Childhood marriage

Childhood marriage ! Part- 24

#পর্ব-২৪
লোপা : এসবের মানে কি তাসু?তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
ছোঁয়া : কেন আমি আবার কি করলাম?
লোপা : কি করিসনি তাই বল,আমিতো জানতাম তুই অনেক বুদ্ধিমতী একটা মেয়ে কিন্তু এখনতো মনে হচ্ছে তোর মত বোকা মেয়ে খুব কমই আছে
ছোঁয়া : তুই হঠাৎ এভাবে কথা বলছিস কেন?আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না
লোপা : তা বুঝবি কেন?তুইতো কিছুই বুঝিস না,বুঝতে পারলে কি আর এমন একটা কাজ করতে পারতি?
ছোঁয়া : কি আশ্চর্য!কখন থেকে শুধু বকেই যাচ্ছিস,আরে বাবা আমি কি করেছি সেটাতো বলবি…
লোপা : আচ্ছা তুই কি সত্যিই কিছু বুঝছিস না নাকি বুঝতে চাইছিস না?আমারতো মনে হচ্ছে সেকেণ্ডটা…
ছোঁয়া : কি বলতে চাইছিস পরিষ্কার করে বল প্লিজ
লোপা : সায়ন ভাইয়ের সাথে এমন কেন করলি?কাজটা কিন্তু একদম।ঠিক করিস নি
ছোঁয়া : কেন কি করেছি আমি?

লোপা : কি করিসনি তাই বল,যাকে এত ভালোবাসিস তাকেই এত কষ্ট দিচ্ছিস!তোর এই ডিসিশনে যে তোরা দুজনই কষ্ট পাচ্ছিস কেন বুঝতে চাইছিস না?
ছোঁয়া : আমি যা করেছি ঠিক করেছিছি,এ ব্যাপারে আমি আর কিছু শুনতে চাই না।তাছাড়া আমি এখন আর উনাকে ভালোবাসি না…
লোপা : কেন নিজেকে এভাবে ধোঁকা দিচ্ছিস বলতো?আমি খুব ভাল করেই জানি তুই এখনও উনাকে অাগের মতই ভালোবাসিস তাই বলছি এখনও সময় আছে উনার কাছে ফিরে যা নাহলে কিন্তু খুব দেরি হয়ে যাবে
ছোঁয়া : বললামতো আমি উনাকে ভালোবাসি না তারপরও শুধু শুধু কেন পেঁচাচ্ছিস?
লোপা : শুধু শুধু পেঁচাচ্ছি!আমি জানি ভাইয়া ভুল করেছেন কিন্তু তা শুধরেওতো নিয়েছেন আর বিলিভ মি উনি আর একেবারেই আগের মত নেই,একেবারে চেঞ্জ হয়ে গেছেন!
ছোঁয়া :ওসব বাদ দে প্লিজ,আমার কিন্তু এসব একদমই ভাল লাগছে না…
লোপা : আজ আমার কি মনে হচ্ছে জানিস?তোর সাথে যা কিছুই হয়েছে তারজন্যে একমাত্র তুই ই দায়ী আর কেউ নয়
ছোঁয়া : লোপা…কি যা-তা বলছিস!
লোপা : আমি যা বলছি ঠিকই বলছি,সেদিনই যদি তুই ভাইয়াকে বলে দিতি যে তুই ই তার তাসনিয়া তাহলে হয়তো আজ এসব দেখতে হত না কিন্তু তোর মাথায় তো ভূত চেপেছিল ছোঁয়া হয়েই উনার মন জয় করার আর তাইতো…
ছোঁয়া : তো আর কি করতাম?আমিই তাসনিয়া জানলে হয়তো উনি আমাকে কাছে টেনে নিতেন কিন্তু এতে উনার ভালোবাসা অন্তর্নিহিত থাকতো নাকি শুধুই কমপ্রোমাইজ তা হয়তো আর কখনই জানতে পারতাম না!জীবনের এত বড় একটা ডিসিশন উনি কমপ্রোমাইজ করে নেবেন এটা আমি চাইনি তাই….
লোপা : মানছি তোর কথার যুক্তি আছে কিন্তু এখন যখন উনি তাসনিয়াকে ভুলে ছোঁয়াকেই ভালোবাসতে চাইছেন,কাছে টানতে চাইছেন তখন তোর প্রবলেম কোথায়?এখন তাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিস কোন যুক্তিতে?
ছোঁয়া :….
লোপা : কাল ভাইয়া কানাডা চলে যাচ্ছে
ছোঁয়া : কিহ!!
লোপা : এখনও সময় আছে উনাকে আটকা,একবার দূরে চলে গেলে কিন্তু আর কখনই ফেরাতে পারবি না।তখন সারাজীবন তোকে পস্তাতে হবে এই দিণটার জন্য…
ছোঁয়া : লোপা রেগে মেগে চলে গেল আমি কিছুই বলতে পারলাম না।কি করে বলব?ও তো ঠিকই বলেছে,সত্যি এটাই যে আমি এখনও উনাকে অনেক ভালোবাসি,জীবনে একজনকেই ভালোবেসে এবং সেটা আমার স্বামী সায়নকেই আর সারাজীবন উনাকেই ভালোবেসে যাব কিন্তু….

