সাঁঝের প্রেম

সাঁঝের প্রেম !! Part- 10

মাহবুব নিশিকে অন্য চাদর নিতে বলে। নিশিও অন্য চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নেয়। মাহবুব একপাশে আর নিশি আরেকপাশে। মাঝখানে বিশাল ফাঁকা জায়গা। নিশি আজ বড্ড বেশি আবেগী হয়ে গেছে। মাহবুব পাশে না থাকলেই তো ঠিক ছিলো। খানিকের জন্য কেনো আসলো তাহলে? মাহবুব ফোন রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করলো। নিশিও তাই করলো কিন্তু কারোরই ঘুম আসছেনা। এক পর্যায়ে নিশি মাহবুবকে বলে,

-কি হয় আমায় একবার ছুঁয়ে দিলে? (সিলিং এর দিকে তাঁকিয়ে নিশি)
-কিছু তো হয়না। কিন্তু তোমায় ছুঁয়ে কি করব বলো? (দুজনেই সিলিং এর দিকে তাঁকিয়ে আছে)
-কেনো অন্য কেউ আছে আমার কাজ করার জন্যে?
-সে থাকতেই পারে। (মুচকি হেসে মাহবুব)
-তাহলে এখন আমি তোমার দায় হয়ে গেছি? দায়িত্ব না?
-দায় থাকলে দায়িত্ব এমনিতেই চলে আসে।
-কই? তোমার তো আসলো না? বিয়েটা দায় সাড়া বিয়ে ছাড়া আর কিছুই নয়।
-হয়ত।
-এই কি পেয়েছো তুমি? (মাহবুবের টি শার্টের নেক খামচে ধরে নিশি কাঁদছে)
-কি পেয়েছি মানে? (নিশির হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে মাহবুব)
-কেনো এমন করছো আমার সাথে? কেনো এইভাবে কষ্ট দিচ্ছো আমায়? রিভেঞ্জ তুলছো?
-মাহবুব রিভেঞ্জ নিতে জানেনা। জানলে তুমি আজ এই জায়গায় থাকতে না।
-প্লিজ মাফ করে দাও না আমায়, প্লিজ। (মাহবুবকে জড়িয়ে ধরে নিশি)
-দিয়েছি তো মাফ করে। (নিশিকে বুক থেকে উঠিয়ে মাহবুব) ঘুমাও এখন।

নিশিকে ছেড়ে মাহবুব অন্যদিকে ঘুরে শুয়ে পরে। নিশি রাগে বিছানা থেকে উঠে যায়। চেয়ারের উপর বসে থাকে সারারাত। নিশি ভাবে মাহবুব এত ফিলিংলেস কবে হলো? এত বড় কষ্ট দিয়ে ফেলেছিলাম আমি ওকে? ও কি বুঝেনা আমি ইচ্ছে করে করিনি ওইসব? আমার বাবার জন্য করেছিলাম! ও না আমায় এত বুঝে তাহলে এইটুকু কেনো বুঝলো না ও?

অন্যদিকে মাহবুব ও মনে মনে বলে,

-এত সহজে তোমায় আমি বউয়ের স্বীকৃতি দিবনা মিসেস মাহবুব। যা কষ্ট তুমি আমায় দিয়েছো এই তিনবছর তার তিনগুণ আমি তোমায় ফেরত দিব। হয়ত বলবে ভালবাসি না। কিন্তু আমি তো জানি তুমি আমার কি আর সেইটা তুমিও জানো। ভালবাসা অবহেলা করলে ঠিক এতটাই কষ্ট হয় নিশি যতটা কষ্ট আজ তুমি পাচ্ছো।

নিশি সারারাত চেয়ারেই বসেছিলো আর টেবিলে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছিলো। সকালবেলা নিশি আগে ঘুম থেকে উঠে। শনিবার মাহবুবের বন্ধ। তাই আজও মাহবুব বাসায় থাকবে। নিশি সবার জন্য ব্রেকফাস্ট বানায়। আর ছোট মা আবারো নিশিকে গালমন্দ করা শুরু করে দেয়। মাহবুব এইবার প্রচন্ড রেগে যায়। চায়ের কাপ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে মাহবুব ছোট মা কে বলে,

