The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 101

→রোয়েন দৌড়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে কেবিন থেকে।চিৎকার করে বলল
.
.
-”সবাই রেডি হও।”
.
.
রোয়েন কে এমন করতে দেখে সবাই অবাক।কিন্তু ওর চেহারা দেখে কেউ পাল্টা প্রশ্ন করার সময় ও পায়নি।সবাই নিজেদের অস্ত্র নিয়ে রেডি হয়ে যায় বের হবার জন্য।গাড়িতে সবাই জেনে যায় পিংক সিটিতে টাইম বোম ফিক্সড করা আর সেখানে বর্তমানে বাইশশত লোক আছে।এমনকি রুহী আর আশফিনা ও আছে।রামীন শুনে থমকে গেলো।রোয়েন এখন ও জানেনা কতোসময় বাকি?ওর ঘাড় মাথা ব্যাথা হচ্ছে বুক ভার লাগছে।চোখ জোড়া জ্বলে যাচ্ছে।গালে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুর উপস্থিতি বুঝতে পারছে।বাবুর কান্না রুহীর চেহারা চোখে ভাসছে।ওর কথা কানে বাজছে।রোয়েন পারছেনা গাড়িতে বসতে।পারছেনা যেন উড়ে গিয়ে সবাইকে বাঁচাবে ওর মায়াবতী কে ও।রামীনের অবস্থা খুব খারাপ।অস্থির লাগছে ওর।ভীষন খারাপ লাগছে।ভয় লাগছে।ওরা পারবে তো সবাইকে বাঁচাতে?আর ওর আশফিনা?দেরি হয়ে গেলে?রামীন চিৎকার করে বলল,
.
,
-”শামীম দ্রুত গাড়ি টান।”
-”স্যার চেষ্টা করছি।শক্তি পাচ্ছিনা।হাত পা ভেঙ্গে আসতেছে।”
.
.
পিংক সিটির বিশাল ভবন টার মাথা একটু দেখতে পাচ্ছে ওরা।ওটা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে।বারবার ফোনের লোকটার কথা কানে বাজছে রোয়েনের।সে যখন বলছিলো স্যার পিংক সিটিতে টাইম বোম ফিট করেছে চিটাংগের মাস্তান মিন্টু খন্দকার।তখন রোয়েনের মাথায় আসে রুহীর কথা।কানে তখন আর কোন কথা যেতে থাকেনা।পাগলের মতো বেরিয়ে আসে কেবিন থেকে।রোয়েন আর থাকতে পারেনা।পিংক সিটির টাওয়ারের পুরোটা স্পষ্ট হতেই রোয়েন দ্রুত দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।সবাই চিৎকার করে উঠে পিছন থেকে।রামীন ও নিচে নেমে রোয়েনের পিছু নিতে থাকে।রোয়েন দৌড়ে ভিতরে চলে যায়।রামীন ও ভিতরে চলে আসে।রোয়েন কে খুঁজে পায়না আর।রোয়েন রুহী কে চিৎকার করে ডাকতে থাকে।রুহী আর আশফিনা কথা বলতে বলতে হাঁটছিলো।ঐ লোকটাও ওদের সাথে। ওনাকে একটা দোকান দেখিয়ে দিলো ওরা।রুহী আর আশফিনা নিচের ফ্লোরে আসতে নিবে তখনই দেখতে পায় রোয়েন ওদের সামনে।রুহী রোয়েনকে দেখে অবাক হয়ে যায়।রোয়েনের চোখগুলো অসম্ভব রকমের লাল হয়ে আছে।হঠাৎ কথা বার্তা ছাড়াই রুহীকে বুকে টেনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রোয়েন।এদিকে বাকিরা চলে আসে।সবাইকে মার্কেট থেকে বের করছে।আশফিনা কে রামীন বের করে আনে।রোয়েন সরে এসেই রুহীকে কোলে নিয়ে নেয়।তারপর বের করে আনে।রুহীর কপালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”খুব বেশি কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করে দিও।”
-”কি বলছো এসব?”
.
