The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 45

→রুহী শপিং এ গিয়ে কিছু জিনিস কিনেছিলো সেগুলোর মাঝে নানা নানুর জন্যও কিছু কিনেছে।কারন ওনারা গিফটস পছন্দ করেন।আর রুহীর বিয়ে এখন ওনাদের কিছু না দিবে কিভাবে?এংগ্যেজমেন্ট এর দিনটা চলে আসে।রোয়েন ঘরে আসে সন্ধ্যায় পরদিন ওদের এ্যাংগেজমেন্ট। রুহী খেয়াল করলো রোয়েন রুমে ঢুকেছে।আজ মাফ নিয়েই ছাড়বে যেভাবেই হোক।রুহী রোয়েনের রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়।রোয়েন রুহীর অবস্থান বুঝে ও না বুঝার ভান করে দাঁড়িয়ে কি যেন করছে।রুহী এবার রোয়েনের পাশে এসে দাঁড়ায়।রোয়েন কিছু বলেনা।রুহী এবার খুব কষ্টে মুখ খুলল,
.
.
-”কিছু লাগবে আপনার?”
.
.
রোয়েন চুপচাপ কাজ করছে।রুহী আবার ও জিজ্ঞেস করে কিন্তু রোয়েনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়না।রুহী এবার কেঁদে দেয়,
.
.
-”প্লিজ কিছু তো বলেন রোয়েন।আমি নিজেকে শুধরাবো সত্যি।আপনি চাইলে ওনাদের সাথে কথা বলবোনা।প্লিজ কথা বলুন।”
.
.
এবার রোয়েন বলল,
.
.
-”কথা কেন বলবেনা?তোমার নানা নানু তারা।তোমার কারনেই এসেছে।গেস্টদের সাথে কথা না বললে ভালো দেখা যায়না।কিন্তু আমার থেকে দূরে থাকবে?কেন এসেছো আমার রুমে?যাও এখান থেকে।
.
.
শান্ত ভাবে কথা গুলো বললে ও রুহী বেশ বুঝতে পারলো রোয়েনের ভিতর চাপা অভিমান রাগ কষ্ট।রুহী এবার রোয়েনের পিঠে মাথা রেখে কাঁদতে শুরু করে,
.
.
-”প্লিজ আমাকে দূরে সরিয়ে রাখবেননা আর।মাফ করে দিন।আর পারছিনা দূরে থাকতে।কেন শুধু শুধু নিজে কষ্ট পাচ্ছেন?আমাকে শাস্তি দিন বকুন মারুন কিন্তু কথা বলেন প্লিজ!!!!!”
.
.
একঝটকায় সরে আসে রোয়েন।সরতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না তবু ও সরে এলো।এবার রেগে গেলো রোয়েন,
.
.
-”আমার কষ্ট নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা রুহী।আমি যেমন আছি ভালো আছি।তুমি তোমার মতো থাকো।আমি তোমাকে বাঁধা দেই সেটা তোমায় বিরক্ত করে।কথা বলছিনা তোমার তো এখন খুশি হওয়ার কথা।আমার কাছে আসবেনা লাস্ট বারের মতো বলছি কাছে আসবেনা।আসলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।শেষে তোমাকে পস্তাতে না হয়।”
.
.
রোয়েনের কথায় রুহী পাথর হয়ে যায়।এতো টা কঠিন কি করে হয়ে গেলো মানুষটা?এটা কি সেই রোয়েন যাকে ও ভালবেসেছিলো।তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দোষ গুলোর জন্য দ্রুত মাফ করেছিলো।কিন্তু এবার কি হয়ে গেলো ওর জীবনে?রুহী এবার ধীর পায়ে সরে আসে। নিজের রুমে চলে যায়।এদিকে পরদিন সকালে নানা নানু চলে আসে রেজোয়ান মাহবুব সমেত রোয়েনের বাসায়।সকালে ওনাদের দেখে রোয়েন রুহী দুজনেই একটু অবাক হলো।অাজ অফিস বন্ধ রেখেছে রোয়েন।কারন এ্যাংগেজমেন্ট এর প্রস্তুতি নিয়ে সবাই ব্যাস্ত।ওর কনভেনশন সেন্টারে বাবুর্চীরা রান্নায় ব্যাস্ত।রামীন আর শামীম সেখানে তদারকি করছে।রাসেল আর ও একজন কিছু বাজার করতে গেলো।প্রায় সবাই বেশ ব্যাস্ত।রোয়েন ওনাদের দেখে এগিয়ে এসে বলল,
.
.
-”আসসালামু আলাইকুম!!”
