Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 18

Do as your wish.কথাটি বলে রুহীর হাত নিজের গলা থেকে ছাড়িয়ে রুম থেকে চলে গেলো রোয়েন।রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বড় নিশ্বাস ছাড়ে রুহী।রোয়েন রাগ করে চলে গেলো?ভাবতেই কষ্ট লাগছে ভীষন।ঐদিন রোয়েন রুহীর সামনে আসেনি একবারের জন্য ও। খুব খারাপ লাগছিলো রুহীর।লোকটা বুঝেনা কেন?বয়স ঠিকই হয়েছে আক্কেল এতটুকুও হয়নি।রুহী নিজে ও রোয়েনকে খুব বেশি মিস করবে।লোকটার নেশায় জড়িয়ে রাখতে চায় ও নিজেকে।লোকটাকে ছাড়া একটা মুহূর্ত ও থাকার কথা ভাবতে পারেনা রুহী।
রাতে রোয়েনের রুমে উকি মারে রুহী।লোকটা একহাতের ওপর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।রুহী কোন কথা বার্তা ছাড়াই রোয়েনের পাশে এসে ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলো।চোখ খুলে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।
মেয়েটা চুপচাপ শুয়ে আছে।রোয়েন একহাত রুহীর পিঠে রেখে জড়িয়ে ধরলো।
দুজনের কারো মুখে কথা নেই।গভীর রাতে রুহী রোয়েনের দিকে তাকায়।ঘুমিয়ে পড়েছে রোয়েন।নিজেকে আর সামলাতে না পেরে কেঁদে দিলো রুহী।
চোখটা বন্ধ করে শুয়ে ছিলো রোয়েন।রুহীর কান্নায় চোখ খুলে তাকায় রোয়েন।রুহীকে আর ওপরে টেনে নিয়ে ওর মাথায় চুমু খায় রোয়েন।
আপনি কেন এমন করছেন?আপনি কি মনে করছেন আমি খুশি খুশি বাসায় যাচ্ছি?আমার কি কষ্ট হচ্ছেনা?বুঝেননা কেন কষ্টটা?এভাবে আমাকে ছেড়ে সারাদিন কেমন করে ছিলেন?এই আপনার ভালবাসা।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।রোয়েন কিছু না বলে রুহীকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় নাক রাখলো।পরদিন সকালে আজিজ রায়হান রোয়েনের বাসায় এসে উপস্থিত হয়।রুহী গলায় উড়না জড়িয়ে চুল গুলোকে পিঠের ওপর ছড়িয়ে দিলো।ব্যাগ হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে রুহী।নিচে আজিজ রায়হান আর রোয়েন কথা বলছে।রুহীর বুক ধুকপুক করছে।তাকে এখন চলে যেতে হবে।তার মিঃ কিলার প্রিন্স চার্মিং কে ছেড়ে।
রুহী ধীর পায়ে নিচে নেমে এলো।রোয়েন আর আজিজ রায়হান রুহীর দিকে তাকালো।
কিরে মা রেডি তুই?জিজ্ঞেস করে উঠলেন আজিজ রায়হান।
মাথা ঝাঁকিয়ে রোয়েনের দিকে তাকায় রুহী।রোয়েন মলিন হেসে রুহীর দিকে তাকিয়ে আছে।
আজিজ রায়হান মেয়ের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে রুহীর হাত ধরে সামনে আগায়।রোয়েন সামনে তাকিয়ে রুহীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
রুহী পিছনে ফিরে রোয়েনকে দেখার চেষ্টা করে।ওর রুহী কাঁদছে।রোয়েন পিছনে ফিরে দাঁড়ায়।এভাবে রুহীকে দেখা সম্ভব না।
আজিজ রায়হান মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে বসে।গাড়ি একটু সামনে আগাতেই রুহী চিৎকার করে উঠে বাবা আমি একটু বের হবো।আমার ফোন টা ভিতরে।
ওহ নিয়ে আয় মা।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
রুহী গাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘরের ভিতর ঢুকে রোয়েনকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।আপনাকে ছেড়ে যেতে পারবোনা।প্লিজ বাবাকে যেতে বলুন।
রুহী তুমিনা বুঝাচ্ছিলে আমাকে?আর এখন এতো অবুঝ হচ্ছো কেন?বলে উঠে রোয়েন।
পারছিনা আমি। পারবোনা প্লিজ!!!!! কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।
রোয়েন পিছনে ফিরে রুহীর দুই কাঁধে হাত রাখে।আমি তোমাকে নিতে আসবো।প্রমিজ।
সত্যি তো?কান্না ভরা কন্ঠে বলছিলো রুহী।
হুম জান।নিতে যাবো।রুহীর কপালের মাঝে ঠোঁট বুলিয়ে বলল রোয়েন।
রুহী ঠোঁটে হাসির রেখা ফুঁটে উঠলো।
যাও। তোমার বাবা ওয়েট করছে।বলে উঠলো রোয়েন।