.
রুহীর কথার জবাব না দিয়ে রোয়েন রামীনকে নিয়ে ভিতরে চলে যায়।রুহী এখন ও জানে না ভিতরে কি হচ্ছে?হঠাৎ কে যেন বলল ভিতরে টাইম বোম ফিট করা।দেরি হলে উড়ে যাবে এই শপিংমল। রুহী চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।রুহীর কান্না দেখে আশফিনা কাঁদতে ভুলে যায়।রুহী দৌড়ে ভিতরে চলে গেলে কয়েকজন টেনে বাহিরে নিয়ে আসে।রুহী কাঁদছে।নিজেকে ছাড়িয়ে রোয়েনের কাছে যেতে চাইছে।আশফিনা ওকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।রুহী এখন ও যেতে চায় রোয়েনের কাছে।এদিকে রোয়েন রা সব তলায় খুঁজতে থাকে বোমটা।কিন্তু পাচ্ছেনা।একদম ছাদে আসতেই একটা হালকা আওয়াজ শুনতে পায়।সবাই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।রোয়েন উপর থেকে নিচে মায়াবতীকে দেখতে পায়।মেয়েটা কেঁদে কেঁদে অস্থির।হঠাৎ রোয়েন শুনতে পেলো পাশের ফুলের টবের ভিতর থেকে শব্দ।শব্দটা একটু বেশিই হচ্ছে।রোয়েন রামীন কে ডেকে মাটি খুঁড়তে শুরু করে।রোয়েন বোম টা পেয়ে গেলো।আর মাত্র বিশ সেকেন্ড।রোয়েন অনেকবার টাইম বোম ডিফিউজ করেছিলো।তাই এবার ও সমস্যা হয়নি।বোমটা নষ্ট করে নিচে চলে আসে।এরই মাঝে রুহী কাঁদতে কাঁদতে অস্থির।হঠাৎ সবাই খেয়াল করলো রোয়েনরা বেরিয়ে আসছে।সবাই খুশিতে চিৎকার করলো।রুহীর চোখ ঝাপসা হয়ে আছে।এরই মাঝে রোয়েনকে দেখতে পায় সবাইকে সহ।
রুহী আশফিনার থেকে নিজেকে সরিয়ে দৌড়ে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।রোয়েন হেসে মায়াবতীকে বুকের মাঝে চেঁপে ধরে।আশফিনা রামীন কে জড়িয়ে ধরে।অন্যান্য সবাই ওদের ধন্যবাদ জানিয়ে শপিংমলে ঢুকে পড়ে।
রোয়েন রুহীকে নিয়ে ঘরে চলে আসে।রুহী সেন্সলেস হয়ে গেছে।রুহীকে কোলে নিয়ে রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দেয়।রোয়েন রুহীর পেটে মুখ নিয়ে এসে বলল,
.
.
-”বাবা খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম তোদের জন্য।আল্লাহর কাছে হাজার শোকর তোরা ভালো আছিস।”
.
.
ঐদিন সন্ধ্যায় রুহী শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে নিজের মানুষটাকে।কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলো ভাবতে ও পারবেনা।রুহীর হঠাৎ খেয়াল হয় আজ তো লোকটার জন্মদিন।এতো ঝামেলায় পুরো ভুলেই গিয়েছিলো ও।রুহী হঠাৎ বলল,
.
.
-”রোয়েন আমার বার্গার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।”
-”আগে তো খেতে চাওনি।”
-”আগে ইচ্ছে হয়নি এখন ইচ্ছে করছে।”
-”সত্যি?”
-”হুম।প্লিজ নিয়ে আসোনা।”
-”পাঠাও দিয়ে আনাই?”
-”না তুমিই গিয়ে আনবে।সব কিছু ঠিক মতো দিবে কিনা সেটা দেখবে।বাবুর জন্য কোনটা ভালো কোনটা খারাপ তুমি বুঝবে।”
-”ঠিকই বলেছো।আচ্ছা যাচ্ছি।সাবধানে থেকো।”
-”ওকে।”
.
