The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 03

বেরিয়ে রুহী স্নিগ্ধ খুব সুন্দর একটা পারফিউমের স্মেল পায়।কিন্তু কাউকে পায়না ও।তবে রুহী এতোটুকু নিশ্চিত যে কেউ তো ছিলো এখানে।যে ওকে লুকিয়ে দেখছিলো।বেশ ভয় পায় রুহী।নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে বসে থাকে।দিন গুলো কেঁটে যেতে থাকে রুহীর একাএকি অন্ধকার বাসায়।যতক্ষন রেজোয়ান মাহবুব না থাকতেন ততক্ষন রুহী একাই থাকতো।ওর রুম ছাড়া বাকি রুম গুলোর আলো নিভানো থাকতো।সেদিন শামীমকে রুহী বলছিলো,
.
.
-ভাইয়া আমি পড়াশুনা কমপ্লিট করতে চাই।এই একাকী অন্ধকার ঘরে ভয় লাগে আমার।ভালো ও লাগেনা।বাবাকে বলুন না প্লিজ।
-কিসে ভর্তি হবে এবার?
-অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি।
.
.
শামীম কাজের জায়গায় চলে আসে।রেজোয়ান মাহবুব কাজে ব্যাস্ত আছেন।শামীম ওনার পাশে এসে বসলো।তারপর কিছুক্ষন ভেবে বলল,
.
.
-স্যার রুহী পড়াশুনা কমপ্লিট করতে চায়।
-এসব বাদ দাও তো।ওখান থেকে ট্রান্সফার করতে হবে।আবার এখানে ভর্তি করাতে হবে।এমনিতেই কাজের চাঁপ।এসব উটকো ঝামেলা নিতে পারবোনা আমি।
-স্যার আমিই সব ব্যাবস্থা করবো।বেচারী একা একা ঘরে ভয় পায়।
-আচ্ছা ঠিক আছে যা করার করো।
-থ্যাংক ইউ স্যার।
.
.
শামীম চলে আসে রোয়েনের কাছে।রোয়েন এর পাশে বসে আছে ওর সবসময়কার বন্ধু রামীন।শামীম রামীনের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলল,
.
.
-স্যার একটা পারমিশন লাগতো।
-কি?
-স্যার আমার এ সপ্তাহের ছুটি লাগবে।
-কিসের জন্য?ভ্রু কুঁচকায় রোয়েন।
-স্যার আসলে রুহী দুবাইতে স্টাডি করছিলো।অনার্স ফাস্ট ইয়ার ফাইনাল দিয়ে এসেছে এখানে।এখন ও পড়াশুনা কমপ্লিট করবে এখান থেকে।
-ওকে।ওর হয় ট্রান্সফার ও করতে হবে এখানে।সব ব্যাবস্থা আমি করছি।তুমি ওকে ভর্তি করাও।
-ওকে স্যার।
.
.
শামীম বেরিয়ে গেলো।রামীন হঠাৎ হেসে দিতেই রোয়েন ওর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়।
.
.
-হোয়াট?
-না কিছুনা।খুব ভালো কাজ করছিস তুই।
-হুহ।কাজে মন দেয় রোয়েন।
.
.
কিছুদিনের মাঝেই রুহীর ভর্তির সব ব্যাবস্থা হয়ে যায়।রাজধানীর খুব নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে রুহী।নভোবস্তুবিদ্যা অথবা এ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে পড়াশুনা করবে ও।রুহী বেশ খুশি হয়ে যায়। দৈনিক কলেজে যাওয়া আসা শুরু করে।এমন কি শামীম ওকে বেশ কিছু জামা এনে দিয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে রোয়েনেরই কিনে দেয়া।রুহী জানে শামীম গিফ্ট করছে এগুলো।এরই মাঝে রুহী বাসার সার্ভেন্ট গুলোকে জানায় রান্নার সব কিছু রেডি রাখতে প নিজে রান্না করবে।সার্ভেন্টরা প্রথমে না করলে ও রুহীর জোরাজুরিতে ওরা রাজি হয়ে যায়।রুহী লাঞ্চ রেডি করতে শুরু করে কারন বাবা এসে পড়বে।রান্না বান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে নেয় রুহী।আজ রেজোয়ান মাহবুব একা আসেননি শামীমকে ও নিয়ে এসেছেন।রেজোয়ান মাহবুব আর শামীম খেতে বসে।খাওয়ার মাঝে রেজোয়ান মাহবুব সার্ভেন্টদের কেন্দ্র করে বললেন,
.
