Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 13

কলেজে এসে ও মন বসাতে পারছিলো না রুহী।চোখজোড়া শুধু ভিজে আসছিলো কোন কারন ছাড়াই।বান্ধুবী গুলো ও কেমন নির্লজ্জের মতো চেয়ে আছে রুহীর দিকে যেন ট্রাজেডি হচ্ছে।রুহী বারবার টিস্যু দিয়ে চোখ মুছে যাচ্ছে।কি করবে?বড় অপরাধ বোধ কাজ করছে ওর মাঝে।লোকটাকে কি করে কষ্ট দিলো ও।সে কষ্ট পেয়েছে দেখেই তো কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ফিরেছিলো।বুকটা যেন ফেঁটে যাচ্ছে।চিৎকার করে কাঁদতে পারলে মন টা যেন শান্ত হতো।স্যার ক্লাশ নিচ্ছেন।বয়স্ক মানুষ তাই চোখে ও ভালো দেখেননা কানে ও কম শুনেন।নিশাত, রিমি, দিব্যা বারবার রুহীর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাচ্ছে।সমস্যা কি ওরা বুঝতে পারছেনা।স্যার চলে যেতেই তিনজনে রুহীকে ঘিরে ধরলো।কারন রুহীই ওদের মাতিয়ে রাখে আর যেখানে মেয়েটা এভাবে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে।এগুলো মেনে নেবার মতো নয়।
রুহী কারোর কোন কথার উত্তর দিচ্ছেনা।মাথা নাড়িয়ে বারবার ইশারা করছে কোন সমস্যা হয়নি।কিন্তু বান্ধুবী গুলাও নাছোড়বান্দা।এতো সহজে ওরা ছাড়বেনা।হয়েছেটা কি তারা জেনেই ছাড়বে।রুহী আর সহ্য করতে না পেরে দৌড়ে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে গেলো।দোতালায় রুপন্তীদের ক্লাশ।বোন কে এভাবে দৌড়ে যেতে দেখে রুপন্গী নিজে ও সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।
গাড়ির ভিতর ঢুকে বসে আছে রুহী।কিছুক্ষন পর রুপন্তী ওর পাশে বসে পড়লো।আপি কি হলো চলে এলি যে ক্লাশ করবিনা?
না বাসায় যাবো।মাথা নিচু করে অভিমানী গলায় বলল রুহী।
কিছু হয়েছে কি আপি?তোর চোখে পানি কেন?প্রশ্ন করে উঠলো রুপন্তী।
আর কিছু বললনা রুপন্তী।চুপচাপ বসে রইলো।আঙ্কেল বাসায় চলুন।চিৎকার করে বলে আবার চুপ হয়ে গেলো রুহী।
গাড়ি চলতে আরম্ভ করলো।দুইবোনের কারো মুখেই কোন কথা নেই।রুহী অপর পাশ ফিরে ভিজে যাজয়া চোখ মুছে নিলো।
Hlw doctor charles.
Yes Rehan.How are you?
Fine.Actually mom is not feeling well.Can you come now?
Yeah sure. I am coming in half and hour.
Okay thanks doctor.ফোন কেঁটে শয্যাশায়ী মায়ের দিকে তাকালো রেহান।চোখ জোড়া জ্বলজ্বল করে উঠলো ওর।
ঘরে ফিরে দৌড়ে ঘরে ঢুকে পড়লো রুহী।রুপন্তী ওর পিছু যাওয়ার আগেই দরজা লাগালো রুহী।
এই মেয়েটাকে বুঝা কষ্টদায়ক।কখন মাথায় যে কি চলে বুঝিনা।
আজিজ রায়হান ঘরে ফিরে মেয়েদের দেখে অবাক হয়ে গেলেন।তোরা এখন এসময়ে বাসায়?
