The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 25

আরমান হামিদ ভাগনীকে জড়িয়ে ডাইনিং টেবিলের একটি চেয়ারে এনে বসান।তারপর গ্লাসে পানি ঢেলে খেতে দেন ওকে।রুহী ঢকঢক করে পানি খেয়ে নেয়।আরমান হামিদ ভাগনীর চোখ মুছে বলেন,
.
.
-কি হয়েছে আম্মু?
-মামা কিছুনা।অনেকদিন পর তোমাকে দেখলাম।
-মামা অনেক ব্যাস্ত ছিলাম।তা কাজ করছিলি কেন আম্মু?
-মামা একটু কাজ ছিলো নানু সারাক্ষনই তোওও করে।
-তুই এখন কোন কাজ করবিনা।তা তোর বাবা কই?
-বাহিরে গেলো।
-ওহ আর কে এসেছে তোর সাথে?
-বাবার বস।
-ওহ।আচ্ছা আমি রেস্ট করি তারপর ওনার সাথে কথা বলবো।তুই ও গিয়ে রেস্ট কর।
-আচ্ছা মামা।
.
.
আরমান হামিদ ভাগনীকে নিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন।রুহী রুমে চলে গেলো।এদিকে রাতের খাবারের সময় রেজোয়ান মাহবুবের সাথে আরমান হামিদের দেখা হয়।রেজোয়ান মাহবুব রোয়েনের কাছে নিয়ে গেলেন আরমান হামিদকে।
.
.
-ভাই এটা আমার বস।
-স্যার রুহীর মামা ওনি।
.
.
রোয়েন হাত এগিয়ে দিলো আরমান হামিদের দিকে,
.
.
-রোয়েন চৌধুরী।
-ওহ।আমি রুহীর মামা আরমান হামিদ।
-হুম।এখানে এলাম অনেক দিন হয়ে গেলো আপনার সাথে দেখা হলোনা।কোথা ও ছিলেন বুঝি?
-আবু ধাবী থাকি।আসলে সেখানে বিজনেস আমার।তাই এখানে আসা হয়না।রুহীর কথা শুনে আসলাম।চলুন খেয়ে আসি।বসে কথা বলবো।
-শিওর।
.
.
সবাই খেতে বসে।রুহীকে রোয়েনের পাশে খেতে বসতে দেখে আরমান হামিদ বেশ অবাক হয়ে নীরা হামিদের দিকে তাকান।নীরা হামিদ মুচকি হেসে খেতে থাকে।রাতের খাবার শেষে রোয়েন আরমান হামিদের সাথে অনেকসময় পর্যন্ত গল্প করে।শেষ রাতে দুজন রুমে চলে যায়।রোয়েন রুমে এসে দেখে রুহী শুয়ে ঘুমিয়ে গেছে।ফ্রেশ হয়ে রুহীর পাশে এসে শুয়ে পড়ে ও।রুহীর কপালে ঠোঁট বুলিয়ে ওকে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে যায় রোয়েন।পরদিন সকালে রুহীকে নিয়ে মামা মামী রোয়েন সহ ঘুরতে যায়।প্ল্যান হলো দুবাই এ্যাকুরিয়াম দেখতে যাবে।রুহী বেশ খুশি।কালো অফ শোল্ডার মসলিন কাপড়ের একটা গাউন পরে নেয় রুহী।মামী আজ রুহীকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে।চোখে মোটা করে কাজল আর হালকা লিপস্টিক।সেখান থেকে মরুভূমি যাবে ওরা।রোয়েন কালো পাঞ্জাবী পরে নেয়।হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি।আরমান হামিদ রোয়েন কে দেখে বললেন,
.
.
-বেশ লাগছে আপনাকে।
-থ্যাংকস।
.
.
বের হয়ে গেলো ওরা।আগেই একুরিয়ামে এসেছে ওরা।টিকিট কেঁটে ভিতরে ঢুকে পড়ে চারজন।মাঝে হাঁটার রাস্তা।আর দুপাশে গ্লাস।এর বাহিরে নীল পানি আর নানা ধরনের মাছ।রুহী গ্লাস ধরে চোখ বড় বড় করে মাছ দেখছে।নীরা ইচ্ছা করে স্বামীকে সরিয়ে নেয়।রোয়েন রুহীর পিঠের সাথে বুক লাগিয়ে দাঁড়ায়।রুহী বলে,
.
.
-কি সুন্দর তাইনা রোয়েন?
-হুম।রুহীর খোলা কাঁধে ঠোঁট ছোয়ায়।
.
.
মুখ উঠিয়ে পাশে দেখে একজন বয়স্ক লোক ওদের দিকে চেয়ে হাসছে।রোয়েন ও মুচকি হাসে।লোকটা সরে যায় সেখান থেকে।রুহী একটু বিব্রত বোধ করে।
.
.
-একটু সরে দাঁড়ান।
-না কেন?
