Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 89
আনিলা বেগমের হাত ঝাড়ি মেরে ফেলে দেন আজিজ রায়হান।
আজিজের সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপছে।ওনার চোখজোড়াও লাল টকটকে হয়ে আছে যেন আগ্নেয়গিরি।
রুপন্তী বাবাকে দেখছে।ভীষন ভয় হচ্ছে ওর।
আনিলা কিছু বলতে যাবে তখনই আজিজ সজোরে চড় বসালো আনিলা বেগমের গালে।
চড়টা এতোই জোরে ছিলো আনিলা বেগম সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিয়ে সোফা ধরে নিজেকে সামলে নেয়।
আনিলা বেগম রাগান্বীত দৃষ্টিতে আজিজ রায়হানকে দেখছে।
-একদম চোখ উঠায়ে ফেলবো তোর,চোখ বড় করলে।চিৎকার করে উঠে আজিজ রায়হান।
-আজিজ!!রাগী গলায় বলে উঠেন আনিলা বেগম।
-চুপ!!!একদম চুপ।কোন কথা বলবিনা।গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করলেন আজিজ রায়হান।
-তুই তোকারি করছো কেন?রাগী গলায় বলে উঠেন আনিলা বেগম।
-আরেকটা কথা বললে ঘর থেকে বের করে দিবো।কোন সাহসে আমার মেয়ের গায়ে হাত তুলিস?
-কে তোমার মেয়ে?বলে উঠেন আনিলা বেগম।
-চুপ করতে বললাম না?রুপন্তী শুধু আমারই মেয়ে।জানি তোর আর আমার বিয়ে নকল কিন্তু বাবা আর মেয়ের সম্পর্ক কখনোই নকল না।চিৎকার করে বললেন আজিজ রায়হান।
বাবার কথায় বিস্ময়ে চোখ কপালে রুপন্তীর।কি বলবে ও বুঝতে পারছেনা।চোখজোড়া ভারি হয়ে আসছে।
আনিলা বেগম চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন ভ্রু কুঁচকে।
আজিজ রায়হান মেয়ের দিকে তাকালেন।রুপন্তীর হাত ধরে বললেন,
-চল মা।রুমে চলে গেলো রুপন্তী আর আজিজ রায়হান।
রুহী কাজের লোকদের দিয়ে টেবিলে খাবার সার্ভ করাচ্ছে।ওর মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুঁটে উঠলেও রোয়েনের ব্যাথায় কম কষ্ট পাচ্ছেনা রুহী নিজে ও।
কিছুক্ষনের মাঝেই রেহান আর রোয়েন নিচে নেমে আসে।তিনজনে খেতে বসে পড়ে।
খাবার শেষে যে যার রুমে চলে যায়।
রুপন্তী রুমে এসে মাথা নিচু করে বসে আছে।
আজিজ রায়হান মেয়ের দিকে মন খারাপ করে চেয়ে আছেন।বুঝতেই পারছেন শেষের কথা গুলো রুপন্তী আশা করেনি।
বড় নিশ্বাস টেনে নেন আজিজ রায়হান।
-সরি মা।এভাবে বলতে চাইনি আমি।বলে।উঠেন আজিজ রায়হান।
-না বাবা প্লিজ সরি বলোনা।তোমার কোন দোষ নেই।আমার শুধু কষ্ট হচ্ছে যে আমার কোন ঠিকানা নেই কোন পরিচয় নেই।অনৈতিক একটা সম্পর্কের ফল আমি।
কিন্তু সত্যি বলতে আমি গর্বিত বাবা যে তোমার মেয়ে না হয়ে ও মেয়ের মতো আদর পাচ্ছি।রুহী আপির মতো বোন পেয়েছি।আর কিছু চাইনা বাবা।কাঁদতে থাকে রুপন্তী।
-মেয়ের পাশে বসে পড়েন আজিজ রায়হান।
তুই আমার মেয়ে।তুই যেমন একা আমি তেমনি একা।আমরা আছিনা একে অপরের জন্য?