.
রোয়েন গায়ে শার্ট চাপিয়ে বেরিয়ে যায়।রুহী ওদের বেডরুমটা সাজিয়ে তুলে গোলাপ ফুল দিয়ে।আর কেক টা বের করে আনে ফ্রিজ থেকে।এরপর নিজে কালো একটা শাড়ী পরে একটু সাজ নিলো।অবশ্য তেমন কিছু দেয়নি।চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে।চোখে মোটা আইলাইনার আর মেরুন কালার লিপস্টিক।এদিকে রোয়েন ঘরে এসে দেখলো ওদের রুমের লাইট অফ।দরজা হালকা চাঁপানো।রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় ও।রুহী কি করছে কে জানে।কিন্তু রুম থেকে গোলাপ ফুলের মিষ্টি ঘ্রান ওর পুরো শরীর জুড়ে তীব্র মাদকতা ভরিয়ে দিতে থাকে।আর অপেক্ষা না করে রুমে ঢুকতেই রুহী জড়িয়ে ধরে।তারপর মিষ্টি গলায় বলল,
.
.
-”শুভ জন্মদিন আমার ভালবাসা।”
.
.
রোয়েন হেসে দেয়।সন্তুষ্টির শ্বাস নিয়ে বলল,
-”তুমি জানতে?”
-”হুম।”
-”থ্যাংক ইউ মাই লাভ।”
-”ওয়েলকাম।আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গিফট তুমি।”
-”ভালবাসি।”
-”অনেক ভালবাসি।”
-”চলো আমার সাথে।”
-”কোথায়?”
-”রুমেই থাকবো আমরা।”
.
.
রোয়েন কে এনে কেকের সামনে দাঁড় করায় রুহী।হাতে ছুড়ি ধরিয়ে দিলো।রুহীর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে দুজন মিলে কেক কেঁটে একে অপরকে খাইয়ে দেয়।দুজনে এসে খাটের ওপর পাশাপাশি বসে।রুহী রোয়েনকে শক্ত করে জড়িয়ে
বলল,
.
.
-”এখনো বুক কাঁপছে আমার।”
-”আমি ঠিক আছি রুহী।তোমার জন্য ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”
-”তোমাকে কখনো হারাতে পারবোনা।”
-”রুহী জানোনা আমার কেমন লাগছিলো পুরোটা সময় যতক্ষন তোমাকে দেখতে পারছিলাম না।”
-”আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো প্লিজ।”
.
.
রোয়েন ওকে শক্ত করে জড়িয়ে রাখে।সেদিন দুজনে একসাথে বার্গারটা খায়।রামীন আর আশফিনা সবার সামনে কিছু বলতে পারছিলোনা।রামীনের মন চাইছে বৌটাকে বুকে টেনে নিতে।কতোটা ভয় লাগছিলো বলার মতোনা।শেষ পর্যন্ত ওরা রুমে এসে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে।আশফিনা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।রামীন বলল,
.
.
-”কাঁদেনা আশু আমি ঠিক আছি।”
-”ভিতরে চলে গেলেন কিছু বলেননাই।আমার মনে হচ্ছিলো পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে।নিজের মাঝেই ছিলাম না।”
-”তোমাকে হারানোর ভয় পুরোটা সময় ছিলো।”
-”প্রমিজ করেন কখনো ছেড়ে যাবেননা।”
-”কখনো না।”
-”রামীন!”
-”বলো।”
-”রোয়েন ভাইয়ের জন্মদিন আজ জানেননা?”
-”উইশ করেছিলাম অফিসে। ”
-‘ওনাকে কিছু দেয়া উচিৎ।”
-”হুম সেটা অবশ্যই দিবো তার আগে আমি তোমাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাই এই মুহূর্তে।কোন আপত্তি?”
-”হুম অবশ্যই।আমি ঘুমোবো।”
-”অনেক হবে ঘুম এখন আমাকে সময় দাও।”
.
.