-”ওয়ালাইকুম,,,,,,,,তোমার সাথে কথা বলার শখ নেই আমাদের।নাতনী কে দেখতে এসেছি।”বলে উঠেন নানু।
.
.
রোয়েন ম্লান হাসে।নানা নানু রুহীর রুমে চলে আসে।রোয়েনের সাথে করা বাজে ব্যাবহার রুহীর কানে পৌছায়।রুহী বিরক্ত হয়।ওনি এতো সুন্দর করে সালাম দিলো আর ওনারা এমন করলো কেন?ওনারা যাওয়ার পর রেজোয়ান মাহবুব রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।
.
.
-বাবা কিছু মনে করবেননা।জানেন তো ওনারা কেমন?আনতে চাইনি বিরক্ত করছিলো।”
-”বাবা ইটস ওকে।কিছু মনে করিনি ওনাদের কথায়।আমার কষ্ট শুধু একটাই রুহী বুঝলো না আমাকে।”
.
.
কথাটা বলে রুহীর রুমের দিকে তাকায় রোয়েন।রুহীকে ওনারা নিজেদের মাঝে বসিয়ে কথা বলছে।রুহী হ্যা না উত্তর করছে।রোয়েন নিজের রুমে চলে আসে।রুহীকে নানা নানু এসেই জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-”এ লোকটার সাথে থাকিস কেন এক ঘরে?এসব লোকের ওপর বিশ্বাস করা যায়না।”
-”নানু ওনি যথেষ্ঠ ভালো।ওনাকে নিয়ে এসব বলবেননা।”
-”তোর পিছনে যেভাবে পড়ে থাকে।দেখাই যায় কতো ভালো।”
-”এটাকে পিছে পড়ে থাকা বলেনা নানু।ওনি আমাকে খুব ভালবাসে।অনেক কেয়ার করে।আমার ও ভালো লাগে এখানে।”
-”তুই ভালো থাকলে ভালো।তা কি এনেছিস আমাদের জন্য?”
.
.
নানা জিজ্ঞেস করেন।রুহী উঠে দুটো প্যাকেট বের করে ওনাদের সামনে রাখে।দুজনে প্যাকেট থেকে নিজেের গিফট বের করে নেয়।নানু কে ব্যাগ আর নানার জন্য পারফিউম এনেছে রুহী।নানুর বেশ পছন্দ হয়েছে।তাারপর ও রুহীকে জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-”কতো নিলো রে?”
-”৪৫০০।”
-”এতো কম দাম কেন?”কিছু রেগে গেলেন নানু।
.
.
স্ত্রীর কথায় হাসান হামিদ জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-”আর আমারটা?”
-”৪হাজার টাকা।”
-”রুহী এতো কম দামি পারফিউম আমি দেইনা।
জানিস।”
.
.
রুহী ওনাদের কথায় বেশ অবাক।নাতনী যা দিয়েছে ওটাতেই খুশি হওয়ার কথা কিন্তু এনারা এমন করছে কেন?রুহীর বেশ বিরক্ত লাগে ওনাদের আচরনে।কোনমতে নিজেকে সামলে নেয় সে সময়টা।কিন্তু বিকেলে ওনাদের আচরনে বেশ অবাক হয় রুহী।বেগুনী রং এর লেহেঙ্গা পরেছে আজ ও।সাজিয়েছে অবশ্য আশফিনা আর নীরা।লেহেঙ্গাটা বেশ ফুলানো।রুহীকে দেখলে ফুল ও লজ্জা পেয়ে যাবে।ঘরেই এ্যাংগেজমেন্ট টা হবে আজ।রুহীকে দেখে নানু রুমে আসেন।তারপর ওর লেহেঙ্গটা পুরো দেখে জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-”বেশ সুন্দর!!কতো নিয়েছে রে?”
.
.
শাশুড়ির কথায় একটএ বিরক্ত হন নীরা হামিদ তবে সেটা গোপন করেন।আশফিনা হেসে বলল,
.
.
-”১৫হাজার টাকা নিয়েছে নানু। ”
-”এহহহ পনেরো হাজার মনে হচ্ছেনা।৫হলে ঠিক আছে।”
.
.
ওরা তিনজনে বেশ লজ্জা পায়।রুহীর কান্না পাচ্ছে। কেন এমন করছে নানু?সেলিনা হামিদ বেশ চিৎকার করে বললেন,
.
.
-”তোর রোয়েন তোকে না খুব ভালোবাসে?এই তার নমুনা?অন্তত পঞ্চাশ হাজার হবার ছিলো লেহেঙ্গা।”
-নানু প্লিজ চিল্লাবেননা।গেস্ট আছে প্লিজ চুপ করেন।
.
