Childhood marriage

Childhood marriage ! Part- 19

#লেখিকা-সানজিদা সেতু
#পর্ব-১৯
লোপা : What are you saying yaar?ভাইয়া এত কিছু করেছে!I can’t believe this…
ছোঁয়া : তোর কি মনে হয়,আমি এসব বানিয়ে বানিয়ে বলছি?
লোপা : তা অবশ্য ঠিক,ওয়াও ইয়ার তুই কত্ত লাকি রে…
ছোঁয়া : মানে?
লোপা : মানে…একবার ভেবে দেখ ভাইয়া কত্ত রোমান্টিক😍আর আমারটা😞
ছোঁয়া : লোপার বাচ্চা তরেতো আমি😡
লোপা : আমারে কি?সত্যি কথা বললেই গায়ে ফোস্কা পড়ে তাইনা?
ছোঁয়া : তবে রে শয়তান…😡
লোপা : এই রে পাগলীটা মনে হয় বেশি রেগে গেছে,আর রাগানো যাবে না।ওকে ওকে বেবি মাথাটা ঠাণ্ডা কর প্লিজ…
ছোঁয়া : হুম

লোপা : তবে যাই বলিস কাজটা কিন্তু তুই মোটেও ভাল করিস নি
ছোঁয়া : কোন কাজটা?
লোপা : ভাইয়াকে তোর মাফ করে দেয়া উচিত ছিল
ছোঁয়া : হোয়াট!তুই এই কথা বলছিস!তুই…তুইতো সবই জানিস তাইনা?উনি আমার সাথে কি কি করেছেন কোনকিছুই তো তোর অজানা না তারপরও…😳
লোপা : হ্যাঁ বলছি,দেখ তাসু ভাইয়া নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তাই আমার মনে হয় উনার কথাটা তোর একবার একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখা উচিত…
ছোঁয়া : লোপা…
লোপা : একটা কথা নিশ্চয় শুনেছিস,Life is all about a second chance.একজন মানুষ যতবড় অপরাধই করুক না কেন,সে কিন্তু একটু শেষ সুযোগ পায়।ইভেন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত একজন আসামীও কিন্তু রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা মওকুফ হয়ে যায়,সেখানে ভাইয়ার অপরাধতো অনেক ছোট
ছোঁয়া : ছোট!মোটেও না উনার অপরাধ মোটেও ছোট নয় আর আমিও উনাকে এত ইজিলি মাফ করতে পারব না
লোপা : দেখ তাসু এটা তোর লাইফ তাই তোর লাইফে কি করবি না করবি তার ডিসিশন নেয়ার অধিকার একমাত্র তোর কিন্তু তবুও অামার মনে হচ্ছে তুই এবার একটু বেশিই বাড়াবাড়িই করছিস,ভাইয়ার সাথে একটু বেশিই রুডলি বিহেভ করছিস
ছোঁয়া : আমি রুড বিহেভ করছি!আর উনি আমার সাথে যা করেছিলেন সেটা?
লোপা : দেখ আমি মানছি উনি ভুল করেছেন কিন্তু উনিতো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন তাইনা?জানিসতো ছোঁয়া,আমার মা সবসময় বলেন,সংসার খুব সেনসিটিভ একটা জিনিস।এটাকে ঠিকভাবে মেইনটেইন করতে হলে কাউকে না কাউকে তো কমপ্রোমাইজ করতেই হবে।শুরুটা নাহয় তুই ই করলি,শেষটা হয়তো ভাইয়া করবে…
ছোঁয়া :….
লোপা : Anyway decission is yours.তবে আমার কথাটা একটু ভেবে দেখিস প্লিজ…
ছোঁয়া : হুম

