Childhood marriage

Childhood marriage ! Part- 20

#পর্ব-২০
পরদিন সায়নের যখন জ্ঞান ফিরল,ভোরের আলো তখন সবেমাত্র ফুটতে শুরু করেছে।কোন কোন জায়গা থেকে মাঝে মাঝে মৃদু আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে আর তার সাথে তাল মিলিয়ে কিছু কিছু ভোরের পাখি নিজেদের গলা সাধায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।এক কথায় অদ্ভূত সুন্দর একটা সকাল বলা যায়… সায়ন : চোখ মেলতে খুব কষ্ট হচ্ছে,মাথার মধ্যে তীব্র একটা যন্ত্রণার স্রোত বয়ে যাচ্ছে আর কেমন যেন ভারি ভারি লাগছে।মনে হচ্ছে যেন মাথায় প্রচণ্ড ভারি কোন বস্তু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে আর তারসাথে বুকের উপরেও ভারি কোনকিছুর অস্তিত্ব টের পাচ্ছি।অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকাতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠল… এ আমি কি দেখছি!ছোঁয়া আমার বেডের পাশে একটা চেয়ারে বসে আছে কিন্তু ওর মাথাটা রয়েছে আমার বুকে।বোঝাই যাচ্ছে পাগলিটা সারারাত জেগে বসে ছিল কিন্তু অবশেষে ঘুমিয়ে পড়েছে তাও আবার আমার বুকে।আহ্ এতদিন পর ওকে এভাবে..বুকটা জুড়িয়ে গেল,মুহুর্তেই সব ব্যথা কষ্ট দূর হয়ে!একমনে ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে লাগলাম…
ছোঁয়া : সারারাত উনার পাশেই বসে ছিলাম,কখন যে চোখটা লেগে এসেছে বুঝতেই পারিনি।কোনকিছু ভাঙ্গার শব্দ কানে আসতেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল,ধড়ফড় করে উঠে বসলাম। সায়ন : খুব পানির তেষ্টা পেয়েছিল।ছোঁয়ার ঘুম ভাঙ্গাতে ইচ্ছে করছিল না তাই হাতি বাড়িয়ে নিজেই নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু আমার শরীরটা যে এতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বুঝতে পারিনি…
ছোঁয়া : একি গ্লাসটা ভাঙল কি করে?আর আপনি…আপনার জ্ঞান ফিরল কখন?আর তেষ্টা পেয়েছে তাহলে আমাকে ডাকেননি কেন?
সায়ন : আমি আসলে তোমাকে ডিস্টার্ব…
ছোঁয়া : কে বলেছে যে আপনি ডাকলে আমার ডিস্টার্ব হবে?এক মিনিট এক মিনিট আপনার যে জ্ঞান ফিরে এসেছে সেটাইতো এখনও কাউকে বলা হয়নি,সবাই কত টেনশন করছে…আচ্ছা শোনেন আপনি দুই মিনিট একা থাকতে পারবেন?আমি সবাইকে খবরটা দিয়েই চলে আসব আর ডক্টরকেও ইনফর্ম করতে হবে তো।জাস্ট দুই মিনিট প্লিজ…

সায়ন : আরে ছোঁয়া…শোন তো..ছোঁয়া যেও না প্লিজ,আরেকটু থাকো না আমার পাশে প্লিজ… যাহ্ পাগলীটা চলেই গেল,আমার মনের কথাগুলো শুনতেই পেল না!কবে বুঝবে তুমি আমাকে?কেন বোঝ না যে তুমি পাশে থাকলে আমার আর কাউকেই লাগবে না…
ডক্টর : গুড মর্নিং মি.মাহবুব…How are you feeling now?
সায়ন : I am good doctor… (ডক্টর সায়নের কিছু ফিজিক্যাল চেক আপ করলেন)
ডক্টর : You are completely well now Mr.Mahbub just take rest okey?And Mrs Mahbub please come with me…
ছোঁয়া : Yes doctor
ডক্টর : দেখুন মিসেস মাহবুব,পেশেন্টের বিপদতো কেটে গেছে কিন্তু…
ছোঁয়া : কিন্তু কি ডক্টর?ভয়ের কিছু নেইতো?
