The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 22

→আজ ওরা দুজনেই রাতের শহরটা ঘুরে দেখবে।সারা পরিবেশ নিস্তব্ধতায় ছেঁয়ে গেছে।গাড়ির লাইট ছাড়া আর কোন লাইট পাওয়া যাচ্ছেনা।মাঝে মধ্যে ল্যাম্পপোস্ট গুলোর আধো আলো ওদের ওপর এসে প্রসারিত হচ্ছে।রোয়েন গাড়ি চালাচ্ছে আর পাশে রুহী বসে লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে প্রিয় মানুষটাকে দেখছে।আজ কালো লম্বা কোটটায় আছে সে।এতোটা চমৎকার লাগে লোকটাকে বলার মতো না।রোয়েন হঠাৎ রুহীর ডানহাত টাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো।রুহী প্রথমে হাত সরাতে চাইলে রোয়েন চোখ রাঙ্গাতেই কিছুটা ভয় পেয়ে ওভাবেই বসে রইলো রুহী।হঠাৎ রোয়েন খেয়াল করলো ট্রাফিক পুলিশেরা গাড়ি আটকাচ্ছে।রোয়েন ও গাড়ি থামায়।একজন পুলিশকে ওদের কাছে আসতে দেখা গেলো।রোয়েন মুখখানি স্বাভাবিক রেখে জিপের গেট খুললো।
লোকটা রোয়েন কে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে অনদের বলল,
.
.
-এ গাড়ি যেতে দে।
-না কেন?আমার গাড়ি ও সার্চ করতে হবে।ভ্রু কুঁচকে বলল রোয়েন।
-না স্যার।আপনি যান।
.
.
রোয়েন এবার বেরিয়ে এসে লোকটার কলার ধরতেই সে ভয় পেয়ে অন্য পুলিশদের রোয়েনের গাড়ি সার্চ করতে ইশারা করে।তারপর রোয়েনকে বলল,
.
.
-স্যার তাহলে আপনার লাইসেন্স টা দেখান।
.
.
রোয়েন এবার গাড়ির ভিতর ঢুকে লাইসেন্স নিয়ে লোকটার হাতে দিলো।সে লাইসেন্স টা চেক করে রোয়েনের কাছে দিয়ে বলল,
.
.
-স্যার সব ঠিক আছে।
-হুম।যে দায়িত্ব পালন করছেন তা সবার ক্ষেত্রে সমান হওয়া চাই।যত ক্ষমতাবান লোক হোকনা কেন।
-জি স্যার অবশ্যই।
.
.
রোয়েন দরজা বন্ধ করে বসে রইলো।অনেকগুলো গাড়ি এখনো বাকি আছে।রোয়েন এবার রুহীর দিকে তাকায়।তারপর সামনে ফিরে বলতে শুরু করলো,
.
.
-পারলে অনেক আগেই চলে যেতে পারতাম।কিন্তু আমাদের থেকে এখানে এমন অনেকেই আছেন যাদের এখন যাওয়াটা অনেক বেশি জরুরি।
.
.
রুহী কিছু বললনা।মুচকি হেসে জানালার বাহিরে তাকায়।প্রায় পৌনে একঘন্টা পর গাড়ি ছাড়লো।রোয়েন গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে।সোয়া এগারোটায় ঘরে এসে পৌছায় ওরা।দুজনে ফ্রেশ হয়ে নেয়।রোয়েন কোলে করে রুহীকে নিয়ে আসে নিজের রুমে।তারপর ওকে বিছানায় বসিয়ে ওর কপালে চুমু দিয়ে বুকে জড়িয়ে নেয়।রুহী শান্ত ভাবে রোয়েনের বুকে জড়িয়ে আছে।রুহীকে সামনে আনে রোয়েন।তারপর ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে বিছানায় শুইয়ে ওর গলায় আলতো চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে।বেশ কিছুক্ষন পর রোয়েন রুহীকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
পরদিন সকাল রুহী রোয়েনের নাস্তা বানিয়ে কফির পানি বসায়।রোয়েন রুহীকে ডাকতে শুরু করে শার্টের বোতাম লাগাতে।রুহী এসে শার্টের বোতাম লাগাতে শুরু করে হঠাৎ রুহীর ফোন বেজে উঠে।রোয়েন বলল,
.
.
-যাও দেখো কে কল করেছে?
-জি।
.
.
রুমে চলে আসে।ওর নানু কল করলো।রুহী ফোন রিসিভ করতেই নানু কেঁদে উঠে।রুহীর ভিতরটা কেমন যেন করে উঠে।
.
.
-কি হয়েছে নানু?
-রুহী তোর নানা অনেক অসুস্থ।ডাক্তার বলল বেশি দিন বাঁচবেনা।তুই একবার আসবিনা নানুমনি?
.
.
রুহীর চোখে পানি চলে আসে।কেঁদে উঠে ও।
.
.
-জি নানু অবশ্যই আসবো।নানা কই?
-শুয়ে আছে রে।কথা বলবি?
-দাও।
.
.
তারপর অনেক গুলো কাশি আর গোঙ্গানির শব্দ,
.
.
-রুহী ভালো আছিস পাখি?
-নানা আমি ভালো আছি।
-তুই আসবিনা পাখি?
-জি নানা অবশ্যই আসবো।
.
.
এদিকে রোয়েন দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে রুহীর আসার।দেরি দেখে নিজেই রুহীর রুমে গেলো।রুহী ফোন রেখে দেখে রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে।রুহী মাথা নিচু করে চোখ মুছতে নিলে রোয়েন ওর হাত ধরে ফেলে।তারপর জিজ্ঞেস করে,
.
.
-কি হলো?
-নানা অনেক অসুস্থ।আমাকে দেখতে চান।
-যাবে?
-হুম।মাথা ঝাঁকায় রুহী।
-আজ কলেজে গিয়ে এ্যাপলিকেশন দিয়ে আসো ছুটির।আমি ব্যাবস্থা করছি।
.
.
রুহীর গালে ঠোঁট রেখে ওর চোখের পানি শুষে নিয়ে রোয়েন বলল,
.
.
-কাঁদবেনা আর।
-আপনার কফি নিয়ে আসি।
-হুম।
.
.
রুহী বেরিয়ে যায় কফি বানাতে।কফি বানিয়ে রোয়েনের কাছে আসে।রোয়েন কফি নিয়ে ওর কোমড় টেনে কাছে আনে।তারপর সেই আগের মতো করে রুহীকে নিজের মুখের কফিটা খাওয়ায়।সেদিন রুহী কলেজের থেকে ছুটির পারমিশন নিয়ে আসে।




