The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 15

সেদিন রাতটা রোয়েনের বাহুপাশে কেঁটে যায় রুহীর।
রুহীকে ভালোবাসার সাগরে ডুবিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো রোয়েন।ওর পেটে পড়া ভারি চুমু গুলো রুহীকে অজানা শান্তি দিচ্ছিলো।রুহীর ঠোঁটে এসে থামে রোয়েন।তারপর সেখানে জোরে ঠোঁট ডুবিয়ে চুমু খায় রোয়েন।এর মাঝে রুহী রোয়েনের শার্টের বেশ কয়েকটা বোতাম খুলে নিয়েছে।এক পর্যায়ে রুহীকে কোলে তুলে নেয় রোয়েন।তারপর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রুহীর কপালে চুমু খায় রোয়েন।উঠে যেতে নিলে রুহী রোয়েনের কোটের কলার টেনে ধরে।অবাক চোখে মায়াবতীর দিকে তাকায় রোয়েন।মেয়েটা ওকে কাছে টানছে।রোয়েন রুহীর নাকে নাক ঘষে দিয়ে ওর চোখে চুমু দিয়ে বলল,
.
.
-যেতে হবে আমার।
-আজ এখানে থাকুন আমার পাশে।
.
.
না করতে পারেনা রোয়েন।পাশে শুয়ে রুহীকে বুকে জড়িয়ে নেয়।রুহী যেন শান্তি পাচ্ছে খুব।নিজেকে কেন এতো নিরাপদ মনে হয় লোকটার বুকে।যেন কোন বিপদ ওকে ছুঁতে পারবেনা।রুহী ও চাইছে লোকটাকে জড়িয়ে ঘুমাতে কিন্তু পারছেনা।কেমন এক জড়তা কাজ করছে ওর মাঝে।রুহী একবার মাথা উঠিয়ে রোয়েনকে দেখে নেয়।ওর চোখ বন্ধ।চওড়া বুকখানা উঠানামা করছে।রোয়েন কে মনযোগ দেখার চেষ্টা করে রুহী।লোকটার সাদা গালের খোঁচা দাঁড়ি চিকচিক করছে।গোলাপী ঠোঁট আরো গোলাপী দেখাচ্ছে।চোখের ভ্রু গুলো বেশ ঘন খুব সুন্দর।রুহী এবার লোকটার থেকে চোখ সরিয়ে হাত উঠিয়ে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।রোয়েন এবার চোখ খুলে হাসে।মায়াবতী ওকে জড়িয়ে ধরে আছে। পাগলীটা জানে না ও জাগনা আছে।রোয়েন মুখ বাড়িয়ে রুহীর মাথায় চুমু খেতেই রুহী পিছনে ফিরে তাকিয়ে রোয়েনকে দেখে।নাহ লোকটা ঘুমাচ্ছে তাহলে তখন মাথায় কে চুমু দিলো।রোয়েনের হাসি পাচ্ছে।তবে হাসবেনা নাহলে ধরা খাবে।দীর্ঘ দুষ্টুমি ভরা রাত টা পার করে সকালের সূর্যের আলো রুমের পর্দা ভেদ করে রোয়েন রুহীকে ছুঁয়ে দিলো।রোয়েন চোখ খুলে রুহীকে দেখতে পায়।মেয়েটার মুখ ওর বুকে ডুবে আছে।দুহাত দিয়ে সকল শক্তি ব্যাবহার করে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে আছে রুহী।রোয়েন এবার কোনমতে রুহীকে সরিয়ে ঠিক মতো শুইয়ে দিলো।রুহী অন্যপাশ ফিরে ঘুমিয়ে যায়।রুমে আসে রোয়েন।নিজের বুকের মাঝে চকলেট কালার লিপস্টিকের ছোঁয়া দেখতে পায়।এমন কালার তো রুহী পরেছিলো কাল।তাহলে কি ও?রোয়েনের ঠোঁটের কোনে দুষ্টু হাসি ফুঁটে উঠে বেশ ভালো লাগা কাজ করছে।আজ ফ্রেশ হয়েছে তবে সেটাকে উঠতে দেয়নি।রোয়েন গায়ে শার্ট জড়িয়ে রুহীর রুমে এসে ওকে পায়নি।একটু চিন্তিত হয় রোয়েন।তারপর দৌড়ে পাকঘরে এসে দেখলো কলেজ ড্রেস পরে কফি বানাচ্ছে রুহী।রোয়েন চুপচাপ চলে আসে।তারপর রুমে এসে শার্টের বোতাম না লাগিয়ে চিরুনী হাতে নেয়। রুমে ঢুকে রুহী।লোকটাকে উদম বুকে দেখে লজ্জা লাগে রুহীর।তবে ভালো ও লাগে সেটা বুঝাতে চায়না রুহী মুখের এক্সপ্রেশন দিয়ে ও।রুহী কফি নিয়ে রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।কফি মগ রেখে রোয়েনের শার্টে হাত রাখতেই রুহী দেখলো কাল ওর চুরি করে চুমু দেয়া দাগটা।রুহী লজ্জা পেয়ে যায় তবে নরমাল রাখলো নিজেকে।সকল নিস্তব্ধতা দূর করে রোয়েন বলল,
.