ডক্টর : না না ভয়ের কিছু নেই তবে উনি এখন ফিজক্যাল এণ্ড প্রচণ্ড রকমের উইক তাই আপনাকে অনেক কেয়ারফুল থাকতে হবে আর উনার অনেক যত্ন নিতে হবে
ছোঁয়া : ওকে ডক্টর
ডক্টর : আর হ্যাঁ আঘাতটা যেহেতু মেইনলি উনার মাথায় লেগেছে,উনাকে কোনভাবেই উত্তেজিত করা যাবে না।একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন,উনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করানো মানেই…নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাইছি? ছোঁয়া : না না ডক্টর উনার কিচ্ছু হবে না,উনি যা চাইবেন তাই হবে…
ডক্টর : Take care of him.He will be okey…
ছোঁয়া : ওকে ডক্টর…

(কিছু্ক্ষণ পর)
মা : খোকা প্লিজ একটু খেয়ে নে,ঔষধ খেতে হবে তো…
সায়ন : মা প্লিজ..আমার খেতে একদম ইচ্ছে করছে না ডোন্ট ফোর্স মি… মা : কিন্তু বাবা…
সায়ন : উফ মা,বললামতো আমি খাব না কেন জোর করছো?
ছোঁয়া : কি হয়েছে মা?Any problem? মা : দেখ না মা,নার্স ওকে এই ঔষধগুলো খাইয়ে দিতে বলেছে কিন্তু ও কিছুই খেতে চাইছে না।এখন খালি পেটে এই রকম হায়ার এন্টিবায়োটিক কিভাবে খাওয়াই বলতো…
ছোঁয়া : হুম…মা এক কাজ কর,ওগুলো আমাকে দাও মা : হ্যাঁ মা তুইই দেখ কিছু খাওয়াতে পারিস কিনা…
ছোঁয়া : এসব কি শুনছি আমি?আপনি নাকি খেতে চাইছেন না?এসব কিন্তু একদম ঠিক হচ্ছে না… কেন করছেন এসব?
সায়ন : আমার খেতে ইচ্ছে করছে না ছোঁয়া : ইচ্ছে না করলেও খেতে হবে,দেখি মুখটা খোলেনতো।আজ আমি আপনাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিব…
সায়ন : এতক্ষণ আমাকে একা রেখে এখন আবার ঢং করা হচ্ছে!(মনে মনে) ছোঁয়া : চিন্তা ভাবনা শেষ হল আপনার?
সায়ন : হুম
ছোঁয়া : তাহলে চুপ করে আছেন কেন?হা করতে বললাম না…
সায়ন : কিন্তু…
ছোঁয়া : চুপ..আর একটাও কথা না..চুপচাপ খাওয়া শুরু করবেন নাকি আমি…
সায়ন : কি আর করার চুপচাপ খাওয়া শুরু করলাম
ছোঁয়া : এই প্রথম উনি আমার কথামত কাজ করছেন,আমি খাইয়ে দিচ্ছি আর উনি চুপচাপ খাচ্ছেন ঠিক যেন একটা ছোট্ট বাচ্চা…
(দরজার ওপাশে)
বাবা : দেখেছো সায়নের মা,তোমার ছেলে কেমন বাধ্য ছেলে হয়ে গেছে?
মা : তাইতো দেখছি…ছোঁয়াই পারবে আমার ছেলেটাকে ঠিকমত দেখে শুনে রাখতে…
বাবা : দেখতে হবে না মেয়েটা কার?
মা : বাহ্ রে ও কি শুৎু তোমার একারই মেয়ে!আমার কেউ না?
বাবা : তা যা বলেছো,ওরা দুজনেইতো আমাদেরই সন্তান…

(কয়েকদিন পর)
সায়নকে আজ হসপিটাল থেকে রিলিজ দিয়ে দিয়েছে,কিছু্ক্ষণ আগেই ওকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।ছোঁয়া এসে ফ্রেস হয়েই কিচেনে ঢুকে পড়েছে,সায়নের জন্য খাবার বানাচ্ছে কারণ ডক্টর সায়নের জন্য আলাদা ডায়েট চার্ট দিয়েছেন।আর সায়ন বালিশে হেলান দিয়ে বসে আছে…
সায়ন : নাহ্ এভাবে বসে থাকলে চলবে না,কতদিন আর এভাবে টাইমপাস করব?
