The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 54

→রামীন আর আশফিনা একটা পার্কে এসেছে।আশফিনার কথামতো রামীন আজ ওর সাথেই থাকবে।রামীন বুঝতে পারছেনা আশফিনা সেই কতক্ষন যাবৎ চুপ করে বসে আছে।কিছু বলছে ও না।রামীন কিছুক্ষন অপেক্ষা করে বলল,
.
.
-”তুমি ঠিক আছো?”
-”হুম।আসলে কোনভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করতে পারছিনা দুবাই যাওয়ার জন্য।”
-”কারনটা কি আমি?”
-”আমার মন টানছেনা রামীন।আপনাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো?আদৌ কি দেখা হবে আমাদের?”
-”আশফিনা আল্লাহ তা’আলা চাইলে অবশ্যই দেখা হবে আমাদের।তুমি খুশি মনে যাও।সেখানে তোমার বাবা মা অপেক্ষা করছে তোমার।”
-”হুম।”
.
.
কিছুটা মন খারাপ করে বসে থাকে আশফিনা।রামীন ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।আসলে আশফিনার মনে কি চলছে বুঝতে পারছেনা রামীন।কেন ও যেতে চাইছেনা?রামীন এবার আশফিনাকে নরমাল করার জন্য বলল,
.
.
-”এখন আমাদের নেক্সট পরিকল্পনা কি?”
-”একসাথে লাঞ্চ করবো।তারপর বাসায় গিয়ে আপনার সাথে বসে চা খাবো।দুজনে একসাথে অনেক গল্প করবো।”
-”নাহ একজায়াগায় নিয়ে যাবো তোমাকে।”
-”কোথায়??”
-”নাইট ক্লাব।ব্যাপারটা একটু গোপনে করতে হবে।”
-”নাইট ক্লাবে গোপনে কেন?আমরা কি চুরি করছি?”
-”সেটা না।ব্যাপারটা হলো রোয়েন জানলে খুব রাগ করবে।ওসব জায়গা ওর পছন্দ না।”
-”ওনি তো আর যাচ্ছেনা।”
-”আমি ওকে রাগাতে পারবোনা।”
-”ওনাকে অনেক মানেন আপনি।”
-”এটাকে মানা বলেনা আশফিনা।আমরা কেউ কারোর থেকে লুকিয়ে কখনো কিছু করিনি।আমি ওকে অনেক ভালবাসি আশফিনা।”
-”সবার বন্ধুত্ব আপনাদের মতো হলে ভাল হতো।”
-”হুম তাহলে চলো আগে বাসায় যাই।”
-”ওকে চলুন।”
.
.
দুজনে উঠে দাঁড়ায়।রামীন এক হাত বাড়িয়ে আশফিনার হাত ধরে।দুজনে হাঁটতে শুরু করে মেইনরোডের উদ্দেশ্যে।এদিকে রোয়েন বিকেলেই ঘরে ফিরে আসে।আসলে অফিসে মন টিকছেনা ওর।তাই ঘরে চলে এলো।কলিংবেল বাজার কিছুক্ষন পর রুহী এসে দরজা খুলে দিয়ে রোয়েনকে অবাক করে দিয়ে সরে যায়।ওর ওয়েলকাম কিসটা পাওয়া হলো না।রোয়েন দ্রুত পদে হেঁটে রুহীর পিছুপিছু ওদের রুমে চলে আসে।রুহী আলমারি খুলে রোয়েনের কাপড় বের করে খাটের ওপর রাখলো।কিছু বলছেনা রুহী।রোয়েন ভ্রু কুঁচকে রুহীকে দেখছে।হলো কি মেয়েটার?কথা বলছেনা কেন?বিয়ের পর আজ প্রথম শাড়ী পরলো রুহী।বেশ লাগছে মায়াবতীকে।শাড়ীর আঁচল টা কোমড়ে গোঁজা।কোমড় পেটের শেপ দৃশ্যমান।রোয়েনের বড় নেশা লাগছে রুহীকে দেখে।রোয়েন কিছু বলার জন্য এগিয়ে যেতেই রুহী রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।রোয়েন ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।কি করছে এই মেয়ে?রোয়েন ফ্রেশ হয়ে পাকঘরে আসে রুহী কফি বানাচ্ছে।রোয়েন এসে পিছন থেকে রুহীর কোমড় জড়িয়ে ওর কাঁধে চুমু খেতেই রুহী কিছুটা বিরক্ত হয়ে রোয়েন কে সরিয়ে দিয়ে বলল,
.
.
-”ধ্যাত!!!”
-”কি ধ্যাত কি?কি শুরু করলে তুমি কথা বলছোনা।আসার পর থেকে সরে সরে আছো।কি চাও তুমি এমন করছো কেন?”
.
.
বেশ রেগে এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে ফেলে রোয়েন।রুহী ঠোঁট টিপে হাসে।কিন্তু চুপচাপ কফির মগটা রোয়েনের হাতে ধরিয়ে রুমে চলে যায়।রোয়েন এবার দ্রুত পদে রুমে আসে।রুহী খোপা করা চুল খুলল।রোয়েন সেদিকে তোয়াক্কা না করে ওর হাত টেনে দেয়ালে লাগায় রুহীকে।
.
