Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 5

রুহী উঠে বসে গেলো ধড়ফড়িয়ে।কি করতে যাচ্ছিলো ও?ছিঃ রুহী মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে তোর? শেষ মেষ একটা খুনিকে ছিহ!!!!ভাবতে থাকে রুহী।নিজের ওপর ঘেন্না লাগছে ওর। রোয়েন ওকে কিস করতে যাচ্ছিলো ও আবার কেন মাথা উঠিয়ে রোয়েনের দিকে এগোলো বুঝতে পারছেনা রুহী।রোয়েনের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো রুহী।রাগে ফুঁসছে ও।রুহীর তাকানো দেখে রোয়েনের মেজাজ চরমে পৌছে গেলো।ইচ্ছে হচ্ছিলো মেয়েটাকে চড় দিকে অজ্ঞান করে ফেলতে।কিন্তু এ মুহূর্তে মারামারি করার ইচ্ছা নেই রোয়েনের।তাই রুহীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে দুটো আঙ্গুল নিজের চোখের দিকে দিয়ে রুহীর চোখের দিকে ফিরালো(তোমাকে দেখে নেবো)।রোয়েনের তাকানোয় খানিকটা ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়লো রুহী।
রোয়েন রুহীর দিকে একনজর তাকিয়ে চোখ সরিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুম থেকে।রোয়েন যাওয়ার সময় দরজাটাকে খুব জোরে লাগিয়ে গেলো।
দরজার শব্দে কেঁপে উঠে সেদিকে তাকালো রুহী।লোকটা আস্ত একটা বদ।আর আঙ্গুল দিয়ে ওটা কি করছিলো ভাবতে থাকে রুহী আর নিজের আঙ্গুল দিয়ে রোয়েনের মতো করতে থাকে।এটার মানে কি ভাবতে থাকে রুহী।এটা দিয়ে কি বুঝাতে চাচ্ছিলো লোকটা?
রুহীর রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে এলো রোয়েন।
পকেট থেকে ফোন বের করে কন্টাক্ট লিস্টে গিয়ে আজিজ রায়হানের নম্বর সামনে আনে।হিংস্রতা ফুঁটে উঠেছে রোয়েনে সারা মুখ জুড়ে।আজিজ রায়হানকে কল দিয়ে কানে ফোন রাখলো।
অপর পাশ থেকে হ্যালো!!!!
হাউ ডেয়ার ইউ মিঃ আজিজ রায়হান!!!!!চিৎকার করে উঠলো রোয়েন।
কি হলো স্যার!!! কিছুটা ভয় পেয়ে বলে উঠলো আজিজ রায়হান।
সাহস কি করে হয় তোর রুহী পালাতে বলার জন্য?আই হেভ টোলড ইউ রুহী এখানেই থাকবে বিয়ে পর্যন্ত।কি করে পালাতে বললি ওকে?চিৎকার করে উঠলো রোয়েন।
না স্যার ভুল ভাবছেন।এমন কিছু কেন করবো আমি?রুহী আমার মেয়ে।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
তুই কেমন শয়তান সেটা আমার থেকে ভালো কেউ জানেনা।
স্যার প্লিজ বুঝতে চেষ্টা করুন।আমি যতোই খারাপ হই কখনো নিজের মেয়ের ক্ষতি চাইবোনা।
আই কান্ট বিলিভ।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো রোয়েন।
আচ্ছা ধরেন ওকে পালাতে বললাম। কিন্তু ও কোথায় দাঁড়াবে সেটাকি করে জানবো আমি?আর এই দুইদিন ওর সাথে কোন প্রকারের কথা হয়নি আমার।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
কান থেকে ফোন সরিয়ে নেয় রোয়েন।আজিজ রায়হানের কথা গুলো মাথায় ঘুরছে ওর।দেয়ালে খুব জোরে হাত বাড়ি লাগায় রোয়েন।কি হচ্ছে এসব?তাহলে কে পালাতে বলল রুহীকে?চোখ বুজে ভাবতে থাকে রোয়েন।রুহীর মা বাবা ছাড়া আর কে জানে রুহী রোয়েনের সাথে আছে?নাহ কিছু মাথায় আসছে না রোয়েনের।তবে সে যেই হোক He will pay for it বিড় বিড় করে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে থাকে রোয়েন।
পাশের রুম থেকে গোঙ্গানীর শব্দ ভেসে আসে রোয়েনের কানে।কান খাড়া করে শুনার চেষ্টা করতে থাকে রোয়েন।পাশের রুম তার মানে রুহীর রুম থেকে শব্দটা আসছে।
আর দঁড়াতে পারলো না রোয়েন।দৌড়ে রুহীর রুমে চলে এলো ও।রুহীর পুরো শরীর থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বসা থেকে শুয়ে পড়লো ও।রুহীর পাশে এসে দাঁড়িয়ে ওর হাত ধরলো রোয়েন।শরীর প্রচন্ড গরম রুহীর।
ওর কপাল গাল চেক করতে শুরু করলো রোয়েন।রুহীর চোখজোড়া রক্ত বর্ন হয়ে আছে।ঠিক মতো তাকাতে পারছেনা মেয়েটা।একটা রুমাল ভিজিয়ে এনে রুহীর কপালের ওপর রাখলো রোয়েন।
ফোন বের করে ডাক্তার কে কল দিলো রোয়েন।
কিছুক্ষন পর
রুহীকে চেকআপ করে রোয়েনের দিকে তাকালেন ডাক্তার রুদ্র।
ওনাকে রিল্যাক্সে থাকতে হবে।কিছুদিন ধরে হয়ত বেশ ধকল গেছে ওনার ওপর।তাই জ্বর এসেছে।প্লিজ স্যার একটু খেয়াল রাখবেন।বলে উঠলেন ডাক্তার রুদ্র।
