The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 112

→ ঘুমন্ত রুহীর কপালে চুমু দেয় রোয়েন। তারপর কাঁথা টা টেনে আরেকটু জড়িয়ে নেয় নিজেদের। আরো ঘনিষ্ঠ হয় রুহীর সাথে।ঘুমের ঘোরেই রুহী রোয়েনের দিকে ফিরে একদম ওর বুকের সাথে লেগে যায় রুহীর পিঠে হাত রেখে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রোয়েন।সকাল সাতটা।উঠা উচিৎ কিন্তু মাথায় দারুন যন্ত্রনার কারনে শরীর সায় দিচ্ছেনা।ফজরের নামাজের জন্য ও উঠতে পারেনি কেউই।নিয়মবশত বাবু কেঁদে উঠে হঠাৎ।এসময়ই ঘুম ভেঙ্গে যায় মেয়েটার।আর কাঁদতে শুরু করে।রুহীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। রোয়েনকে নিজ থেকে ছাড়াতে পারছেনা।মেয়েটাও অনবরত কাঁদছে।রাগ লাগছে ওর।লোকটাও কি?মেয়েটা কাঁদছে দেখে ও ছাড়ছেনা। ঢং করতে এসেছে এখন।অসভ্য কোথাকার!! নিজেকে জোর করে ছাড়িয়ে নেয় রুহী।তারপর উঠে বসে মেয়েকে কোলে তুলে নেয়।রোয়েন নিজে ও উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।রুহী মেয়েকে খাইয়ে দোলনায় শুইয়ে দিয়ে নিচে চলে আসে।পাকঘরে রামীলা রুটি বেলছে।রুহী বলল,
”ঘুম ভাঙ্গলো তোর?”
”কথা কইবেননা।”
”হঠাৎ কি হলো তোর?”
”আমি কামের মাইয়া।কি হইবো আমার?”
”এভাবে কথা বলছিস কেন?কখনো তোকে এভাবে কিছু বলেছিলাম?”
”কন নাই।কিন্তু বাবুরে মারছিলেন কিল্লিগা?”
”জানিসই তো মন মেজাজ দুটোই খারাপ ছিলো।একে ও আসছিলো না তারওপর দ্রিধা কাঁদছিলো।”
”ওরে মাইরেননা আফু।ছুডো মানুষ।দেইখেন ও বড় হইলে আমনের কষ্ট বুঝবো।”
”হুম।রুটি বেলা শেষ?”
”হ।কেডা খাইবো?”
”তোর ভাইয়া উঠে গেছে।নিচে চলে আসবে।”
”ওহ। ”
রুহী রুটি সেঁকতে শুরু করে। তার মাঝে রোয়েন নিচে আসে মেয়েকে কোলে নিয়ে।রামীলা আর রুহীর কথা শুনে প্রচন্ড রেগে গেলো ও।রুহী রুটি নিয়ে বেরিয়ে আসতেই রোয়েন তেড়ে এলো।রেগে বলল,
”ওকে মেরেছো কেন?”
রুহী কিছু বলছে না। অন্যদিকে চেয়ে আছে।রোয়েন আবার ও চিৎকার করে বলল,
”কিছু বলছো না কেন?”
রুহী এখনো চুপ। রোয়েন চিৎকার করে বলল,
”তোমার সাহস এতো কেন?আমার মেয়ের গায়ে হাত দিলে কেন?বয়স কতটুকু হয়েছে ওর?মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার?”
রুহী চুপচাপ কিচেনে চলে এলো।রোয়েন মেয়েকে রামীলার কাছে দিয়ে কিচেনে এলো রুহীর পিছু পিছু।কড়াইয়ের গরম তেলে ডিম ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো রুহী। রামীলা নিজের রুমে গেছে বাবুকে নিয়ে।পাকঘরে এসে রুহীর পিছে দাঁড়ায় রোয়েন।যেন এই সুযোগে ছিলো।রুহী বুঝতে পেরে ডিম ভাজায় মনোনিবেশ করলো।রোয়েন চাইছিলো রুহী যেন ওর চুল ধরার ব্যাপরটা নিয়ে কথা বলে।কিন্তু কিছু বলেনি ও।রোয়েন চাইছে মাফ চাইবে ও।তাই ও ধীরে বলল,
”রুহী শুনো।”
রুহী চুপচাপ কাজ করছে।কোন কথা বলছেনা।খুব খারাপ লাগছে আবার রাগ ও লাগছে।আবার ডাকে,
”রুহী কথা শুনো আমার।”
”কোন কথা শুনতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।দয়া করে একা ছাড়ো আমাকে।আর কখনো মারবোনা ওকে।ওর ওপর তো কোন হক নেই আমার।”
কন্ঠে অভিমানের সুর।রোয়েন না পেরে রুহীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ওর কাঁধে ঘাড়ে ঠোঁট বুলিয়ে বলল,
”আ’ম সরি।এমনটা করা উচিৎ হয়নি আমার। প্লিজ কথা বলো।”
রুহী জানে ও কিছু না বললে লোকটা বের হবেনা। তাই ও বলল,
”নাস্তার পর এই ব্যাপারে কথা হবে।”
”সত্যি তো?”
