Love Right ! Part- 25
রুশা সোফায় বসে আছে।নীল ওর মুখোমুখি বসেছে।ইশু আর আয়াত নীলের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে।নিশুকে সিডেটিভ দেওয়া হয়েছে ও ঘুমোচ্ছে।
রুশা:কি হয়েছে নীল?হঠাৎ করে আমাকে ডেকে পাঠালে যে?
নীল:নিশু তোমার রুমে গেলো কি করে?
নিমিষেই রুশার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো।
নীল:কি হলো চুপ করে আছো কেন?
রুশা অবাক হওয়ার ভান করে বললো..আমার রুমে মানে?
নীল:হ্যাঁ তোমার রুমে।
রুশা:আমি কি করে বলবো?ও হয়ত আমাকে ফাঁসানোর জন্য ঢুকেছে।
ইশু বিড়বিড় করে আয়াতকে বললো..ইচ্ছে করছে একটা ঘুষি মেরে ওর মুখটা ভোঁতা করে দেই।
আয়াত:একটুপর নীলই ওর বারোটা বাজাবে।
নীল ভ্রু কুঁচকে রুশার দিকে তাকালো।
নীল:তোমাকে ফাঁসানোর জন্য?
রুশা:হ্যাঁ!তুমি নিজের চোখেই তো দেখলে ও আমার সাথে কীভাবে অসভ্যতা করে!
নীল:ওর হাত পা বাধা ছিলো রুশা!ও নিশ্চই নিজের হাত পা বেধে বসে থাকবে না?
রুশা:আশ্চর্য তুমি আমাকে এত প্রশ্ন করছো কেন?আমি কি করে জানবো?
নীল:কারন ওকে আমি তোমার রুমেই হাত পা বাধা অবস্থায় পেয়েছি।
রুশা:তো?
নীল:তো মানে?..ও তোমার রুমে হাত পা বাধা অবস্থায় ছিলো আর তুমি বলছো তো?
রুশা:হ্যাঁ!ছিলো কিন্তু তুমি এত ব্যস্ত হচ্ছো কেন নীল?ঐ মেয়েটা তোমার সাথে কি করেছে তুমি ভুলে গেছো?..নাকি এরপরও তুমি ওকে ভালোবাসো?
নীল:হ্যাঁ বাসি!
মুহূর্তেই রুশার চোখমুখ রাগে লাল হয়ে গেলো।ও রাগে চিৎকার দিয়ে বললো…নিশু!নিশু!নিশু!কি পেয়েছো তুমি ঐ মেয়েটার মধ্যে?এতকিছুর পরও নিশু!যে তোমাকে ধোঁকা দিয়েছে,এতগুলো দিন যার কারনে তুমি আমাদের সবাইকে ছেড়ে দূরে ছিলে তাকে এখনো কি করে তুমি ভালোবাসতে পারো নীল?
নীল:আস্তে কথা বলো রুশা!নিশু ঘুমোচ্ছে।
রুশা:আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
নীল:কারন আমি জানি আমার নিশু আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসতেই পারে না।
রুশা:ভুল জানো তুমি!এই মেয়েটা তোমাকে আবার ফাঁসাচ্ছে নীল।
নীল:আমি তোমাকে যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও!নিশুকে তুমি আটকে রেখেছিলে?
রুশা:হ্যাঁ আমি আটকে রেখেছি।ঐ মেয়েটাকে আমি সহ্য করতে পারি না!(রাগে চিৎকার দিয়ে!)
নীল রাগে হাতের মুঠো শক্ত করে বললো..তোমার এতবড় সাহস কি করে হলো রুশা?