.
-”কি হয়েছেটা কি?ফাজলামো পেয়েছো?”
.
.
রুহী বুঝতে পারলো বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে রোয়েনের।আর রাগানো ঠিক হবেনা।রুহী বলল,
.
.
-”তখন সবার সামনে ওটা কি করলেন আপনি?আমাকে লজ্জা দিলেন।বাবাও ছিলো সেখানে।”
.
.
রুহীর কথায় কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা রোয়েন।এটার জন্য এমন করছিলো?রোয়েন এবার রেগে বলল,
.
.
-”রুহী এটা কোন কথা?এই সামান্য কারনে রাগ করে থাকবে?”
-”সামান্য কারন না।বাবা ও ছিলো।”
-”সো হোয়াট।আমার বউকে দিয়েছি।এতে কার কি যায় আসে?”
.
.
রোয়েনের এমন ডোন্টকেয়ার ভাব দেখে রুহীর বেশ হাসি পেলো।কেন যেন ভালো ও লাগলো।রোয়েন এবার বলল,
.
.
-”দেখো তুমি আমার বৌ।সো তোমাকে এসব বিষয়ে ইউজড টু হতে হবে।”
-”হুম।”
.
.
কিছুটা অন্যমনষ্ক ভাবে জবাব দেয় রুহী।রোয়েন এবার বলল,
.
.
-”কাল সন্ধ্যায় আমাদের রিসিপশন পার্টি।সকালে শামীম বা অন্য কেউ এসে ড্রেস দিয়ে যাবে।”
-”আচ্ছা।আজ এতো জলদি এলেন যে?”
-”ভালো লাগছিলোনা তাই চলে এলাম।কেন?”
-”না এমনি।কফি ঠান্ডা হচ্ছে। ”
-”ওহ।”
.
.
রোয়েন মগটা হাতে তুলে নেয়।তারপর ওর আগের স্টাইলে কফিটা খেয়ে নেয়।রাতে ডিনার সেড়ে রুহীকে নিয়ে রুমে চলে আসে রোয়েন।ব্রাশ করে এসে খাটে বসে পড়ে রুহী। রোয়েন ল্যাপটপে কাজ করছে।রুহী ল্যাপটপের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে।ইসস কি বিরক্তিকর কাজ করছে লোকটা।রোয়েন এবার কাজে থেকে বলল,
.
.
-”কিছু বলবে?”
-”নাহ মানে……..আর কতক্ষণ? ”
-”কেন?”
-”লাইট নিভাবো ঘুম পাচ্ছে।”
-”লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ো।আমার আরেকটু বাকি আছে।”
.
.
রুহীর কেন যেন রাগ লাগলো।লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ে ও।ড্রয়িংরুমে এসে বাকি কাজ করতে করতে বারোটা বেজে যায়।রোয়েন রুমে চলে আসে সব গুছিয়ে।রুহী কপালের ওপর হাত রেখে শুয়ে আছে ঘুমায়নি।রোয়েন এসে ওর পাশে আধশোয়া হলো।রুহী ঘুমের ভান ধরছে রোয়েন জানে।তাইতো রুহীর আঁচল ভেদ করে ওর শীতল পেটে হাত রাখে।তারপর আঁচল টা সরিয়ে পেটে চুমু খেতে থাকে।রুহী আর ঘুমের অভিনয় করতে পারেনা।রোয়েন রুহীর পেটে চুমু খেয়ে নিজের পরনের শার্ট খুলে ফেলে।রুহী অন্ধকারে নীল ড্রিম লাইটে রোয়েনকে দেখতে পায়।মেদহীন শরীর তার।চকচক করছে রোয়েনের বুকখানা।রুহী আর নিজেকে সামলাতে পারেনা।মাথা উঠিয়ে রোয়েনের বুকে চুমু খায়।রোয়েন চোখবুজে উপভোগ করে।তারপর আর সময় না দিয়ে রুহীর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে নিতে ওকে শুইয়ে দিয়ে ওর ওপর নিজের ভর ছেড়ে দেয়।রুহী আষ্টেপৃষ্ঠে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।রোয়েন রুহীর গলায় ঠোঁট নামিয়ে আনে।আবার ও ভালবাসার সাগরে পাড়ি জমায় ওরা।সকালে রুহী উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানায় রোয়েনের জন্য।ততক্ষনে রোয়েন উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়।রুহী কফি নিয়ে আসে রুমে।রোয়েন শার্ট পরে বোতাম না লাগিয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিলো। রুহী কফিটা রেখে শার্টের বোতাম।লাগাতে শুরু করে।রোয়েন এবার ঠোঁট এগিয়ে রুহীর কাঁধে গালে চুমু খাচ্ছে।