Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 28

রুহী রোয়েন আর রুপন্তীকে ওদের রুম দেখিয়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায় রেহান।দুপুরে সবাই একসাথে লাঞ্চটাও সেরে নিলো।রুপন্তী রেহানের দিকে বারবার তাকাচ্ছে।কিছু বলতে চেয়ে ও পারছেনা কি যেন একটা আটকাচ্ছে ওকে।দম বন্ধ হয়ে আসছে ওর।
ভাইয়া পাশেই একটা পার্ক আছে”ব্লাক ফার্ন”।অনেক জোস।আর এখন স্নো ফল হচ্ছে আরো ভালো লাগবে।চলেন যাই।বলে উঠলো রেহান।ব্ল্যাক ফার্নের কথায় রোয়েন বাঁকা হাসি দিলো।মেডিকেলে পড়ার সময় ওটাতে বন্ধুরা স্কেটিং করতো। তখন কার সময় গুলো ওর লাইফের গোল্ডেন পার্ট।ভাবতে থাকে রোয়েন।রুহী যাবি?বলে উঠলো রেহান।হুম যাওয়া যায় ভাইয়া।কি বলিস রুপন্তী?রুপন্তী মন খারাপ করে বসে আছে।তোমরা যা ভালো মনে করো। মন খারাপ করে কথা গুলো বলে রুমে চলে গেলো রুপন্তী।বিকেলে সবাই বেরিয়ে গেলো ব্ল্যাক ফার্ন পার্কের উদ্দেশ্যে।রুহী কালো সুয়েটার কালো জিন্সপ্যান্ট আর কান টুপি পরে নিয়ে রুপন্তী ডার্ক ব্লু সুয়েটার ব্ল্যাক জিন্সপ্যান্ট আর কানটুপি পরেছে।রোয়েন ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট,কানটুপি আর ব্ল্যাক ডেনিমপ্যান্ট আর রেহান সাদা রং এর সুয়েটার আর ব্লু ট্রাউজার সাথে কানটুপি তো আছেই।ব্লাক ফার্ন পার্কে পৌছুতে ঘন্টাখানেক সময় নিলো।পার্কে পৌছুতেই রুহী দুহাতের আঙ্গুল গোল করে মুখের সামনে নিয়ে চিৎকার দিলো। রোয়েন চোখ রাঙ্গালো রুহীর দিকে।রুহী ও ঠোঁটটাকে কিসের মতো করে নিলো রোয়েনের দিকে।রোয়েন হালকা কেঁশে অনদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
ভাইয়া সামনে চলেন।বলে উঠলো রেহান।
হুম চলো।সবাই সামনে আগাতে লাগলো।রোয়েন ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া পাচ্ছে।হাতের আঙ্গুল গুলো রোয়েনের হাতের পাতায় বিচরন করছে।সামনে তাকিয়ে বাঁকা হেসে হাতটাকে জোরে চেপে ধরলো।
আহ।চোখ বুজলো রুহী।অতো দুষ্টমি করোনা।এর মিষ্টি ফল সইতে পারবেনা।কানের মাঝে ফিসফিসিয়ে বলল রোয়েন।
রুহী চোখ খুলে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসলো।রোয়েন সামনে তাকিয়েই হেসে রুহীর হাত ধরে হাঁটতে থাকলো।সুযোগ পেয়ে রেহানের পাশে এসে হাঁটছে রুপন্তী।
শুনুন।বলছিলাম কি সরি।রেহানের একটু কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলল রুপন্তী।
রেহান নিজের মতো হেঁটে যাচ্ছে।
জানি আমার কথা শুনছেন আপনি।আপনার সাথে অনেক কথা আছে আমার।
লিসেন তোমার সাথে কোন কথা বলার মুড আমার নেই।ঘুরতে এসেছো ঘুরো।আর ঘুরা শেষ হলে চলে যাও এ্যাজ সুন এ্যাজ পসিবল।রুপন্তীর দিকে একটু ঝুঁকে দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো বলে উঠে সামনে চলে গেলো রেহান।
পাশে কিছু কাপল দেখা যাচ্ছে।রুহী হা করে ওদের দেখছে।কিরকম ড্রেসিং করে আছে মেয়ে গুলো এতগুলো লোকের সামনে ছিহ!!!একটা উড়নাও পরেনি।আরে বাপ টাকার অভাব আছে নাকি তোদের?একটা উড়না কিনতে কতোইবা লাগে? ২০০ কি ৩০০। নিউমার্কেটে তো দেড়শ এর মধ্যেই সুন্দর উড়না পাওয়া যায়।অবশ্য ওরা নিউমার্কেট কি করে চিনবে?ভাবতে থাকে রুহী।