রুশা:বললাম তো ওকে আমি সহ্য করতে পারি না।
নীল রাগে পাশে থাকা ফুলের টবটা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেললো।
ইশু:ভাইয়া তুই জানিস ওই নিশুকে ফোর্স করেছিলো তোকে মিথ্যে বলার জন্য।সুইসাইড করার হুমকি দিয়েছিলো।
নীল অবাক হয়ে ইশু মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়াত:হ্যাঁ নীল!আসলে এই মেয়েটাই যত নষ্টের মূল।নিশু ভয় পেয়ে গিয়েছিলো যদি ও সত্যি সত্যি কিছু করে বসে।পরে বুঝতে পেরেছিলো তুই রুশাকে বারন করায় ওর জেদ চেপে গিয়েছিলো তোকে পাওয়ার জন্য।তাই ও নিশুর পেছনে লেগেছিলো।
নীল:তোরা আমাকে আগে বলিস নি কেন?
আয়াত এবার রুশার দেওয়া শর্তের কথা নীলকে সব খুলে বললো।
নীল:লজ্জা করলো না তোমার এসব করতে?
রুশা:যা বেশ করেছি!
নীল রাগে ওর গালে কষে এক চড় বসিয়ে দিয়ে বললো..তুমি মেয়ে না হলে বুঝিয়ে দিতাম তুমি নীলাস হাসানের কলিজায় হাত দেওয়ার শাস্তি কি হতে পারে।নির্লজ্জ বেহায়া মেয়ে একটা!
রুশা এবার অসহায় চোখে ইশুর দিকে তাকালো।
ইশু ওর দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললো…লজ্জা থাকলে আমার মুখে নিবে না তুমি!
নীল আয়াতকে পুলিশে খবর দিতে বলে উঠে নিশুর কাছে চলে গেলো।
নিশু বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।নীল গিয়ে আস্তে করে ওর পাশে বসলো।বুকের ভেতরটা তছনছ হয়ে যাচ্ছে।ওর আরো আগেই বোঝা উচিৎ ছিলো নিশু কেন রুশার সাথে এমন করতো!অসভ্য মেয়েটার জন্য এতগুলো দিন কত কথাই না শুনেছে নিশু অথচ একটা মুহূর্তের জন্যেও নিজেকে নীলের কাছ থেকে আলাদা করে নি!নিজের ওপর বড্ড জেদ হচ্ছে নীলের।
ইশু আর আয়াত ভেতরে ঢুকতেই দেখলো নীল ছলছল চোখে নিশুর দিকে চেয়ে আছে।ওদেরকে দেখেই তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ফেললো।
নীল:রুশা কোথায়?
আয়াত:থানাতে নিয়ে গেছে।
ওরা কথা বলছিলো কিন্তু নিশু হঠাৎ ঘুমের ঘোরেই নীলের কোমর জড়িয়ে ধরলো।আয়াত আর ইশু নীলের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।
আয়াত:নিশু বোধহয় গন্ধ শুঁকেই বুঝে যায় তুই ওর পাশে আছিস!
নীল নিশুর ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে আপননেই হেসে ফেললো।
আয়াত:আজকে বেচারীর ওপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে!সকাল বেলা তুই যা কান্ড করলি!
নীল:কি করবো বল?আমার মাথা গরম হয়ে গেছিলো কার্ডটা দেখে।
আয়াত:ও দুঃস্বপ্নেও তোকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতে পারে না।
নীল:কারন নিশু ভালো করেই জানে ও দূরে সরে গেলে ওর নীল পাগল হয়ে যাবে।
ওরা বেরিয়ে যাওয়ার আগে ইশু নীলের দিকে তকিয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো… ভাইয়া নিশুকে কি আমার ঘরে দিয়ে আসবি?(বাকাঁ হাসি দিয়ে)
নীল:না!আজকে ও আমার কাছে থাক!
আয়াত আর ইশু বেরিয়ে যেতেই নীল নিশুর দিকে ফিরলো।সত্যিই আজকে অনেক ধকল গেছে ওর ওপর দিয়ে।ও নিশুর ডান হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো..খুব শখ না আমার কাছ থেকে ভালোবাসি শোনার?
ও নিশুর একেবারে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো…আমি তোমাকে ভালোবাসি নিশু!অনেক ভালোবাসি!