.
-তোমরা এতো ভালো রান্না শিখলে কি করে?
-স্যার আমরা না রুহী ম্যাম রান্না করছে।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব চুপচাপ খেয়ে উঠে চলে গেলেন।রুহীর মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়।বাবা তো কিছু বললো ও না।রুহীর মন খারাপ দেখে শামীম বলল,
.
.
-খুব ভালো হয়েছে রুহী চমৎকার।
-থ্যাংকস ভাইয়া।
-ওয়েলকাম।শামীম একটা বক্স রুহীর দিকে ধরে। নাও এটা।
-এটা কি ভাইয়া?
-তোমার গিফট।এতো মজার রান্না খাওয়ালে।সেটার গিফ্ট।
.
.
রুহী বক্স খুলে দেখে খুব দামী একটা এ্যান্ড্রোয়েড সেট।রুহী শামীমের দিকে তাকায়।তারপর বলল,
.
.
-সরি এতো দামী গিফ্ট নিতে পারছিনা আমি।
-একদিকে ভাই বলছো।এখন গিফ্ট না নিয়ে পর করছো।সেটা কি ঠিক রুহী?
-না।মাথা নাড়িয়ে বলল রুহী।
.
.
শামীম রুহীর হাতে ফোনটা দিয়ে রেজোয়ান মাহবুবের সাথে কাজে বেরিয়ে পড়ে।ফোনটা রোয়েনের কিনে দেয়া।এখানে জিপিএস লোকেশন ট্র্যাকার এ্যাপটি সেট করা আছে।তার মানে রুহী কই যাবে তার সব কিছু রোয়েন জানতে পারবে।
এর মাঝে রুহী দুপুরের রান্না করে রেজোয়ান মাহবুবের কাজের জায়গায় পাঠায় শামীমকে দিয়ে।শামীম প্লেটে খাবার বেড়ে সবাই কে দিয়ে এলো।রোয়েনের প্লেটটা ওর রুমে আনতেই রোয়েন জিজ্ঞেস করে,
.
.
-এগুলো কে পাঠালো?
-রেজোয়ান স্যারের বাসা থেকে এসেছে।
-ওহ।রোয়েন একটু খেয়ে বলল ওর সার্ভেন্টরা এতো ভালো রান্না করতে পারে জানলে আমার বাসায় নিয়ে যেতাম।আমার সার্ভেন্টদের রান্না খেয়ে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি।
-স্যার এগুলো স্যারের মেয়ে রান্না করেছে।
.
.
শামীমের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে তারপর খাওয়ায় মন দেয় রোয়েন।শামীম বেরিয়ে যেতেই রামীন বলল,
.
.
-আজ রান্নাটা চমৎকার হয়েছে আসলেই।রোয়েনের দিকে হেসে বলল রামীন।
রোয়েন মুচকি হেসে খেতে শুরু করে।
,
,
,
,
রামীন খেয়াল করে রোয়েন ল্যাপটপে প্রায়ই রুহীকে দেখে।ও রুমে কি করছে কোথায় যাচ্ছে।কারন ওদের এই এলাকার প্রত্যেকটা জায়গায় সিসিক্যামেরা।তবে রেজোয়ান মাহবুবের বাড়ির সামনের ক্যামেরা গুলো দিয়ে খালি রুহীর ওপর নজর রাখে রোয়েন।সেদিন রোয়েন খেয়াল করে ওর লোকেরা দুপুর থেকে কোন না কোন বাহানা দিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছে।রোয়েন বেশ অবাক হচ্ছে লোকগুলোর এমন আচরন দেখে।সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে সবাই বলছে রুহীকে দেখতে যাবে।কারন এতদিন শুধু ছবিতেই রুহীকে দেখেছে।এবার সরাসরি দেখতে চায়।রামীন এসে রোয়েন কে বলল,
.