ছোঁয়া : এসব কি হচ্ছে শুনি?
সায়ন : না মানে অনেকদিন অফিসে যাইনি তাই…
ছোঁয়া : তাই কি?
সায়ন : ভাবলাম জমে থাকা কাজগুলো…
ছোঁয়া : উনার হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে নিলাম।আজ থেকে নো কাজ,অনলি রেস্ট ওকে?
সায়ন : কিন্তু…
ছোঁয়া : কোন কিন্তু নয়,দেখুন আপনি এখন ছুটিতে আছেন আর যতদিন পুরোপুরি সুস্থ না হবেন ততদিন ছুটিতেইথাকবেন ।আর হ্যাঁ ছুটি মানে ছুটিই তাই কমপ্লিট রেস্টে থাকতে হবে।কোন কাজ করা যাবে না মনে থাকে যেন…
সায়ন : এতদিনতো তোমার এই মিষ্টি মধুর শাসনগুলোকেই মিস করছিলাম।আজ মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি তুমি আমার বউ(মনে মনে)
ছোঁয়া : কি হল কথা বলছেন না কেন?আমি যা যা বললাম মনে থাকবে তো?
সায়ন : হুম
ছোঁয়া : এখন এক কাজ করেনতো খাবারটা খেয়ে নিন নাহলেতো ঠাণ্ডা হয়ে যাবে
সায়ন : না
ছোঁয়া : কেন?
সায়ন : ইচ্ছে করছে না,এখন ক্ষিধে নেই…
ছোঁয়া : নেই বললেই হল?সেই সকালবেলা একটুখানি খেয়েছিলেন…
সায়ন : বললামতো ক্ষিধে নেই,কেন শুধু শুধু জোর করছো?
ছোঁয়া : নাহ্ আপনি এভাবে মানবেন না দেখছি,ঠিক আছে আমিও অন্য ব্যবস্থা করছি…
সায়ন : যাই কর আমি খাব না
ছোঁয়া : ঠিক আছে দেখা যাক।খাবার মেখে উনার মুখের সামনে ধরলাম।নিন হা করুন আর কথা বাড়াবেন না প্লিজ
সায়ন : লক্ষী ছেলের মত খেতে লাগলাম
ছোঁয়া : এরপর থেকে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমার কথামত চলবেন,যা করতে বলব করবেন নাহলে কিন্তু জোর করে করাব…
সায়ন : আমিওতো তাই চাই।তোমার হাতে খাব বলেইতো এত কাহিনী করলাম(মনে মনে)
ছোঁয়া : উনাকে ঔষধ খাইয়ে দিলাম।এবার চুপচাপ শুয়ে পড়ুনতো আর একটু ঘুমানোর চেষ্টা করুন
সায়ন : শুয়ে পড়লাম

ছোঁয়া : উনার গায়ে চাদরটা ঠিক করে দিয়ে চলে আসছি…
সায়ন : ও চলে যাচ্ছিল হাতটা চেপে ধরলাম
ছোঁয়া : হাতে টান অনুভব করতেই পেছনে তাকালাম,উনি আমার হাতটা ধরে রেখেছেন
সায়ন : যেওনা প্লিজ…
ছোঁয়া : কিহ্!কেন?
সায়ন : আমার না ঘুম আসছে না
ছোঁয়া : তাহলে?
সায়ন : তুমি আমার পাশে একটু বসবে?
ছোঁয়া : কেন?
সায়ন : আগে বসো তারপর বলছি
ছোঁয়া : আচ্ছা এবার বলেন
সায়ন : এবার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও আর খবরদার আমি না ঘুমানো পর্যন্ত যাবে না বলে দিলাম
ছোঁয়া : দেখুন আমার অনেক কাজ পড়ে আছে,আপনি ঘুমান আমি যাই…
সায়ন : খবরদার কোন বাহানা চলবে না,যা করতে বলছি কর নাহলে কিন্তু আমি আবারও অফিসের কাজ করতে শুরু করব,আর তোমার একটা কথাও শুনব না।আমার যখন যা করতে ইচ্ছে হবে তাই করব…
ছোঁয়া : আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যা বলছেন তাই করছি,জাস্ট কুল ডাউন
সায়ন : এইতো আমপর লক্ষী বউ…
ছোঁয়া : উনার মুখে বউ ডাকটা শুনে চমকে উঠলাম।অদ্ভূত একটা ভালোলাগা কাজ করছে…
সায়ন : কি হল কি বললাম শুনতে পাওনি?আবার বলতে হবে?