নিশু এবার ঘুমের ঘোরেই দুহাত দিয়ে নীলের গলা প্যাঁচিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো।নীল হেসে ফেললো ওর কান্ড দেখে।
নীল:আয়াত ভুল বলেছে নিশু তুমি নিশ্বাসের শব্দ শুনেই বুঝে যাও তোমার পাশে তোমার নীল আছে।
সকালবেলা নিশু চোখ খুলতেই দেখলো নীল ওকে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ওর দিকেই চেয়ে আছে।
নীল:ঘুম ভাঙলো?
নিশু:হুম!
নীল:কেমন লাগছে এখন?
নিশু:ভালো!
নীল:শুধু ভালো?
নিশু ওর দিকে অবাক হয়ে চেয়ে আছে।আজকে নীল ওকে ইশুর ঘরে দিয়ে আসলো না?
নিশু:আজকে বুঝি ইশু রাতে দরজা খোলে নি?(অভিমানি গলায়)
নীল হেসে ফেললো ওর কথা শুনে।
নিশু:হাসছো যে?
নীল ওকে আরেকটু কাছে টেনে নিয়ে বললো…ইশু কি বলেছে জানো?
নিশু:কি?
নীল:বলেছে তোর ঝামেলা তুই তোর কাছে রাখ!সারারাত তুই ভেবে আমাকে….
নিশু ওকে শেষ করতে দিলো।হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরে বললো..তুমি একটা অসভ্য!
নীল মুখ থেকে ওর হাতটা সরিয়ে হাতে একটা চুমু খেয়ে বললো…অনেক জ্বালিয়েছো আমাকে!একবার খালি বিয়েটা হয়ে যাক।তারপর উদাহরণসহ শিখিয়ে দেবো অসভ্যতা কত প্রকার ও কি কি!
নিশু লজ্জায় ওর বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো।নীল মুচকি হেসে ওকে আরো কাছে টেনে নিলো।
নিশু:নীল?
নীল:হুঁ!
নিশু চুপ করে গেলো।
নীল:কিছু বলবে?
নিশু মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো।
নিশু চুপ করে গেলেও নীল ঠিকই বুঝে গেছে নিশু কি চাইছে।ও নিশুর কপালের ওপর ছড়িয়ে থাকা চুল গুলো কানের পিঠে গুঁজে দিয়ে বললো..ভালোবাসি!
নিশু অবাক হয়ে নীলের দিকে তাকালো।
নীল:কি হলো?
নিশু:আবার বলো না প্লিজ?
নীল:ভালোবাসি!
নিশু লজ্জায় আবারও চুপ হয়ে গেলো।নীল ওর কানে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে বললো…আবার বলবো?
নিশু মাথা নিচু করে আছে লজ্জায়।নীল মুচকি হেসে আবারও ফিসফিস করে বললো…ভালোবাসি নিশু!অনেক বেশি ভালোবাসি!
নিশু চুপচাপ নীলের বুকে মুখ লুকিয়ে শুয়ে আছে।নীল ওর চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।
নীল:নিশু?
নিশু:হু!
নীল:রুশার কথা আমাকে এতদিন বলো নি কেন?
নিশু অবাক হয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে বললো..তুমি ওর সব কথা জেনে গেছো?
নীল মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝালো।
নিশু ওর কথার জবাবে বললো…শয়তানটা আমাকে শর্ত দিয়েছিলো।
নীল:ওর কথা তুমি শুনতে গেলে কেন?
নিশু:ওর এত কনফিডেন্স সহ্য হচ্ছিলো না।
নীল:তাই?
নিশু:হ্যাঁ!
নীল:আচ্ছা এসব এখন থাক!..তুমি উঠে ঝটপট ফ্রেশ হয়ে নাও।
নীল আগেই ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে গেলো।ইশু আর আয়াত নাশতার টেবিলে গল্প করছে।ওকে দেখে দুজনেই মিটিমিটি হাসছে।
ও পেছনে ঘাড় ঘুরাতেই দেখলো নিশু নামছে।
নীল:হাসছিস কেন?
আয়াত:রাতে ঘুম কেমন হলো?
নীল নিশুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বললো…রাতে ভালো ঘুম হয়েছে?
নিশুকে বোকার মত ওদের দিকে চেয়ে থাকতে দেখেই তিনজন মিলে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
নিশু:সবকটা অসভ্য!
সন্ধেবেলা সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছিলো।নীল এখনো অফিস থেকে ফেরে নি।তবে তানিমও এসেছে।ইশু অবশ্য উনাকে বেশি পাত্তা দিচ্ছে না।কিছু হলেই ধমক দিয়ে বসে। বেচারা চুপচাপ ওর ধমক সহ্য করছে।
আয়াত:তানিম ভাই?একি অবস্থা আপনার?আপবার মত সুপুরুষের এই অবস্থা হলে আমাদের কি হবে ভাই?
তানিম:সবই কপাল ভাই!
আয়াত ইশুর মাথায় একটা চাটি মেরে বললো..হেরে গেলে চলবে না ভাই!এই লেডি ডনকে আপনি ছাড়া আর কেউ সোজা করতে পারবে না।
নিশু:তুমি সবসময় ওর পেছনে লাগো কেন বলতো?
ইশু:তোকে বলে নি?
নিশু:কি বলবে?
ইশু:প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এখন মনের জ্বালা মিটাচ্ছে।
আয়াত:😐আমি ঘষেটি বেগমকে দেখিনি কিন্তু ইশিকা হাসানকে দেখেছি।
ইশু:সত্যি কথা বললে সবারই গায়ে লাগে।
আয়াত:হ্যাঁ তারপর আর মনে নেই?
ইশু:কি?
আয়াত:তুমি যে গতকাল রাতে ফোন করে আমাকে বলেছিলে আমাকে ছাড়া বাঁচবে না?
ইশু:মিথ্যেবাদী!আমি রিজেক্ট করেছিলাম বলে সুইসাইড করতে গেছিলো কে?
তানিম ওর দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে।
আয়াত ওকে এভাবে তাকাতে দেখে বললো..আমি কোন দুঃখে ওর জন্য সুইসাইড করতে যাবো?(ইশুর বাচ্চা!কূটনী শয়তান)
ইশু:তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন?ভালোবাসাটা তো অন্যায় কিছু নয়।
আয়াত:(ওরে থাম!ইশুর বাচ্চা!আজকেই তানিম ভাই আমাকে মার্ডার করে দেবে)আল্লাহ তোমার বিচার করবে ইশু।
ইশু তানিমের দিকে একঝলক তাকিয়ে বললো…কি হলো?
তানিম:আমি আসছি।আমার কাজ আছে।
আয়াত:তানিম ভাই আমার…
ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই তানিম রেগে বেরিয়ে গেলো।
আয়াত রাগী লুক নিয়ে ইশুর দিকে তাকিয়ে বললো..তুমি তানিম ভাইকে ভাগানোর জন্য এই প্ল্যান করেছো তাই না?
ওর কথার জবাবে ইশু বাকাঁ হাসি দিলো।
নীল ভেতরে ঢুকেই বলল..তানিম ভাইকে দেখলাম বেরিয়ে যেতে?কখন এসেছিলো।
আয়াত:ঘন্টাদুয়েক ছিলো।তোর বোনের অত্যাচারে টিকতে না পেরে শেষে বেরিয়ে গেছে।
নীল ইশুর দিকে তাকিয়ে বললো…উল্টোপাল্টা কিছু বলেছিস নাকি উনাকে?
ইশু:একদম না।যা সত্যি তাই বলেছি।
নীল:কি বলেছিস?
ইশু:বলেছি আয়াত আমাকে ভালোবাসে?
ইশুর কথা শুনে নীল হো হো করে হেসে উঠলো।আয়াত বিরক্তি নিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
নীল:কি রে আয়াত?আমাকে তো একবার বলতে পারতি?
ইশু:নিজে তো বলে নি আমাকেও নিষেধ করে দিয়েছিলো তোকে বলত!
আবারও দুইভাইবোন মিলে হাসিতে ফেটে পড়লো।আয়াত বোকার মত বসে আছে।
নিশু চুপচাপ সোফার ওপর বসে ওদের কান্ড দেখছে।নীল টাইটা একটু ঢিলে করে নিশুর পাশে গিয়ে বসলো।
নীল:কি হলো আমার ড্রামাকুইন চুপচাপ কেন?
নিশু ওর কাধের ওপর মাথা এলিয়ে দিয়ে বললো..এত দেরী হলো যে?
নীল:আর্জেন্ট একটা কাজ পড়ে গেছিলো।
নিশু:হ্যাঁ!কিসের আর্জেন্ট কাজ আমি ভালো করেই জানি।আজকে আমি অফিসে যাই নি,ভালো সুযোগ পেয়েছো তাই না?
নীল হাসছে ওর কথা শুনে।
নিশু:কথায় কথায় হাসবে না বলে দিলাম।তোমাকে আমি ভালো করে চিনি…
নীল ওকে শেষ করতে না দিয়ে বললো…হ্যাঁ!আমি একটা অসভ্য,লুচু!মেয়ে দেখলেই আমার হুঁশ থাকে না তাইতো?তোমাকে আর কষ্ট করে বলতে হবে না।আমিই বলে দিলাম।
ইশু নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো..রোজ রোজ এই এক কথা বলতে তোর বিরক্ত লাগে না?
নিশু:হয়েছিস তো ভাইয়ের মত অসভ্য।তাই সত্য কথা শুনতে খারাপ লাগে।
নীল:তোমাকে কে বললো ওর ভাইয়ের এসব শুনতে খারাপ লাগে?
নিশু:মানে?
নীল ওর কথার জবাবে মুচকি হাসি দিয়ে আর কানেকানে ফিসফিস করে বললো..কোথায় যেন পড়েছিলাম যেই স্ত্রী স্বামীকে সন্দেহ করে না সে স্বামীকে ভালোবাসে না।তাই বুঝলাম আমার বউ আমাকে সারাদিনই ভালোবাসে।
আয়াত:এই নীল তুই ওর কানে কানে কি বলছিস?
নীল:প্রেম করছি!তোর কোন সমস্যা?
ইশু:নির্লজ্জ একটা!
ডিনার শেষে ওরা সবাই ইশুর রুমে গল্প করতে বসলো।
আয়াত:নীল?
নীল:হু!
আয়াত:তুই প্রথম কবে নিশুর প্রেমে পড়েছিলি?
নীল নিশুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।নিশু ভালো করেই জানে নীল ভালো কিছু বলবে না।হাড়ে হাড়ে বজ্জাত এই ছেলে।কিন্তু ওকে অবাক করে দিয়ে নীল বললো…প্রথম যেদিন আমার নাকের ডগায় ঝাড়ু উঁচিয়ে রেখে তোকে বলেছিলো…”আমি নীলাস হাসানের বউ”।সেদিন থেকেই আমার জীবনটা জ্বলেপুড়ে ছারখার হওয়ার দিন শুরু হলো।
নিশু:ছি!ছি!নীল!তুমি শেষ পর্যন্ত বুয়াকে?..না মানে তখন তো তুমি জানতে না যে আমি কে?
ইশু হাসতে হাসতে বললো..ভাইয়া এত মেয়ে থাকতে তুই এই তারছেঁড়াটার প্রেমে পড়লি কি বলতো?
নিশু:সত্যি কথাই তো বলেছি।
নীল:😐(অসভ্য মেয়ে!)ঠিক বলেছো আমিতো আর তখন জানতাম না তুমি কে?আর তোমাকে দেখতেও বুয়ার মত লাগছিলো কিন্তু বুয়ারা তো আর গেঞ্জি আর ফ্লাজু পরে ঘরদোর পরিষ্কার করে না তাই না!(বাঁকা হাসি দিয়ে)
নিশু:আমাকে দেখতে বুয়ার মত লাগে?
নীল:তুমিই তো বললে?
ইশু আর আয়াত হাসছে ওদের কান্ড দেখে।