রুহী কোনমতে রোয়েন কে বিদায় দিয়ে ঘরের বাকি কাজ গুলো করতে থাকে।এদিকে আগের দিন রাতে আশফিনাকে নিয়ে রামীন গুলসানের একটা নাইট ক্লাবে আসে।সেখানে ওরা এ্যালকোহল বিহীন জুস খায়।সেখানে অনেকটা সময় কাঁটায় ঘরে ফিরে আসে ওরা।বিকেলে শামীম এসে রুহীর কাছে দুতিনটে ব্যাগ দিয়ে যায়।এবং জানিয়ে দেয় রুহী যেন এগুলো পরে রেডি হয়ে নেয়।রোয়েন গাড়ি পাঠালে রুহী যেন চলে যায়।রুহী ফ্রেশ হয়ে প্যাকেট দুটো খুলে।সেখানে মিষ্টি কালারের একটা গাউন। সেটা অবশ্য স্লিভলেস।এবং পিছনে অনেক গুলো ফিতা।আর এর সাথে মিলিয়ে কিছু অর্নামেন্টস পাঠিয়েছে রোয়েন।রুহী সেগুলো পরে রেডি হয়ে নেয়।একটু পরেই রোয়েনের গাড়ি নিচে চলে আসে।রুহী নেমে দেখলো রোয়েন গাড়ির সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে।ওর দিকে চেয়ে বাঁকা হাসে।রুহী ধীর পায়ে রোয়েনের কাছে এগিয়ে আসে।রোয়েন ওর হাত ধরে কপালে চুমু দিয়ে বলল,
.
.
-”লুকিং গর্জিয়াস।”
”থ্যাংক ইউ!!”
.
.
অস্ফুট স্বরে বলল রুহী।রোয়েন ওকে নিয়ে চলে আসে ওর কনভেনশন সেন্টারে।রুহী সেখানে মামা মামী আশফিনা,বাবা কে দেখতে পেলো।রুহী রোয়েনের হাতের ভিতর হাত গুঁজে প্রবেশ করে।রুহীকে সব গেস্টরা গিফ্ট দিচ্ছে।অনেকেই বড় বড় ফুলের তোঁড়া দিলো।রোয়েন রুহীকে ওর বন্ধুদের কাছে নিয়ে আসে।রুহীর সাথে ওরা বেশ মজা করলো।রুহী স্মিত হেসে সবার সাথে কিছুটা কথা বলে নেয়।এরপর আসে কাপল ড্যান্সের পার্ট।এদিকে ফাহমিন আজ সামায়রার সাথে সুযোগ পেলো কথা বলার।সামায়রা এক কোনায় বসে ছিলো।ফাহমিন ওর পাশে এসে বসলো।
.
.
-”হায় সামায়রা কেমন আছো?”
-”জি ভাইয়া ভালো আপনি?”
-”এইতো আছি।সামায়রা তোমার কেমন লাগছে এখানে?”
-”ভালোই তো কেন?”
-”না এমনি।”
.
.
ফাহমিন জীবনে কম প্রেম করেনি।কিন্তু এই মেয়েটার সাথে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেনা।কেন এমন হচ্ছে?মেয়েটা একদম বাচ্চা।আর বাচ্চাদের সাথে কথা বলায় ওর এমন লাগাটা অস্বাভাবিক।মেয়েটা কে ওর ভাল লাগে।ওর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হয়।কিন্তু ভেতরে জড়তা করছে।ফাহমিন আবার বলল,
.
.
-”তোমাদের ফ্লাইট কবে?”
-”আজ রাত একটায়।”
.
.
কথাটা শুনতেই ফাহমিন শুনতে পেলো খুব জোরে হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ।এদিকে কাপল ড্যান্স হবে।গান শুরু হলো।গানের তালে তালে রুহীর কোমড় ধরে হালকা দুলিয়ে নাচছে রোয়েন।রামীন ও আশফিনাতে মেতে আছে।এদিকে দূর থেকে দাউ দাউ করা বুক নিয়ে সামায়রাকে দেখছে ফাহমিন।এদিকে পার্টি শেষে নীরা হামিদ আরমান হামিদ আর সামায়রা রুহীর কাছে আসে বিদায় নিতে।রুহী মামা মামীকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে।সামায়রা আর আশফিনাকে বিদায় দেয় রুহী।মামা রোয়েনের কাছে আসে।তারপর ওর হাত ধরে,
.
.
-”আমার মেয়েটাকে ভাল রেখো বাবা।জন্মের সময় মাকে পায়নি।মায়ের অভাব কখনো পূরন হবেনা জানি কিন্তু ওকে অনেক ভালবাসা দিয়ে আগলে রেখো।”
-”মামা রুহীকে পৃথিবীর সব ভালবাসা দিবো।একদম চিন্তা করবেননা।”
.
.
আরমান হামিদ তার পরিবার ও আশফিনাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।এদিকে ফাহমিন ভাঙ্গা হৃদয় নিয়ে সামায়রার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে গভীর নিশ্বাস ছাড়ে।
চলবে