.
-রেজোয়ান মাহবুবের বাসায় যাচ্ছে সবাই।
-হুম।
-তাহলে আমরা বসে থাকবো কেন?চল আমরা ও যাই।দুষ্টু হাসে রামীন।
-হ্যা ঠিক আছে চল।হেসে বলল রোয়েন।
.
.
রোয়েন নিজের কোবড়া খচিত কালো কোট গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে আসে।সবাই রোয়েন কে দেখে কিছুটা অবাক হয়।রামীন জানায় রোয়েন ও যাবে রেজোয়ান মাহবুবের বাসায়।সবাই একদম অবাক।কারন যে লোক কখনো সহজে কোথা ও যায়না।সে এখন রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে যাবে এতো সহজে।রুহী পড়ছিলো।বাসার বেল বাজতেই ও দৌড়ে দরজা খুলে দিয়ে দেখে ওর বাবার অফিসের সব লোক।বেশ অবাক হয়ে যায় রুহী।শামীম ভিতরে এসে বলল,
.
.
-রুহী তোমাকে দেখতে এসেছে ওরা।
-ওহ।হাসি ফুঁটে উঠে রুহীর মুখে।ভিতরে আসুন না আপনারা।
.
.
সবাই সোফায় এসে বসে।রুহী পাকঘরে চলে যায় নাস্তা বানাতে।পায়েস রান্না করে সিঙ্গারা, টিকা, সমুচা ভাজতে শুরু করে রুহী।ভিতর থেকে লোকগুলোর কথা ভেসে আসছে।তবে একটা কন্ঠ রুহী শুনতে পেলো।এতচমৎকার কারো কন্ঠ হতে পারে জানা ছিলোনা রুহীর।একটু হাসলো রুহী।তারপর চা বসিয়ে নাস্তার ট্রে নিয়ে ড্রয়িংরুমে আসতেই রুহীর নাকে সেই পরিচিত পারফিউমের ঘ্রান এসে লাগে।রুহী চারপাশে তাকিয়ে দেখলো কোথা থেকে আসছে।রুহীকে এভাবে তাকাতে দেখে শামীম বলল,
.
.
-কি খুঁজছো রুহী?
-না ভাইয়া কিছুনা।
.
.
খাবার টেবিলে রাখার সময় রুহীর চোখ পড়ে সবার মাঝে বসা রোয়েনের দিকে।চোখে সানগ্লাস পরা রোয়েন।রুহী ভ্রুকুঁচকিয়ে ভাবছে এসময় কেউ সানগ্লাস পরে?তবে রুহীর মনে হলো লোকটা ওকেই দেখছে।রুহী সেদিকে তোয়াক্কা না করে রেজোয়ানের পাশে বসে।সবার সাথে কথা বলতে থাকে ও।তবে রোয়েন কিছু বলছেনা।রুহী সাথে সবার খুব সহজে মিশে গেছে।কিন্তু রোয়েন তো নিজের খয়েরী বর্ন চোখজোড়া দিয়ে রুহীকে বুঝে নিচ্ছে। জেনে নিচ্ছে অনেক কিছু।ামীন রোয়েনের পাশে বসে আছে।রোয়েন কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রামীন রোয়েনের কানে ফিসফিসিয়ে বলল,
.
.
-আর কতো দেখবি।একটু তো খেয়ে নে।পরে নাহলে মন ভরে দেখ।
.
.
রামীনের কথায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে রোয়েন স্বজোরে কেঁশে উঠলো।রোজোয়ান মাহবুব তৎখনাৎ পানি ঢেলে রোয়েনের দিকে এগিয়ে বলল,
.
.
-স্যার পানি!!
-থ্যাংকস।
.
.
রোয়েন গ্লাস হাতে নিয়ে পানি টুকু খেয়ে নেয়।তারপর আবার ও রুহীকে দেখতে থাকে।
চলবে