Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 68
রুহীর গলা থেকে সরে এসে ওর ঠোঁটে ঠোঁট বসাতেই রুহী একটু জোরেই ধাক্কা দিয়ে সরালো রোয়েনকে।রোয়েন সরে রুহীকে অবাক চোখে দেখছে।রুহী রোয়েনকে একবার দেখেই দৌড়ে পালিয়ে গেলো।রুপন্তী আর রেহান কে পাশাপাশি বসানো হলো।রুহী এসে রুপন্তীর পাশে দাঁড়ায়।বুক ধুকপুক করছে রুহীর।রুহী মা আংটিটা বের কর।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।রুহী ওর ব্যাগ থেকে আংটি বের করে রুপন্তীর হাতে দিলো।কিছুক্ষন বাদে রোয়েন এসে দাঁড়ায় রেহানের পাশে।আজিজ রায়হান তার এক কলিগকে এনে রোয়েনের সামনে এসে দাঁড়ালো।আপনাকে বলেছিলাম না রোয়েনের কথা।এই তো আমার বড় মেয়ে জামাই রোয়েন চৌধুরী।কথা গুলো একনাগাড়ে বলে রোয়েনের দিকে তাকান আজিজ রায়হান।রোয়েন ওনি আমার কলিগ মিঃ রায়হান মাহবুব।বলে উঠেন আজিজ রায়হান।ঠোঁটে মিষ্টি হাসি টেনে আনে রোয়েন।লোকটি রোয়েনের দিকে হাত বাড়ায়।রোয়েন লোকটির সাথে হ্যান্ডশেক করলো।তোমার কথা অনেক শুনেছি আজিজ রায়হান সাহেবের কাছ থেকে।তোমার তো অনেক প্রশংসা করে ওনি।রায়হান মাহবুব বলে উঠলেন।রোয়েন আজিজ রায়হানের দিকে তাকায়।আজিজ রায়হান হালকা হেসে রায়হান মাহবুব কে রুপন্তী আর রেহানের কাছে নিয়ে যায়।রুহী!!!একটু এদিকে আয় তো।ডেকে উঠলেন রায়না রহমান।জি মামী আসছি।বলে রুহী সেদিকে চলে যায়।রুহীর হাতে রেহানের আংটি ধরিয়ে দিলেন ওনি।আমার আংটি দিতে মনেই নাই।তোর মামা যদি জানে আংটি এখনো দেইনি।তাহলে খবরই আছে আমার।বলেই হালকা হাসেন রায়না রাহমান।রুহী মুচকি হেসে আংটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
স্টেজের কাছে এসে দাঁড়ায় রুহী।রেহানকে আংটি দিয়ে একটু সরে আসে।রোয়েন ফোনে কথা বলা শেষ করে আবার স্টেজের কাছে এসে রুহীর পাশে দাঁড়ায়।রুহীর হাত সবার আড়ালেই খপ করে ধরে ফেলে।তখন এভাবে পালিয়ে গেলে কেন?দাঁতে দাঁত চেঁপে ফিসফিস করে বলে উঠে রোয়েন।বাসায় কতো গেস্ট দেখতে পাচ্ছো না?ফিসফিস করে বলে উঠে রুহী।সো?ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠে রোয়েন।
