Love !! লেখাঃ মিস্টি (তানজিনা)
Love !! লেখাঃ মিস্টি
বাসরঘরে বসে আছি কিছুক্ষণ আগেই আমার বিয়ে হয়েছে।
বিয়ে হওয়ার কথা ছিল একমাস পর কিন্তু হঠাৎ এমন হওয়ার কারণটা আমার জানার বাইরে। তিন দিন আগেই আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
যার সাথে বিয়ে সে যায় নি আমাকে দেখতে আমার শশুর শাশুড়ি গিয়েছিল দেখতে তারাই বিয়ে ঠিক করে আসে।
(বিঃ দ্রঃ “Love !! লেখাঃ মিস্টি ” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)
আর আজ হঠাৎই গিয়ে বাড়ির বৌ করে আনে। এখন ও যায় সাথে আমার বিয়ে বিয়ে হয়েছে তাকে দেখি নি সে আমার সামনে আসেনি। কিন্তু কেন জানা নেই।
আমি নিলা আক্তার। এইচ এস সি পরিক্ষার পর বিয়ে হলো। আমার বাবা মা আর ছোট্ট ভাই নিয়ে আমার পরিবার। কখনো রিলেশন করিনি তাই যে আমার বর তাকেই ভালোবাসবো।
একটা অন্য লোকের সাথে থাকতে হবে এখন থেকে। জানি না সে কেমন হবে। অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে বিয়ে নামক বাধনের জন্য মনে হয়ে।
শুনেছি সে নাকি দেখতে অনেক সুন্দর। নামটা ও সুন্দর মেহেদী।
দরজা খোলার শব্দের শব্দে বাস্তবে ফিরলাম।
একটা ছেলে ভিতরে আসলো। ফোন কানে মনে হচ্ছে কারো সাথে কথা বলেছে কিছু কথা আমার কানে এলো।
মেহেদী – হ্যাঁ জানু । আমি ওই মেয়েকে টাচ করবো না।
মেহেদী – তুমি আমাকে বিলিভ করো না। আমি ওই কালো গাইয়া মেয়েকে টাচ তো দূরে চেয়ে ও দেখবো না।
আমি কথা গুলো শুনে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে পরলাম। এই লোকটা আমার নামে এই কথা গুলো বলছে আবার আমাকে গাইয়া ও বলছে। তার মানে
জি এফ এর সাথে কথা বলছে।
বিয়ে আমাকে করে এখন বলছে টাচ করবে না। রেগে আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
আমি কিন্তু অনেক চঞ্চল মেয়ের আমাকে আবার কেউ বোকা ভেবেন না।
রেগে বিছানায় থেকে নেমে পরলাম আর টান দিয়ে ফোন টা নিয়ে আছাড় মারলাম। মেহেদী মনে হচ্ছে অনেক শকড হয়ে আছে আমার ব্যবহার এ।
আমি – ফোন এ কি বলছিলেন আমি কালো গাইয়া তাই তো টাচ করবে না।
মেহেদী – তুমি আমার ফোন ফেললে কেন। তোমার এতো বড় সাহস।
আমি – আগে আমার কথা উওর দিন। আর আমার সাহসের দেখছেন কি আর ও অনেক দেখবেন। এতোই যেহেতু ফোনের মেয়েকে ভালো লাগে আমাকে বিয়ে করেছেন কেন।
মেহেদী – তোমাকে তো আমি বোকা সোকা ভেবে ছিলাম এখন তো দেখছি অনেক চতর। কিন্তু মাথায় কিছুই নেই
আমি- মানে কি আমি বোকা হতে যাব কেন
মেহেদী – তুমি বোকা না তাহলে ফোন ভাঙলে কেন
আমি – আপনি যে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলছেন আমি কিছু বলবো না।
মেহেদী হা হা করে হাসতে লাগলো। আর ফোন বিছানায় পরে ছিল এনে দেখালো সে কারো সাথেই ফোনে কথা বলছিল না আমাকে বোকা বানিয়েছে।
আমার রিয়াকশণ কেমন হয় দেখার জন্য। আমি নিজের বোকামো আর যা বলছিলাম তা ভেবেই লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করেছে।
কি খারাপ লোকটা আমাকে এই ভাবে বোকা বানালো।আমি দৌড় দিতে যাব তার আগেই মেহেদী আমার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে।তারপর সব ইতিহাস।
আজকের সকালটা অন্যান্য দিনের মতো লাগছে না। অন্য রকম ভালো লাগছে। বিয়ে বন্ধনটা মনে হয় এমনি। চোখ মেলে তাকালাম মেহেদী আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে আমার মাথা তার বুকে। কত শান্ত আর মায়াবী লাগছে। মনে হচ্ছে ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানে না আর কাল কত কাণ্ঠটাই না করলো।
আমাকে বোকা বানিয়ে দিয়েছিল। হঠাৎ দরজা ধাক্কার শব্দ বাস্তবে ফিরলাম। মনে হচ্ছে আমার ননদ মলি ডাকছে।তাই মেহেদী কে ডাকলাম কিন্তু সে তো উঠছেই না। আমার শরীরের তো কিছুই নাই উঠবো কি করে। আবার ডাকতে লাগলাম।
দরজা ধাক্কা ধাক্কি ও বন্ধ হয়ে গেছে মনে হয় চলে গেছে।
মেহেদীর দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। তারপর বলতে লাগলো
মেহেদী – কি হয়েছে ডাকছো কেন
আমি – মলি ডাকতে এসেছিল উঠুন নিচে যেতে হবে।
কত বেলা হয়ে গেছে সবাই কি বলবে।
