The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 02
স্যার আমি একটু আসছি।
.
.
হঠাৎ রেজোয়ান মাহবুবের কথায় ঘোর কাঁটে রোয়েনের।ওনার দিকে তাকায় রোয়েন তারপর মাথা ঝাঁকিয়ে যেতে বলল।রেজোয়ান মাহবুব ফোন রেখে শামীমের সাথে কই যেন চলে গেলো।রেজোয়ান মাহবুব চলে যেতেই রোয়েন ওনার ফোন হাতে নিয়ে ছবিটির দিকে তাকিয়ে রইলো।কি মায়াময় দৃষ্টি চোখজোড়ায়।মেয়েটার চোখজোড়ার গভীরে ডুবে যাচ্ছে রোয়েন।রুহীর গাল হাসি যেন রোয়েনের হৃদয়ে কাঁপন ধরানোর মতো।রোয়েন নিজের ফোনে রুহীর ছবি নিয়ে রেজোয়ান মাহবুবের ফোন টেবিলে রেখে দিলো।কিছুসময় পর রেজোয়ান মাহবুব আর শামীম ফিরে আসে।রোয়েন আবার ও ওনার সাথে কথা বলায় মগ্ন হয়ে পড়ে।শামীম হঠাৎ রেজোয়ান মাহবুবকে বলল
.
.
-স্যার আপনি যেহেতু আপনার মেয়ের ছবি দেখছেননা।আমি দেখি?
-দেখো।
.
.
শামীম ফোন হাতে নিয়ে দেখতে থাকে রুহীর ছবি।ওদের এ্যাংগেজমেন্টের ছবি পাঠিয়েছে রুহী।ওর বরের ছবি ও আছে।কি সুন্দর মেয়েটা।শুধু স্যার ওর সাথে ভালো ভাবে কথা বলেননা।শামীমের নিজের মেয়ে হলে ফুলের মতো রাখতো মেয়েটাকে।শামীম ফোন নিয়ে নিজের ডেস্কে চলে এলো।তারপর রুহীকে নিজের ফোন থেকে কল দিলো।দুবার রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ হয়।
.
.
-হ্যালো ভাইয়া ভালো আছেন?
-হ্যা রুহী।তুমি কেমন আছো?
-এইতো।
-তোমাকে না খুব সুন্দর লাগছে ছবিতে।
-আপনি কিভাবে দেখলেন?
-স্যার কাজের ফাঁকে দেখছিলেন।আমি পিছনে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম।
-ওহ।থ্যাংক ইউ ভাইয়া।দোয়া করবেন।
-শিওর।এটা আবার বলতে হয়?তুমি তো আমার ছোট বোন।
-তাও ঠিক।ভাইয়া বাবা কি আসবেনা সত্যি?
-আসবে।আসবেনা কেন?স্যার কাজ কম্পলিট করেই আসবেন।তা বিয়ে কবে?
-দুইসপ্তাহ পরে।
-ওহ আচ্ছা।ভালো থেকো।বড় স্যার ডাকছেন।
-আচ্ছা ভাইয়া।রাখছি আল্লাহ হাফেজ।
-আল্লাহ হাফেজ রুহী।
.
.
শামীম ফোন রেখে রোয়েনের কাছে চলে যায়।রোয়েন শামীমের হাতে দুটো ফাইল দিয়ে বলল,
.
.
-এগুলো কমিশনার সাদমানকে দিবে।ওনার কাছে গেলে ওনি তোমাকে আরেকটা ফাইল দিবে।ওটা ভালোমতো চেক করে আনবে।
-ওকে স্যার।
-কাল সকালেই যাবে ওকে?
-শিওর স্যার।
-এখন যেতে পারো। রেজোয়ান আপনি ও যান।আমি ফিরবো এখন।
-ওকে স্যার।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব আর শামীম চলে গেলো।রোয়েন উঠে নিজের কোটটাকে ঠিক করে নেয়।ওর বডিগার্ড ওর পিছু নিচ্ছে।রোয়েন গাড়িতে এসে বসলো।ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে।রোয়েন ফোন বের করে ছবিটা বের করে সামনে ধরলো।এই দেখার যে আর শেষ নেই।ঘরে ফিরে রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নেয় রোয়েন।তারপর সিগারেট ধরিয়ে সেখানে ফুঁক দিয়ে ছবিটা সামনে ধরে।সেদিন সারারাত রুহীকে দেখে রোয়েন।
পরদিন সকাল শামীম কমিশনার সাদমানের বাসায় উপস্থিত হয়।শামীমকে সোফায় বসতে দিয়ে সাদমান ফাইল আনতে যায়।কিছুসময় পর সাদমান ফিরে এলো ফাইল নিয়ে।তারপর শামীমের রাখতে গেলে ফাইলের ভিতর থেকে রুহীর ছবি বেরিয়ে আসে।শামীম বেশ অবাক হয় রুহীর ছবি দেখে।শামীমের তাকানোয় খানিকটা অবাক হন কমিশনার।তারপর জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-এনি প্রবলেম?