-শাট আপ ছোট মা। এসেছো কেনো তুমি আমার বাসায়? আসতে বলেছি আমি তোমায় এখানে? নিশিকে যা নয় তাই বলছো। কেনো?
-তুই আমায় কথা শোনাচ্ছিস? (ছোট মা)
-যার কোনো আত্মসম্মান নেই তাকে কথা শোনানোই উচিৎ।
-তুমি চুপ কর। বলুক না উনি। (নিশি)
-তুমি একদম চুপ থাকবে। আমার মায়ের সংসার ভেঙে ঢুকেছো আমাদের বাসায়। সেই কষ্টে আমার মা হার্ট এটাক করেছে। এখন কি আমার সংসার ভাংতে চাইছো তুমি? কিছুক্ষণের মধ্যে তুমি আমার বাসা ছেড়ে বেরিয়ে যাবে। আসবেনা কখনো আমার বাসায়।
-কি বলছো তুমি এইসব? পাগল হয়ে গেছো? (নিশি মাহবুবকে থামিয়ে)
-ইয়েস আই গন্না ম্যাড ফর দিজ ফালতু মহিলা। আমার রাগ, আমার জেদ সম্পর্কে নিশ্চই আপনার আইডিয়া আছে ছোট মা। এক্ষুনি বেরিয়ে যান আমার বাসা থেকে।
-ভাইয়া একদম ঠিক কাজ করেছো। আর আম্মু তোমার কি আসলেই লজ্জা নেই? তোমার মতো দু কানকাটা আমি কোথাও দেখিনি ট্রাস্ট মি। (সায়েম)
-সায়েম! (সায়েমকে থাপ্পর মেরে ছোট মা)

মাহবুব তখন কিছু বলেনি। ওইটা তাদের মা ছেলের বিষয়। ছোট মা তখন মাহবুবের বাবাকে নিয়ে ঢাকায় চলে এলো আর সায়েম চিটাগং এই ছিলো। মাহবুবের বাবার কিছু বলার মুখ নেই তাই তিনি সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সহ্য করছিলেন। সায়েম পরে মাহবুবকে ঠান্ডা করে। আর নিশি ভাঙা চায়ের কাপের টুকরাগুলো তুলছে। সায়েমের সামনেই নিশি মাহবুবকে বলে,

-তোমার এতটা হাইপার হওয়া উচিৎ হয়নি। ছোট মা কষ্ট পেয়েছেন অনেক।
-না ভাবি ভাইয়া ঠিক কাজই করেছে। আম্মুর এমন একটা অপমানের প্রয়োজন ছিলো। বাবা ও যে কিভাবে ওনার কথায় উঠে বসে কে জানে! ওই বাসায় আমার একদম ই ভালো লাগেনা। অসহ্য লাগে। (সায়েম)
-তো তুই এখানে থাকতে পারিস না? (মাহবুব)
-কিভাবে থাকব? আমার ভার্সিটি ওইখানে।

পরে মাহবুব আর কিছু বলেনি। নিশি সায়েমকে জিজ্ঞেস করে,

-দুপুরে কি খাবা তুমি?
-তুমি নাকি মোরগ পোলাও ভালো বানাতে পারো?
-ভালো বানাই নাকি জানিনা তবে বানাতে পারি।
-ওইটাই খাব।
-তোমার জন্য কি করব? (নিশি মাহবুবকে জিজ্ঞেস করে)
-আমার জন্য আলাদা কিছু করার দরকার নেই।
-ঠিক আছে।

নিশি দুপুরের রান্না শুরু করে। মাহবুব সায়েমকে নিয়ে আশেপাশে থেকে ঘুরে আসে। সায়েম মাহবুবকে বলে,

-ভাইয়া বিকেলে আমরা তিনজন বের হব ঘুরতে।
-নিশিসহ?
-হ্যা নয়ত তিনজন আর কে আছে?
-আচ্ছা।

লাঞ্চের অনেক আগে দুইভাই বাসায় আসে। বাসায় এসে মাহবুব বাথরুমে শেভিং ফোম খুঁজে পায়নি। মাহবুব নিশিকে ডেকে জিজ্ঞেস করে,

-আমার শেভিং ফোম কোথায়?
-শেষ হয়ে গেছিলো তাই ফেলে দিয়েছি। ড্রয়ার থেকে আরেকটা দিচ্ছি দাঁড়ান।

