The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 113

→রুহীর পাতলা শরীরটা নিস্তেজ হয়ে যায়।এলিয়ে পড়ে শরীরটা সাদা ফ্লোরের ওপর।ছিটা ছিটা রক্ত পড়ে আছে চারিপাশে।নিচ থেকে চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে যায় রামীলা। তারওপর রোয়েনকে এভাবে রেগে বেরুতে দেখে আর নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা ও।দৌড়ে রোয়েনের রুমে এসে দেখলো বাবু কাঁদছে আর রুহী ফ্লোরে পড়ে আছে।ফ্লোরে রক্ত পড়ে আছে।রামীলা দৌড়ে এসে রুহীর পাশে বসে পড়ে। কেঁদে কেঁদে ডাকতে শুরু করে,
”আফু উডেন।”
রুহী মরার মতো পড়ে আছে।তাকিয়ে আছে রামীলার দিকে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।রামীলার ডাকে চোখ আধো খুলল।বাবু খুব কাঁদছে।দিশেহারা হয়ে যায় রামীলা।রুহীকে টেনে উঠাতে পারছেনা।রামীলা বাবুকে কোলে নিয়ে কান্না থামাতে চেষ্টা করে বিড়বিড়িয়ে বলতে থাকে ভাইরে কল দেই।তখনই রুহী হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করে রামীলাকে।রামীলা ওর দিকে তাকালে রুহী নিষেধ করে রোয়েনকে কল দিতে।রামীলা আনিলাকে কল দেয়।আনিলা ফোন রিসিভ করে অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন।আনিলা শামীমকে নিয়ে রোয়েনের ঘরে চলে আসেন।মেয়েকে এ অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন।রোয়েনকে জানাতে চাইলে রুহী নিষেধ করে।আনিলা শামীম সহ দ্রিধা আর রুহীকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন।হাসপাতালে গিয়ে দেখেন ডিউটি ডাক্তার ফাহমিনের বোন ফারিয়া। ওনি রুহীকে দেখে বলেন,
”সেদিন বাবু হলো।ওর তো এখন রেস্টে থাকার কথা।”
আনিলার কাছে ব্যাপারটা ধোঁয়াশা। তেমন কিছুই জানেননা।তাই বললেন
”পড়ে গেছে হয়ত।আমি ছিলাম না তখন।”
”ইসস অনেক ব্লিডিং হয়ে গেছে। ইমার্জেন্সি তে নাও।”
রুহীকে ইমার্জেন্সি তে নেয়া হলো।রুহীর অবশ্য রক্তের দরকার পড়েনি তবে সেলাই পড়েছে।অপারেশনের পর আনিলা মেয়ের সাথে দেখা করতে যান দ্রিধা কে কোলে নিয়ে।রুহীকে দেখে দ্রিধা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে যেন মাকে অনেক সময় পর দেখলো।রুহী মেয়েকে এক হাতে টেনে বুকে নেয়।নিশ্বাস নিতে পারছেনা ঠিক মতো।আনিলা বলেন,
”কি হয়েছিলো তোর?”
”পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম।”
”একটু সাবধানে থাকতে হবে তোকে।”
”জি মা এখন থেকে থাকবো।”
আনিলা রুহীকে আবার ও বলেন’
”ওনাকে কল দেই।”
”না মা কল দিওনা।হয়ত কাজে ব্যাস্ত।”
”তো কি হয়েছে? তোর চেয়ে কাজ দরকারি নয়।”
”মা লাগবেনা। ঘরে ফিরলে দেখা হবে।”
”ঠিক আছে।ওনাকে জানালে ভালো হতো।”
রুহী কিছু বলতে পারেনা।চোখের কোনা ভিজে যায়। রুহী মাথা ঘুরিয়ে নেয়।বাবু ওর চুল খাচ্ছে।আনিলা রুহীর চুল বাবুর হাত আর মুখ থেকে সরাতেই কেঁদে উঠে দ্রিধা।রুহী মেয়েকে জড়িয়ে রাখে বুকে শক্ত করে।
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।রুমে গিয়ে কাউকে পায়না ও।না আছে রুহী না মেয়েটা।আবার ও নিচে নেমে আসে ও।রামীলা ঘর ঝাড়ছে।রোয়েন বলল,
”রুহী আর বাবু কই?”