-সবাই দেখছে।
-দেখুক।
.
.
রুহী আর কিছু বলতে পারলোনা। বলে ও লাভ নেই।এই বেটা কখনো কারো কথা শুনেনা।সেখানে বেশ অনেকটা সময় পার করে ওরা।তারপর রওনা হয় আল কুদরা মরুভূমির উদ্দেশ্যে।ঘন্টা খানিক পর পৌছে যায় ওরা।মরুভূমি তে চলার জন্য দুধরনের বাহন আছে একটা হলো উট আর অপরটা কুয়াড বাইক অথবা Quad bike.দুটো বাইক ভাড় করে ওরা।একটায় মামা মামী।আর অপরটায় রোয়েন আর রুহী।রুহীকে সামনে বসায় রোয়েন।বাইকে প্রায় জড়িয়ে ধরেছিলো রুহীকে রোয়েন।কিছুসময় পর বাইক থেকে নেমে যায় ওরা।রুহী বায়না ধরে উটের পিঠে চড়বে।রোয়েন চোখ বড় করে না করছিলো।কিন্তু রুহীর মন খারাপ হয়ে যাওয়ায় রাজি হয় ও।উটের পিঠে চড়ার পর বেরিয়ে আসে ওরা।রেস্টুরেন্টে খেয়ে রওনা হয় ঘরের উদ্দেশ্যে।রাত হয়ে যায় ঘরে ফিরতে ফিরতে।ঘরে পৌছে রুহীকে নিয়ে রুমে চলে আসে রোয়েন।রোয়েনের বুকে শুয়ে আছে রুহী,
.
.
-কবে যাবো আমরা?
-রুহী টিকিট পাইনি।
-ওহ।
.
.
দুজনেই ঘুমিয়ে যায়।পরদিন নানু রুহীকে কোন কাজ করাতে পারেননা রোয়েনের কারনে।রুহীকে নিয়ে যখন তখন ঘুরতে বেরিয়ে যায়।সেই সাথে আরমান হামিদ তো আছেনই।বিকেলে রোয়েন রেজোয়ান মাহবুব আর আরমান বাহিরে যায় ঘুরতে।রুহী কে বাসায় একা পেয়ে নানা ওনার ঠিক করা ছেলে কে বাসায় আসতে বলেন।রুহী কে বলেন ভালো নাস্তা বানাতে।রুহী নাস্তা বানিয়ে রুমে যেতে নিবে তখনই নানু ওকে নিয়ে শাড়ী পরিয়ে সাজিয়ে দেয়।রুহী বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে এসব।নানু কে জিজ্ঞেস করার পর ও কিছু বলেননি ওনি।রুহীকে গেস্টদের সামনে আনা হয়।একজন বয়স্ক মহিলা বয়স্ক পুরুষ আর একজন মাঝ বয়স্ক লোক কে দেখতে পায় রুহী।তাদের গেটআপ দেখে বুঝতে দেরি হয়নি বেশ বড় লোক।ওদের কথা বার্তা শুনে রুহী বুঝতে পারলো ওকে দেখতে এসেছে।মহিলা নানু কে বলল,
.
.
-সেলিনা তোমার নাতনী খুব সুন্দর।আমাদের পছন্দ হয়েছে।
-আমি খুব খুশি।তো রশিদ তুমি কিছু বলো।মাঝ বয়স্ক লোককে জিজ্ঞাস করেন নানু।
-আমার বাবা মা যা বলেন তাই হবে।
.
.
রশিদ নামক লোকটির কথায় বুড়ো লোক বললেন,
.
.
-তাহলে আজ আংটি পরিয়ে দেই।
.
.
ওদের কথায় রুহী মাথা উঠিয়ে ওদের দিকে তাকায়।মাঝ বয়স্ক লোকটার হাতে আংটি দেখতে পায় রুহী।লোকটা এসে ওর পাশে বসে।রুহীর ভয় লাগছে।কি হচ্ছে এসব?ও কি করবে এখন।লোকটা ওর হাত ধরতেই রুহী উঠে দাঁড়ায়।
.
.
-না নানু আমি পারবোনা।
.
.
কথ গুলো বলে রুহী দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।এদিকে নীরা ওদের আসতে দেখে রেজোয়ান মাহবুবের নম্বরে কল দেয়।




.
.
-হ্যা ভাবি বলেন।
-ভাই জলদি ঘরে আসেন।মা বাবা ছেলে নিয়ে আসছে রুহীকে দেখানোর জন্য।ওরা আংটি পরাতে চাইছে।রুহী রুমের দরজা বন্ধ করপ বসে আছে।দরজা খুলছেনা।
-ভাবি আমরা আসছি।
.
.
রেজোয়ান মাহবুবের কথায় রোয়েন ওনার দিকে তাকায়।
.
.
-স্যার বাসায় রুহীকে দেখতে এসেছে।আংটি পরাতে চেয়েছিলো ওরা।
-গাড়ি ঘুরান।রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
.