মারুফ : সায়ন প্লিজ আমার কথাটা একটু বোঝার চেষ্টা কর,এভাবে চলে যাওয়াটাতো কোন সলিউশন না…
সায়ন : আমি আর কিছু ইবু্ঝতে চাই না,সো প্লিজ লিভ মি এ্যালোন…
মারুফ : বললেই হল?আমি অন্তত তোকে একা ছাড়ছি না,দেখ আমরা সবাইতো আমি তাইনা?আমরা সবাই মিলে ছোঁয়াকে বোঝালে ও নিশ্চয় বুঝবে
সায়ন : সেটাইতো আমি চাই না
মারুফ : মানে?
সায়ন : মানে ওর উপর কোনভাবেই জোর খাটাতে চাই না
মারুফ : তাহলে তুই আরেকবার চেষ্টা কর,এভাবে হাল ছেড়ে দিস না প্লিজ…
সায়ন : চেষ্টাতো আর করলাম না কিন্তু ও যে কিছুতেই বুঝতে চাইছে না…
মারুফ : তাই বলে এভাবে চলে যাবি?
সায়ন : কি করব বল,ওকে ছাড়া যে এখানে আর থাকতে পারছি,ওর স্মৃতিগুলো আমাকে সবসময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে তাই…
মারুফ : তাই পালিয়ে যাচ্ছিস…
সায়ন : প্লিজ এভাবে বলিস না
মারুফ : মামা-মামীকে কি বলবি?
সায়ন : জানিনা কিন্তু কিছু একটা বলে ম্যানেজ করে নিব টেনশন নিস না
মারুফ : আমার আবার টেনশন কিসের?তোর মাথাটা সত্যি সত্যিই গেছে
সায়ন : তা যা বলেছিস,তোকে একটা রিকুয়েস্ট করব?
মারুফ : হুম বল
সায়ন : আমার আর ছোঁয়ার মধ্যে ঠিক কি হয়েছে এটা একমাত্র তুই আর লোপাই জানিস।আর কেউ যেন এই ব্যাপারে কিছু না জানতে পারে
মারুফ : হুম
সায়ন : আর ওর দিকে একটু খেয়াল রাখিস প্লিজ…
মারুফ : আর কিছু বলতে পারলাম না,সায়নকে বুকে জড়িয়ে নিলাম।ওর জন্যে কিছু করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারছি না…

ছোঁয়া : আমার ঢাকা থেকে চলে আসা সপ্তাহ পেরিয়ে গেল,ওখান থেকে আসার পর থেকেই কিছু জিনিস খুব মিস করছি।বার বার মনে হচ্ছে কোন কিছু ফেলে এসেছি,খুব প্রিয় কিছু আমার কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
সেই কখন থেকে বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছি,কিছুতেই ঘুম আসছে না।এই এক বাজে অভ্যাস হয়েছে,যে কদিন ঢাকায় ছিলাম উনিই আমার এই বাজে অভ্যাসটা করেছেন আমাকে বুকের মাঝে শক্ত করে চেপে ধরে রেখে।এখন বিছানায় শুয়ে পড়লে কেমন যেন খালি খালি লাগে,উনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে ইচ্ছে করে কিন্তু…
সকালে লোপা যখন বলল উনি চলে যাচ্ছেন,মনে হচ্ছিল যেন আমার বুকের উপর কেউ বিশাল সাইজের একটা পাথর বসিয়ে দিয়েছে,আমার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল,ইচ্ছে করছিল উনার কাছে ছুটে চলে যাই…

(পরদিন)
সায়ন : ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই কাজে লেগে পড়েছি,লাগেজটা আর সব জিনিস গোছাতে শুরু করে দিয়েছি।সন্ধ্যায় ফ্লাইট আর বাড়িটাও ছেড়ে দিতে হবে তাই এখন থেকেই সব গুছিয়ে নিচ্ছি,হঠাৎই একটা জিনিসে চোখ আটকে গেল।
একটা ছবি,আমার আর ছোঁয়ার বিয়ের দিন আই মিন দ্বিতীয়বার বিয়ের দিনের ছবি।আলতো হাতে ছোঁয়ার মুখের উপর হাত রাখলাম তারপর ভবিটাকে সযত্নে লাগেজের মধ্যে রেখে দিলাম,এখন থেকেতো আমাকে এভাবেই ওকে দেখতে হবে।হঠাৎই ফোনটা হাতে তুলে নিলাম,ওকে কি একবার ফোন দিব?না থাক…শেষবারের জন্য একবার কথা বললে কি হবে?না না ও যদি আবার রাগ করে?উফ কি যে করি কিছুই বুঝতে পারছি না…
ছোঁয়া : ভার্সিটির ক্যান্টিনে ফ্রেণ্ডদের সাথে বসে ছিলাম,তখনই ফোনের মেসেজটোনটা বেজে উঠল…
“সন্ধ্যায় চলে যাচ্ছি,পারলে আমার অপরাধগুলোর জন্য ক্ষমা করে দিও।চিন্তা কর না ওখানে পৌঁছেই ডিভোর্সের ব্যবস্থা করব,ভালো থেকো….”
হ্যাঁ উনার নাম্বার থেকেই এসেছে মেসেজটা,মনে হল কেউ আমার ব্রেনে ৪৪০ ভোল্টের শক দিল।হার্টবিট ফাস্ট হয়ে যাচ্ছে,শরীরটা থর থর করে কাঁপছে,দাঁড়িয়ে থাকতেও প্রবলেম হচ্ছে,আস্তে আস্তে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছে…

(বিকেলে)
সায়ন : মারুফ…এতক্ষণ ধরে কি করছিস বলতো?এদিকে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে তো তাড়াতাড়ি আয়….
মারুফ : এইতো প্রায় হয়েই গেছে
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং (কলিংবেল বাজছে)
সায়ন : এই সময় আবার কে আসলো?ধুর ছাই আর ভাল্লাগে না…দরজা খুলেই চমকে উঠলাম!
তুত…তু..মি!!!
চলবে….