”আফনে চলে যাওনের ফরে রুমে যাইয়া দেহি আফু নিচে ফড়ে রইছে।রক্ত বাহির হইতাছিলো।আনিলা খালারে কল দেওনের ফরে ভাইয়া আর ওনি আইয়া আফুরে লইয়া গেছে।
রোয়েন কি বলবে বুঝতে পারছেনা।ধাক্কাটা বেশ জোরেই লেগে গিয়েছিলো।তারপরই তো বেরিয়ে গেছিলো ও।রোয়েন বুঝতে পারছে কি করেছে ও।বুক কেমন ভার হয়ে আসছে।তখন হয়ত সেজন্য ফারিয়া আপা কল করেছিলো।কাজে যাওয়ার সময় রোয়েন দেখেছিলো ওর হাতে রুহীর চুল লেগে আছে।কি করছে রোয়েন বুঝতে পারছেনা।রাগ কি ওকে অমানুষে পরিনত করছে?মায়াবতীকে এভাবে আঘাত কিভাবে করলো ও?বারান্দায় এসে স্বজোরে হাত আঘাত করে দুতিনবার।দশটা বাজে রুহীকে ফিরতে দেখা গেলো।বাবু শামীমের কোলে।রোয়েন নিচে এসে রুহীর সামনে দাঁড়ায়।রুহী ভ্রু কুঁচকে টলতে টলতে রুমের দিকে যেতে থাকে।রোয়েন এসে ওর হাত ধরতেই রুহী হাত টা ঝাঁড়া দিয়ে রুমে চলে যায়।রোয়েন শামীমের কোল থেকে দ্রিধা কে নিয়ে রুমে চলে যায় রুহীর পিছু পিছু।রুহী এসে মুখ হাত ধুয়ে খাটে আধশোয়া হয়।রোয়েন মেয়েকে শুইয়ে রুহীর পাশে বসে।রুহীর সেদিকে কোন খেয়াল নেই।পেটে আলতো করে হাত রেখে শুয়ে রইলো।রোয়েন হাত রাখে রুহীর পেটে।অনুভব করলো নতুন ব্যান্ডেজ।রোয়েনের চোখ ভারি হয়ে আসে।ধরে আসা গলায় বলল,
”সরি রুহী।”
রুহী কিছু না বলে সাইড ল্যাম্পটা অফ করে শুয়ে পড়ে।রোয়েন রুহীর দিকে তাকিয়ে থাকে।আজ প্রথম এমন হলো রুহী ওকে খেতে বলেনি।রোয়েন চুপচাপ রুহীর পাশে শুয়ে পড়ে।রুহী ঘুমায়নি।ওর চোখ বাবুর দিকে।ঘুমন্ত অবস্থায় বাবুর এক পা একটু বেঁকে আছে।রুহী উঠে ওর পা ঠিক করতে চায়। নিশ্চয়ই ব্যাথা পাচ্ছে মেয়েটা।রুহী কে এভাবে নড়তে দেখে রোয়েন উঠে বাবুকে ঠিক করে শুইয়ে দেয়।সেরাত আর কথা হয়নি ওদের।এদিকে সেদিনই ফাহমিন দেখতে পায় সামায়রাকে গাঢ় নীল শাড়ীতে আচ্ছাদিত।মুখে মিষ্টি হাসি লেগেই আছে।ফাহমিন রাস্তা পার করে সামায়রার পাশে এসে দাঁড়ায়।সামায়রা হেসে মাথা নিচু করে।ফাহমিন বলল,
”কতটা সুন্দর দেখাচ্ছে চিন্তা ও করতে পারবেনা।”
”থ্যাংক ইউ।”
”হুম।”
”কোথাও কি যাবেন?মানে তাহলে ঘরে ফিরতাম।”
”যাবো তোমাকে নিয়ে নদীর পাড়ে।”
”নদীর পাড়ে?”