রুহীর মুখে হাসি আর চোখজোড়া জলে ভরে উঠেছে।চোখের পানি ঠোঁটের ওপর গড়িয়ে পড়ছে।রোয়েন আলতো রুহীর ঠোঁটে আঙ্গুল রাখলো।রুহী চোখজোড়া কুঁচকে কাঁদতে লাগলো।
রোয়েন আর অপেক্ষা না করে রুহীর ঠোঁটজোড়া নিজের ঠোঁটের মাঝে নিয়ে নিলো।
গভীর চুম্বনে লিপ্ত হলো দুজনে।রুহী আচমকা চোখে খুলে নিলো।আজিজ রায়হান অর্থ্যাৎ ওর বাবা অপেক্ষা করছে গাড়িতে।রুহী একটু সরে এলো।বাবা অপেক্ষা করছে।ফিসফিসিয়ে বলল রুহী।
রুহীর কথায় রোয়েনের ঘোর কাঁটলো।আসলেই তো আজিজ রায়হান বাহিরে বাহিরে অপেক্ষা করছে রুহীর।
রোয়েন রুহীর হাত ধরে বাহিরে নিয়ে এলো।গাড়িতে তুলে দিয়ে রুহী নজর থেকে দূর হওয়া পর্যন্ত সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো।রুহী নিজের ঠোঁটজোড়াকে মুখের মাঝে গুঁজে দিলো।চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে আছে।
বাসায় পৌছাতেই আনিলা বেগম রুহীকে জড়িয়ে নিলেন বুকের মাঝে।মেয়ের খবর নিলেন বেশ কিছুক্ষন পর্যন্ত।এতোদিন পর মাকে দেখে রুহী ও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছে।আজিজ রায়হান কন্যাদের প্রতি স্ত্রীর এ মিথ্যা ভালোবাসা মেনে নিতে পারছেননা।ঘৃনা জমে গেছে আনিলা বেগমের প্রতি ওনার।তবু ও রুহীর যেন সন্দেহ না হয় সেজন্য স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছেন আনিলা বেগমের সাথে।এভাবে দুইদিন পাড় হয়ে গেলো।এই দুইদিন রুহী সারারাত ভর রোয়েনের সাথে ভিডিও কলে কথা বলেছিলো।দুইদিন পর নির্দিষ্ট সময়ে সাইফ রহমান আর তার স্ত্রী আর পুত্র এসে হাজির হলেন।বিদেশা থাকার সুবিধার্থে তাদের পোষাক আচার আচরনে বৈদেশিক সাংষ্কৃতির পরিচয় ফুঁটে উঠেছে।রুহীর বড় মামী রায়না রহমান ভীষন ভালো মানুষ।খুব অল্প সময়ে বাসার সবার সাথে ওনার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।অপরদিকে সাইফ রহমান ভীষন মজার মানুষ।সবাইকে মোটামুটি হাসি উল্লাসে মাতিয়ে রেখেছেন।কিন্তু রেহান যেখানে রুহীর সাথে ভালো সম্পর্ক অন্যদিকে রুপন্তীর পিছে পড়ে থাকা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে ওর।বয়স আটাশ কিন্তু এখন ও ফজলামো করার অভ্যাস যায়নি।রুপন্তী কে খোঁচানো, রাগানো সব যেন রুপন্তীকে অতিষ্ঠ করে তুলছিলো।রুপন্তীর রাগী চেহারা দেখেই হাসিতে ফেঁটে পড়ছিলো রেহান।মামা মামীর বয়স বুঝা যায়না।দুজনেই খুব স্বাস্থ্য সচেতন।তবে ওনাদের মাঝে ভালোবাসা প্রচুর।বিশেষ করে মামা ভীষন ভালোবাসেন মামীকে।এখন ও ওনার চুল আঁচড়ে দেন চুলে বেনী করে দেন।আর মামী লাজুক লতার মতো লজ্জায় কুঁকড়ে যায়।
এইতো সেদিন মামীর কোলে মাথা রেখে গল্প শুনছিলো রুহী।
জানিস তোর মামার মতো লাইফ পার্টনার সবাই পায়না।হি ইজ রিয়েলি কেয়ারিং এন্ড লাভিং।
সত্যি সে না খুব খেয়াল রাখে আমার।খুবই ভালোবাসে।তখনই রুহীর কানে ভেসে আসে নার্সের বলা কথা গুলো “আপনার হাসবেন্ড খুব ভালোবাসে আপনাকে।আপানাকে ইমার্জেন্সিতে নেয়ার পর ওনার কি কান্না।একটু বসেননি। শুধু হাঁটছিলেন আর কাঁদছিলেন।সারাদিনে ও কিছু খেতে দেখিনি।আর যেদিন ভেগে গেলেন সেদিন পুরো হসপিটাল মাথায় উঠায় নিয়েছিলেন।আমাদের কি বকা!!!এমন হাসবেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার”সাথে বুকের মাঝে কেমন যেন করে উঠে রুহীর।ওনি এখন ও বাচ্চাদের মতো সামলে রাখে আমায়।যেন আমি ওনার বাচ্চা বৌ বলেই এক গাল হাসলেন মামী।রুহী ও হেসে উঠলো।
তো আজিজ রুহীর বিয়ে দিচ্ছো কবে?সাইফ রহমান প্রশ্ন করে উঠলেন।ছেলে ঠিক আছে ভাই।খুবই ভালো বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।হুম, তা কে সে?জিজ্ঞেস করলেন সাইফ রহমান।
রোয়েন চৌধুরী বলে।উঠলেন আজিজ রায়হান।
রোয়েন বললেন সাইফ রহমান।
চলবে