The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 56
রুহীর সারাটদিন অলস সময় কাঁটলো।কাজের লোকগুলো ঘরের সব কাজ করছে ওকে করতেই দিচ্ছেনা।রুহীর বিরক্ত লাগতে শুরু করে।আশফিনা ও নেই।কার সাথে সময় কাঁটাবে ও?হঠাৎ মাথায় দুষ্টুমির বুদ্ধি চাপলো।রোয়েনের নম্বরে কল দিলো।রোয়েন কাজে মগ্ন।রামীন যেন কি বলছে।সেটা মন দিয়ে শুনছে রোয়েন।হঠাৎ এর মাঝে রুহীর কল আসে।রোয়েন কল দেখে ফোন রিসিভ করে রামীনের সাথে কাজের কথাই বলতে থাকে।রুহী বলল,
.
.
-”রোয়েন এটা কেমন ভদ্রতা ফোন ধরে আরেকজনের সাথে কথা বলছেন?”
-”রুহী তুমি এসময় কল দিলে কেন?বুঝতে পারছো তো কাজ করছি।আক্কেল লাগিয়ে কাজ করতে পারোনা?”কিছুটা রেগে গেলো রোয়েন।
-”আচ্ছা সরি।”মন খারাপ করে ফোন কেঁটে দেয় রুহী।
.
.
রোয়েনের কথায় রামীন বুঝলো রুহী কল করেছিলো।কিন্তু রোয়েন এমন রুডলি আচরন করলো তাও আবার নতুন বৌয়ের সাথে।রামীনের কেমন যেন খারাপ লাগলো।কাজের কথা শেষে রামীন বলল,
.
.
-”একবার বাসায় যেয়ে দেখ ভাবি কেন করেছিলো?”
-”কেন?”রেগে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-”দেখ তুই এভাবে কথা বললি ভাবি হয়ত কষ্ট পেয়েছে।কোন দরকারে কল করেছিলো হয়ত।”
.
.
রামীনের কথায় এবার কেমন যেন খারাপ লাগে রোয়েনের।ও বলল,
.
.
-”তুই কাজ কর।ছটার আগে বের হবোনা।সব কাজ গুছিয়ে নিতে হবে।”
-”অন্তত একটা কল দে।”
.
.
রোয়েন রুহীর নম্বরে কল দিলো।ফোন ধরছেনা কেউ অপর পাশ থেকে।কয়েকবার রুহীকে কল দেয় রোয়েন কিন্তু ফোন ধরে না রুহী।রোয়েন এবার কাজের লোককে কল দেয়।অপর পাশ থেকে কল রিসিভ হতেই রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী কই?”
-”ভাবি তো বাহিরে গেছে।কই গেলো বলে নাই।”
-”বাহিরে গেছে?”
-”জি!!”
-”ওকে।”
.
.
রোয়েনের চিন্তা হতে থাকে।বোকা মেয়ে রাগ করে কি করে কে জানে।রোয়েন উঠে কালো কোট গায়ে জড়িয়ে নেয়।রামীন বলল,
.
.
-”কই যাস?”
-”আমি আসছি একটু পর।”
.
.
আর অপেক্ষা করেনা রোয়েন।বেরিয়ে যায়।কিছু দূর হাঁটতেই সুইৃমিংপুলের কাছে দেখলো ভিন্ন এক চিত্র দেখে রোয়েন।রুহী রোয়েনের কালো কোট আর প্যান্ট গায়ে দিয়ে দৃষ্টির সাথে খেলছে।দৃষ্টি ও বেশ হাসছে।রোয়েন ওদের কথা শুনার চেষ্টা করলো।রুহী বলল,
.
.
-”দৃষ্টি আমি তোমার রোয়েন চাচ্চু ওকে?তুমি শামীম ভাইয়া।”
-”খুব মজা হবে চাচী।চাচ্চুর মতো হেঁটে দেখাও।”
-”শিওর।”
.
.
রুহী একদম রোয়েনের মতো সোজা হয়ে হাঁটছে।তবে সেটাকে বিকৃত করে।দৃষ্টি হাসতে হাসতে কুঁটি কুঁটি।রুহী বলল,
.
.
-”শামীম আমার কথা শুনলে একটা বুলেট ও এদিক ওদিক হবেনা।তোমার খুলি উড়ে যাবে।”
-”সরি রোয়েন স্যার তবে আমি সরে যাবো আপনার বুলেট আসার আগে।”
-”সরলে কোব্রা কিং এর ডিনার হবে তুমি।”
-নাহ স্যার মাত্র খাওয়ার বয়স হলো।তাছাড়া রুহী আপনাকে ছাড়বেনা আমার কিছু হলে।”
-”রুহী আমার পার্সোনাল বৌ।যা বলবো মানবে।”
.
.
এমন আরো অনেক কথা বলে হাসতে থাকে ওরা।দৃষ্টি আবার বলল,
.