মারুফ : What is this bro?রাত এগারোটা বাজে তুই বাসায় কখন যাবি?নাকি সারারাত এখানেই বসে থাকার প্ল্যানিং আছে?জার্নি করে এসেছিস,একটুতো ঘুমাবি নাকি…
সায়ন : রাখ তোর ঘুম,এদিকে আমার লাইফ শেষ হয়ে যাচ্ছে আর তুই পড়ে আছিস ঘুম নিয়ে!
মারুফ : just cool down bro everything will be all right…
সায়ন : কিভাবে ঠিক হবে শুনি?ছোঁয়া কিছুতেই আমার কোন কথা শুনতে চাইছে না,বলেছে আমাকে কোনদিন মাফ করতে পারবে না😢
মারুফ : মাফ করবে না বললেই হল!দেখ দোস্ত ভাবী এখন রেগে আছে তাই রাগের মাথায় এসব বলে ফেলেছে,রাগটা পড়ে এলেই দেখবি তোর কাছে ছুটে চলে আসবে।সব ভুলে তোকে আপন করে নেবে…
সায়ন : না রে ও খুব জেদি,এত সহজে আমাকে মাফ করবে না।আর করবেই বা কিভাবে আমার অপরাধটাও যে অনেক বড়…
মারুফ : তুই যে তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস এটাই অনেক বড় ব্যাপার আর তুইতো তোর ভুলের জন্য রীতিমত পস্তাচ্ছিস তাতেই তোর দোষ অর্ধেক মাফ হয়ে গেছে
সায়ন : তুই বলছিস?
মারুফ : হ্যাঁ বলছি,এখন এক কাজ কর অনেক রাত হয়ে গেছে বাসায় গিয়ে একটা লম্বা ঘুম দে।বাঁকি চিন্তা কাল সকালে করা যাবে
সায়ন : আচ্ছা😞আধা ঘণ্টা ধরে উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছি,বাসায় ফিরতে একেবারেই ইচ্ছে করছে না।ছোঁয়াকে ছাড়া বাসাটা একেবারেই খালি খালি লাগছে,কোনকিছুতেই মন বসছে না…

(পরদিন)
বাবা : আরে আছমা,এত ভেঙ্গে পড়ছো কেন?একটু ধৈর্য ধর দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে
মা : কি করে ধৈর্য ধরব বলতে পারো?আমার ছেলেটা ঐদিকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আর এদিকে তোমরা বলছ আমি ধৈর্য ধরব😪😪
বাবা : আহ্ আছমা এত ভেঙ্গে পড় না তো,তোমার ছেলের কিচ্ছু হবে না আল্লাহর উপর ভরসা রাখো আর বেশি বেশি দোয়া কর…
মা : তাইতো করছি কিন্তু কি করব বল একমাত্র ছেলেতো তাই মন কিছুতেই মানছে না😪
বাবা : (মন তো আমারও মানছে না কিন্তু কি করব বল…)তুমি এমন ভেঙ্গে পড়লে ছোঁয়াকে কে সামলাবে বলতো….
মা : 😪
বাবা : আচ্ছা মেয়েটা কোথায় গেল বলতো?ওকেতো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না…
মা : এখানেই ছিল,কোথায় গেল বলতো?
মারুফ : মামী ভাবীতো ঐদিকে গেল,মনে হয় অপারেশন থিয়েটারের দিকে…
বাবা : সেকি?একা একা..!অপারেশন থিয়েটারের দিকে চলে গেলাম
মারুফ : আমিও আসছি মামা
বাবা : না না তুই তোর মামীর কাছেই থাক আমি ওদিকটা দেখছি…

ছোঁয়া : উনাকে ওটিতে নিয়ে গেছে তাও প্রায় ঘণ্টা দুয়েক হয়ে গেছে,এখনও ভেতর থেকে কেউ বের হচ্ছে না কেন?বাইরে থেকে চেষ্টা করছি ভেতরে কি হচ্ছে তা দেখতে কিন্তু…
বাবা : (ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)কি রে মা,এখানে কি করছিস?
ছোঁয়া : বাবা দেখ না ওরা উনাকে…😪
বাবা : শান্ত হ মা,খোকার কিছু হবে না তুই দেখে নিস
ছোঁয়া : ওরা উনার সাথে কি কি করছে দেখো…ছুরি কাঁচি দিয়ে কত কাটাকুটি করছে!কত রক্ত বের হচ্ছে!উনার কত কষ্ট হচ্ছে আর আমি…😪
বাবা : আ রে আমার পাগলী মেয়ে,এইটুকুতেই এত ভেঙ্গে পড়লে চলে?শোন মা আমার ছেলের কিছু হবে না,আমি জানি তুই কিছু হতে দিবি না,শুধু আল্লাহর উপর ভরসা রাখ…

