The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 06
→কাঁদতে কাঁদতে একসময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে রুহী।সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।নিজের রুমে যাওয়ার সময় রুহীর কথা মনে পড়ে ওর।রুহীর রুমের দরজা লোকর লক খুলে দেখে ফ্লোরে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে রুহী।বুক ধক করে উঠে রোয়েন। রুহীর মাথার কাছে এসে বসে ওর মাথায় হাত রাখে রোয়েন।তারপর রুহীকে কোলে নিয়ে বিছানায় শোয়ায়।খাটের পাশের টেবিলের জগ থেকে পানি নিয়ে রুহীর মুখে একটু ছিটিয়ে দিলো রোয়েন।রুহী খুব কষ্টে চোখ খুলে রোয়েন কে দেখতে পেয়ে একটু সরে গিয়ে উঠে বসে।রোয়েন কাজের লোকদের খাওয়া পাঠাতে বলে রুহীর হাত জোরে টেনে ধরে।রুহী রোয়েনের হাত ছাড়াতে চাইছে নিজের হাত থেকে।
.
.
-হাত ছাড়েন আমার। চিৎকার করে বলল রুহী।
-একদম চুপ।একটা কথা বলে থাপড় দিয়ে গাল লাল করে ফেলবো।
.
.
রুহী চুপ হয়ে যায়। রোয়েন ওর হাত টেনে নিজের কাছে এনে বসায়।রুহীর মুখের সামনে খাবার ধরতেই রুহী মাথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেয়।রোয়েন রেগে রুহীকে জোর করে কোলে বসিয়ে ওর গাল চেঁপে ধরে খাওয়াতে শুরু করে।রুহীর ভিতর থেকে কান্নার ফোঁসফোঁস শব্দ আসছে।খাওয়ানো শেষ করেই রুহীর গালে ঠোঁটের কোনায় চুমু খেয়ে ওকে বিছানায় শুইয়ে দেয় রোয়েন।তারপর রুহীর ওপর কিছুটা উঁবু হয়ে ওর কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহী কাঁথা দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নেয়।লোকটাকে না করতে পারলো না কেন ও?এভাবে চুমু খাচ্ছিলো সে।রুহীর ভালো লাগছেনা।পরদিন একটা মেয়ে দিয়ে যায় রফিক।রোয়েন কি যেন বলছিলো মেয়েটাকে রুহী শুনতে পারেনি।মেয়েটা রুহীর কাছে এসে দাঁড়ায়।তারপর বলল,
.
.
-আসসালামু আলাইকুম আপু।আমি চন্দ্রিমা।
-ওহ।
-আজ থেকে আপনার খেয়াল আমি রাখবো।
-ওহ।
-কিছু খাবেন?
-মাথা নাড়ায় রুহী।নাহ।
.
.
চন্দ্রিমা রুটি আর ভাজি নিয়ে এলো রুহীর জন্য।রোয়েন বাহিরে যাচ্ছিলো ঠিক সেই সময়ে রুহীর রুম থেকে কাঁচ ভাঙ্গার শব্দ পায়।রোয়েন চটজলদি রুমে গিয়ে দেখে রুহী নাস্তার প্লেট ফেলে দিয়েছে।চন্দ্রিমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
.
.
-চন্দ্রিমা তুমি যাও এখান থেকে।রেগে বলল রোয়েন।
-জি স্যার।
.
.
চন্দ্রিমা বেরিয়ে গেলো।রোয়েন এবার রুহীকে উদ্দেশ্য করে বলল,
.
.
-কাঁচ সরিয়ে খেয়ে নাও এগুলো।
-নাহ।
-রুহী এবার কিছু করে ফেলবো আমি।জলদি এগুলো খেয়ে নাও।এগুলো তুমি ফেলেছো এগুলোই খাবে তুমি।
.
.
ভবিষ্যৎ ধমক কে এড়াতে রুহী নিচে বসে কাঁচ সরিয়ে রুটি খেয়ে নেয়।খাওয়া শেষ হতেই রোয়েন দরজা লক করে বেরিয়ে যায়।রুহী কাঁদতে শুরু করে।কি হচ্ছে ওর সাথে এসব?কেন এ লোকটার ঘরে বন্দী আছে ও।সামির ওকে না পেয়ে কতোটা মন খারাপ করে আছে কে জানে।কাঁদতে কাঁদতে খাটে শুয়ে পড়ে রুহী।গুঁমরে কাঁদতে শুরু করে ও।এদিকে রেজোয়ান মাহবুবের খুব খারাপ লাগছে মেয়েটা এভাবে বন্দী অবস্থায় আছে রোয়েনের বাসায়।রেজোয়ান মাহবুব দেখতে যান মেয়েকে। রুহীর রুমের কাছে আসতেই রুহী চিৎকার করে উঠে।
.
.