ছোঁয়া : না না আর বলা লাগবে না
সায়ন : তাহলে ওভাবে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছো কেন?শুরু কর…
ছোঁয়া : না মানে…এইতো আসছি…
উনার মাথার কাছে বসে মাথায় হাত বুলাতে শুরু করলাম
সায়ন : ওর আলতো হাতের স্পর্শ পেতেই মনটা প্রশান্তিতে ভরে উঠল কিন্তু এই অবুঝ মন এইটুকুতে কিছুতেই স্যাটিস্ফাইড হচ্ছে না তাই হঠাৎই মাথাটা ওর কোলের উপর দিয়ে দিলাম

ছোঁয়া : উনি হঠাৎই আমার কোলে মাথা রাখলেন তারপর দুহাতে আমার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে চুপটি করে শুয়ে থাকলেন।আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না,উনাকে সরিয়ে দিব?না থাক এতে হয়তো উনার অনেক কষ্ট হবে এমনিতেই অসুস্থ মানুষ…থাক বাবা,উনি এভাবেই থাক।তাছাড়া আমার মনতো এটাই চাইছে,যতক্ষণ পারা যায় উনার একান্ত আপন হয়ে থাকতে।উনার প্রেমময় হাতের একটু পরশের জন্য কতদিন অপেক্ষা করেছি আর এখন…!
সায়ন : ছোঁয়ার কোলে মাথা রাখতেই উন্মুক্ত পেটের দিকে চোখ পড়লো।আসলে ও আজকে শাড়ি পরেছে আর আমার খেয়াল রাখতে গিয়ে হয়তো নিজের দিকে তাকানোর সময় পায়নি তাই…
ও নাভির ঠিক উপরেই একটা ছোট্ট তিল যেটা আমাকে ওর দিকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করছে কিন্তু…
নাহ্ এভাবে হবে না,ওদিকে আর তাকিয়ে থাকতে পারছি না তাই দুহাতে ওর কোমড় পেঁচিয়ে ধরলাম তারপর ওর কোলে মুখ বুজে পড়ে রইলাম…
(কিছু্ক্ষণ পরে)
ছোঁয়া : মনে হচ্ছে উনি ঘুমিয়ে পড়েছেন।উনাকে আলতো হাতে নিজের কোল থেকে নামিয়ে বালিশে শুইয়ে দিলাম তারপর ছুটলাম রান্নাঘরের দিকে।সবার জন্য ডিনার বানাতে হবে,বাবা-মা এই কয়দিন অনেক কষ্ট করেছেন তাই উনাদেরকে আর কিছু করতে দিচ্ছি না আর তাছাড়া উনারা কাল সকালেই বাড়ি ফিরে যাবেন বলেছেন।উনার অবস্থা এখন বেশ ভাল আর এখানে উনার দেখাশুনা করার জন্য আমিতো আছিই…
সায়ন : হঠাৎই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল,চোখ মেলে দেখলাম আমি বিছানায় বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে আছি।কিন্তু আমিতো ছোঁয়ার কোলে মাথা রেখে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম তাহলে…ছোঁয়া…এই ছোঁয়া…কোথায় তুমি?আমাকে একা রেখে চলে যাওয়া!দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…
ছোঁয়া : রান্নাটা প্রায় হয়েই এসেছে,যাই বাবা-মাকে চা-নাস্তা দিয়ে আসি…
সায়ন : অনেক কষ্টে বিছানা থেকে নামলাম কিন্তু পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা করছে,হাঁটতে পারব কিনা ঠিক নেই।ছোঁয়া…কোথায় তুমি?একবার এদিকে আসতো…এক পা দুপা করে একটু এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।জোর করে আরেকটু এগোতেই মেঝেতে পড়ে গেলাম
ছোঁয়া : উনার রুমের কাছাকাছি যেতেই কিছু পড়ার শব্দ কানে আসলো।বাবা-মা আর আমি ছুটে চলে গেলাম সেদিকে,উনি মেঝেতে পড়ে আছেন।কপালে খানিকটা কেটেও গেছে কাই রক্ত পড়ছে…
মা : সায়ন…বাবা আমার কি হয়েছে তোর?এভাবে পড়ে গেলি কি করে?