নিশি শেভিং ফোমের বোতলটা মাহবুবকে দিতে দিতে বলে,

-ক্লিন শেইভ একদমই করবেন না।
-আই নো ওকেহ?
-জানলেই ভালো।

মাহবুব আর সায়েম নামাজ শেষ করে এসে ডায়নিং এ বসে। সায়েম বলে,

-মসজিদ এত দূরে কেনো ভাইয়া! পা ব্যাথা হয়ে গেলো।
-এইটা পাহাড়ী এলাকা সায়েম। হাতের কাছে কিছু পাওয়া যাবেনা। কষ্ট করেই পেতে হবে।
-তবে জায়গাটা ভীষণ সুন্দর। নেক্সট বার আমি আমার ফ্রেন্ডদের নিয়ে আসব এখানে।
-আসিস। এখন খা৷

সায়েম খাচ্ছিলো আর নিশির প্রশংসা করছিলো। নিশির খোলা লম্বা চুলগুলো বারবার সায়েমের উপরে পরছিলো। মাহবুব এইটা দেখছে আর রাগে চেহারা লাল হয়ে যাচ্ছে। নিশির চুলের ঘ্রাণে পুরো ঘর ছেয়ে গেছে। সায়েম বলেই ফেলল,

-ভাবি তোমার চুলের ঘ্রাণটা কিন্তু অনেক সুন্দর।

এইবার মাহবুব ও বলল,

-চুলগুলো কি বাঁধা যায়না? সায়েমের উপর কেনো তোমার চুল পড়ছে?

সায়েম হাসছে আর নিশি বেডরুমে এসে ভেজা চুল ই বেঁধে গেলো। এরপর নিশিও ওদের সাথে খেতে বসে। খাওয়া শেষ হয়ে গেলে হাত ধুতে ধুতে মাহবুব বলে,

-নিশি বিকেলে একটু বের হব। রেডি হও।
-কোথায় যাব?
-ইকো পার্ক।
-কেনো?
-এইত নাচতে। (মাহবুব হাত মুছে নিশির শরীরে টাওয়েল ছুঁড়ে মারলো)
-এই যে একটু মানুষ হও। টাওয়েল কেনো ছুঁড়ে মারলা?
-তুমি মানুষ হলেই চলবে।

মাহবুব জ্যাকেট আর জিন্স পরে সাথে ম্যাচিং শু। সায়েম ও সেইম ড্রেসে। নিশি এখনো রেডি হয়ে বের হয়নি। সায়েম ড্রইংরুম থেকে বলে,

-ও ভাবি কখন হবে তোমার?
-আর একটু।
-সেই কখন থেকে এইটাই শুনছি।
-তোমার ভাইয়াকে একটু আসতে বলো তো।
-ভাইয়া ডাকে তোমাকে। (সায়েম)
-কেন ডাকে জিজ্ঞেস কর।
-কেনো ডাকছো ভাবি?
-আরে আসতে বলো দরকার আছে।
-আমি আসি?
-একদম না। তোমার ভাইয়াকেই বলো।
-একেই বলে লাভ মেরেজ। ভাইয়া যাও না, গিয়ে ভাবিকে উদ্ধার কর।

নিশি ইচ্ছে করেই ডাকছে মাহবুবকে। মাহবুব বেডরুমে ঢুকার পর দরজা চাপিয়ে দেয়। নিশি শাড়ির কুঁচি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাহবুব শুধু একবার নিশির উপর চোখ বুলালো।

-কুঁচিটা একটু ধরো তো। (নিশি)
-এই কাজ কি আমার?
-তো সায়েমকে ডাকি?
-কোথায় ধরব?
-নিচু হয়ে বসো।
-থাক আর বলতে হবেনা। জানি আমি এসব।

মাহবুব নিশির শাড়ির কুঁচি ঠিক করে দিয়ে পাশে দাঁড়ালো। নিশি সুন্দর করে আঁচলটা ছেড়ে শাড়িটা পরে নিলো।

-কোমড় কেনো দেখা যাচ্ছে? (মাহবুব)
-এতটুকু না দেখা গেলে সুন্দর লাগবেনা। (মাহবুবকে রাগানোর জন্যই নিশি এ কথা বলল)
-সুন্দর ইজ মাই ফুট।

এরপর মাহবুব নিজেই ছোট একটা সেফটিপিন হাতে নিয়ে কোমড় ঢেকে দিলো শাড়ি দিয়ে। নিশির চুল খোপা করাই তাই চুল নিয়ে আর কিছু বলেনি মাহবুব। তবুও মাহবুব নিশিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিলো কোথাও ভুল আছে কি না। এরপর মাহবুব নিশিকে বলল,