-আসবেননা আপনি এ রুমে।
-রুহী কথা শুন আমার।
-কোন কথা শুনবো না। কেন শুনবো আপনার কথা বেরিয়ে যান।
-রুহী?
-রুহী রুহী করবেননা।জীবনে ও এই রুহীর জন্য আদর দেখিয়েছেন?মা মারা যাওয়ার পর বাবারা মায়ের অভাব পূরন করতে চেষ্টা করে।আপনি তো আমাকে ভুলেই গেছেন।আপনার মেয়ে আছে নাকি নেই সেটাতো মাথাতেই নেই আপনার।আমি ভালো থাকি সেটাও সহ্য হয়না আপনার।বেরিয়ে যান বলছি।আমার কাছে আসবেননা।
.
.
এর আরো কিছুদিন পর শামীম রোয়েনের বাসায় আসে রুহীকে দেখতে।মেয়েটার চোখের নিচে কালি পড়ে আছে।রুহীর সামনে এসে বসে শামীম।
.
.
-রুহী কেমন আছো?
-বন্দী অবস্থায় একজন কেমন থাকতে পারে?
-রুহী দেখো স্যার যা করছেন তোমার ভালোর জন্য।
-গুন্ডারা কারোর ভালো করতে পারে?
-রুহী তেমন কিছু না।আমরা তোমাকে সামিরের হাত থেকে রক্ষা করতে চাইছি।সামির ভালো না রুহী।
-ও অনেক ভালো।আপনারা ভালো না।আপনারা আমাদের আলাদা করে দিয়েছেন।
.
.
শামীম রুহীকে অনেক বুঝাতে চেষ্টা করে কিন্তু রুহী বুঝতে চায়না।শামীম রেজোয়ান আর রোয়েনকে নিয়ে একদিন বসলো।রোায়েন ওদের মাঝে বসে জানতে চায় কি বলবে ওরা?শামীম বলতে শুরু করে,
.
.
-স্যার রুহী কে ভার্সিটিতে যেতে দিন।এভাবে আটকে রাখলে বেচারীর মাথা আরো বিগড়ে যাবে।
-তুমি কি পাগল শামীম?কিভাবে ছাড়তে বলো তুমি ওকে।রেগে যায় রোয়েন।
-স্যার দুজন সিকিউরিটি গার্ড ওর সাথে থাকবে।কলেজের টিচারদের কে ও আমরা ওর খেয়াল রাখতে বলবো।
.
.
শামীমের কথায় কিছুক্ষন চুপ হয়ে থাকে রোয়েন তারপর বলল,
.
.
-গুড আইডিয়া।আমি একটু ভাবতে চাই আরো।
-ওকে স্যার।কিন্তু জলদি ডিসিশন নেন।
-হুম।
.
.
রোয়েন বেরিয়ে যায় সেখান থেকে।দুদিন পর রোয়োন জানায় ঠিক আছে রুহী কলেজে যাবে তবে ওর দুজন বিশ্বস্ত গার্ডকে রুহীর সাথে দেয়া হবে।কলেজ শিক্ষক দেরকে ও ওর ওপর নজর রাখতে বলা হবে।রোয়েনের কথা মতো রুহীকে কলেজে পাঠানো হয় দুজন মোটা লম্বা গার্ড দ্বারা।ওদের সাথেই কলেজে যায় রুহী আর ওদের সাথে ফিরে আসে।রুহী মন খারাপ করে ফিরে আসতো।
আর ঘরে আসলে চুপ করে ঘরের এককোনায় বসে থাকতো।মায়াবতীকে এভাবে ভালো লাগছিলো না রোয়েনের।মেয়েটাকে বড্ড ভালবাসে ও।মায়াবতীকে ভাল দেখতে চায় ও খুশি দেখতে চায়।মায়াবতীকে অনেকবেশি ভালোবাসতে চায় কিন্তু মেয়েটা ওকে দেখতে পারেনা।ও রুমে আসলে মেয়েটা কেমন জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকে।রোয়েন আর সহ্য করতে পারেনা।রুহীর সামনে দুটো ব্যাগ রেখে বলল,
.
.
-দশ মিনিটের মাঝে রেডি দেখতে চাই।
-কখনো না।কোথা ও যাবো না আমি।তাও আবার আপনার সাথে।
-আমার সাথেই যাবে তুমি।দাঁতে দা্ত চাপে রোয়েন।
-একদম না।
-রুহী ফর শিউর এবার খুব বেশি পস্তাবে তুমি।চিৎকার করে বলল রোয়েন।
.
.