কি দেখছো এভাবে?দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন করলো রোয়েন।কিছু বলতে গিয়ে ও চুপ হয়ে গেলো রুহী।রোয়েন রুহীর হাত ধরে জোরে হেঁটে চলে গেলো।রুপন্তী একটা কাপলকে বেশ কিছু সময় ধরে ফলো করছে।খুব রোমান্টিক মুডে আছে তারা।রুপন্তী ওদের কে দেখে রেহানের দিকে তাকালো।রেহান রোয়েনের সাথে কথা বলায় মশগুল।একটা জায়গায় এসে থামলো ওরা।অনেকেই স্কেটিং করছে।ভাইয়া স্কেটিং করবেন?প্রশ্ন করে উঠলো রেহান।রোয়েন রেহানের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিলো।কিছুক্ষন পর রেহান জোরে জোরে চিৎকার করে স্কেটিং এর মজা নিচ্ছে।রোয়েন বিভিন্ন ভাবে ঘুরে ঘুরে স্কেটিং করছে।স্কেটিং করতে করতে এক পর্যায়ে পাহাড়ের মাঝে উধাও হয়ে গেলো রোয়েন।পাহাড় টা এতোই উঁচু আজ পর্যন্ত কেউ এটা থেকে নামতে পারেনি।রেহানও কখনো সাহস করে নি।রোয়েন!!!!!জোরে চিৎকার করে উঠলো রুহী।চোখ জোড়া পানিতে ভিজে গেছে রুহীর।রেহান নিজে ও ভয় পেয়ে গেছে।তবে এ মুহূর্তে নিজেকে শক্ত রেখে রুহীকে সামলাতে হবে।রুহী দৌড়ে সামনে যেতে লাগলো।রুহীর প্রত্যেক পাড়ায় বরফ গুলো লাফিয়ে লাফিয়ে পড়ছে।রোয়েন!!!! রোয়েন!!!!কই তুমি।তাল সামলাতে না পেরে বরফের ওপর মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো রুহী।বরফ থেকে মাথা উঠাতেই রোয়েনকে দেখতে পেলো রুহী।স্কেট শু হাতে নিয়ে ভ্রু কুঁচকে রুহীর দিকে এগিয়ে আসছে রোয়েন।।
রুহীর হাত ধরে উঠাতেই রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলো রুহী।কই গিয়েছিলে?কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।রুহীকে সামনে আনলো রোয়েন।আম ওকে।প্লিজ কেঁদোনা রুহী।মুচকি হাসে রুহী।লোকটা চোখের আড়াল হতেই জানটা যেন বেরিয়ে যাচ্ছিলো ওর।
উহু উহু গলা পরিষ্কার করলো রেহান।রুহী রোয়েন কে ছেড়ে সামনে তাকালো।
আমি কিছু দেখিনি।হাত নেড়ে বলল রেহান।রোয়েন হেসে রেহানের মাথায় হাত বুলালো।ওরা আবার হাঁটতে লাগলো।হঠাৎ রোয়েনের হাতে টান পড়লো।
ভ্রু কুঁচকে পিছনে তাকালো রোয়েন।রুহী রোয়েনের হাত ধরে উপরে তাকালো।রোয়েন উপরে তাকায়।ক্যাবল কার চলছে।রুহী!!!!গম্ভীর গলায় ডাকলো রোয়েন।আমি চড়বো।বলে উঠলো রুহী।রোয়েন রুপন্তী আর রেহানের দিকে তাকালো।ওরা মাথা নাড়লো।ওরা ও উঠবে।সুযোগ সমেত রুপন্তী রেহানের সাথে উঠে পড়লো।রেহান নাও করলোনা তবে রুপন্তীর সাথে কথা ও বললনা।
গাড়িটা চলতে লাগলো। রোয়েনের বুকের সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে রুহী।রোয়েন মুচকি হেসে বাহিরে তাকিয়ে আছে।রোয়েনের গাল ধরে নিজের দিকে ফিরালো রুহী।রোয়েন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে রুহীকে দেখছে।বুঝতে পারছোনা কেন এটায় উঠেছি?মাথা নিচু করলো রুহী।
কেন?ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।রোয়েনের হাতজোড়া নিজের কোমড়ে রাখলো রুহী।এটায় উঠার একটা কারন তোমাকে একাকী পাওয়ার।আর এখন যখন পেয়েছি তাহলে তোমার ভালোবাসার পরশ গুলো ও চাই।প্লিজ লাভ মি।রুহী চোখ বুজে বলল।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর গাল ধরে ওর রসালো ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট ডুবালো।রুহী রোয়েনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।অনেক অপেক্ষার পর কোন আকাঙ্খিত বস্তুু পাওয়ার অানন্দ রুহী পাচ্ছে।ওর মাঝে বেশ উত্তেজনা কাজ করছে।যার কারনে রোয়েনকে চুমু দিতে পারছেনা।ওর ঠোঁট জোড়া রোয়েনের ঠোঁটের মাঝে থরথর করে কাঁপছে।রোয়েন আরো জোরে রুহীর ঠোঁট নিজের ঠোঁটের মাঝে চেপে ধরেছে।রুহীর অনুভূতী গুলো অনুভব করতে পারছে রোয়েন।রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে আরো কাছে চলে এসেছে রুহী।প্লিজ আমার কথা শুনুন।বলে উঠলো রুপন্তী।রেহান গ্লাসে মাথা দিয়ে চোখ বুজে আছে।এ মুহূর্তে কোন কথা বলার ইচ্ছা নেই ওর। রেহানের হাত ধরতেই রুপন্তীর হাত ঝাড়ি মেরে ফেলে দিলো রেহান।ডোন্ট টাচ মি।চোখ বুজে রাগী গলায় বলল রেহান।ক্যাবল কারের জানালা খুলতেই রুহী সরে এলো রোয়েন থেকে।পুরো রাইডেই ওরা একে অপরের ঘ্রানে মিশে ছিলো।