রুহীকে জড়িয়েই জিজ্ঞেস করে রোয়েন। রুহী মাথা ঝাঁকিয়ে ডিম পিরিচে তুলে নেয়। বেরিয়ে আসেনা রোয়েন। রুহীর পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বাকিটা সময়।বাবু রামীলার সাথে তাই চিন্তা নেই।দুজনে নাস্তা সেড়ে রুমে চলে আসে।রোয়েন রুহীকে খাটে বসিয়ে দেয়।রুহীর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
”আমি এমনটা করতে চাইনি।রাগের ওপর বশ আনতে পারিনা আমি।ব্যাথা পেয়েছিলে খুব?”
”ওনার থেকে বেশি না।”
রাগ লাগে রোয়েনের।রুহীর মাথার চুলে হাত বোলানো বন্ধ করে বলল,
”আর কখনো ওনার কথা বলোনা এ ঘরে।”
রুহী উঠে দাঁড়ায়।রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
”ওনি যাই করেছেন সেটার প্রায়শ্চিত্ত করছেন।”
”বাজে বকোনা।এ লোক কেমন সেটা আমার থেকে ভালো জানোনা।”
”ওনার কান্না দেখে আমার মনে হচ্ছিলো ক্ষমার যোগ্য সে।”
”তুমি কি চাও এ নিয়ে অশান্তি হোক আমাদের সংসারে?”
”চাইনা কিন্তু…….”
”কোন কিন্তু না।তাকে কেন তার নামটা ও সহ্য করতে পারিনা।বেটার হবে তার চ্যাপ্টার আজই ক্লোজ করে দেয়া।”
কিছু বলতে পারেনা রুহী।রোয়েন ততক্ষনে ওকে বিছানায় টেনে নিয়ে এসেছে।রুহীকে কিছু বলতে না দিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।একে অপরের নিশ্বাসে মিশে যেতে শুরু করে।সূর্য টাও লজ্জা পেয়ে একটু লুকিয়ে গেছে।এই প্রেমিক দম্পতি একে অপরের মাঝে বিলীন হয়ে যাচ্ছে যাক না অন্যায় তো কিছু নয়।।
এদিকে আশফিনা মেডিসিন নিতে থাকে।আর বুনতে থাকে হাজারো স্বপ্ন।ছোট্ট দুটো হাত ছোঁবার স্বপ্ন।দাঁতহীন মুখখানার হাসি দেখার স্বপ্ন আর মা ডাকটা শোনার স্বপ্ন।রামীন খুব খেয়াল রাখছে ওর।নির্দিষ্ট সময়ে ঔষধ দিচ্ছে,ঘুরতে বের হচ্ছে। খুব সময় দিচ্ছে ওকে।যা বেশ ভালো লাগে ওর।
ফোনের শব্দ পেয়ে ঘোর ভাঙ্গে সামায়রার।খাতা বন্ধ করে ফোন হাতে নিয়ে একটু হাসলো সামায়রা।
তারপর রিসিভ করে দরজা আটকে দেয় ও।
”ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকো?”
”মানে?”
ভ্রু কুঁচকে বলল সামায়রা।
”কল দিলেই ফোন রিসিভ করো সাথে সাথে?”
”তাহলে কি করবো না?কেঁটে দিবো?”
”তোমাকে বলেছি কাঁটতে?এত বেশি বুঝো কেন?”
”আমি কি বেশি বুঝলাম?সব তো আপনিই বলেন।”
”হুম।কি করছিলে?”
”পড়ছিলাম। আপনি কি করছেন?”
”চেম্বারে বসে আছি।”
”ওহ। খাওয়াদাওয়া হয়ে গেছে?”
”কফি আর বিস্কিট খেলাম।তুমি কি খেয়েছো?”
সামায়রা কেমন যেন চুপসে গেলো লজ্জায়।ফাহমিন কিছুটা আঁচ করতে পারলো।তারপর রসিল ভঙ্গিতে বলল,
”লজ্জা পাচ্ছো মনে হয়?”
”কই না তো?কই লজ্জা পেলাম?”
”বললে না যে কি খেলে?”
”দুধ আর ওরিও বিস্কিট।”
ফাহমিন শো শো করে হেসে দিলো।তারপর বলল,
”এটা তে এতো লজ্জা পাচ্ছিলে?বোকা মেয়ে।”
”আপনি খুব বেশি চালাক।”
”খুব বেশি না একটু।”
”তা কল করছিলেন কেন?”