-জি।এ ছবিটা?
-এটা হলো পলিটিশিয়ান জালাল উদ্দীনের জন্য।
-বুঝলাম না।প্লিজ বুঝিয়ে বলুন।
-এক্চুয়ালি ওনার তো অনেক রাজনীতিবিদদের সাথে ওনার পরিচয় আছে।তো দুবাইয়ের একজন পলিটিশিয়ান সৈয়দ শাহ আলম।যার সাথে ওনার সম্পর্ক বেশ ভালো।শাহ আলমের ছেলে এক প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করেন।ওনি বর্তমানে চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে আছেন।সে এখন প্রমোশন চাইছে।
-তো এখানে এই মেয়ের কাজ কি?
-শাহ আলমের ছেলে এই মেয়েকে বিয়ে করে পরদিন জালাল উদ্দীনের কাছে বেঁচে দিবেন।তখনই তার প্রমোশন হবে।
.
.
কমিশনারের কথায় বেশ ঘাবড়ে যায় শামীম।তারপর কোনমতে ফাইল আর ছবি নিয়ে কাজের জায়গায় ফিরেই রেজোয়ান মাহবুবের কাছে এলো।রেজোয়ান মাহবুব আর রোয়েন কথা বলছিলেন।শামীমকে একবার দেখে ওনারা দুজন আবার ও কথায় মনযোগ দিলেন।
.
.
-স্যার কিছু কথা আছে।
-এখন না পরে। বলে উঠেন রেজোয়ান মাহবুব।
-না স্যার এক্ষুনি।
-দেখছো ইম্পরট্যান্ট বিষয়ে কথা হচ্ছে।তারপর ও কেন কথা বলছো শামীম।রেগে যান রেজোয়ান।
-স্যার এটা আপনার কাজের থেকে ও বেশি ইম্পরট্যান্ট।
-কেন?ভ্রু কুঁচকান রেজোয়ান।
-ব্যাপারটা আপনার মেয়েকে নিয়ে।
.
.
শামীমের তাড়া দেখে রোয়েন বলল,
.
.
-কাজের কথা পরে হবে।আগে আপনার মেয়ের কথা জেনে নেই।জি শামীম বলো।
-স্যার রুহীকে ওর বর বেঁচে দিবে জালাল উদ্দীনের কাছে বিয়ের পর দিন।তাহলে তার প্রমোশন হবে।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব দ্রুত এসে শামীমের কলার চেঁপে ধরলো।
.
.
-কি বললা এসব।রেগে যান রেজোয়ান মাহবুব।
-জি স্যার।কমিশনার বললেন এসব।ওনার কাছে রুহীর ছবি আছে।বিয়ে দুই সপ্তাহ পরে স্যার।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব সরে আসেন।তারপর রোয়েনের দিকে অসহায় চোখে তাকান ওনি।তারপর সাহস নিয়ে বললেন,
.
.
-স্যার আমার ছুটি লাগবে।রুহীকে নিয়ে আসবো আমি।
-ওকে। তবে জলদি ফিরে আসবেন।
-থ্যাংক ইউ স্যার।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব বেরিয়ে আসেন।দুবাইতে যাওয়ার সব ব্যাবস্থা করতে থাকেন।এ্যাংগেজমেন্টের দশদিন পর রুহী আর সামিরের জন্য একটা পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।সামির আর রুহী কাপল ড্যান্স করছিলো।হঠাৎ রেজোয়ান মাহবুব ঢুকে সামিরের কোটের কলার টেনে রুহীর থেকে সরিয়ে আনেন।তারপর মারতে শুরু করেন সামিরকে।সেলিম হামিদ ওনাকে থামাতে চেষ্টা করছেন ওনি থামছেননা।সামির নিজেকে খুব কষ্টে সরিয়ে আনে।তারপর বলল,
.
.
-মারছেন কেন আপনি আমাকে?
