Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 42
রুহীর কপালে আলতো করে চুমু খায় রোয়েন গান শেষ হতেই।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো রোয়েনের বাহুডোর থেকে।পিছনে ফিরে দাঁড়ায় রুহী।চোখ মুছে নিলো সবার অজান্তেই।সবাই হাত তালি দিতে শুরু করলো কারন ওদের নাচটা ভালোবাসায় পরিপূর্ন সম্পর্কটাকে যেন প্রকাশ করছিলো।রোয়েন সবাইকে থ্যাংকস দিয়ে রুহীকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।রুহী শাড়ী চেঞ্জ করে সাদা গেঞ্জী আর ট্রাউজার পরে নিলো।চুল গুলোকে খোপায় গুঁজে খাটে শরীর এলিয়ে দিলো।রোয়েনের আর সহ্য হচ্ছেনা।
কতো সাহস এই মেয়ের?কিভাবে অন্য রুমে গিয়ে শুয়ে পড়তে পারে এই মেয়ে?কথা গুলো ভেবে রুহীর রুমের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে গেলো রোয়েন।বাহির থেকে পর্দা ভেদ করে চাঁদের মিষ্টি আলো রুহীর মসৃন সাদা পেটের ওপর পড়েছে।
খুব ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ওকে।পেটের সাইডে কালো তিলটা রোয়েনকে টানছে।এতো সুন্দর তিল হয় বুঝি?নাকি রুহীর পেটেই এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে?রুহীর গেঞ্জীটা পেটের ওপর টেনে দিলো রোয়েন।আচমকা রুহী ঘুমের মাঝেই রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় মুখ গুঁজে দিলো।রুহীর নেশা ধরানো ঘ্রান রোয়েনকে অন্য এক জগতে নিয়ে যেতে চাইছে।একটু যদি পেতো মায়াবতীকে?নাহ এটা তো অন্যায়।রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।তারপর কোলে তুলে রুমে চলে যায়।রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।রুহী কেমন বাচ্চাটির মতো ওর বুকে শুয়ে আছে।পরদিন সকালে ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে রোয়েনের বিছানায় পেলো রুহী। ও তো পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিলো।তাহলে এখানে কি করে?ভাবতে থাকে রুহী। খাট থেকে নেমে পুরো ফ্রেশ হয়ে আসে রুহী।রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে আসে। পুরো ঘরে কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি রোয়েনের।কাজের লোক গুলোকে জিজ্ঞেস করে ও লাভ হয়নি।তারা কেউ জানেনা রোয়েন কোথায়।
রুহী নাস্তা সেড়ে উপরে চলে আসে।খাটে বসে ফোন হাতে নিলো রুহী।ভালোবাসার মায়াজাল গল্পটির ৬০ তম পার্ট লেখার চেষ্টা করে রুহী।কিন্তু পারছেনা।মনটা বড্ড অস্থির লাগছে।পাশের টিটেবিল থেকে একটা চকলেট নিয়ে খেতে শুরু করলো রুহী।এটার মিষ্টিটা ও তিতা মনে হচ্ছে রুহীর।অর্ধেকটা চকোলেট খেয়ে শুয়ে পড়লো রুহী।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
আজ লোকটাকে না চাইতে ও বড্ড মিস করছে।লোকটা কই আছে কে জানে?ফোন হাতে নিয়ে রোয়েনকে কল দেয়ার চেষ্টা করলো রুহী।কিন্তু কি যেন আটকাচ্ছে ওকে।অনেক কল দেয়ার চেষ্টা করে ও ফোন দিতে পারছেনা রুহী।
ফোনটা জড়িয়ে কাঁদছে রুহী।কেন পারছেনা ও লোকটার খবর নিতে?কই আছে সে?রাগ করে কোথা ও চলে যায়নি তো?ভাবতে ভাবতে চোখে ঘুম নেমে আসে ওর।