বাবা আপু চলে এলো।ওর নাকি ভালো লাগছিলোনা।
বোনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো রুপন্তী।
শরীর খারাপ করেনি তো?রুহীর মাথায় হাত রেখে বললেন আজিজ রায়হান।
আমি ঠিক আছি বাবা।নিচে তাকিয়ে বলল রুহী।তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার লাগিয়ে দিচ্ছি।
আচ্ছা।ঠিক আছে।আজিজ রায়হান রুমে ঢুকে গেলেন।
ফ্রেশ হয়ে তিনজনে একসাথে খাবার সেড়ে যে যার রুমে চলে গেলো।
রোয়েনের ভালো দিক হোক আর খারাপ দিক। সারাক্ষনই রুহীর মন প্রান জুড়ে শুধুই ছিলো রোয়েন।রোয়েনকে ভাবতে ভাবতেই রুহী চোখে ঘুম ভর করলো।
কারোর নিশ্বাস আর ছোঁয়ায় ঘুম ভেঙ্গে যায় রুহীর।তবে চোখ খুলছেনা।ভয় লাগছে ভীষন ভয় লাগছে।কারন
চোখ খুললে তাকে দেখতে হবে।কিন্তু তার সাথে চোখ মিলানোর সাহস টুকুও বেঁচে নেই রুহীর মাঝে।রুহীর গালে গলায় চোখ বুজে ঠোঁট নাক বুলাচ্ছে রোয়েন।
রুহী প্লিজ চলো আমার সাথে।তোমাকে যেতে হবে আমার সাথে।চলো প্লিজ।এক একটা দিন আমার এক একটা যুগের মতো লাগছে। প্লিজ চলো।
প্লিজ চলে যান আপনাকে দেখতে মন চায়না আমার।আপনার চেহারা দেখতে মন চায়না।কেন বারবার সামনে আসেন?চোখ বুজেই কথা গুলো বলছিলো রুহী।
আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে?বলে উঠলো রোয়েন।
আপনার দিকে তাকালে আমার আরো বেশি কষ্ট হয় প্লিজ চলে যান।আরো কিছুক্ষন চেষ্টা করে ও নিজের সাথে নিতে পারলোনা রুহীকে।ঘরে ফিরে গেলো রোয়েন।এরপর আরো বেশ কয়টা দিন কেঁটে গেলো।এর মধ্যে এমন কোন দিন নেই রুহী রোয়েনকে ভেবে বুক ভাসায়নি।রোয়েন খুব মনে পড়ছে ওর।খুব বেশি মনে পড়ছে ওর।বারবার গলায় গালে হাত বুলিয়ে রোয়েনের ছোয়া গুলোকে অনুভব করার চেষ্টা করতো আর কেঁদে বুক ভাসাতো রুহী।
রুহীর হাত ও শুকিয়ে এসেছে।সেলাই খুলতে যাচ্ছে আজিজ রায়হান ও রুহী।মেয়েটা মন মরা হয়ে থাকে সেটা আজিজ রায়হানের ভালো লাগেনা।
হসপিটালে পৌছে যাওয়ার পর একজন নার্স রুহীর ড্রেসিং করাতে নিয়ে এলো।
নার্সটা ঐদিন ও ছিলো যেদিন রুহী ভর্তি হয়ে ছিলো।মহিলাটা মুখে মিষ্টি হাসি ফুঁটিয়ে বললেন সেদিন কই চলে গিয়েছিলেন
বাসায় গিয়েছিলাম।বলে উঠলো রুহী।
আপনার হাসবেন্ড খুব ভালোবাসে আপনাকে।আপানাকে ইমার্জেন্সতে নেয়ার পর ওনার কি কান্না।একটু বসেননি। শুধু হাঁটছিলেন আর কাঁদছিলেন।সারাদিনে ও কিছু খেতে দেখিনি।আর যেদিন ভেগে গেলেন সেদিন পুরো হসপিটাল মাথায় উঠায় নিয়েছিলেন।আমাদের কি বকা!!!এমন হাসবেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।এক নাগাড়ে কথা গুলো বললেন মহিলা।
রুহীর চোখের কোনা ভিজে এসেছে।সে কি করেছে বুঝতে পারছে।কি করবে ও?কেন এমন করেছিলো।লোকটা তো ওর জন্যই এতো কিছু করলো।আর ও?আর ভাবতে পারছেনা রুহী।ঠিক তখনই গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেলো রুহী।আজিজ রায়হান দৌড়ে রুমে ঢুকে পড়লেন।রুহী বাবাকে দেখে দাড়িয়ে পড়লো।
সর্বনাশ হয়ে গেছেরে মা।বলে উঠলেন আজিজ।
কি হলো বাবা?আজিজ রায়হান কিছু না বলে মেয়ের হাত ধরে টেনে বেরিয়ে এলেন।কি করবেন বুঝতে পারছেননা।হাসপাতালের বাহিরে স্করপিয়নরা ঘিরে ধরে আছে।ভিতরে ও ঢুকে পড়ছে।মেয়েকে নিয়ে এক চিপায় ঢুকে পড়লেন আজিজ।
বাহিরে ভীষন গোলাগুলি হচ্ছে।রুহীর ভীষন ভয় হচ্ছে কি করবে এখন ওরা?