-রুপন্তী মাথা ঝাঁকায় জি বাবা।
আজিজ রায়হান বুকে জড়িয়ে নেন মেয়েকে।
-থ্যাংকস বাবা।আমাকে এতো ভালোবাসার জন্য।কেঁদে কেঁদে বলতে থাকে রুপন্তী।
আজিজ রায়হান নিঃশব্দে কাঁদতে থাকেন।
পরদিন বিকেলে প্রনয় খানের ঘরে চলে যান আনিলা বেগম।
প্রনয় খান আনিলা বেগমকে দেখেই জড়িয়ে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন।
আনিলা বেগম ধাক্কিয়ে সরান প্রনয় খানকে।
-মেয়েটা কে ছিলো?রাগী গলায় বলে উঠেন আনিলা বেগম।
কিছুটা আতংকিত গলায় প্রনয় খান বলেন,
– কোন মেয়েটা?
-প্রনয় বোকা ভেবোনা আমাকে।নিচে রেড মার্সিডিজে মেয়েটা কে ছিলো?চিৎকার করে উঠেন আনিলা বেগম।
আনিলার চিৎকারে প্রনয় খান রেগে ওনার গলায় হাত দিয়ে থেমে যান।তারপর আনিলা বেগমকে চুমু দিতে আসলে সরিয়ে দেন আনিলা বেগম।
-ছিঃ প্রনয় মেরে ফেলতে চাও আমায়?কেন কি দোষ আমার?তোমার ভালোবাসা চাই শুধু এটাই কি আমার দোষ?
-নাহ আনিলা সরি রাগ উঠে গেছিলো আমার।আর কখনো হবেনা।আনিলা বেগমের কাঁধে থুতনি রেখে বলেন প্রনয় খান।
-মেয়েটা কে ছিলো বলো না প্লিজ।বলে উঠেন আনিলা বেগম।
-মেয়েটা আমার কলিগ।ওর নাম জারিন।অফিশিয়াল কাজেই এসেছিলো।বলে উঠেন প্রনয় খান।
-সত্যি!!!জিজ্ঞেস করেন আনিলা বেগম।
-বিশ্বাস করোনা?প্রনয় খান বলে উঠেন।
-করি তো।বলেই প্রনয় খানের বুকে মাথা রাখেন আনিলা বেগম।
-কাল কি হলো বাসায় যাওয়ার পর?জিজ্ঞেস করেন প্রনয় খান।
-আনিলা বেগম সব খুলে বলেন প্রনয় খানের কাছে।
-সব শুনে প্রনয় খান রেগে গেলেন।রুপন্তী আমাকে বাবা মানবেনা!!মানতে ওকে হবেই।আর আজিজ রায়হান কাজটা ভালো করেনি।
-ওকে এর প্রায়শচিত্ত করতেই হবে।দাঁতে দাঁত চেঁপে কথা গুলো বলেন প্রনয় খান।
-কি করবে প্রনয়?জিজ্ঞেস করেন আনিলা বেগম।
-দেখ কি করি আমি।বলেই শয়তানি হাসি দেন প্রনয় খান।
-জানি প্রনয় পারবে তুমি।বলেই প্রনয় খানের ঠোঁটে চুমু এঁকে দেন আনিলা বেগম।
রাতে রুমে ফিরে আসে রোয়েন।রুহী খাটের ওপর হাঁটু জোড়া ভাজ করে বসে কি যেন ভাবছে।
-রুহীর কাছে এসে দাঁড়ায় রোয়েন।
রুহীর পিঠে হাত রেখে ওর হাঁটু দুটো সোজা করে সযত্নে রুহীকে শুইয়ে দেয় রোয়েন।
রোয়েনের কাজে অবাক হলে ও ভালোই লাগছে রুহীর।
-এভাবে বসোনা এসময়ে।বলেই রুহীর কপালে চুমু দেয় রোয়েন।
-রুহী মুখ উঠিয়ে রোয়েনের দুগালে চুমু এঁকে দেয়।রোয়েন এবার রুহীর পায়ের কাছে এসে বসে।
পায়ের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে ফোলা পা দুটো কে আস্তে আস্তে চাপতে শুরু করে।
ভীষন আরাম হচ্ছে রুহীর।কিন্তু স্বামীর হাতে পা টিপা ওহ নো এটা ঠিক না।
রুহী চিৎকার করে উঠে,
-এই না না প্লিজ পা ছোঁবে না।
-চুপ!!এসব আমার মায়াবতীর জন্য করছি তোমার কি?বলেই পা চাঁপতে শুরু করে রোয়েন।
রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।ওর চোখজোড়ায় ঘুম নেমে আসতে চাইছে।কিন্তু আজ ও ঘুমোবেনা।