তো কি আমাকে কেউ খুঁজলে পেতো নাকি?তারপর সবাই বলতো মনে হয় জামাইর সাথে,,,,,বলতে গিয়ে থেমে যায় রুহী।লজ্জায় মুখ খানা লাল হয়ে আসে রুহীর।রোয়েন রুহীর কানের সামনে একটু মুখ নিয়ে বলল রোম্যান্স করছে করতেই পারে।বৌটাতো রোয়েনেরই।কার কি যায় আসে?বলেই বাঁকা হাসে রোয়েন।রুহী আরো বেশি লজ্জা পেয়ে যায়।রেহান রুপন্তীর আংটি বদল হয়ে যায়।তারপর শুরু হয় ফটোগ্রাফি।বড় বোন আর দুলাভাইকে ডাকা হয় রুপন্তী আর রেহানের সাথে ছবি তুলার জন্য।রুহী আর রোয়েন রুপন্তী রেহানের দুই পাশে বসে পড়ে।অনেক গুলো ছবি তুলা হয় ওদের।রুহী পাশে তাকিয়ে রুপন্তীর মুখে হাসি দেখতে পায়। বোনকে খুশি দেখে বুকটা ভরে যায় রুহীর।এরপর সবার সাথে হালকা কথা বার্তা সেড়ে নেয় রুহী আর রোয়েন।বড় মেয়ে আর বড় জামাই হিসেবে ওদের দায়িত্বটা একটু বেশিই।খাবার সেড়ে গেস্টদের সবাইকে রোয়েনের গেস্ট হাউজে পাঠানো হয় রেস্টের জন্য,আর রাতের পার্টির জন্য রেডি হতে।রুহী রুমে এসে লেহেঙ্গা টা পাল্টে নিয়ে একটা সুতির স্যালোয়ার কামিজ পরে খাটে বসে পড়লো।
নখে লাল টুকটুকে নেইল পলিশ লাগাতে লাগাতে দরজার দিকে চোখ পড়ে ওর।রোয়েন রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।রুহী মুচকি হেসে নেইলপলিশ লাগাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।রোয়েন রুহীর কাছে বসে নেইল পলিশের কৌটা টা নিজের হাতে নিয়ে রুহীর হাতের আঙ্গুলে সযত্নে লাগিয়ে দিতে শুরু করলো।রুহী মুগ্ধতার হাসি হেসে রোয়েন কে দেখছে।
নেইল পলিশ লাগিয়ে সোজা হয়ে বসে রোয়েন।রুহীর হাতের কাঁচের চুড়ি গুয়লোর ওপর হালকা পারশ দিতেই মিষ্টি একটি শব্দ পুরো পরিবেশটাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিলো।রুহীর গালে ঠোঁট বুলাতে বুলাতে রুহীর কানে আলতো করে কামড় বসায় রোয়েন।রুহী শিহরিয়ে উঠলো।রুহীর ঘাড়ে লিক করছে রোয়েন।
আপি তুই ভিতরে আছিস?দরজার বাহির থেকে বলে উঠে রুপন্তী।
রুহী রোয়েন কে সরিয়ে দিলো।তারপর উঠে দরজা খুলে দিলো।রুপন্তী আর রেহান এসে খাটে বসে পড়লো।চারজনে জম্পেশ আড্ডায় মেতে উঠলো।
রাত শুরু হতেই সবাই রেডি হতে লাগলো।রুপন্তী মেরু কালারের একটি লেহেঙ্গা পরেছে আর সাথে খুব সুন্দর করে সেজেছে ও।রুহী কালো একটা শাড়ী পরে নিলো।গলায় কানে সাদা পাথরের অর্নামেন্টস।গেস্টরা আসতে শুরু করেছে।পুরো বাড়িটা আবার হাসি আমোদে ভরে উঠলো।রেহান ঘড়ি চেক করছে আর অপেক্ষা করছে ওকে বাঁচিয়েছে সেই আঙ্কেলটার জন্য অর্থ্যাৎ সাজিদ রায়হানের জন্য।ভাইকে এভাবে অস্থির হতে দেখে রোয়োন এসে রেহানের কাছে দাঁড়ালো।রেহান কাকে খুঁজছিস?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।ভাইয়া ঐযে বললাম না একটা আঙ্কেল বাঁচিয়ে ছিলো আমায়।তাকে দাওয়াত করেছিলাম।সে এখনো আসছেনা।বলে উঠে রেহান।কথা যখন দিয়েছে এসে পড়বে।তুই চল আমার সাথে।বলে রেহানকে সাথে করে নিয়ে চলো গেলো রোয়েন