.
-চুমু চুরি করলে করার মতো করো।ধরা খেয়ে যাও।সেটা কি ভালো দেখায়?
.
.
রোয়েনের কথায় কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা রুহী।কি বলল লোকটা?এটা কি ওকে ইনডিরেক্টলি অপমান করলো না তো?নিজে ইচ্ছেমতো চুমু দিতে পারবে আর ও খেয়েছে চুরি করে সেটা দোষ হয়ে গেলো?রুহী চুপ করে রইলো।বোতাম লাগিয়ে আসতে নিবে রুহী।তখন ওর হাতে টান পড়ে।রোয়েন রুহী নিয়ে আসে নিজের কাছে তারপর বলতে লাগলো,
.
.
-বলেছি যেতে?রাগী গলায়।
-নাহ।
-কফিটা খাও।রুহীর দিলো কফির মগ।
-আমি কেন?
-এতো প্রশ্ন করো কেন?খেতে বললাম খাবে।রেগে বলল রোয়েন।
.
.
রুহী আর কথা না বাড়িয়ে কফি মুখে দিয়ে গিলার আগেই রোয়েন ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট দিয়ে কফিটুকু নিয়ে নেয়।চোখ বড় করে তাকায় রুহী।
.
.
-এসব কি ছিলো।
-কি ছিলো আবার? আমার কফি আমি খেলাম।
-আপনি আমাকে খেতে বললেন।
-লিসেন এখন থেকে এভাবে খাবো।তুমি পছন্দ করো আর না করো।
.
.
রুহী চুপ হয়ে রইলো।রোয়েন পুরোটা কফি এভাবে খেয়ে নেয়।দুজনে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ে।আরো কয়েকটা দিন পার হয়ে গেলো।রোয়েন ঠিক করেছে মায়াবতীকে নিয়ে দূরে কোথা ও যাবে।তবে সেটা বাংলাদেশে হবে।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে যায় রোয়েন সাতদিনের মাঝে।চিটাগাং গেছে ওরা।সেখানে বেশ কিছু সুন্দর জায়গা আছে যা দেখার মতো।রুহীকে নিয়ে একটা হোটেলে উঠে ওরা।তবে যাওয়ার আগের দিন রেজোয়ান মাহবুবকে ডেকে পাঠায় রোয়েন নিজের রুমে।রেজোয়ান মাহবুব আসতেই রোয়েন বলে,
.
.
-কাল আমি আর রুহী চিটাগাং যাচ্ছি।এসব দেখবেন আপনি।
-রুহী ও যাবে?
-ইয়েস এনি প্রবলেম?
-না স্যার।
.
.