.
-”চাচী চাচ্চুর একটা ডায়লগ বলোনা।”
-”রুহী আমি একটা কথা বারবার বলতে পছন্দ করিনা।”
-”আচ্ছা চাচী চাচ্চুর মতো হেসে দেখাও।”
-”ওনি ত্যাড়া মার্কা হাসি দেয় আর নাহলে হাসেনা।”
-”হুম চাচী আমার মাঝে মধ্যে চাচ্চুকে ভয় লাগে।”
-”হুহ আমি ওনাকে একদম ভয় পাইনা।”
-”সত্যি চাচী!!!!”
-”হুম।আর ভয় পাবো কেন?আমার দুই ছেলে মেয়ে আছেনা?”
-”ছেলে মেয়ে!!! কবে হলো ওরা?”
-”বোকা মেয়ে কোব্রা কিং ওরাই তো আমার ছেলে মেয়ে।”
-”চাচী তুমি ও তো চাচ্চুর মতো কথা বলো।কুমির কি কারোর বাচ্চা হতে পারে?”
-”তোমার চাচ্চু ওদের অনেক ভালবাসে।তাই আমি ও নিজের সন্তান মনে করি ওদের।”
.
.
এতক্ষন ওদের কথা শুনছিলো আর মিটমিটিয়ে হাসছিলো রোয়েন।রুহী ওর নকল ভালই করতে পারে।ওর বৌ বলে কথা।কোব্রা কিং কে রুহী ও ভালবাসে শুনে আরো ভাল লাগে রোয়েনের।ও চুপচাপ কাজে চলে আসে।রামীন বলল,
.
.
-”পেলি ভাবি কে?”
-”হুম।”
-”আচ্ছা চল লাঞ্চ টাইম হয়ে গেলো খিদে পেয়েছে।”
-”ওকে চল।”
.
.
রোয়েন আর রামীন উঠে ওদের ক্যাফেটেরিয়াতে চলে এলো।সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে রোয়েন।রুহী ম্যাথ করছে।রোয়েন ঘরে ঢুকে কয়েকবার গলা খাঁকারি দিলো কিন্তু রুহী শুনছেইনা যেন।রোয়েন এবার রুমে এলো।রুহী ম্যাথ নিয়ে মগ্ন।রোয়েন ডাকতে শুরু করে,
.
.
-”রুহী!”
.
.
রুহী চুপ করে অংক করেই যাচ্ছে।রোয়েন আবার বলল,
.
.
-”দেখো তখন ওভাবে বলতে চাইনি।ইম্পরট্যান্ট কাজ করছিলাম।”
-”হুহ আমাকে কেন বলছেন এসব?”
-”দেখো রুহী তুমি জানো আমি কেমন?এভাবে রেগে থাকার মানে হয়না।”
-মানুষের সামনে এভাবে কথা বলবেন।আমি ও মানুষ রোয়েন।আমার খারাপ লেগেছে।”
.
.
রোয়েন এবার রুহীর হাত ধরে ওর সামনে এনে দাঁড় করালো।তারপর ওর গালে হাত রেখে বলল,
.
.
-”আ’ম সরি।দেখো রুহী তখন আমার মেজাজ ভালো ছিলো না।তুৃমি আমাকে না বুঝলে কে বুঝবে বলো?”
.
.
রুহী এবার কেঁদে দিয়ে জড়িয়ে ধরে রোয়েন কে তারপর বলতে শুরু করলো,
.
.
-”আমি কি করবো রোয়েন?সারাক্ষন একা একা ভাল লাগেনা। কথা বলার মতো ও কেউ থাকেনা।তাই আপনাকে চাচ্ছিলাম।
-”হুম।তাহলে তোমার জন্য বাসায় একটা মেয়ে নিয়ে আসি।আমার অনুপস্থিতে ওর সাথে থেকো।”
-”আচ্ছা।”
.
.
মন খারাপ করে থাকে রুহী।রোয়েন বলল,
.
.
-”ম্যাথ শেষ করো আমি ফ্রেশ হয়ে নিচ্ছি।”
-”ওকে।”
.
.