বিকেলে ঘুম ভেঙ্গে যায় রুহীর। রোয়েন ঘরে ফিরেনি এখনো।রুহীর তো সময়ই কাঁটছেনা।কি করবে ও?বিছানা গোছাতে শুরু করলো রুহী।বালিশ উঠাতেই সাদা একটি কাগজে চোখ চলে যায় ওর।কাগজটি হাতে নিয়ে খাটে বসে পড়লো রুহী। কাগজটি খুলেই বুঝতে পারলো একটা চিঠি রোয়েন লিখেছে ওকে।
চিঠিটি খুলে পড়তে থাকে রুহী।
মায়াবতী,
আজ সকালে তোমার ঘুমন্ত মুখটা দেখে ভীষন মায়া লাগে।আবার রাগ হলো নিজের ওপর।কি করে তোমায় কষ্ট দিলাম।জানো নিজে ও কম কষ্টে ছিলাম না।প্রত্যেকটা রাত তোমায় একটা নজর দেখার অপেক্ষায় ছিলাম।তোমায় কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্য ছিলো না আমার।তবে আমি ছিলাম অসহায়। কষ্ট না দিয়ে ও উপায় ছিলোনা।যে বিকেলে তোমার সাথে ব্রেকআপ করি সেদিন সকালে ঘরে ফিরে জানতে পারি আমায় পাকিস্তানে যেতে হবে।কিছু অসহায় বাঙ্গালী মেয়েদের পাচার করা হচ্ছে।পাচার কাজ বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ থাকলে তোমাকে দূরে সরিয়ে দিতাম না।পাকিস্তান থেকে ফিরতে পারবো কিনা জানতামনা।কারন সেখানে আরো অনেক ফরেইনার মাফিয়ারা ছিলো যারা আমার চেয়ে আরো অনেক পাওয়ারফুল।যেহেতু আমার দেশের মেয়েরা তাই আমাকেই যেতে হয়েছে সেখানে।এবং সেখানেই এক সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম আমি।প্রত্যেকটা রাত মরন যন্ত্রনায় কাঁটিয়েছি আমি।তোমাকে মিশনের কথাটা জানাইনি কারন আমাকে যেতেই দিতে না তুমি।আর কিছু যদি হয়ে যেতো আমার তাহলে নিজেকে কিভাবে সামলাতে তুমি।যতোবারই আমার বাসা ছেড়ে নিজের বাসায় গিয়েছিলে ততোবারই কেঁদেছিলে তুমি।তাই তোমার সাথে দূর্ব্যাবহার করি। যা না তা শুনিয়ে দেই।যেন আমাকে ঘৃনা কর তুমি।তাহলে হয়ত আমার মৃত্যুটা তোমায় অতোটা কষ্ট দিতোনা।সেদিন রাতে তোমার এতো গুলো কল দেখে বুঝে গিয়েছিলাম আমায় ছাড়তে পারবেনা তুমি।তাই রেকর্ড করে কথা গুলো পাঠিয়ে ছিলাম।
তোমার সাথে সম্পর্কের পর নতুন প্রান পেয়েছি আমি।শতো দুঃখ কষ্ট ভুলে শুধু তোমাকেই ভালোবেসেছি আমি।তোমাকে পেয়ে আমি সব পেয়ে গেছি রুহী।প্লিজ ভুল বুঝোনা আমায়।কথা দিয়েছিলাম নিজের রানী করে রাখবো।সে স্বপ্ন অবশ্যই পূরন করবো।রুহী কাঁদতে শুরু করেছে।চোখ মুছে আবার ও পড়তে লাগলো চিঠিটা।খুব জলদি সেই স্বপ্ন পূরন হবে।আজ খুব স্পেশাল একটা দিন আমাদের জন্য।এ দিন টাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চাই আমাদের জীবনে।আলমারিতে একটা প্যাকেট রাখা আছে।সেটা পরে ঠিক ১১.৫৫ তে ছাদে চলে এসো।তোমার অপেক্ষায় থাকবো।
ইতি
তোমার প্রিন্সচার্মিং
রুহী চিঠিটা বুকে জড়িয়ে রেখে কাঁদছে।অজান্তে রোয়েনের প্রতি তীব্র অভিমানের সঞ্চার হয়েছিলো রুহীর মনে।আজ তা পানি হয়ে গেলো এই চিঠিটা পড়ে।
রুহীর ভীষন খারাপ লাগছে।রোয়েন হাসপাতালে ও ভর্তি ছিলো।লোকটা দিনের পরদিন কষ্ট করে গেছে। আর রুহী ওকে বুঝলোনা।আলমারি খুলে প্যাকেটটি হাতে নেয় রুহী।বুকে জড়িয়ে রাখে প্যাকেটটিক।রাত ১১টায় রুহী রেডি হয়ে যায়।ডার্ক ব্লু কালারের একটি সোল্ডার অফ গাউন তার সাথে মিলিয়ে ছোট্ট একটি ব্যাগ আর কিছু অর্নামেন্টস।সেগুলো পরে রেডি হয়ে যায় রুহী।ওর মনে পড়ছেনা আজ কি।রোয়েন বলছিলো ওদের স্পেশাল দিন।কি সে স্পেশাল দিনটা?ভাবতে থাকে রুহী।