রোয়েন তিনটা ভিসার জন্য এপ্লাই করে।রেজোয়ান মাহবুব রুহী আর ওর নিজের জন্য।ভিসা হয়ে যায় দুদিন পর।এরপর টিকিটটাও হয়ে যায় পরদিন রাতের জন্য।
রোয়েন আগের দিন সকল কাজ গুছিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দেয়।সব কিছুর ভার দেয়া হয় রামীন আর শামীমের কাঁধে।ওরা সব কিছু বুঝে নিলো।পরদিন সন্ধ্যায় বেরিয়ে যায় তিনজন।রুহী আজ কালো বোরকা আর কালো হিজাব পরেছে।হাতে পায়ে কালো মোজা।নানু বোরকা ছাড়া দেখলে বকা দিবে।রোয়েন তো রুহী কে সবভাবেই ভালোবাসে।আর ওর মায়াবতীকে আজ অন্যরকম ভালো লাগছে।
এয়ারপোর্টে চলে আসে ওরা।রোয়েন সারাক্ষন রুহীর হাত ধরেই ছিলো।রুহীর বেশ লজ্জা লাগে বাবার সামনে।কিন্তু বেচারী কিছু বলতেই পারেনা।প্লেনে উঠে বসে ওরা।রোয়েন আর রেজোয়ান মাহবুবের মাঝে রুহীর সিট।রাতে রেজোয়ান মাহবুবের চোখ আড়াল করে রোয়েন রুহীর হিজাবের ওপর দিয়ে গালে চুমু খেয়েছে। প্রত্যেকবার কেঁপে উঠে রোয়েনের দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছিলো রুহী।পরদিন সকালে দুবাই পৌছে যায় ওরা।নানা নানুর বাসা প্রায় একঘন্টার পথ দুবাই থেকে।বারোটায় পৌছালো ওরা।কলিংবেল দিতেই একজন বয়স্ক কিন্তু বেশ সুন্দরী মহিলা কে দেখতে পায় ওরা।রুহী দৌড়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরে,
.
.
-নানু ভালো আছো?
-হ্যা তুই কেমন আছিস?
-জি ভালো।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব এসে শাশুড়ির পা ধরে সালাম করে।
.
.
-মা ভালো আছেন?
-এইতো ভালো।তা উনি কে রেজোয়ান?রোয়েনের দিকে ইশারা করে রুহীর নানু।
-মা উনি আমার বস।
.
.
রোয়েন সালাম জানায়।ওনি ও সালামের জবাব দিয়ে রুহীকে বলেন,
.
.
-কিরে লাগেজ আনিস নাই?
-না নানু বেশি দিন থাকবোনা তো।
-ওহ।কিছুটা মন খারাপ করে।
.
.
রোয়েনকে ওনি সমাদর করে বসান রেজোয়ান মাহবুব সহ।রুহী ফ্রেশ হতে গেছে।রোয়েন চুপচাপ ওনাদের কথা শুনছে।কিছুক্ষন পর রুহী আসে।রুহীর নানু ওকে বলে রোয়েনকে রুম দেখাতে।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর সাথে চলে আসে।রুহী একটা রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়।
.
.
-এটা আমার মামার রুম।ওনি নেই এখন।আপনি থাকেন।
-হুম।
-ভিতরে আসুন।
.
.
রোয়েন ভিতরে আসে।রুহী এটা ওটা দেখাচ্ছে।রোয়েন রুহীকে দেখছে।রুহী কালো একটা লং ফ্যাশনেবল টপস এর সাথে কালো স্কার্ট প্লাজো পরে আছে।রোয়েন এসে রুহীর কোমড় জড়িয়ে ধরে পিছন থেকে।রুহীর ভিতর তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়।
.
.
-সবাই ঘুমায় কখন এখানে?নেশা ধরানো কন্ঠে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-ক কেন?
-যা জিজ্ঞেস করছি সেটার উত্তর দিলে খুশি হই।
-বারোটার মধ্যেই।
-সাড়ে বারোটায় আমার কাছে আসবে।
-সকালে আপনার কফি নিয়ে আসবো।
-বেশি কথা বলো।রাত সাড়ে বারোটায় আসবে।এটাই ফাইনাল।
-ওকে।
.
.
রোয়েন কে ছাড়িয়ে দৌড়ে বেরিয়ে যায় রুহী।রোয়েন লাগেজ থেকে কাপড় বের করে ফ্রেশ হতে চলে যায়।রুহী দৌড়ে এসে নানুর কাছে দাঁড়ায়।
.
.
-কিরে এভাবে দৌড়ে এলি যে।
-না নানু বলছিলাম কি বাবার মনে হয় খিদে পেয়েছে।
-তোর বাবাতো মাত্রই ফ্রেশ হতে গেলো।
-ওহ। আমতা আমতা করতে থাকে রুহী।
চলবে

Comments