”হুম।তোমার ভালো লাগবে জায়গাটা আমি শিওর।”
”চলুন তাহলে।নাহলে ফিরতে দেরি হবে।”
”চিন্তা করো না জলদিই চলে আসতে পারবে।”
সামায়রার মাথায় হাত রাখে ফাহমিন।সামায়রা একটু হাসে আর কিছু বলল না।ওরা বেরিয়ে পড়লো ওদের গন্তব্যের সন্ধানে।
সেখানে পৌছে সামায়রা দেখলো আসলে তেমন কিছুই নেই জায়গাটাতে।কিন্তু জায়গাটা অসম্ভব রকমের সুন্দর।ঠান্ডা ভেজা ঘাস দেখতে পাচ্ছে সামায়রা। সেখানে পা রাখতে চাইছে ও।তাই দেরি না করে জুতা খুলে নেয় সামায়রা।তারপর সেখানে পা রাখতেই মন প্রান জুড়ে গেলো।সামায়রাকে দেখছিলো ফাহমিন।তারপর ওকে জুতা খুলতে দেখে বলল,
”কি হলো জুতো খুললে যে?”
”খালি পায়ে হেঁটে দেখুন ভীষন ভাল লাগবে।”
”আচ্ছা ঠিক আছে।”
ফাহমিন জুতা খুলে সামায়রার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে নদীর কাছে আসে।
ফাহমিন আজ প্রথম পায়ে এমন স্পর্শ পেলো।শীতল বাতাস ওদের শরীরকে ছুঁয়ে দিলো।ফাহমিন সামায়রাকে দেখে।কি অপরুপ লাগছে মেয়েটাকে বলার মতো না।সামায়রা বলল,
”আগে এসেছিলেন এখানে কখনো?”
”না তবে কাল সন্ধান পেলাম এ জায়গার।”
”ওহ।আর কখনো আসবেন?”
”হুম।আমার ছোট্ট সুন্দর বৌটাকে নিয়ে।”
সামায়রার কেমন যেন লাগে কথাটা।তারপর ও নিজেকে সামলে বলল,
”ছোট বয়সের মেয়ে বিয়ে করবেন?”
”হুম বিয়ের আগে জমিয়ে প্রেম করছি।বিয়ের পর আরো জমিয়ে প্রেম হবে।ছোট বয়সের মেয়ের সাথেই তো প্রেম করে মজা।”
সামায়রা কিছু বলতে পারেনা।কোথায় যেন একটু খারাপ লাগা কাজ করছে।তারপর ও বলল,
”তো আপনার ছোট্ট প্রেমিকাকে দেখালেননা যে?”
”দেখাবো সময় করে।”
”হুম।ও কি খুব সুন্দর?”
”অনেক সুন্দর।”
”ও কি অনেক বুদ্ধিমতি?”
”ভালোই বুদ্ধিমতি।”
”আপনাকে ভালোবাসে?”
”এখনো না। তবে বাসবে খুব জলদি।”
সামায়রা চুপ করে নদীর পানির দিকে তাকায়।ফাহমুন ভাবছে এই মেয়ের মাথায় ভালবাসা শব্দটা কি করে এলো।ফাহমিন বলল,
”ভালবাসা কি বুঝো?”
”হুম বুঝিতো। আমার মা বাবা আমাকে ভালবাসে,আমার নানা নানু ভালবাসে আমাকে।আমার রুহীপু আমাকে ভালবাসে।”
”আর আমি?”
”কি আপনি?”
”তোমাকে ভালবাসি না?”
সামায়রা চুপ হয়ে গেলো।কিছুই বলতে পারেনা।কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
রোয়েন রুহীর সাথে কথা বলতে পারছেনা।দূরে দূরে থাকে রুহী।রোয়েনের সাথে কথাই বলছেনা।রুহী বাবুকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকে।বাবুকে নিয়ে দুষ্টুমি করে। রোয়েনের সাথে কোন কথাই বলেনা।
চলবে
(গ্রামে এসেছি লিখতে সমস্যা হচ্ছে।নেট কানেকশান ও ভাল না।)