-এখন কি বের হওয়া যাবে?
-হ্যা যাবে। (হেসে দিয়ে নিশি)
-তো হও।

নিশি জুতা পরে বের হয় আর সায়েম বলে,

-ভাবি তোমায় অনেক সুন্দর লাগছে কিন্তু। এইজন্যই ভাইয়া তোমার জন্য এত পাগল তাইনা?
-মারব এক চড়। বের হবি নাকি ধাক্কা মারতে হবে? (মাহবুব)
-হচ্ছি তো। (সানগ্লাস আর ক্যামেরা হাতে নিয়ে সায়েম)

ওরা তিনজন বেরিয়ে যায় আর নিশি ক্যামেলিয়ার আম্মুকে বলে যায় বাড়িটা দেখার জন্য। নিশি হাই হিল পরেছে আর হাতে একটা লেডিস জ্যাকেট। রাতে ভীষণ ঠান্ডা পরে তাই। নিশির পেন্সিল হিলের জন্য মাটিতে গর্ত হয়ে যাচ্ছে আর মাহবুব সেইটা দেখছে। মাহবুব নিশিকে পিঞ্চ করে বলল,

-রাস্তায় ইঁদুরের গর্ত করার জন্যই এইগুলো পরেছো তাইনা?
-একটু গর্ত হবেই। সেজন্য কি পরব না নাকি?
-পা না ভাঙলেই হইছে।
-ভাঙলে আবার তুমি কোলে নিবা।
-শখ নাই এত।
-করাবো নে আজকে শখ। এজন্যই তো এত উঁচু হিল পড়ে এসেছি। (মনে মনে নিশি)

সায়েম ছবি তোলায় ব্যস্ত। মাহবুব আর নিশির অনেক কাপল পিক তুলে সায়েম। এতে মাহবুবের সম্পূর্ণ সায় ছিলো আর নিশির তো ছিলই। মাহবুব নিশিকে হাত ধরে উপরে উঠায় সেই ছবি ও তুলে সায়েম। পার্কে অনেক মানুষ। এরা প্রায় সবাই এখানকার স্থানীয়। নিশি একটা দোলনায় গিয়ে বসে আর বাতাসে নিশির সামনের চুলগুলো উড়ে কাজল রাঙানো চোখে পড়ছে। চোখে হাল্কা ব্ল্যাক শ্যাডো ও আছে। নিশির গায়ের রঙ ফর্সা তাই ব্ল্যাক শ্যাডোতে নিশিকে দারুণ মানায়। মাহবুব পাশেই উলটো হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে। সায়েম ঘুরে ঘুরে দেখছে সব। অন্যান্য মেয়েরা চুড়ি পরেছে এইটা দেখে নিশির হিংসে হচ্ছে। ওর ব্লাউজটা চুড়িদার হওয়ায় চুড়ি পরতে পারেনি ও। শুধু আংটি গুলোই হাতে। মাহবুব নিশিকে বলে,

-উঠো।
-হ্যা উঠছি।

এরপর নিশি আর মাহবুব পাশাপাশি হাঁটে কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছেনা। নিশি মাহবুবের হাত ধরলো। মাহবুব তখন নিশির দিকে তাঁকালো। নিশি বলল,

-হাতটা সরিয়ে দিও না প্লিজ।

মাহবুব আর হাতটা সরালো না। কারণ ওর ও ইচ্ছে করছিলো নিশির হাতটা ধরতে কিন্তু দ্বিধায় ছিলো। নিশি ধরাতে মাহবুব খুশিই হয়েছে কিন্তু নিশিকে বুঝতে দেয়নি। ওদের পেছন থেকে হাত ধরে হাঁটতে দেখে সায়েম না জানিয়েই ওদের ছবি তুলে পেছন থেকে। নিশি এক সময় মাহবুবের হাত জড়িয়ে ধরে মাহবুবের হাতে মাথা রাখে। মাহবুব নিশিকে বলছে,