আসলে কিছু বলার ছিলো রেজোয়ান মাহবুবের।তবে রোয়েনের ওপর বিশ্বাস আছে ওনার।যেখানে রুহী ওনার সাথে থাকে সেখানে রেজোয়ান মাহবুবের কিছু বলার প্রশ্ন থাকেনা।রোয়েন রুহী সেখানে চারদিন কাঁটায়।একসপ্তাহ থাকার কথা ছিলো কিন্তু রোয়েনের কোন এক কাজে ফিরতে হয়েছে ওদের।তারপর ও সময়টা বেশ ছিলো সেখানে।ভাঁটিয়ারি,সেন্টমার্টিন আরো বেশ কিছু জায়গায় ঘুরেছে ওরা।
,
,
,
,
চিটাগাং থেকে ফিরার দুদিন পর রুহী যেন অন্য রোয়েনকে আবিষ্কার করলো।লোকটা কেমন পাল্টে গেছে। বেশ রাত করে ঘরে ফিরে,ঠিক মতো কথা বলেনা,রুহীর কাছে আসেনা রুহীকে ভালোবাসেনা।সরে সরে থাকে।ভালো লাগেনা রুহীর। রুহী যখন জড়িয়ে গালে চুমু খায় রোয়েনের তখন কোন কিছু বলেনা রোয়েন আর না রুহীকে জড়িয়ে ধরে।কান্না পায় রুহীর।লোকটা হয়ত এমনই।সে রুহীকে শুধু নিজের মনোরঞ্জক হিসেবে রেখেছিলো।এখন আর ভালো লাগছেনা রুহীকে।রুহীর বেশ অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে।এদিকে রোয়েনের কক্সবাজার থেকে আসার পর মনে হতে থাকে ওর দলে কেউ আছে যে কিছু গোপন খবর অন্যদল কে দিচ্ছে।রোয়েন বুঝতে পারছেনা এমন কে আছে?নতুন নিয়েছিলো একটা ছেলেকে একমাস আগে।সে চা সার্ভ করে সবাইকে।ছেলেটার সব তথ্য রোয়েন নিয়েছিলো তাহলে কে আছে।রোয়েন সবার মুখ দেখে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।শামীম আর রেজোয়ান মাহবুবকে ও খবরটা দেয়নি রোয়েন।রেজোয়ান মাহবুবকে রোয়েন কিছু না বললে ও কিছু একটা আঁচ করতে পারেন ওনি।সেদিন রোয়েন কে বলেন,
.
.
-স্যার আপনি কিছু বলছেননা কিন্তু আপনার চোখ বলছে কিছু নিয়ে চিন্তিত আপনি।
-ঠিক ধরেছেন রেজোয়ান।আমার মনে হচ্ছে আমাদের দলে কেউ আছে যা অন্যের জন্য কাজ করছে।
-কে স্যার?
-ঠিক জানিনা তবে খেয়াল রাখবেন একটু।
-জি স্যার।
.
.
একসপ্তাহ পার হয়ে যায়।রামীন দৌড়ে আসে রোয়েনের কাছে।তারপর যা বলল রোয়েন সামলাতে পারেনা নিজেকে।উঠে এগিয়ে যায় ক্যাফেটেরিয়ায়।সেখানের ঝাড়ুদার কে টেনে ওদের টর্চারিং রুমে নিয়ে আসে।
লোকটার গায়ে কারেন্ট শক দিচ্ছে রামীন।রোয়েন লোকটার সামনের একটা চেয়ারে বসে আছে পা উঠিয়ে।শক দেয়া থামাতে বলে রোয়েন তারপর লোকটার দুগাল শক্ত চিপে ধরে রোয়েন,
.
.
-কে পাঠিয়েছে?কার খবরি তুই?
-বলবোনা।
.
.
রোয়েন এবার প্লাস দিয়ে লোকটার নখ চেঁপে ধরলো তারপর শক্ত গলায় বলল,
.
.
-বল নাহলে তোর শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ আলাদা করে দিবো।
-যাই করেন কিছু বলবো না।
.
.
এবার নখ তুলে ফেলে লোকটার।লোকটা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।রোয়েন এবার তার শার্টের কলার চেঁপে ধরে বলে,
.
.
-বল।
-নাইট গ্রুপ।
-ওদের প্ল্যান কি?
