কোমড়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমে আছে।রোয়েন সেগুলোর স্বাদ পেতে চায়।আর অপেক্ষা করেনা রোয়েন।রুহীর ঘ্রান ও এ মুহূর্তে নিজের নিশ্বাসে মিশিয়ে নিতে চায়।রুহী পিছনে ফিরতেই রোয়েন ওকে থামায় ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় দুহাত চেঁপে।রুহী চমকে যায়।এমনটা ও ভাবেনি।রুহী বলল,
.
.
-”এ এ খান থেকে চলে যান।”
.
.
রোয়েন নিশ্চুপ।রুহী এবার রোয়েনকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে চায়।কিন্তু রোয়েন না সরে আরো কাছে আসে রুহীর।রুহী মুখ সরিয়ে বলল,
.
.
-”প্লিজ চলে যান।আমার দম আটকে আসছে।”
-”তাহলে আমার নিশ্বাসে তোমাকে জড়িয়ে নেই।আমার আত্মায় তোমায় মিলিয়ে নেই।যেন দম বন্ধ হলে দুজনের হবে। মৃত্যুর স্বাদ একসাথে গ্রহন করবো দুজনে।”
.
.
রুহী আরো কিছু বলতে যাবে তখনই রোয়েন ওর ঠোঁট জোড়ায় একটা আঙ্গুল চেঁপে বলল,
.
.
-”আমাকে তুমি দূরে সরিয়েছো আমি তো তোমাকে সরাইনি।কি মনে করেছো আমাকে দূরে সরিয়ে (রুহীর গালে ঠোঁট বুলিয়ে) তুমি আমার ভালবাসা থেকে রক্ষা পাবে(নেশা ধরানো কন্ঠ)।সেটাতো কখনো হতে দেবোনা জান।তোমার রাগ নিয়ে থাকো।আমাকে ভালবাসতে বাঁধা দিলে ফলাফল তিক্ত হবে।বাট এই মিষ্টি মুহুর্তটাকে তিক্ততায় পরিনত করার ইচ্ছে নেই আমার।”
.
.
রোয়েনের গরম নিশ্বাস রুহীর গাল ঠোঁট আর গলায় পড়ছে।রুহী যেন নিজের মাঝে নেই।রোয়েন একহাতে রুহীর কোমড় চেঁপে অপর হাতে রুহীর মুখ নিজের দিকে ফিরায়।রুহীর চোখে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু জমে আছে।রোয়েন ওর অশ্রু গুলো উপেক্ষা করতে পারেনা।ঠোঁট এগিয়ে আনে রুহীর গালে তারপর অশ্রু গুলো শুষে নেয়।তারপর রুহীর ঠোঁটজোড়ায় আলতো করে চুমু দিয়ে একটু সরিয়ে আনে ঠোঁট।রুহী চোখ শক্ত করে বুজে আছে।রোয়েন এবার রুহীর ঠোঁটজোড়া মুখে নিয়ে শুষে নিতে থাকে।রুহী চোখ বড় করে নেয়।রোয়েন কে ধাক্কা দিয়ে সরাতে থাকে।কিন্তু যতোই সরাতে চায় রোয়েন আরো আঁকড়ে ধরে রুহীকে।রুহী আরো ধাক্কা দিতে যাবে রোয়েন ওকে প্রায় কোলে উঠিয়ে নেয়।তারপর বিছানায় ফেলে দেয়।রুহী উঠে বসতে যাবে তখনই রোয়েন ওকে ধাক্কা দিয়ে আবার ও শুইয়ে দেয় তারপর ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।রুহী ছটফট করতে থাকে।কিন্তু রোয়েনের স্পর্শ গুলো ওকে শান্ত হতে বাধ্য করে।অনেকটা সময় রুহীর পেটে কোমড়ে চুমু খেয়ে রোয়েন উঠে বসে। তারপর রুহীর কপালে ঠোঁটে আবার ও চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।রোয়েন চলে যেতেই রুহী ধরফড় করে উঠে বসে।রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।চোখ ভরে আসে হাজারো অশ্রুকনায়।রুহী দুচোখ মুছে ক্লান্ত পায়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।বাহিরের ছোট ছোট লাইট গুলো ঝাপসা হয়ে আসছে।রুহী বারান্দার গ্রিল চেঁপে কাঁদতে শুরু করে।চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।কান্নার আওয়াজ গুলো বাতাসের সাথে মিলিয়ে যেতে থাকে।
বারান্দায় রাতটা কেঁটে যায় রুহীর।রোয়েন সকালে উঠে রুমে কফি পেয়ে যায়।ফ্রেশ হয়ে আসে রোয়েন।আজ রুহীকে দেখতে পাচ্ছেনা রোয়েন।
অন্তত রুম থেকে বের হয় মেয়েটা।রোয়েন নাস্তা করতে বসে পড়ে।তারপর ও ওপরে তাকিয়ে রুহীকে দেখার চেষ্টা করে রোয়েন।নাস্তা শেষ করে দাঁড়ায় রোয়েন।তখনই রুহী নিচে নেমে আসে।রোয়েন রুহীর দিকে তাকায়।রোয়েন বেরিয়ে যেতে নিলে আবার ফিরে আসে।রুহী অবাক হয়ে রোয়েনকে দেখছে।রোয়েন এসে রুহীর কাছে দাঁড়িয়ে বলল,
.