আজিজ রায়হান মাইক হাতে দাঁড়িয়ে আছেন।ওনার মুখে দুষ্টুমির হাসি।আজ আমাদের ভীষন দুটো খুশির দিন।সেটা হলো আমার বড় মেয়ে রুহী লন্ডন থেকে ফিরে এসেছে ওর হাসবেন্ড মিঃ রোয়েন চৌধুরীর সাথে।তারা নিউলি মেরিড কাপল।আর সেকেন্ড গুড নিউজ তো জানেনই আমার ছোট মেয়ে রুপন্তী আর শ্যালক সাইফ রাহমানের ছেলে রেহানের আকদ হলো আজ।তাই আজ সেই দুটো খুশিতেই আমাদের এই গ্রান্ড পার্টিটা।আর এই পার্টিতে দুটো আকর্ষনীয় দিক হলো একটা গেমস আর কাপল ড্যান্স।গেমসের নিয়ম হলো বৌদের এক লাইনে দাঁড় করানো হবে।আর বরদের চোখ বেঁধে দেয়া হবে।বর রা তাদের বৌদের খুঁজে বের করবে চোখ বাঁধা অবস্থায়।এরপর তারা যদি নিজের বৌদের খুঁজে বের করতে পারে তাহলে বৌদের সাথে কাপল ড্যান্স করবে।আর বৌয়ের বদলে যদি অন্য কাউকে খুঁজে বের করে তাহলে তার সাথেই নাচতে হবে।
স্পীচ শেষে আজিজ রায়হান নিচে নেমে এলেন।একটা মহিলা এসে আজিজ রায়হানের কাছে দাঁড়ালেন।আজিজ কি খবর?জিজ্ঞেস করে উঠেন মহিলা।এই তো ভালো।তোমার কি খবর তানহা?জিজ্ঞেস করে উঠেন আজিজ রায়হান।এই তো ভালো।হেসে বলে উঠেন মিস তানহা আজিম।চলো আমার পরিবারের সাথে তোমাকে দেখা করাই।আজিজ রায়হান তানহা আজিম কে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলেন।তানহা আজিম আজিজ রায়হানের ছোট বেলার বান্ধুবী আর বিজনেস পার্টনার।তানহা আজিম আজিজ রায়হানকে ভীষন ভালোবাসতেন কিন্তু আজিজ রায়হানের রেসপন্স পান নাই কখনো।তাই তিনি আজ ও অবিবাহিতা রয়ে আছেন।সবার সাথে পরিচয় শেষে শুরু হলো খেলার পালা।সাইফ রাহমানের চোখ বাঁধা হলো।রুহী রুপন্তী আনিলা বেগম রায়না রাহমান আর তানহা আজিমকে দাঁড় করানো হলো এক সারিতে।সাইফ রাহমান চোখ বন্ধ করে স্ত্রীকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।হয়ত ভালোবাসার টানেই রায়না রাহমান থেকে একটু সামনে গিয়ে আবার পিছু এসে ওনার হাত ধরে বললেন রায়না!!!!তারপর চোখ খুলে দেখলেন সঠিক মানুষকে ধরেছেন।এরপর পালা আজিজ রায়হানের।ওনি আনিলা বেগমকে চিনতে পেরেছেন। কিন্তু ইচ্ছাসত্ত্বেই তানহা আজিমের হাত ধরে বললেন আনিলা!!!!।তারপর চোখ খুলে মন খারাপের অভিনয় করে বললেন ইস ভুল হয়ে গেলো।এর পর রোয়েনের চোখ বেঁধে দিলো রেহান।রোয়েন রুহীর সামনে এসে দাঁড়ালো।মুখে বাঁকা হাসি এনে একটু সামনে চলে গেলো।মনে শয়তানির ধান্দা।রুহী ভয় পাচ্ছে। কাকে বেছে নিবে রোয়েন।কিন্তু দুষ্টু রোয়েন পিছিয়ে এসে রুহীর গালে আলতো করে হাত ছুঁয়ে বলল পেয়ে গেছি।তার নিজের চোখের বাঁধন খুলে নিলো।রুহী হাসিমুখে তাকিয়ে আছে রোয়েনের দিকে।তারপর রেহানের পালা।রেহান চোখ বাঁধা অবস্থায় দৌড়ে এসে রুপন্তীকে জাপটে ধরলো।রুপন্তী লজ্জায় শেষ।রেহান চোখ খুলে হাসতে লাগলো। রুপন্তী সরে আসতে চাইছে রেহানের কাছ থেকে।রেহান ছেড়ে দিলো।এরপর শুরু হলো কাপল ড্যান্স।