অবস্থা বেগতিক দেখে ফোন বের করে রোয়েনকে কল দিলেন আজিজ রায়হান।
হ্যালো।অপর পাশ থেকে বলে উঠলো রোয়েন।
হাসপাতালে এসেছিলাম রুহীকে নিয়ে।কিন্তু স্করপিয়নরা ঘিরে ধরেছে পুরো হাসপাতাল।কথা পুরো শেষ না হতেই অপর পাশ থেকেই কল কেঁটে দিলো রোয়েন।
হ্যালো!!! হ্যলো কল কেঁটে দিলো!! বিস্ময়কর দৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলেন আজিজ।
বাবা!! ওরা আমাদের মেরে ফেলবে?বাবার দিকে তাকিয়ে ভয় ভয় কন্ঠে বলে উঠলো রুহী।
কিছু হবেনা মা।আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখ।
মেয়েকে জড়িয়ে বললেন আজিজ।
হঠাৎ কালো কোট ওয়ালা একজন লোক ওদের কাছে এগিয়ে।চোখে সানগ্লাস, মুখ ভর্তি দাঁড়ি।
আমার সাথে আসুন।লোকটা আজিজ রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো।
রুহী লোকটার দিকে তাকিয়ে আছে।কেন জানি ওর মন বলছে লোকটা রোয়েন।রুহী আর আজিজ রায়হানকে নিয়ে একজায়গায় দাঁড় করালো লোকটা।আমি যখন ইশারা করবো।তখন আপনারা দৌড় দিবেন মেইন গেটের দিকে।যাই হয়ে যাক আশেপাশে তাকাবেন না।ফিসফিস করে আজিজ রায়হানকে কথা গুলো বলে রুহীর দিকে এক নজর তাকালো লোকটা।তারপর সরে গিয়ে নিজের দাঁড়ি আর সানগ্লাস খুলে নিলো রোয়েন।তাহলে স্করপিয়নদের মন ওর দিকে ড্রাইভার্ট হলে রুহী আর আজিজ বেরিয়ে যেতে পারবে।শুরু হয়ে গেলো গোলাগুলি।হঠাৎ রুহীর চোখের সামনে রোয়েনের কাঁধে গুলি লাগলো এসে।রোয়েন হাত দিয়ে ইশারা করলো আজিজ রায়হানকে রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে যেতে।
রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুহী চল।বলে উঠলেন আজিজ।
না বাবা আমি যাবোনা।কান্না করে দিয়ে বলল রুহী।
পাগলামী করিসনা রুহী চল।মেয়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলেন আজিজ।
রুহী পিছনে ফিরে বারবার রোয়েনকে দেখছে।ঠিক তখন আরেকটা গুলি রোয়েনের হাতের মাংসপেশী বরাবর লাগলো।রুহী পিছনে ছুটে যেতে চাইলে আজিজ মেয়েকে জোরে টেনে নিয়ে গেলেন।
চলবে