.
-”আমার গুড বায় কিস নিচ্ছি।”
.
.
কথাটা বলে রোয়েন রুহীর ঠোঁটে তীব্র চুমু খেয়ে নেয়।রুহী কিছু বুঝে উঠতে যাবে তখনই রোয়েন ওকে ছেড়ে বেরিয়ে যায়।সেদিন লাঞ্চ টাইমে শামীম তিনটি টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে অফিসে ফিরে আসে।আনিলার কাছে একটা বক্স এগিয়ে দেয় শামীম।আনিলা বললেন,
.
.
-”কে পাঠালো?”
-”রুহী পাঠাইছে আপনার জন্য।”
-”রুহী পাঠিয়েছে!!!!!(খুশি হয়ে)
-”জি।”
.
.
আনিলা টিফিন বক্সটা নিয়ে রেজোয়ান মাহবুবের কাছে চলে আসেন।দেখেন রেজোয়ান মাহবুব খাচ্ছে রুহীর পাঠানো খাবার।আনিলা বললেন,
.
.
-”দেখলে মেয়ে পাঠিয়েছে আমাদের জন্য।”
-”হুম।বসো খেয়ে নাও।”
.
.
আনিলা রেজোয়ান মাহবুবের পাশে বসেন।আনিলা রেজোয়ান মাহবুবকে একটু খাইয়ে দিতে চায়।রেজোয়ান বললেন,
.
.
-”তুমি খাও আমি খাচ্ছি তো।”
-”আরে আমি খাবো।মেয়ে পাঠিয়েছে খাবোনা?”
-”হুম।”
.
.
শামীম রোয়েনের কাছে ফিরে আসে।রোয়েনের সামনে টিফিন বক্স টা রেখে বলল,
.
.
-”রুহী পাঠিয়েছে।”
-”রুহী পাঠিয়েছে।ওহ!!”
.
.
রোয়েন কিছু না বলে বক্সটা হাতে নেয়।শামীম বের হতেই বক্সটা খুলে দেখলো ওর পছন্দের খাবার।রোয়েন খেতে শুরু করে।সেদিন ঘরে ফিরে এসে রেজোয়ান মাহবুব রুহীকে কল দেন।রুহী ফোন রিসিভ করে কিছু বলতে পারছেনা।রেজোয়ান মাহবুব বলে উঠেন,
.
.
-”মারে রাগ করিস না আমার ওপর।”
-”বাবা আমি ঠিক আছি।তোমরা ভালো আছো?”
-”রুহী আমাকে মাফ করে দিস মা।”
-”বাবা ঠিক আছে।ওসব কথা রাখো।তুমি ভালো আছো?”
-”আলহামদুলিল্লাহ মা।তুই কেমন আছিস?”
-”ভালো বাবা।”
-”আচ্ছা মা তুই আনিলা কে কখনো মেনে নিতে পারবিনা তাইনা?”
-”বাবা তুমি জানো কাজ টা এতো সহজ না।আমি তারপর ও চেষ্টা করবো।”
.
.
আরো অনেকক্ষন কথা হয় বাবা আর মেয়ের।রুহী প্রায়শই অফিসে রোয়েন আনিলা আর বাবার জন্য খাবার পাঠাতো।আনিলা শোহরাবের ও বেশ ভালো লাগতো।কারন মেয়েটা ওনার ও যতোটা তার স্বামীর।রুহীর জন্য দুটো জামা পাঠায় আর একটা গলার সেট।রুহী সেগুলো পেয়ে একটু হেসেছিলো।কিন্তু হাসিটা মন থেকে ছিলোনা।
চলবে