মেহেদী – কেউ কিছুই বলবে না। চুপচাপ শুয়ে থাকো বিরক্ত করো না।
মেহেদীকে কিছুতেই উঠাতে পারলাম না। আমাকে ও উঠতে দিলো না।
নিচে বসে আছি আমার শাশুড়ি মা আমার পাশে বসে।আশেপাশে কিছু মহিলা আমাকে দেখতে এসেছে তারা এতো লজ্জায় ফেলছে যে আমি সোজা হয়ে বসতে পারছি না। মহিলা গুলো চলে যাবার পর মেহেদী নিচে এসেছে।
হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় কোন আত্মীয় সজন নেই। মেহেদীকে অফিস এর কাজে দেশের বাইরে যেতে হবে তাই এতো তারাতারি করে বিয়ের আয়োজন।
দুই দিন পর
আমি রান্নার কাছে হেল্প করতে চাইছি কিন্তু নতুন বলে কোন কাজ ই আমাকে করতে দিচ্ছে না। রান্না শেষে খাবার এনে আমি র্সাভ করলাম জোড় করে।
খাওয়া শেষের সবাই চলে যায় উঠে আমি সব সব গুছিয়ে রাখি শাশুড়ি মার সাথে হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠে। শাশুড়ি মা যেতে নিলে তাকে বলে আমি দরজা খুলি। আর দেখি একটা ফর্সা শট ড্রেস পরা মেয়ে দাড়িয়ে আছে। মেয়েটি অনেক সুন্দর কিছু বলার আগেই আমাকে ঠেলে ভিতরে ঢুকে পরে।
আমি অনেক অবাকই হই মেয়েটির ব্যবহারে দরজা লাগিয়ে এসে দেখি মেয়েটি মেহেদী কে জরিয়ে ধরে আছে। দৃশ্য টা দেখে অনেক খারাপ লাগে কিন্তু মুখে কিছু বলি না কারণ এখানে শশুর শাশুড়ি আছে। নয় আমার বর জরিয়ে ধরার সাদ মিটিয়ে দিতাম কিন্তু কে এই মেয়ের।
মলি কথা শুনে বুঝলাম মেয়েটি ওর খালাতো বোন।
মেয়েটি আসার পর থেকেই দেখছি শুধু মেহেদীর সাথে ঘেঁষে আছে আমার বর টাও কি লচু বউ থাকতে অন্য মেয়ের সাথে ঘেঁষার কি আছে। অসহ্য
রাগে দুঃখে ড্রয়িং রুমে বসে আছি। মলি আমার পাশে এসে বলতে লাগল।
মলি- ভাবি
আমি – হ্যাঁ বলো
মলি- দিয়া আপু কিন্তু ভাইয়া কে ভালোবাসে অনেক দিন আগে থেকে। শুধু ভাইয়াই তেমন ইন্টারেস দেখায় নি। নয়তো দিয়া আপুই ভাইয়ার বউ হতো। এখন আবার পটিয়ে ফেলবে নাকি কে জানে ছেলেদেরকে তো চিনোই কখন কি ভালো লাগে বুঝা যায় না।
আমি রেগে উঠে রুমে গেলাম কি করছে দেখার জন্য গিয়ে দেখি ল্যাপটপে কি জানি দেখছে আর হাসাহাসি করছে। একদম গাঁ গেসে বসে আছে। আমাকে দেখেই
দিয়া- এই যে দুই কাপ কফি আন তো আমাদের জন্য।
একে তে রেগে আছি আবার কফি তোকে জম্মের কফি খাওয়াছি দাঁড়া।
নিচে গিয়ে দুই কাপ কফি নিয়ে আসলাম একটা মেহেদী কে দিয়ে অন্য টা দিয়ার কাছে নিয়ে একটু কফি ওর পায়ে ফেললাম আর সেকি ফাল এক লাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে পা ধরে কান্না জুড়ে দিলো।
আমি – ও আই আম সরি সত্যি দেখে করি নি।
ভালো করে তাকিয়ে দেখি কফি একটু ও ওর পায়ে লাগে নি সব তাহলে ও লাফাছে কেন তাকিয়ে দেখি আশুলা নিচে পরে আছে তার মানে এটার জন্য আমি আর কি বলবো আমি তো হাসতে হাসতে শেষ আমার সাথে মেহেদী ও মলি ও যোগ দিয়েছে।
দিয়া মলি সাথে ওর রুমে চলে যায় আমি ও বের হতে যাবে পিছনে থেকে মেহেদী আমার হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
মেহেদী – কফি ফেলে জব্দ করতে চেয়ে ছিলে নাকি।
আমি – আপনি দেখেছেন। কিন্তু তা আর পারলাম কই। আশুশা আইসা পরলো।
মেহেদী – ভালো। সারাদিন তো তোমাকে কাছেই পায় না কই থাক।
আমি – এখন আসছে কই থাকি জানতে এতোক্ষন তো ভালোই ছিলেন। যান ওর কাছেই আমার কাছে কি
মেহেদী – কার কাছে যাব যার কাছে যাওয়ার তার কাছেই তো আছে।
আমি – এতোক্ষন যার কাছে ছিলেন।
মেহেদী- সত্যি যাব
আমি – গেলে একদম মেরে ফেলবো আপনি শুধু আমার। বুঝছেন অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে চোখ উঠিয়ে ফেলবো।
মেহেদী – চোখ উঠিয়ে ফেললে তো আমি কানা হয়ে যাব তখন তোমার এই সুন্দর মুখটা খি করে দেখবো।
কথা বলতে বলতে যে কখন এতো কাছে চলে এসেছি বুঝতেই পারি নাই। হঠাৎ মেহেদী আমার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নিলো আমি ভাবিনি এখন এই কাজ করবে আমি নিজের চোখ জোড়া আবেশেই বন্ধ করে নিলাম
..
..
..
চলবে ……… Love Love Love Love…
বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ মিস্টি ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন…………