.
বেশ অভিমানী গলায় বলে রুহী।ওর চোখজোড়া ভরে আসে।সেলিনা হামিদ আরো চিল্লাচিল্লি করলে রুহী আবার বলল,
.
.
-আল্লাহর ওয়াস্তে চুপ করেন প্লিজ।একটু শান্তি দেন!!!!”
কেঁদেই দেয় রুহী।চলে যেতেই নীরা আর আশফিনা রুহীকে সামলাতে থাকে।এদিকে অপর রুমে থাকা রোয়েন সবই শুনতে পায়।রোয়েন আজ মেরুন রং এর ফুল কম্পলিট স্যুট পরেছে।আজ একেবারেই অন্যরকম লাগছে।এসব রং কখনো পরেনা ও।তবে রামীন কিনালো জোর করে।রোয়েন সব শুনতে পায়।রামীন বলল,
.
.
-”শালীর বজ্জাতনী ফাওল মহিলা!!!!”
-”রামীন ডোন্ট ইউজ স্ল্যাংগ।”
.
.
রামীন এবার হেসে বলল,
.
.
-”সরি রে মনেই ছিলো না যে তোর এসব ওয়ার্ড পছন্দ না।কিন্তু কি করবো বল?কেমন দর দাম জিজ্ঞেস করছে?”
-”সেটা ওনাদের মেটার,করতে দে।”
-”হুম।তা ভাই তোকে আজ জব্বর লাগছে।রুহী দেখলে ফিট হবে।ওকে দেখে এসেছি পরীর মতো লাগছে।”
.
.
রামীনের কথা শেষ হতেই রোয়েন ওর দিকে চোখ রাঙ্গায়।রামীন চুপ হয়ে যায়।সব হয়ে গেলে রোয়েন আর রুহীকে সামনা সামনি আনা হয়।রোয়েন মায়াবতীকে দেখছে।আসলেই অতুলনীয় লাগছে।রুহীর চোখজোড়ার দিকে তাকায় রোয়েন।চোখ দুটো অসম্ভব রকমের লাল হয়ে আছে।চোখের পাপড়ীতে এক ফোঁটা অশ্রু জমে আছে।রুহী চোখের পাতা নাড়াতেই সেটা গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে বেশ লম্বা হয়ে।রুহী আর রোয়েন কে এবার কাছাকাছি নিয়ে আসা হলো।এবার মাথা তুলে তাকায় রুহী।ভেবেছিলো রোয়েন ওর লেহেঙ্গার সাথে মিলিয়ে স্যুট কিনবে কিন্তু,,,,,,।রুহী রোয়েনের মুখের দিকে তাকায়।রোয়েন অন্যদিকে চেয়ে আছে।রামীন এসে রোয়েনের হাতে আংটি ধরিয়ে দেয়।রুহীর পাশে নীরা দাঁড়িয়ে আছে ওর আংটি ধরে।রোয়েন বেশ রুডলি রুহীর হাত টি তুলে ধরে।রুহীর ব্যাথা লাগে।কান্না চলে আসতে নেয়।রুহী নিজেকে সামলায়।ওর হাতের আঙ্গুলে খুব টান লাগছে।যেন ভেঙ্গে যাবে।অন্য সবার কাছে নরমাল বিষয়টি।কেউ বুঝতে পারেনা।রুহীর অনামিকা আঙ্গুলে আংটি পরায় রোয়েন।রুহীর হাত থেকে হাত সরায় খুব জলদি।রুহীর হাতে আংটি ধরায় নীরা।রুহী আংটি সামনে আনতেই রোয়েন হাত রাখে ওর সামনে।রুহী আলতো করে রোয়েনের হাতটি স্পর্শ করে।রুহী যেন এ সময়টার অপেক্ষায় ছিলো।তাকে স্পর্শ করার অপেক্ষায়।রোয়েন একবার রুহীকে দেখে।রুহী এবার রোয়েনকে আংটি পরায়।আংটি বদল হয়ে গেলে ওদের পাশা দাঁড় করিয়ে ছবি তুলা শুরু হয়।সবাই একে একে এসে ছবি তুলে।প্রত্যেকটা ছবিতেই রুহী রোয়েনকে দেখছে।রুহীর চোখের নিচের ত্বকটা অশ্রু ভেজা হয়ে আছে।ছবি তুলা পুরো শেষ হওয়ার আগেই রোয়েন সরে যায় সেখান থেকে।
চলবে