.
আরমান হামিদ রোয়েনের দিকে তাকায় ওর কন্ঠ শুনে তারপর চুপচাপ গাড়ি ঘুরিয়ে বাসার পথে অগ্রসর হয়।এদিকে রুহীর রুমের দরজা সবাই নক করছে রুহী দরজা খুলছেনা।কিছুক্ষন পর গেস্টরা চলে যায়।রোয়েন রেজোয়ান মাহবুব আরমান হামিদ ঘরে ঢুকে দেখে হাসান হামিদ আর সেলিনা হামিদ ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে আছে।নীরা হামিদ রুহীর রুমের সামনে।রোয়েন গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার শুরু করলো।
.
.
-এতো বড় সাহস কি করে হয় আপনাদের ঘরে মানুষ এনে রুহীকে দেখানোর!!!!
.
.
সেলিনা হামিদ আর হাসান হামিদের দিকে তেড়ে আসে রোয়েন।
.
.
-আপনাদের এতো বড় সাহস কি করে হলো মানুষ আনেন ঘরে রুহীকে দেখানোর জন্য।
-এই ছেলে একদম….হাসান হামিদ কথা শেষ করতে পারলেননা।রোয়েন ওনাকে থামিয়ে দিলো
-একদম কোনকথা বলবেননা।রুহীকে আমি নিয়ে যাবো শীঘ্রই।চিৎকার করে রোয়েন।
.
.
তারপর দৌড়ে রুহীর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়।রোয়েনকে আসতে দেখে নীরা হামিদ সরে যান।রোয়েন জোরে নক করে চিৎকার করে ডাকতে থাকে,
.
.
-রুহী!!! রুহী!!!
.
.
রোয়েনের ডাকে রুহী দরজা খুলে দিয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।রোয়েন রুমে ঢুকে দরজা লাগায়।অনেক কাঁদছে রুহী।রুহীকে শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে রেখেছে রোয়েন।
কিছুক্ষন পর একটু শান্ত হলে রোয়েন রুহীর মুখ সামনে এনে কপালে গালে অনবরত চুমু দিতে থাকে।তারপর রুহীর ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট চেঁপে ধরে চুমু খেতে শুরু করে।রুহী জোরে পিঠ জড়িয়ে ধরে রোয়েনের।এদিকে হাসান হামিদ আর সেলিনা হামিদ অনেক রেগে গেছেন।এতো বছর পালন করেছে রুহীর আর এখন বাহিরের এক ছেলে এসে ওদের ধমকাচ্ছে!!!হাসান হামিদ রেজোয়ান মাহবুবের কাছে এলেন,
.
.
-তোমার বস আমাদের এতো শুনালো কোন সাহসে?
-আপনারা ও তো আমাকে না জানিয়ে লোক এনেছেন রুহীকে দেখানোর জন্য।
-আমরা ওকে বড় করেছি রেজোয়ান।সেলিনা হামিদ রেগে গেলেন।
-আমার মেয়েকে আপনারা লালন পালন করে বড় করেছেন সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ।কিন্তু আপনারা আমার মতামত ছাড়া রুহীর জীবনের কোন ডিসিশন নিতে পারেননা।
-তাহলে কি রুহীর ওপর আমাদের কোন অধিকার নেই?চিৎকার করে উঠেন হাসান সাহেব।
-আমি সেটা বলিনি জাস্ট বলেছি আমার মতামতের কথা।কারন আমি ওর বাবা।
.
.
কথাটা বলে সরে যান রেজোয়ান মাহবুব।এদিকে আরমান হামিদ বাবা মার কাছে এসে বলল,
.
.
-এ কাজটা ভালো করেননি আপনারা।নিজেদের খেয়াল খুশিমতো সব কিছু হয়না।
.
.
এদিকে রুহী রোয়েনের বুকে মাথা রেখে বসে আছে।রোয়েন রুহীর চুল হাতিয়ে দিচ্ছে।বেশ ভালো লাগছে ওর।
.
.
-তাড়াতাড়ি দেশে চলুন।
-হুম যাবো।
-এখানে আর ভালো লাগছেনা।
.
.
রোয়েন এবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রুহীকে।কিছুসময় পর নীরা হামিদ দরজায় নক করেন।
রোয়েন উঠে দরজা খুলে সরে দাঁড়ায়।
.
.
-ও সারা দিনে কিছু খায়নি।
.
.
রোয়েন বাটি হাতে নিয়ে বলল,
.
.
-আমি খাইয়ে দিবো।
-ওকে।
.
.
রুহীর দিকে দুষ্টু হেসে বেরিয়ে যান নীরা।রোয়েন এসে রুহীর পাশে বসে।রুহী মাথা ঘুরিয়ে নেয়।
.
.
-ভালো লাগছেনা।
-রুহী এখন চড় দিলে সব ভালো লাগবে।
চলবে