কথাটা বলে আশফিনাকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে ওর গলায় নাক ঘষতে শুরু করে।দুজনে আবার ও একহতে থাকে।এদিকে পরদিন সকালেই রোয়েন নিজের লোকদের পাঠিয়ে দেয় মিন্টু খন্দকার কে ওদের এলাকায় নিয়ে আসতে।প্রায় দুদিন খোঁজাখুঁজি করে মিন্টু খন্দকারের আস্তানা পেয়ে যায় ওরা।তাই ঐ মাস্তান আর ওর লোকদের বেঁধে রোয়েনের এলাকায় নিয়ে আসে।রোয়েন লোকগুলোকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে বন্দুক তাঁক করে ওদের দিকে। তারপর আর কিছু শোনা যায়নি।কারন রোয়েনের বুলেটের শব্দ এতোটাই তীক্ষ্ণ ছিলো যে কেউ আর কিছু শুনতে পায়নি।অনবরত বন্দুক চালিয়ে একেকজনের বুক ঝাঁঝরা করে ফেলে রোয়েন।সবাই মরে গেলে তারপর ও থামে।লাশ গুলো কোব্রা কিং দেয়ার জন্য বলে অফিসে ঢুকে যায়। ফাহমিন সামায়রার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে থাকে।কিন্তু পারছেনা।মেয়েটা ওর কল ধরছেনা।চিন্তা হয় ফাহমিনের।পাঁচ দিন চলে যায়।এরমাঝে একবার ও কলেজে আসেনি মেয়েটা।ফাহমিন আর নিতে পারেনা।তাই অগত্যা রোয়েনের ঘরে হাজির হয়।রোয়েন ফাহমিন কে বসায়।দু বন্ধু অনেকটা সময় গল্প করতে থাকে।ফাহমিন জানতে চাইছে নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ কেমন আছে।ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সামায়রার কথা জানতে চাইছে।সেটা রোয়েন বুঝে নিয়ে বলল,
.
.
-”এতো না পেঁচিয়ে সরাসরি সামায়রার কথা জিজ্ঞাস কর।”
-”তুই বুঝেই নিলি।দেখ ওকে আমি ভালবাসি।আর ওকে ছাড়া থাকতে পারবোনা।সেদিন ওকে নিয়ে বাহিরে খেতে যাই। সেখানে আমার ক্লাশ মেট এসে জড়িয়ে ধরে।আর তাতেই ও রাগ করে চলে যায়।কল ধরছেনা কলেজে ও যাচ্ছেনা।আর পারছিনা আমি নিতে।”
-”নিজের বয়সের দিকে তাকা।আর ও আমার শালী।মামা মামী নিশ্চয় চাইবেননা আধবুড়ো কারোর কাছে মেয়ে দিতে।”
-”দেখ বয়স টা মেটার না।এমন অনেক বিয়ে আছে।সেখানে আরো অনেক এজ ডিফারেন্স। আর আমি ওকে অনেক ভালবাসি।তুই বল আমি খারাপ?আমার চরিত্রে সমস্যা আছে?আমি বেকার?টাকা পয়সার অভাব আছে?কোন বদঅভ্যাস আছে?নেই।তাহলে আমাকে বিয়ে করতে কোন সমস্যা আছে বলে মনে হয়না।”
.
.
রামীনের কথা শুনে অনেকটা সময় চুপ থাকে রোয়েন।এরই মাঝে রুহী রামীলা সহ নাস্তা নিয়ে আসে।ফাহমিন সালাম দেয় রুহী।রুহী জবাব দিয়ে রোয়েনের পাশে বসে।রুহী আর ফাহমিন কথা বলতে থাকে।
ফাহমিন চলে যেতে চাইলে রুহী জোর করে ডিনার করিয়ে দেয়।ফাহমিন বেরিয়ে যাওয়ার সময় রোয়েন ওর কাছে এসে বলল,
.
.
-”ব্যাপারটা আমি দেখছি।”
.
.
ফাহমিন একটু হেসে বেরিয়ে যায়।রোয়েন দরজা আটকে রুমে চলে যায় রুহীকে নিয়ে।
চলবে