ইউ ডোন্ট নিড টু টেল দ্যাট।ডাক্তারের হাতে টাকা দিতে দিতে রাগী গলায় বলল রোয়েন।
ডাক্তার চলে গেলে রুহীর পাশে এসে বসলো রোয়েন।রুহী অনবরত কেঁপেই যাচ্ছে।রোয়েনের তো আর সহ্য হচ্ছেনা।মেয়েটার মুখখানি লাল হয়ে আছে।রোয়েন কম্বল দিয়ে রুহীকে জড়িয়ে ওর পাশে শুয়ে পড়লো।
রুহী একটু সরে আসতে চাইলে রোয়েন ওর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আরো জোরে জাপটে ধরে নিজের বুকের সাথে রুহীকে মিশিয়ে দিলো।
প্রথমে একটু ছটফট করলে ও কিছুক্ষন পর রোয়েনের বুকেই ঘুৃমিয়ে গেলো রুহী।বেশ কিছুক্ষন পর রুহীর থেকে সরে এলো রোয়েন।রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসে রুম থেকে।
সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে কাজের মহিলাটাকে নিজের কাছে আসতে বলল রোয়েন।
জি স্যার।রোয়েনের কাছে এসে বলল মহিলাটি।
রুহীর কাছে গিয়ে বসো।ওর কি দরকার হয় সেটার খেয়াল রাখবে ওকে?বলে উঠলো রোয়েন।
মাথা ঝাঁকায় কাজের মহিলাটি।গায়ে কালো কোটটি জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।
ঘন্টাখানিক পর রুহীর ঘুৃ ভাঙ্গলে মাথায় ভিজা কিছুর ছোঁয়া পায় রুহী।কপালে হাত দিয়ে খেয়াল করলো কালো একটি রুমাল।তার মাঝে গোখরা সাপের পোর্ট্রেইট।
রুমাল টি হাত থেকে ফেলে দিলো রুহী। খুব খারাপ লাগছে শরীরটা।মুখটায় কেউ যেন করলার রস মাখিয়ে রেখেছে।পায়ের কাছে একটা কালো বর্নের মহিলা খাটের কোনায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।রুহী খুব কষ্টে উঠে দাঁড়ালো।মাথাটা ভার হয়ে আছে ওর।পা টিপে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো রুহী।পাশের রুমে চোখ পড়তেই কেমন যেন কৌতুহল বোধ হলো সেই রুমটার প্রতি।দরজা খুলে রুমটিতে ঢুকে পড়লো ও।এবাসার সবই কালো।টাইলস দেয়াল সকল আসবাবপত্র সহ।রুমে ঢুকে খানিকটা ভয় পেয়ে সরে আসে রুহী।দেয়ালে খুব বড় একটা কোবড়ার ছবি টানানো।রুহী ছবিটা দেখতে পিছনে আসতেই খুব সুন্দর একটা স্মেল পেলো।ল্যাভেন্ডারের স্মেল। চোখ বন্ধ করে ঘ্রান নিতে থাকে।স্মেলটা যেন ওর মন প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছে।
এখানে কেন? ধমক দিয়ে উঠে রোয়েন।
কারোর কথা শুনে পিছনে ফিরে রুহী।থমকে গেছে ও।
খালি গায়ে রোয়েনকে কেমন লাগছে বুঝাতে পারবেনা ও।
রোয়েনের বুকের দিকে নজর গেলো রুহীর। সেখানে কাঁটা ছিড়া দাগ।বুকের ওপর পানির ফোঁটা গুলো রুহীকে বিমোহিত করছে।রোয়েন রুহীর তাকানো খেয়াল করে পিছনে ফিরে খাটের ওপর থেকে কালো শার্ট নেয়ার জন্য হাত বাড়ালো।
রোয়েন পিছনে ফিরতে ওর পিঠের ওপর কালো সবুজ রং এর কম্বিনেশনের কোব্রার ট্যাটু টা রুহীর চোখে পড়তেই রোয়েনের সেই গোলাগুলির দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে উঠলো।রুহী আবার ও ভয় পেতে শুরু করলো।
শার্ট গায়ে জড়িয়ে পিছনে ফিরলো রোয়েন।রুহী ভয় পেয়ে পিছাচ্ছে। রোয়েন কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা কি হচ্ছে মেয়েটার?রোয়েনের আগানো দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো রুহী।রোয়েন মুহূর্তের মাঝেই রুহীকে কোলে তুলে ওর রুমে এনে শুইয়ে দিলো।
পরদিন বিকেলে
আজিজ রায়হান রোয়েনের বাসায় এসে উপস্থিত।কাজের লোকটাকে রুহীর রুম কোথায় জিজ্ঞেস করতেই লোকটা দেখিয়ে দিলো।আজিজ রায়হান সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো।রুহীর রুমের দরজা খুলতেই দেখলো রোয়েন রুহীকে স্যুপ খাওয়াতে চেষ্টা করছে।কিন্তু রুহী বারবার হাত দিয়ে ঠেলে সুপ ফেলে দিচ্ছে।কিন্তু তাতে রোয়েনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।এভাবে বেশকিছুক্ষন পর রোয়েন রুহীর হাত দুটো বেঁধে সুপটুকু খাইয়ে দিলো।রোয়েন এমন এক লোক যার মুহূর্তের মাঝেই রাগ উঠে যায়।এখানে রুহীর বদলে অন্য কেউ হলে চড় বসাতো রোয়েন তার গালে।কিন্তু আজ একটু ও রাগলোনা রোয়েন।ব্যাপারটা ভাবতেই আজিজ রায়হানের মন প্রান জুড়ে ভালো লাগা কাজ করলো।
চলবে