রুহী ব্যাগ গুলো নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।রোয়েন বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।কিছুক্ষন পর রুহী বেরিয়ে এলো কালো বর্নের একটা গাউন পরে।লম্বা চুল গুলো কে একটু কার্ল করে পিঠের মেলে রেখেছে ও।চোখের নিচে মোটা কাজল আর ঠোঁটে হালকা বর্নের লিপস্টিক।রুম থেকে বেরিয়ে আসে রুহী।রোয়েন ড্রয়িং রুমে বসে ফোন চালাচ্ছে। পাশ ফিরতেই রুহীকে দেখে দাঁড়িয়ে যায় রোয়েন।এতোটা মায়াময়ী লাগবে মেয়েটাকে ভাবতে পারেনি রোয়েন।রোয়েন দাঁড়িয়ে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ায় তারপর ওর কপালের একপাশে চুমু খায়। রুহী চোখজোড়া খিঁচে বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কিছুসময় পর সরে আসে রোয়েন।তারপর রুহীর হাত শক্ত করে ধরে বেরিয়ে যায়।
,
,
,
,
,
রোয়েন রুহীকে নিয়ে এসেছে শপিংমলে।রুহীর হাত চেঁপে ধরে আছে রোয়েন।রুহী বারবার হাত ছাড়াতে চাইছে কিন্তু রোয়েন আরো বেশি শক্ত করে ধরছে।অগত্যা চুপ করে রোয়েনের সাথে হাঁটতে থাকে রুহী।রোয়েন জোর করে কিছু জামা আর পুতুল কিনে দিয়েছে রুহীকে।পুতুল গুলো বেশ পছন্দ হলে ও চুপ করে ছিলো রুহী।শপিং শেষে রেস্টুরেন্টে চলে আসে রোয়েন রুহীকে নিয়ে।রুহীর পছন্দের খাবার অর্ডার করেছে রোয়েন।রুহী অল্প খেয়ে উঠে যেতেই রোয়েন রুহীকে জোর করে টেনে বসিয়ে রক্তচক্ষু দিয়ে তাকায় তারপর চামচে কিছু খাবার তুলে রুহীকে খাইয়ে দেয়।বাড়ি ফিরে আসে ওরা।ঘরে আসতেই রোয়েন রুহীকে দেয়ালে চেঁপে ধরে ওর থুতনিতে চুমু খেয়ে ওর গলায় নেমে আসে।তারপর গলায় হালকা ঠোঁট বুলিয়ে রুমে চলে যায় রোয়েন।প্রায়ই রুহীর জন্য চকলেট বড় টেডিবিয়ার নিয়ে আসতো রোয়েন।কিন্তু সেদিকে মন ছিলোনা রুহীর।এমনকি সবাই একসাথে ঘুরতে বের হলে সবার চোখকে আড়াল করে ওর গলায় থুতনিতে চুমু খেতো রোয়েন।
এদিকে কলেজে আসা যাওয়ার মাঝেই আরো দশদিন চলে যায়।
রোয়েন খেয়াল করে রুহী আজকাল বেশ হাসিমুখে ঘরে ফিরে আসে কলেজ থেকে।ব্যাপারটা বেশ আনন্দদায়ক রোয়েনের কাছে।তবে ব্যাপারটা আশংকা জনক ছিলো যা রোয়েনের ভাবনার বাহিরে ছিলো।ক্লাশ শেষে রুহী টিচার্স রুমে এলো।সেখানে হালকা দাঁড়ি ওয়ালা একলোক ওর দিকে হাসছে।রোয়েন খেয়াল করে রুহী আজকাল বেশ হাসিমুখে ঘরে ফিরে আসে কলেজ থেকে।ব্যাপারটা বেশ আনন্দদায়ক রোয়েনের কাছে।তবে ব্যাপারটা আশংকা জনক ছিলো যা রোয়েনের ভাবনার বাহিরে ছিলো।ক্লাশ শেষে রুহী টিচার্স রুমে এলো।সেখানে হালকা দাঁড়ি ওয়ালা একলোক ওর দিকে হাসছে।রুহী যেতেই লোকটা রুহীর হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।তারপর বলল,
.
.
-আর দূরে থাকতে পারছিনা বলেই তোমার শিক্ষক সাজতে হলো।
-জানি।আমরা কি বিয়ে করবোনা সামির।
-করবো অবশ্যই করবো।তার আগে একটা সুযোগ বের করতে হবে।তোমাকে গার্ডরা পাহাড়া দিয়ে রাখে।তোমার কাছে আসতে পারিনা।
-কিছু করো সামির।
-চিন্তা করো না আমরা তো পালাবোই।ঘরে গিয়ে বই চেক করবে।
-ওকে।
সামির বই নেড়ে চেড়ে কিছু বুঝিয়ে বইয়ের ভিতর কি যেন ঢুকিয়ে দেয়।রুহী ঘরে ফিরে বইটাকে বের করে দেখে ভিতরে একটা ফোন।তখন থেকে শুরু হয় রুহী আর সামিরের ফোনালাপ।রোয়েন থেকে লুকিয়ে সামিরের সাথে ফোনে কথা বলতো রুহী।রোয়েন ঘরে না থাকলে কথা বলতে শুরু করতো ওরা।ভিডিও কলে ও কথা হচ্ছিলো।
চলবে