আগের গেইট দিয়ে না বের হয়ে আরেকটি গেটের দিকে হাঁটতে লাগলো ওরা।রেহানের মুখ কঠিন হয়ে আছে।বুঝাই যাচ্ছে ভীষন রেগে আছে রেহান।গেইট থেকে বেরিয়ে একটু হাঁটতেই রোয়েন দাঁড়িয়ে পড়লো।৩৩ তলা মেডিকেলটির দিকে তাকিয়ে আছে রোয়েন।চোখের কোনা বেয়ে অজান্তেই অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।হাতে টান পড়তেই পিছনে তাকালো রুহী।ভালবাসার মানুষটির চোখে পানি দেখে বুক কেঁপে উঠলো রুহীর।রোয়েনের কাঁধে হাত রাখলো রুহী।কি হয়েছে?প্রশ্ন করলো রুহী।রুহীর ডাকে ঘোর কাঁটলো রোয়েনের।চোখের কোনা মুছে নিলো রোয়েন।উহুম কিছুনা।বলে উঠলো রোয়েন।কাঁদছিলে কেন?(রুহী)
এমনি।কিছু মনে পড়ে গিয়েছিলো।বলে উঠলো রোয়েন।রেহান এতক্ষন অবাক চোখে রোয়েন কে দেখছিলো।কিছু বলতে যাবে তখনই রোয়েন বলল বাসায় যাওয়া যাক?
হুম অবশ্যই।বলে উঠলো রেহান।
বাসায় চলে এলো ওরা।ডিনার সেড়ে যে যার রুমে চলে গেলো।রোয়েন খাটে আধশোয়া হয়ে বসে আছে।ওর চোখ জোড়া জানালার দিকে স্থির।হঠাৎ দুটো হাত রোয়েনের পিঠের মাঝে আড়াআড়ি ভাবে জড়িয়ে ধরলো।রোয়েন এপাশে ফিরে নিচে তাকালো।রুহীর মাথায় হাত রাখলো।রুহী ভিজা চোখে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।
রোয়েন ভ্রু কুঁচকালো।মাঝে মাঝে রুহীকে বুঝেনা ও।কান্নার কারন কি রুহীর?বুঝতে পারছেনা রোয়েন।
আই লাভ ইউ।বলে উঠলো রুহী।
রোয়েন কিছু না বলে রুহীকে শুইয়ে ওর ওপর ভর ছেড়ে দিলো নিজের।রোয়েনের দুগালে হাত রাখলো রুহী।রোয়েন রুহীর জামার ভিতর দিয়ে পেট স্পর্শ করলো।রুহীর ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো।রোয়েন রুহীর গলায় আলতো করে দুতিনটে চুমু দিয়ে ওর বুকে মাথা রাখলো। রোয়েনের চোখের কোনা বেয়ো পানি গড়িয়ে পড়ার অপেক্ষা।ঠোঁট কামড়ে অশ্রু সংবরন করলো রোয়েন।আজ প্রিয়তমার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে মন চাইছে ওর।অস্ট্রিয়ায় আসার পর থেকে প্রিয় মুহূর্ত প্রিয় জিনিস গুলো ওর সামনে এসে পড়ছে।
জানো আমার ও একটা জীবন ছিলো।খুব সুখের।একটা পরিবার ছিলো।অন্তঃসত্ত্বা মা ছিলো আর!!থেমে গেলো রোয়েন।
আর!!!!(রুহী)
রুহীর বুকে চুমু খেয়ে রুহীকে শক্ত করে জড়িয়ে বুকের ওপর মাথা রাখলো রোয়েন।
আর????রুহী আবার ও জিজ্ঞেস করলো।
এখন আমি ওসব কিছুই বলতে পারবোনা রুহী।রুহীর থেকে সরে এসে উঠে বসলো রোয়েন।রুহী উঠে বসলো।রোয়েন অন্যদিকে ফিরে বসে ছিলো।এবার রুহীর দিকে তাকিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো।কি হলো?(রুহী)
কাঁদছে রোয়েন।”জানো খুব কষ্ট হয়।কেন হয় বলতে পারবা?আমি ও মানুষ আমার ও হৃদয় আছে রুহী,আমি ভালোবাসি জীবনটাকে।পরিস্থিতির কারনে আজ এমন আমি।প্লিজ আমাকে মুক্তি দাও রুহী।আমি মুক্তি চাই,এই জীবন থেকে মুক্তি চাই।পারবে তুমি? বলোনা পারবে?রুহী কিছুই বুঝতে পারছেনা।তারপর ও রোয়েনের কান্না ওকে কষ্ট দিচ্ছে,ওর হৃদয়কে আঘাত করছে।রোয়েনকে সামলাতেই বলল পারবো আমি।
চলবে