-জানি না।আমাকে কিছু বলেনি।শুধু বলেছে আপনাদের ওপর নজর রাখতে।
.
.
রোয়েন চিন্তায় পড়ে যায়।লোকটা আর কিছু বলেনি।কি করবে ও?ওরা কি এ্যাটাক করবে রোয়েনের ওপর?কবে করবে কখন কিভাবে বুঝতে পারছেনা।দুদিন পার হয়ে যায়।সবাই ঘুমিয়ে আছে যার যার রুমে।হঠাৎ বোম ফোঁটার শব্দ পেলো।রোয়েন লাফ দিয়ে উঠে।তারপর জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে আলো জ্বলছে।রোয়েন এবার নিজের অস্ত্র সব ঠিক করে রুহীর রুমে এলো।রুহী বসে আছে।ভয় পেয়ে গেছে মেয়েটা।রোয়েন রুহীর কাছে এসে জের করে কপালে চুমু খেয়ে ওর দুটো হাত উড়না দিয়ে আটকে দিলো জানালার সাথে।রুহী বুঝতে পারছেনা রোয়েনের এমন আচরন।রোয়েন বেরিয়ে আসে।পিছন থেকে রুহী চিৎকার করছে,
.
.
-আমাকে বাঁধলেন কেন খুলুন।কেন এমন করছেন?রোয়েন!!!!
.
.
রোয়েন কোন কথা শুনেনি।বেরিয়ে যায় ও।
দুজন গার্ড ঘরে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।শত্রুরা এখনো দূরে।রেজোয়ান মাহবুবকে বের হতে দেখে থামায় রোয়েন।
অবাক হন রেজোয়ান মাহবুব,
.
.
-স্যার!!!
-কোথা ও যাবেননা।
-কেন স্যার!
-আপনার মেয়ে আছে।আপনাকে লাগবে ওর।
-কিন্তু স্যার।
-দেখুন রুহীকে খুব ভালোবাসি আমি।আমি চাইনা ও কষ্ট পাক।আমি মারা গেলে ওর জন্য আপনি থাকবেন।
-না স্যার এমন করবেননা।আপনাকে একা ছাড়বোনা আমি।
-রুহীর জন্য আপনাকে থাকতে হবে।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব কে ঘরে দিয়ে দরজা আটকে দেয় রোয়েন।তারপর বেরিয়ে যায় ও।দরজায় বাড়ি লাগাচ্ছেন রেজোয়ান কিন্তু দরজা খুলেনি রোয়েন।শুরু হয়ে গোলাগুলি।রুহী কেঁপে উঠছে বারবার।আর নিজের হাত ছাড়াতে চাইছে।কিন্তু পারছেনা।আধঘন্টা কেঁটে যায়।হঠাৎ রুহী দেখলো অাঁধারে কেউ রোয়েনের বুকে বন্দুক ধরে আছে।রুহী এবার জোরে জোরে উড়না ঘষতে লাগে জানালায়।রোয়েন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে লোকটার বন্দুকের সামনে।হঠাৎ কোথা হতে যেন রুহী দৌড়ে এসে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরতেই রুহীর কান্না থেমে যায়।রোয়েনের পিঠে রুহীর হাত শিথিল হয়ে যায়।নিজে পড়ে যায় রুহী।রোয়েন এতক্ষন ঘোরে ছিলো এবার সজাগ হলো।শামীম আর রামীন লোকটাকে আটকে নিয়ে গেছে।রোয়েন নিচে তাকায়।রুহী রক্তমাখা হাত দিয়ে রোয়েনকে ডাকছে।রোয়েনের হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেছে।কি হলো এসব?এমনটা কি হওয়ার ছিলো?রোয়েন নিচে বসে যায়।রুহী রোয়েন শার্টের কলার টেনে ধরে।রোয়েনের চোখজোড়া ভারি হয়ে আসছে অশ্রুতে।কাঁপা গলায় বলল,
.
.
-রুহী!!!!
রুহী চোখজোড়া বুজে নেয়।।রোয়েনের কলার থেকে পড়ে যায় রুহীর হাত
চলবে