”কাল দেখা করবে।”
”দেখি।”
”জিজ্ঞেস করিনি বলেছি।”
”হুম।”
”শুনো কাল আসবে।তবে শাড়ী পরে আসবে।”
”শাড়ী!!!কখনো পরিনি।”
”এখন পরবে।”
”পারিনা।”
”যেভাবে হয় পরবে।আমার জন্য পরতে হবে।”
”হুম।”
সামায়রা কে আর কিছু বলতে না দিয়ে ফাহমিন কল কেঁটে দেয়। সামায়রা আর কিছু বলতে পারেনা।
রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে রুহী আর রোয়েন।মেয়েকে পেটের ওপর শুইয়ে রেখেছে ও।বাবু রোয়েনের গেঞ্জীতে লালা লাগিয়ে ভরে ফেলছে।রোয়েন বলল,
”ছিঃ মা কি করছো এসব?লালা লাগায়না বাবার গেঞ্জীতে।”
রুহী হেসে দিয়ে বলল,
”বেশি করে লাগাও আম্মু।বাবা এসব পায়না।সারাদিন বাহিরে থাকে।”
বাবু একটু হেসে রোয়েনের পেটে মুখ ঢুকিয়ে রাখলো।রোয়েন মেয়েকে টেনে এনে ইচ্ছে মতো চুমু খেলো মেয়েকে।এসব দেখে রুহী হাসছে।রোয়েন এবার আারেক হাতে রুহীকে বুকে টেনে নেয়।রুহী আলতো হাতে রোয়েনের বুক স্পর্শ করে।রুহীর মুখটা কাছে টেনে ওর কপালে ঠোঁট বুলিয়ে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে রাখবে।এটাইতো ওর দুনিয়া।বুকের একপাশে রুহী আর একপাশে ওদেরই মেয়ে দ্রিধা।এদিকে সামায়রা মায়ের কাছে এলো খুব সকালে।মেয়েকে এতো সকালে উঠতে দেখে খুব অবাক হন ওনি।কখনোই এতো সকালে উঠতে দেখেননি মেয়েকে।সামায়রা ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি কঁচলাতে কঁচলাতে বলল,
”মা আমাকে একটু শাড়ী পরিয়ে দাওনা।”
”হঠাৎ শাড়ী কেন? ”
”কেন জানি ইচ্ছে হলো।মা প্লিজ পরিয়ে দাও না।”
”দেখ বিরক্ত করিস না। যা তুই।”
”মা প্লিজ।”
”নিজের চেষ্টা পরে নেয়।”
সামায়রা মায়ের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। ফাহমিনকে কল করতে যেয়ে ও পারেনা।কি করবে বুঝতে পারেনা।ভীষন চিন্তায় পড়ে যায় ও।
রুহী রোয়েনের শার্টের বোতাম লাগাচ্ছে। রোয়েন রুহীর কোমড়ে হাত রাখে।রুহী খেয়াল করলো বেশ ভালো মুডেই আছে ওর বরটা।রুহী গলা ঝেড়ে বলল,
”বাবার সাথে তোমার কথা বলা উচিৎ।”
”আচ্ছা বলবো।”
”কোন বাবা বুঝেছো তো?তোমার বাবা।”
”রুহী একদম ওনাকে নিয়ে কোন কথা বলোনা।না করেছি তোমাকে।”
”শুনো না। দেখো ওনি হয়ত পাল্টে গেছেন।”
”রুহী তোমাকে নিষেধ করেছি।”
”দেখো এমন করো না তোমার বাবা সে।”
”ছিলো।আমার মা যা বলেছে।সেটার পর তাকে বাবা বলতে আমার ঘৃনা হয়।”
”এভাবে বলো না।হয়ত সবটা তুমি জানো না।পুরোটা সত্যি নাও হতে পারে।”
এতক্ষন রোয়েন সহ্য করলে ও এখন আর পারলোনা।রুহীর চুল একহাতে শক্ত করে চেঁপে ধরে বলল,
”কি বলতে চাস তুই?আমার মিথ্যা কথা বলেছে? মা মিথ্যুক?”
”ওসব মিন করিনি আমি।প্লিজ ছাড়ো লাগছে আমার।”
”তোর কথা ও লেগেছে আমার।মাকে আমি খুব ভালবাসি।তোর সাহস হলো কি করে আমার মাকে নিয়ে এভাবে বলার?”
”সত্যি ওভাবে বলতে চাইনি।”
”সুখ সহ্য হয়না তোর।তাই বারবার ঐ লোকের নাম নিয়ে আমার সুখ নষ্ট করছিস।সরে যা।”
চিৎকার করে কথা গুলো বলে রুহীকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় রোয়েন।পেটে প্রচন্ড ব্যাথা পেয়েছে রুহী কিন্তু প্রকাশ করেনি সেটা।রোয়েন কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।রুহী সেভাবে শুয়ে থাকে।উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই।পেটের ওপর হাত ছুঁইয়ে দেখলো আঙ্গুল রক্তে ভেসে গেছে।চোখ বুজে নেয় ও।
(গ্রামে এসেছি আমি।প্রচন্ড ক্লান্ত তাই ছোট করে দিলাম।)
চলবে