রোয়েন ফ্রেশ হতে চলে যায়।রুহী ম্যাথ শেষ করে কিছু নাস্তা বানাতে থাকে দুজনের জন্য।রোয়েন বেরিয়ে এসে রুহীকে খু্ঁজতে খুঁজতে কিচেন পর্যন্ত চলে আসে।রুহী সমুচা ভেজে ডাইনিং রুমে আসতে নিতেই রোয়েনকে দেখতে পায়।রোয়েন সরে দাঁড়ালে রুহী কিচেন থেকে বেরিয়ে খাবার গুলো টেবিলে রাখে।দুজনে মিলে খেতে বসে।খাওয়ার মাঝেই রোয়েন রুহীর ঠোঁটের কোনায় লেগে থাকা পেঁয়াজ টা খেয়ে নেয়।রুহী ঠোঁটের কোনে হাত রেখে মাথা নোঁয়ায়।দুজনে খাবার শেষ করে রোয়েন রুমে চলে আসে।আর রুহী কফি বানাতে চলে যায়।সময় কেঁটে যাচ্ছে।দুজনে দুমগ কফি নিয়ে বারান্দায় বসে খাচ্ছে আর গল্পে মেতে আছে।রুহীর পরনে সবুজ বর্নের একটা শাড়ী।হালকা বাতাসে শাড়ীটা উড়াউড়ি করছে।অবশ্য দশটা পিনের জ্বালায় ঠিক মতো উড়তে ও পারছেনা।বাতাসে রোয়েনের নাকে খুব মিষ্টি একটা ঘ্রান এসে লাগে যেটা মায়াবতীর থেকে আসছে।রোয়েন রুহীর হাত ধরে নিজের কোলে এনে বসায়।রুহী এবার চুুপ হয়ে গেলো।রোয়েন ওর গালের চুল গুলো সরিয়ে কাছে টেনে ওর মুখখানা তারপর দুগালে চুমু খায়।রুহী জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে রোয়েনের আদরনীয় স্পর্শ গুলোয় মেতে উঠে।রুহীর ঠোঁট শুষে নিতে ব্যাস্ত থাকা রোয়েন রুহীর গলায় নেমে আসে।তারপর সেখানে চুমু দিতেই ফোন বেজে উঠে রোয়েনের।বিরক্ত হয়ে একটা শব্দ উচ্চারন করে রোয়েন”ওহ শিট!!”রুহী হেসে কোল থেকে নেমে এসে দুজনের মগ রেখে আসে কিচেনে।রোয়েন ফোন ধরে কানে রাখে।অপরপাশ থেকে কেউ কিচু বলল আর রোয়েন বলল,
.
.
– Ok. Thanks!!!
.
.
রোয়েন কথা শেষ করে রুহীকে আবার কাছে টেনে নেয়।রুহী জিজ্ঞাস করে,
.
.
-”কে কল করেছিলো?”
-”ওহ তোমাকে তো বলাই হয়নি আমরা দার্জিলিং যাচ্ছি।পরশু দিনের জন্য টিকিট কনফার্ম হয়েছে।”
.
.
রুহী খুশি হয়ে রোয়েনের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
.
.
-”থ্যাংকস রোয়েন।ওখানে আমার যাওয়ার খুব শখ ছিলো।”
-”সেটা জানতাম।মনে আছে রামীন এসে ছিলো বাসায়।আমি তখন বাহিরে ছিলাম।রামীন তখন আমাকে ভিডিও কলে রেখেছিলো। তোমাকে দেখছিলাম আমি।রামীন তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে তোমার।তখন বলেছিলে তোমার অনেকদিনের শখ দার্জিলিং যাওয়ার।সো আমি আমার বৌটার এই শখ পূরন করবো।”
.
.
রোয়েনের কথায় রুহী কিছু না বলে ওর গলা জড়িয়ে রাখলো।সেখানে অনেক সময় পেরিয়ে যায়।রাতের খাবার শেষে রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।কাল সকালে ওরা শপিং এ যাবে।কথামতো দুজনে সকালে উঠে নাস্তা সেড়ে বেরিয়ে পড়ে।বেশ কিছু শপিং করে ওরা।বাহিরে লাঞ্চ সেড়ে বিকেলে ঘরে ফিরে আসে।অনেক রাত পর্যন্ত প্যাকিং করে।প্যাকিং শেষ করে ডিনার করে রুহীকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।দীর্ঘ এক ভালবাসাময় রাত কাঁটিয়ে সকালে উঠে পড়ে।সন্ধ্যা সাতটায় ওদের ফ্লাইট।
বিকেলে রেজোয়ান মাহবুব আর রামীন ওদের বাসায় আসে।রেজোয়ান মাহবুব মেয়েকে ভাল মন্দ বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
.
.
-”রুহী রোয়েনকে ছাড়া কোথা ও বের হবিনা।ওর সাথে থাকবি।”
-”ঠিক আছে বাবা।তুমি ও তোমার খেয়াল রেখো।”
-”আচ্ছা।রোয়েন যা বলে শুনবি ওর কথা।”
-”বাবা আমি বাচ্চা মেয়েনা।”
-”তুই আমার কাছে এখনো বাচ্চা আছিস।”
.
.
এদিকে রামীন রোয়েনকে টিজ করেই যাচ্ছে হানিমুন নিয়ে।রোয়েন আর রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রামীন আর রেজোয়ান এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।সেখানকার সব ফর্মালিটিস পালন করে রোয়েন আর রুহী।এখন শুধু অপেক্ষা ওড়ার।
চলবে