-এ বিয়ে হবে না।আমার মেয়ের বিয়ে তোর সাথে জীবন ও দিবোনা।
.
.
রুহী রেজোয়ান মাহবুবকে এসে জড়িয়ে ধরে।তারপর বলতে শুরু করে,
.
.
-বাবা কি হয়েছে তোমার?এমন করছো কেন?
-রুহী চিন্তা করোনা।আমাদের বিয়ে হবেই।তুমিই আমার বৌ।চিৎকার করে বলল সামির।
,
,
,
,
সামিরের কথা শুনে রেজোয়ান মাহবুব রুহী থেকে সরে এসে সামিরের গালে থাপড় দিয়ে ওর কোট টেনে বের করে দেন।
.
.
-এই বিয়ে হবেনা কখনো হবে না।
-আমার ও কোন শখ নেই আপনার মেয়েকে বিয়ে করার।
-চলে যা এখান থেকে।নাহলে জ্যান্ত থাকবিনা নিজের পায়ে যাওয়ার জন্য।
-এ অপমান আপনাকে ভোগাবে রেজোয়ান মাহবুব।চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে গেলো সামির।
.
.
সামিরের শেষের কথা গুলোয় স্তব্ধ হয়ে গেলো রুহী।ওকে বিয়ে করার শখ নেই সামিরের।তাহলে এতো দিন যা ছিলো সব কি ছিলো তাহলে?সেলিম হামিদ রেজোয়ান মাহবুব কে বসিয়ে বললেন,
.
.
-কি হলো জামাই?এভাবে এসে সামিরকে মারলে?
-বাবা সে রুহীকে বিয়ে করে পলিটিশিয়ান জালাল উদ্দীনের কাছে বেঁচে দেবে।
.
.
রেজোয়ান মাহবুবের কথায় বেশ অবাক হন সেলিম আর সেলিনা হামিদ।
,
,
-এসব কি বলছো বাবা?
-এটাই সত্যি।তুই পরশুই আমার সাথে দেশে ফিরবি।
-কিন্তু বাবা!!!!
-যা বলবো তাই করবি তুই।
.
.
কথাগুলো বলে রেজোয়ান মাহবুব উপরে উঠে গেলেন।মেহমানরা চলে গেলো এক এক করে সবাই।পরশুদিন রেজোয়ান মাহবুব রুহীকে নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য রওনা হন।পরদিন সকাল সাতটায় পৌছে গেলো তারা।রুহীকে বাসায় দিয়ে রেজোয়ান মাহবুব কাজের জায়গায় চলে এলেন।রেজোয়ান মাহবুবকে দেখে রোয়েন বুঝতে পারলো রুহী ও এসেছে।পরদিন সকালে সবাই কাজে ব্যাস্ত। রোয়েন বেরিয়ে পড়ে কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে। রুহী নাস্তা সেড়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।রোয়েন রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে এসে দেখে পুরো ঘর অন্ধকার।এ ঘরের প্রত্যেকটা কিনারা ওর জানা।কারন বাড়িটি ওর।এ কলোনির প্রত্যেকটি বাড়ি ওর।এ বাড়ি গুলোয় ওর লোকেরা থাকে।রোয়েন এরুম ওরুম করে রুহীকে খুঁজতে শুরু করে।হঠাৎ এক রুম থেকে গান শুনতে পায় ও।কে যেন মিষ্টি কন্ঠে গান গাইছে।রোয়েন দরজা একটু ফাঁকা করে রুহীকে দেখতে পায়।লম্বা চুল গুলো তোয়ালের মাঝে ধীরে ঘষছে রুহী।চুল গুলো বেশ লম্বার আর স্ট্রেইট।পর্দার আড়াল থেকে এক ছটকা আলো রুহীর গালে এসে পড়েছে।কি চমৎকার লাগছে দৃশ্যটা সেটা রোয়েন ছাড়া কেউ বুঝতে পারবেনা।রুহীর গায়ে সাদা লং ফ্রক।বেশ মানিয়েছে জামাটায় রুহীকে।রোয়েনের মায়াবতী রুহী।চুল তোয়ালেতে গুটিয়ে পিছে ফিরতেই জোরে চিৎকার করে উঠে রুহী।তারপর দৌড়ে দরজা খুলে দিলো।কেউ নেই সেখানে।তাহলে সেই চোখ জোড়া কার?রুহী বেরিয়ে এসে খুঁজে সেই চোখজোড়ার মালিককে।
কিন্তু নেই কেউ।
চলবে