১১.৫৫
রুহী ছাদে আসতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।পুরো ছাদটা যেন ডার্ক প্যালেসে পরিনত হয়েছে।লাইটিং করা।পুরো ছাদ জুড়ে কিছু মশালের মধ্যে আগুন জ্বলছে।বেলুন ছড়ানো পুরো ছাদে।রুহী চোখ ঘুরিয়ো ছাদটাকে দেখতে থাকে।হঠাৎ ওর খেয়াল হলো রোয়েন কি এখানে আছে নাকি ও একাই?হঠাৎ কেউ রুহীর কোমড় জড়িয়ে ওর খোলা কাঁধে ঠোঁট ছুঁয়ালো।
সামনে চলো।কানে ফিসফিসিয়ে বলল রোয়েন।রুহী আশেপাশে না তাকিয়ে হাঁটতে লাগলো।রুহীকে নিয়ে ছাদের একদম কোনায় চলে আসে রোয়েন।একহাত রুহীর চোখের ওপর রেখে অন্য হাত নাড়িয়ে কোন একটা ইশারা করলো রোয়েন।এরপর আস্তে আস্তে রুহীর চোখ থেকে হাত সরালো।চোখ খুলো রুহীর কানে বলল রোয়েন।রুহী চোখ খুলল ধীরে ধীরে।আকাশের মাঝে হলুদ আলোর মতো কিছু টা ভেসে উঠলো।রুহীকে অবাক করে দিয়ে Happy Anniversary লেখাটি উঠলো একটি একটি অক্ষর করে।পরক্ষনেই রুহীর মনে হলো আজ ওদের রিলেশনের একবছর পূর্ন হলো।বেশ কিছুক্ষন লেখটি থেকে আবার মিলিয়ে গেলো।রুহীর কানে কানে রোয়েন বলল Happy anniversary of our one year relationship.রুহী পিছন ফিরে রোয়েনকে জড়িয়ে কেঁদে দিলো।রোয়েন ওর মায়াবতীকে জড়িয়ে ধরে আছে।সরি জান আর কষ্ট দিবোনা।বলে উঠলো রোয়েন।রুহীকে নিয়ে কেকের সামনে এলো ওরা।ডার্ক ফরেস্টের বেশ বড় একটি কেক ওদের সামনে।আর একটা শ্যাম্পেইন। কেক কাঁটা হলো।একে অপরকে কেক খাইয়ে দিলো ওরা।রোয়েন দূটো গ্লাসে অল্প করে শ্যাম্পেইন ঢাললো।
আমি ড্রিংক করিনা।বলে উঠলো রুহী।অল্প একটু খাও।বলে উঠলো রোয়েন।গোলটেবিলটার দুইপাশে বসলো ওরা।হালকা ড্রিংক করলো দুজনে।রোয়েন রুহীর হাতের ওপর হাত রেখেছিলো ড্রিংকের সময়।ড্রিংক শেষ হলে রুহীর হাত ধরে ছাদের মাঝে আসে ওরা।এখানে ফোম বিছানো আছে।শোও এখানে।বলে উঠলো রোয়েন।রুহী শুয়ে পড়লো।রোয়েন রুহীর পাশে শুয়ে রুহীকে বুকের মাঝে নিয়ে নিলো।তোমাকে ছাড়া কটা দিন কিভাবে কেঁটেছে বুঝাতে পারবোনা আমি।বলে উঠলো রোয়েন।
যেটা চলে গেছে সেটাকে গেছে।বর্তমানটাকে নিয়ে ভাবি আমরা।আর যা হয়েছিলো সেটা একটা পরীক্ষা ছিলো আমাদের জন্য।এই দূরত্বে তোমার জন্য আমার ভালোবাসা এতটুকু ও কমে নি।আমার বিশ্বাস ছিলো ফিরে আসবে তুমি।প্রত্যেকটাদিন রাত তোমার অপেক্ষায় কাঁটিয়েছি।জানতাম কখনো ধোঁকা দিতে পারোনা আমায়।খুব ভালোবাসি রোয়েন।অনেক বেশি ভালোবাসি।কথা গুলো বলে রোয়েনের গালে চুমু দিয়ে রোয়েনের ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ায়।রুহীকে নিচে দিয়ে ওর ওপর নিজের ভর দেয় রোয়েন।রুহীর রসালো ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে রুহীকে নিয়ে সুখের সাগরে ভেসে যায়।রুহীর ঠোঁট জোড়ার মাঝে রোয়েনের ঠোঁট আবেশে প্রবেশ করছে।রোয়েনের কোটের হাতা খামচে ধরেছে রুহী।রুহীর ঠোঁট থেকে সরে আসে ওর গলায় মুখ ডুবায় রোয়েন।
তোমার থেকে আর দূরে রাখতে পারছিনা আমি।মেরি মি রোয়েন।আমি তোমাকে চাই।
রোয়েন মাথা উঠালো।বিয়ে করবে আমায়?হুম রুহী চোখ বুজে বলল।ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে উঠে রোয়েনের।আবার ও হারিয়ে যায় সুখের জগতে।
চলবে