ছোঁয়া : আমি পারছি না বাবা,খুব ভয় করছে উনার কিছু হবে নাতো…
বাবা : (মুচকি হেসে)তুই থাকতে কি ওর কিছু হতে পারে?কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছি না,খোকার হঠাৎ এই রকম একটা এ্যাক্সিডেন্ট হল কিভাবে?ও তো ড্রাইভিং এ অনেক এক্সপার্ট আমি শুনেছি তাহলে…
ছোঁয়া : আমি জানি বাবা এসব কি করে হয়েছে,সব আমার জন্য হয়েছে।আমি যদি উনার সাথে অমন খারাপ ব্যবহার না করতাম তাহলে হয়তো…(মনে মনে)
বাবা : চল মা,এবার কিছু খেয়ে নিবি
ছোঁয়া : না বাবা আমার একদম খেতে ইচ্ছে করছে না
বাবা : ইচ্ছে করছে না বললেই হল!সেই সকালে একটুখানি খেয়েছিস আর এখন বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হতে চলল…
ছোঁয়া : কিন্তু বাবা…
বাবা : কোন কিন্তু না,চল মা.. তোকে আজ আমি নিজ হাতে খাইয়ে দিব…
ছোঁয়া : না বাবা আমি…
বাবা : দেখ মা মহান আল্লাহর রহমতে ডক্টররা হয়তো অামার ছেলেটাকে বাঁচিয়ে দেবে কিন্তু ওকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়েতো তোকে আনতে হবে আর সেজন্য তোকে সুস্থ থাকতে হবে।নাহলে ওর খেয়াল রাখবি কি করে?
ছোঁয়া : 😩😩
বাবা : নে মা এবার হা করতো,তোকে খাইয়ে দেই…
ছোঁয়া : আর তুমি?
বাবা : আগে তোকে খাইয়ে দেই,তারপর আমি তোর মাকে নিয়ে খেয়ে নিব
ছোঁয়া : না..
বাবা : কেন?
ছোঁয়া : সবাই একসাথে খাব চলো…
বাবা : আচ্ছা চল…
ছোঁয়া : মা…
মা : মা রে,আমার ছেলেটা…😪
ছোঁয়া : তোমার ছেলে একদম ঠিক আছে…
মা : কোথায় আমার খোকা?আমি ওর কাছে যাব
ছোঁয়া : যাবে তো কিন্তু তার আগে….
মা : তার আগে কি?
ছোঁয়া : তার আগে…তোমাকেতো কিছু খেতে হবে
মা : আমার ছেলেটার এই অবস্থা আর তোরা…😪
ছোঁয়া : উফ মা,বললামতো তোমার খোকা একদম ঠিক আছে কিন্তু একটু পরে কিন্তু আর ঠিক থাকবে না…
মা : কেন কি হয়েছে আমার খোকার?😰
ছোঁয়া : কিছু হয়নি কিন্তু তোমাকে এই অবস্থায় দেখলে ঠিকই কিছু একটা হয়ে যাবে
মা : 😞
ছোঁয়া : আমার সোনা মা,কিছু একটা খেয়ে নাও নাহলে তোমার ছেলের খেয়াল রাখবে কিভাবে বল…
মা : 😪😪
ছোঁয়া : মারুফ ভাইয়া…
মারুফ : হ্যাঁ ভাবী?
ছোঁয়া : খাবারগুলো দাওতো,আজকে আমি নিজ হাতে মাকে খাইয়ে দিব…
বাবা : আর আমি খাইয়ে দিব আমার ছোঁয়া মাকে 😋
মারুফ : এই নাও ভাবী
ছোঁয়া : দেখি মা,হা করো তো…
মা : না রে মা,তোরা খেয়ে নে…
ছোঁয়া : প্লিজ মা..আমাদের জন্যে না হোক তোমার ছেলের জন্য একটু খাও প্লিজ…
মা : মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে খেয়ে নিলাম
বাবা : এবার তোর পালা,দেখি হা করতো…
ছোঁয়া : বাবার হাতে খেয়ে নিলাম আর সাথে উনাকেও খাইয়ে দিলাম
মারুফ : হে আল্লাহ এদেরকে এভাবে দেখে কতটা শান্তি লাগছে!হে আল্লাহ এই মুখের হাসিকে মলিন হতে দিও না,যেভাবেই হোক সায়নকে সুস্থ করে দাও…
ছোঁয়া : ভাইয়া এবার তুমিও কিছু খেয়ে নাও
মারুফ : ও হ্যাঁ খাচ্ছি…
ছোঁয়া : ভাইয়া একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
মারুফ : এভাবে পারমিশন নেওয়ার কি আছে,কি জানতে চাও বল না…
ছোঁয়া : ভাইয়া ওর এ্যাক্সিডেন্ট..এভাবে হঠাৎ করে..কিভাবে…
মারুফ : সায়ন কালরাতে ড্রিংক করে ড্রাইভ করছিল আর তাই…
ছোঁয়া : কিন্তু উনিতো কখনও ড্রিংক করেন না তাহলে…
মারুফ : আসলে ভাবী কাল রাতে ও অনেক আপসেট ছিল,তারপর আমি অনেক বুঝিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম কিন্তু আমি কি করে জানবো ও ড্রিংক করবে…
ছোঁয়া : সবকিছুর জন্যে আমিই দায়ী,আমার জন্যেই উনার আজকে এই অবস্থা😪
মারুফ : আরে ভাবী তুমি শুধু শুধু মন খারাপ করছো কেন?এসবের মধ্যে তোমার কোন হাত নেই বুঝেছো?
ছোঁয়া : না সব আমার জন্য হচ্ছে,আমি যদি সেদিন উনার কথাটা একটু বোঝার চেষ্টা করতাম তাহলে হয়তো…😪
মারুফ : আরে ভাবী,সায়নের কিচ্ছু হবে না তুমি দেখে নিও…