সায়ন :….
বাবা : কি রে কথা বলছিস না কেন,তোর মা কিছু জানতে চাইছে…
ছোঁয়া : আপনি তো ঘুমাচ্ছিলেন,তাহলে এসব…আপনার কিছু লাগলে আমাকে ডাকতেন…
সায়ন :….
বাবা : কি রে কথা বলছিস না কেন?কিছু লাগলে আমাদেরকে ডাকতে পারতি…
মা : কেন ওকে ডাকতে হবে কেন?ওর দেখাশোনার দ্বায়িত্ব তো ছোঁয়ার তাহলে ও ওকে ফেলে কোথায় গিয়েছিল?
ছোঁয়া : মা উনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই আমি রান্নাঘরে…
মা : তোমাকে রান্না করতে কে বলেছে?আমি করে দিতাম,সায়নের ঠিকমত দেখাশোনা করাটা তোমার প্রধাণ দ্বায়িত্ব তারপর বাঁকি সব বুঝেছো?
সায়ন : এই রে ঘটনা যে অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে…(মনে মনে)
ছোঁয়া : হ্যাঁ মা কিন্তু…
মা : কোন কিন্তু না..আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যখন আমার ছেলেটার ঠিকমত দেখাশোনা করতে পারবেই না তখন তোমাকে আর কিছুই করতে হবে না,ওর সব দ্বায়িত্ব এখন থেকে আমার

বাবা : আহ্ সায়নের মা,কি আবোল-তাবোল বকছো?
মা : আবোল-তাবোল না এটাই সত্যি।কাল যদি আমরা চলে যাই তখনও যদি ও আমার ছেলেটার প্রতি এমন অবহেলা করে তখন…
ছোঁয়া : আমি অবাক হয়ে মার দিকে তাকিয়ে আছি,কিছুই বলতে পারছি না।উনি কি করে ভাবলেন যে আমি উনার প্রতি অবহেলা করব…
সায়ন : এসব কি বলছো মা?ও আমাকে অবহেলা করতে যাবে কেন,ওর থেকে ভাল করে আমার যত্ন আর কে নেবে বল?
মা : তা তো নিজ চোখেই দেখতে পাচ্ছি
সায়ন : তুমি কিছুই দেখতে পাচ্ছো না,দেখতে পেলে ওর সাথে এমন করতে পারতে না
মা : কিহ্ আজ মার থেকে বউই তোর কাছে আপন হয়ে গেল!ওর জন্য তুই আমার মুখে মুখে কথা বলছিস!
সায়ন : মা তুমি শুধু শুধু আমাকে ভুল বুঝছো,বিশ্বাস কর ও আমার কোন অযত্ন হতে দেবে না আর দরকার হয় তোমরা চলে যাওয়ার পর একটা কাজের লোক রেখে দিব তাহলেই সব ঝামেলা মিটে যাবে…
মা : না ওর হাতে আমি তোকে ছেড়ে দিতে পারব না,ওর উপর আমার আর কোন ভরসা নেই…
ছোঁয়া : মা….
বাবা : আসমা..এবার একটু চুপ কর প্লিজ,খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যাচচ্ছে কিন্তু…
মা : আমি কিছু বললেই বাড়াবাড়ি না?ঠিক আছে আমি আর কিছুই বলব না তোমাদের যা ইচ্ছে হয় কর…
বাবা : আসমা…আসমা…যাহ চলেই গেল!ছোঁয়ার দিকে তাকালাম,মেয়েটা সায়নের মাথাটা কোলের উপর নিয়ে নিরবে চোখের পানি ফেলছে আর ওর কপালের কাটা জায়গাটায় ব্যাণ্ডেজ করে দিচ্ছে।আসমা কাজটা খুব খারাপ করল,এমন একটা মেয়েকে ও যে কেন এতগুলো কথা শোনালো…
চলবে….