গান ছাড়া হলো।রুহীর কোমড় জড়িয়ে একেবারে কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহীর মসৃন হাত বেয়ে রোয়েনের হাত নামতে নামতে একসময় রুহীর হাতের আঙ্গুল গুলোকে রোয়েন নিজের আঙ্গুলের ভাজে নিয়ে নিলো।সবাই স্ত্রীদের সাথে নাচছে।শুধু আনিলা বেগম দাঁতে দাঁত চেপে স্বামীকে দেখছেন।
Tere sang yaara
Khushrang bahara
Tu raat deewani
Main zard sitaara
O karam Khudaya hai
Tujhe mujhse milaya hai
Tujhpe marke hi toh
Mujhe jeena aaya hai
O tere sang yaara…
Khushrang bahara
Tu raat deewani
Main zard sitaara
Kahin kisi bhi gali me jaaun main
Teri khushboo se takraaun main
Har raat jo aata hai mujhe
Woh khwaab tu…
গানের মাঝেই রোয়েন রুহীর নেশা ছড়ানো নিশ্বাস গুলো উপভোগ করছে।একে অপরের নিশ্বাসে ডুবে ছিলো ওরা পুরো নাচেই।
রোয়েন মুখ বাড়িয়ে রুহীর কানে ঠোঁট ছুঁয়ালো।রুহী কিছুটা কেঁপে উঠে রোয়ের কোটের কলার চেঁপে ধরলো।অপরদিকে রুপন্তী রেহানের দিকে তাকাতে পারছেনা।ভীষন লজ্জা হচ্ছে ওর।বুক ধুকপুক করছে।রেহান আস্তে ফুঁ দিলো রুপন্তীর চোখের পাতার ওপর।চোখের পাতা নেচে উঠে রুপন্তীর।আই লাভ ইউ বলে উঠে রেহান।রুপন্তী মুচকি হেসে মাথা নিচু করে।আজিজ রায়হান আনিলা বেগমকে দেখিয়ে তানহা আজিমের সাথে একটু ক্লোজ হয়ে ড্যান্স করছেন।আনিলা রাগান্বিত চোখে স্বামী কে দেখছেন।রায়না রাহমানকে জড়িয়ে ধরে নাচছেন সাইফ রাহমান।রায়না রাহমান মুখ লুকিয়ে রেখেছেন দুহাতে।
নাচ শেষে সবাই কথা বার্তা বলতে থাকে।আজিজ রায়হান রায়না রাহমান আর সাইফ রাহমানকে পরিচয় করাচ্ছেন গেস্টদের সাথে।রুহীর কানের দুল নাড়তে নাড়তে রোয়েন কথা বলছিলো রুহীর সাথে।আচমকা রোয়েনের চোখ পড়ে মেইনডোরে দাঁড়িয়ে থাকা সাজিদ রায়হানের দিকে।সাজিদ রায়হান রায়না রাহমানকে দেখছেন আরেক জন পুরুষ সাইফ রাহমানের সাথে।কিছু কথা শুনার পর উনার বুঝতে বাকি রইলো না রায়না রাহমান সাইফ রাহমানকে বিয়ে করেছেন।আর রেহান তাদের সন্তান।তারপর সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে রোজি কে নিয়ে চলে যান সাজিদ রায়হান।
চলবে