(কিছু্ক্ষণ পর)
ওটির দরজা খুলে গেল,ভেতর থেকে একে একে সব ডক্টর আর নার্স বেরিয়ে আসলো আর তারপরেই স্ট্রেচারে করে সায়নকে কেবিনে শিফ্ট করা হল…
বাবা : ডক্টর সাহেব আমার ছেলে…
ডক্টর : দেখুন উনার অবস্থা এখন কিছুটা স্টেবল কিন্তু ২৪ ঘণ্টার আগে কিছুই বলতে পারছি না
মারুফ : কেন ডক্টর সাহেব?অপারেশন তো সাকসেসফুল তাইনা?
ডক্টর : অপারেশনতো সাকসেসফুল কিন্তু…
বাবা : কিন্তু?
ডক্টর : আসলে উনার মাথায় বেশ সিরিয়াস একটা ইনজুরি হয়েছে,সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ারের ফ্রণ্ট পার্টে অনেক আঘাত লেগেছে।আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না আঘাতটাতে ঠিক কতটা ড্যামেজ হয়েছে আর ইন্টারনাল আরো কিছু কমপ্লিকেশনতো আছেই।তাই উনার জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারছি না।
মারুফ : তাহলে আর কি,জ্ঞান ফিরে আসলেইতো সব ঝামেলা মিটে যাবে…
ডক্টর : আসলে উনার জ্ঞান ফেরাটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রবলেম।ফ্র্যাংকলি স্পিকিং যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উনার জ্ঞান না ফেরে তাহলে হয়তো আমরা উনাকে আর…
মা : না..আমার খোকার কিছু হতে পারে না…
ছোঁয়া : মা উনার কিচ্ছু হবে না তুমি দেখে নিও।ডক্টর আপনি কিছুতো বলুন…
ডক্টর : আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করব…
বাবা : আছমা…আল্লাহর উপর ভরসা রাখো প্লিজ..
ছোঁয়া : 😪😪
বাবা : তুই কোন চিন্তা করিস না মা,উপরে তো একজন আছেন দেখবি উনি আমাদের সায়নের কিছু হতে দেবেন না…
To be continued…