-রাস্তায় এসব কি হচ্ছে?
-ঘরেও তো এসব করতে পারিনা।
-দরকার ই নেই এসবের।
-আছে। আমার যে একটা ছোট্ট বাবু চাই মাহবুব।
-নিশির কথা শুনে মাহবুব দাঁড়িয়ে যায়।
-হ্যা আমার একটা বেবি চাই। যেখান থেকে পারো আমায় একটা বেবি এনে দিবা। এডাপ্ট কর বা যা খুশি কর। স্বামীকে তো পাব না। একাও বাঁচতে পারছিনা এখন।
-হাঁটো।
-এড়িয়ে যাচ্ছো কেনো? তোমার স্ত্রী হই আমি। আমার চাওয়ার বিন্দুমাত্র দাম নিশ্চই আছে তোমার কাছে।
-বাসায় গিয়ে কথা বলব। চলো।

নিশি ও আর কিছু বলল না। সায়েম এসে ওদের সাথে যোগ দিলো। মাহবুব সায়েমের থেকে ক্যামেরা নিয়ে নিশির ছবিগুলো জুম করে দেখছিলো। নিশি জ্যাকেট পরলো সন্ধ্যার সময়। প্রচন্ড ঠান্ডা এখানে। ওরা সন্ধ্যার পর স্থানীয় মেলায় যাওয়ার পর নিশি মাহবুবকে ফুচকা দেখিয়ে বলে,

-খাব।
-তুমি না ফুচকা খাও না?
-শিখে গেছি খাওয়া। প্লিজ খাব আমি।
-চলো। সায়েম তুই কি খাবি নে।
-আমিও ফুচকাই খাব সাথে লাড্ডু।
-আয়।

মাহবুব তিন প্লেট ফুচকা অর্ডার করলো। নিশি প্রথম ফুচকাটা মাহবুবকে খাইয়ে দিলো। আর মাহবুব ও বাধ্য হয়ে খেলো। ফুচকা খাওয়ার পর সায়েম মিষ্টি খেলো আর মাহবুব নিশিকে দশটা হাওয়াই মিঠাই কিনে দিলো গোলাপি রঙের। নিশি খুশি হয় অনেক কারণ মাহবুব ভুলেনি হাওয়াই মিঠাই নিশির পছন্দ। নিশি হাওয়াই মিঠাই একটা একটা করে খেতে শুরু করলো। সায়েম এসে নিশির হাওয়াই মিঠাইয়ে ভাগ বসালো। শেষে ঝালমুড়ি আর আইসক্রিম খেতে খেতে তিনজন মেলা থেকে বেরিয়ে এলো। বাসায় ঢুকার আগে কিছুদূরে নিশি হঠাৎ করে বসে পরে। মাহবুব ও সাথে সাথে বসে জিজ্ঞেস করে,

-কি হয়েছে?
-পায়ে ব্যাথা পেয়েছি। উঠতেই পারছিনা। (কুঁকড়ে উঠে নিশি)
-আর কিছুদূর ই তো। কষ্ট করে উঠো।
-না কোলে নিন আমায়।
-পারবনা। (দাঁড়িয়ে গিয়ে মাহবুব)
-তাহলে আমি বাসায় কিভাবে যাব?
-জানিনা।
-ভাবি আমি নিব কোলে? তুমি তো দেখছি হেঁটেও যেতে পারবেনা। (সায়েম মাহবুবকে শুনিয়ে কথাটা বলল)
-দরকার নেই,আমিই নিচ্ছি। (সায়েমকে থামিয়ে মাহবুব)

এরপর মাহবুব ই নিশিকে কোলে তুলে নেয়। নিশি ভীষণ খুশি। নিশি মনে মনে বলে,

-ইয়েস আই এম সাক্সেসফুল। মিস্টার মাহবুব আমিও দেখি আর কতদিন আপনি আমাকে আপনার ভালবাসা থেকে বঞ্চিত রাখেন?

নিশিকে বাসায় নিয়ে ড্রইংরুমে বসায় মাহবুব। নিশি নিচু হয়ে জুতাখুলে সুন্দর করে হাঁটছে। নিশিকে হাঁটতে দেখে মাহবুব সায়েম দুজনেই অবাক।

-ভাবি তোমার পা? (অবাক হয়ে সায়েম)
-পায়ে কিছু হয়নি ভাই। (হেসে নিশি)
-হাউ ডেয়ার ইউ! (দাঁত কটমট করে মাহবুব)
-এভ্রিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ এন্ড ওয়ার। (মাহবুবকে চিমটি কেটে নিশি চেঞ্জ করতে চলে যায়)

চলবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *