Love Right ! Part- 04
নীল:হুম!তুমি ভাবতেও পারবে না যা দুষ্টু এই মেয়ে!
রুশা:তাই নাকি?
নীল:আর বলো না সেদিন আমাকে চার ঘন্টা ওয়াশরুমে আটকে রেখেছিলো।
রুশা:বলো কি?…এই মেয়ে তো দেখছি ভীষণ ডেইঞ্জারাস?
নীল মুচকি হেসে বললো…ডেইঞ্জারাস কি না জানি না স্বভাবের দিক থেকে একদম বাচ্চা!
রুশা:তোমার তো দেখছি একদিনেই ওর সম্পর্কে ভালোই জানাশোনা হয়ে গেছে।
নীল:ঐ যে বললাম না এসেছি থেকেই ওর সাথে আমার লেগে আছে।
রুশার ব্যপারটা সুবিধের লাগছে না।নীলের এত কনসার্ন কেন ওকে নিয়ে।ও টপিক চেইঞ্জ করারা জন্য বললো…তুমি কি আবার যাবে নাকি?
নীল:হুম!তেমনই তো হওয়ায় কথা!
নীল আর রুশা নিচে নামতেই দেখলো নিশু আয়াত আর ইশু সোফায় বসে গল্প করছে।নীল গিয়ে আয়াতের পাশে বসে পড়লো।আয়াতের অন্য পাশে নিশু বসে আছে।রুশা গিয়ে নীলের পাশে বসে পড়লো।ওরা সবাই হাসাহাসি করছে।নীল আড়চোখে মাঝে মাঝে নিশুকে দেখছে।
আয়াত:তারমানে আজকে মিস ইশিকা হাসানকে তানিম ভাই ভালোই ডোজ দিয়েছে?
নিশু:হুম!একদম!(হাসতে হাসতে)
আয়াত:তো মিস ইশিকা হাসান আপনার ফিলিংস কেমন?
নিশু হাসছে আয়াতের কথা শুনে।
নীল:(আয়াতের বাচ্চা খুব ভাব ওর সাথে না?)
নীল আয়াতের পিছন দিয়ে হাতটা নিয়ে নিশুর পেটে সুড়সুড়ি দেওয়া শুরু করলো।
নিশু আয়তের দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে বললো…আয়াত?
আয়াত:কি হলো নিশু?
নিশু কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো…কিছু না।
একটুপর পরিবেশ আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলো।নীল এবার হাতটা পেছনে নিয়ে নিশুর গেঞ্জিটা হালকা উঠিয়ে দিলো কোমরে একটা চিমটি বসিয়ে।
নিশু:আউচ!
আয়াত:এই নিশু কি হলো?
নিশুর এবার মেজাজ গরম হয়ে গেলো দিলো আয়াতের গালে কষে এক চড় বসিয়ে।আয়াত গালে হাত দিয়ে হাঁ হয়ে বসে আছে।নীল মিটিমিটি হাসছে।
নিশু:আমি এ ধরনের দুষ্টুমি একদম পছন্দ করি না!(কঠিন গলায়)
নীল:(আয়তের বাচ্চা!একদম ঠিক হয়েছে)
আয়াত:কিন্তু আমি করেছি টা কি?
নিশু:তুমি জানো না!
আয়াত বোকার মত গাল নাড়িয়ে বললো…না!
নিশু:তুমি আমাকে চিমটি দিলে কেন?
আয়াত:আমি??(অবাক হয়ে)
নিশু:তুমি দাও নি?
আয়াত:কসম আল্লাহর!
নিশু:তাহলে আমাকে চিমটি দিলো কে?
নীল এমনভাব ধরে বসে আছে যেন ও কিছুই জানে না।
রুশা:আচ্ছা তুমি এমন করছো কেন??একটা চিমটিতে তো কেউ মরে যায় না নাকি?
নীল:কারেক্ট!
নিশু এবার নীলের সামনে গিয়ে বললো…সত্যি করে বলতো?..তুমি দাও নি তো?
নীল ওর কানের কাছে গিয়ে ফিসিফিসিয়ে বললো…তোমার কোমরে কি লোশন লাগাও বলতো??উফফফ!…যা সফট😘
নিশু তাড়াতাড়ি ওর মুখ চেপে ধরলো।নীল এবার অনবরত ওর হাতে চুমু দিয়ে যাচ্ছে।
নিশু তাড়াতাড়ি হাতটা সরিয়ে নিলো….অসভ্য একটা!
আয়াত নীলের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললো…তুই ওকে চিমটি দিয়েছিলি তাই না?…আর মাঝখান থেকে চড় খেলাম আমি!
রুশার মোটেও ভালো লাগছে না এসব।নীলের এত আগ্রহ কেন মেয়েটার প্রতি?
নীল:সেটা ওকেই জিজ্ঞেস কর?(ভ্রু নাচিয়ে)
নিশু:😐
আয়াত:কি হলো নিশু?
নিশু:সরি আয়াত।আই এম এক্সট্রিমলি সরি!..তোমাকে ভুল বোঝার জন্য!
আয়াত জোরে হেসে দিয়ে বললো…সুন্দরিদের হাতে দু একটা চড় থাপ্পড় না খেলে জীবনের কি মানে আছে বলতো?
ইশু:তাহলে আমি একটা মারি??
আয়াত:তুমি সুন্দরি সেটা কে বললো?
নিশু হাসছে ওর কথা শুনে।
ইশু:আয়নায় একবার নিজের চেহারাটা দেখো!
আয়াত:তার কোন প্রয়োজন নেই আমি জানি আমি সুন্দর!
নিশু:ঠিক তাই!আর তোমার মনটাও অনেক সুন্দর!
ইশু:চড় খেয়ে কিছু বলে নি বলে একেবারে ওর ভক্ত হয়ে গেলি?
নিশু:সেটাও বা কতজন পারে!….যাই হোক আমি উপরে যাচ্ছি।
নিশু উপরে উঠে গেলে আয়াত আর নীল ঝগড়া লেগে গেলো।
আয়াত নীলকে ইচ্ছেমত মারছে।
আয়াত:হারামি!…তুই শুধু শুধু ওকে চিমটি দিতে গেলি কেন?
নীল হাসছে ওর কান্ড দেখে।
নীল:আমি চিমটি না দিলে তুই ওর সামনে এমন হিরো হতে পারতি?
আয়াত:সে জন্যই তো আজকে বেঁচে গেলি।
রুশা রাতে থেকে গেছে।ডিনার শেষে প্ল্যান হলো কালকে সবাই মিলে ঘুরতে বের হবে।তানিমকেও ফোন করে আনা হবে।রুশা থাকার ব্যাবস্থা করা হয়ছে নীলের পাশের রুমে।
রাত দেড়টা সবাই মাত্র ঘুমিয়েছে এর মধ্যে রুশা চিৎকার দিয়ে এসে নীলদের রুমে ঢুকলো।নীল আর আয়াত একলাফে উঠে বসে পড়লো।রুশা ভয়ে চিৎকার দিচ্ছিল।নীল উঠে এসে রুশার কাধে দুহাত রেখে ওকে শান্ত করলো।
নীল:কি হয়েছে রুশা?
রুশা:আমার একা ভয় লাগছে ঐ রুমে আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।
আয়াত বিড়বিড় করতে করতে বললো…সব নাটক এই মেয়ের।মাঝ রাতে এসেছে দুটো ছেলের রুমে উনি একা ঘুমাতে।রুশা ভয়ে কাদঁছে।
নীল:রুশা??….দেখো ভয়ের কিচ্ছু নেই।আমরা সবাই আছি।শান্ত হও প্লিজ!
রুশা:আমার ভয় করছে নীল!
নীল:আচ্ছা ঠিক আছে চলো আমার সাথে।
রুশা:কোথায়?
নীল ওকে ইশুদের রুমে নিয়ে গেল।
নীল:ইশু??….ঘুমিয়ে পড়েছিস?
ইশু ঘুম ঘুম চোখে এসে দরজা খুলে দিলো।
নীল:যাও রুশা শুয়ে পড়ো!
ইশু:কি হয়েছে ভাইয়া?…কোন সমস্যা?
নীল:ও একা ঘুমাতে ভয় পাচ্ছে।তাই তোদের রুমে নিয়ে এলাম!
ইশু রুশার দিকে তাকিয়ে বললো….তাই নাকি?…আগে বলবে না!…এসো ভেতরে এসো।
রুশার ভেতরে ঢুকার সময় দরজাটা আরেকটু ফাঁক হওয়াতে ভেতরে নিশুকে দেখা যাচ্ছে।বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।নীল সেদিকেই তাকিয়ে আছে।ইশু দরজা লাগানোর সময় বিষয়টা খেয়াল করল।
ইশু:ভাইয়া??
নীল:ওহ সরি!…আসছি আমি!
সকালবেলা ব্রেকফাস্ট করেই সবাই বেরোনোর প্ল্যান করলো।কিন্তু তার আগে আয়াত বললো..আমরা কে কার সাথে যাবো সেটা ঠিক করে নিলে হয় না?
ইশু:আমরা তো একসাথেই যাচ্ছি?
আয়াত:আরে বাবা গাড়ি যেহেতু নিচ্ছি না।তাই কে কার সাথে যাবে আসবে প্ল্যান করে নিলে ভালো হত।একসাথে এতজন তা না হলে অসুবিধে হবে।
ইশু:ঠিক আছে আমি আর নিশু যাচ্ছি!
আয়াত:না আমি আর নিশু!
তানিম:তাহলে টস হোক কে কার সাথে যাবে?
নিশু:সেটাই ভালো।
কিন্তু বিধি বাম।নিশুর পড়লো নীলের সাথে।আয়াত ইশুর সাথে আর তানিম বেচারা পড়েছে রুশার সাথে।
নিশু:আমি যাবো না।
নীল:কেন হিসুবেবি ভয়ে তোমার হিসু পেয়েছে নাকি?
নিশু:(রাগে কেঁদে দেওয়ার অবস্থা!)
ইশু:একদিনেরই তো ব্যপার নিশু তুই এত রিয়েক্ট করছিস কেন?
নিশু:😐ঠিক আছে আমি যাবো!