আজ অনেক অনেক বেশি ভালোবাসা চায় প্রিয় মানুষটির কাছে।
রুহী কষ্ট করে উঠে বসে রোয়েনের শার্টের কলার চেঁপে ধরে।
রোয়েন চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে।রুহী এবার রোয়েনকে টেনে ওর দিকে আনে।
তারপর চোখ বুজে নিয়ে বলে,
-আজ একটু ভালবাসো প্লিজ।
-রুহীর কথায় রোয়েনের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
রোয়েন কিছু বলছেনা।
রুহী রোয়েনকে কাছে টানছে।
রোয়েন এবার রুহীকে শুইয়ে ওর ওপর নিজের ভর হালকা করে দেয়।
তারপর রুহীর শাড়ী ভেদ করে নরম একটু ভারি হয়ে যাওয়া পেটে হাত চলে যায় রোয়েনের।
রুহী চোখ বুজে বড় নিশ্বাস নিচ্ছে।
রোয়েন রুহীর গালে কপালে অনবরত চুমু দিয়ে চলেছে।আজ যেন এই ভালবাসার শেষ।
রোয়েন নিজে ও রুহীকে ভালবাসতে চাইছিলো আজ।
রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট রাখে রোয়েন আলতো করে দুবার চুমু দিয়ে গভীর চুম্বনে লিপ্ত হয় ওরা।
রুহীর শাড়ী টাকে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে ওর গলায় কাঁধে চুমু দিতে থাকে রোয়েন।দুজনে ভালোবাসার অতল সাগরে ডুব দেয়।
এদিকে প্রনয় খান রুপন্তীকে মানানোর চেষ্টা করতে থাকে।
ওর কলেজের সামনে বসে থাকতো চকলেটস আর ডলস নিয়ে।
কিন্তু রুপন্তী নাছোড়বান্দা।সে কোনমতেই প্রনয় খানকে বাবা মানবেনা।
ভীষন রাগ হয় প্রনয় খানের।এই মেয়ের সাহস হয় কি করে প্রনয় খান কে না বলার।
তবে ওনি ও হার মানবেননা।রুপন্তীকে নিজের কাছে নিয়েই ছাড়বেন।
সারারাত একে অপরের ঘ্রানে মিশেছিলো রুহী আর রোয়েন।
শেষ রাতের দিকে ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের। পাশে রুহীকে না পেয়ে উঠে বসে ও।বাথরুমের দিকে তাকায় কিন্তু দরজা খোলা লাইট অফ।
বারান্দায় আসে রোয়েন কিন্তু রুহী নেই।
খাটের কাছে ওদের কাপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
এ অবস্থায় এই মেয়ে কই চলে গেলো?ভাবতে থাকে রোয়েন।
বাহিরে আসতেই নিচ থেকে গান শুনতে পায় রোয়েন।
কিছু না ভেবেই নিচে নামতে থাকে রোয়েন।
যতো নামছে গানের সাউন্ড ততোই তীব্র হচ্ছে।
হল রুমে এসে চোখ কপালে রোয়েনের।
রুহী চোখ বন্ধ করা অবস্থায় নাচছে আর গান গাইছে।
তুঝে না দেখু তো চেইন মুঝে আতা নাহি
হে,কুছ তেরে সিভা কই অর মুঝে ভাতা নাহি হে,
কাহি মুঝে পেয়ার হুয়াতে নাহি হে,
রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।রুহী আগে কখনোই এমন করেনি।হয়ত প্রেগন্যন্সির কারনেই এমনটা হচ্ছে।
আর এতো অাঁধারে রুহী সিড়ি বেয়ে নামলোই বা কি করে? নাহ এখন ওকে আর ও কেয়ারফুল হতে হবে রুহীর প্রতি।
তারওপর রুহী এই অবস্থায় এখানে?ভাবতেই লজ্জায় মুখ লাল রোয়েনের।ভাগ্যিস ও এসেছিলো নাহলে নাক কাঁটা যেতো ওদের। হঠাৎ কারোর পায়ের শব্দে।রোয়েন রুহীকে কোলে তুলে নিয়ে উপরে চলে আসে।
চলবে