Childhood marriage

Childhood marriage ! Part- 13

#পর্ব-১৩
সায়ন : আমার আর ছোঁয়ার মাঝে মাত্র কয়েক ইঞ্চির গ্যাপ,দুজনের হার্টবিটের শব্দও মনে হয় দুজন শুনতে পাচ্ছি।ওর গরম নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে এসে পড়ছে যা আমাকে ওর দিকে আরও বেশি করে আকর্ষণ করছে…
ওর আরো একটু কাছে যেতেই ভেতর থেকে একটা বাঁধা পেলাম,পকেট থেকে রুমালটা বের করে হাতে নিলাম।তারপর ওর মুখে লেগে থাকা ময়দাগুলো আলতো করে মুছে দিলাম😊
ছোঁয়া : আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম,উনি মিটিমিটি হাসছেন😯
সায়ন : আবারও ওর দিকে এগিয়ে গেলাম,ওর কানের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে গিয়ে বললাম,”কি ভেবেছিলে?আমি কি করব তোমার সাথে?সবসময় মাথায় শুধু উল্টো পাল্টা চিন্তা ঘোরে তাইনা?”
ছোঁয়া : উনার কথা শুনে লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলাম😌
সায়ন : মেয়েটার লজ্জারাঙা মুখটা আরও আকর্ষণীয় লাগছে,ইচ্ছে করছে কাছে টেনে নিই কিন্তু…
নাহ্ আর ওর দিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না,তাহলে হয়তো নিজেকে আর সামলাতে পারব না,আমি বরং পালাই…
ছোঁয়া : উনি চলে যাচ্ছিলেন,হঠাৎ আমার কি যেন হল!ছুটে গিয়ে উনার হাত টেনে ধরলাম
সায়ন : হঠাৎ ছোঁয়া এমন কেন করল?অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম অমনি মেয়েটা আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল😧
ছোঁয়া : নাহ্ আজকে আর উনাকে ছাড়ব না,আমার করেই ছাড়ব
সায়ন : চাইলেও ওকে দূরে সরিয়ে দিতে পারছি না!ছোঁয়া…ছোঁয়া…এসব কি করছো?ছাড় বলছি…
ছোঁয়া : না…

সায়ন : ছোঁয়া…কি পাগলামী হচ্ছে!ছাড় বলছি
ছোঁয়া : না ছাড়ব না
সায়ন : ছোঁয়া…এক রকম জোর করেই ছোঁয়ার মাথাটা নিজের বুকের উপর থেকে সরিয়ে দিলাম।কিন্তু ওর মুখের দিকে তাকিয়েই আবার চমকে উঠলাম,মেয়েটা কেমন যেন অসহায় ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে
ছোঁয়া : এমন কেন করছেন আমার সাথে?আপনার বুকে একটু জায়গা দিন না প্লিজ…
সায়ন : ওর বলা কথাগুলো কানে আসতেই নিজের উপর সব কনট্রোল হারিয়ে ফেললাম,নিজের ঠোঁটদুটো আলতো করে ওর কপালে ছুঁইয়ে দিলাম।ও দেখলাম হালকা একটু কেঁপে উঠল…
ছোঁয়া : এতদিনতো আমি এই দিনটার জন্যেই ওয়েট করছিলাম,উনি আমাকে আপন করে নেবেন এই স্বপ্নই তো দেখছিলাম এতদিন।কিন্তু এখন যেন আর সহ্য করতে পারছি না,উনার প্রতিটা স্পর্শে আমার পুরো শরীরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে,কেঁপে কেঁপে উঠছি উনার প্রতিটি স্পর্শে…
সায়ন : ওর চোখে,গালে,কপালে,ঘাড়ে,গলায় সব জায়গায় নিজের ঠোঁটের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছি,আমি যেন আজকে আর আমার মাঝে নেই,আউট অফ কনট্রোল হয়ে গেছি।এসবের মাঝে একবার ওর দিকে তাকাতেই চমকে উঠলাম,মেয়েটা চোখদুটো এখনও বন্ধ করে আছে আর ওর ঠোঁটজোড়া অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে যেন আমাকে আরো কাছে ডাকছে…
এবার আর নিজেকে আটকালাম না,আস্তে আস্তে ওর ঠোঁটের আরও কাছে এগিয়ে যাচ্ছি।ওর গরম নিঃশ্বাস চোখে মুখে পড়তেই আমি যেন অন্য জগতে হারিয়ে গেলাম।চোখ বন্ধ করে ওর ঠোঁটে…
ঠিক তখনই…
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং…
সায়নের ফোনটা বাজছে,ফোনের শব্দে সায়ন বাস্তবে ফিরে এসেছে।এখন ওর প্রচণ্ড গিল্টি ফিল হচ্ছে
সায়ন : কি করতে যাচ্ছিলাম আমি?ছি!আমি এসব ভাবলাম কি করে!!
ছোঁয়া : মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিলাম,উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি ফোনটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন…
সায়ন : হ্যালো…
লোপা : আসসালামু আলাইকুম দুলাভাই
সায়ন : ওয়া আলাইকুম আসসালাম,কে বলছেন?
লোপা : This is not fare jijaji,শ্যালিকাকে আপনি করে বলছেন কেন?বাই দ্য ওয়ে আমি লোপা…
সায়ন : ওহ্ সরি সরি আমার ভুল হয়ে গেছে।আচ্ছা এবার বল কেমন আছো?
লোপা : জ্বি ভাল,আচ্ছা তাসু কোথায়?
সায়ন : কে বললে?
লোপা : আরে বাবা তাসু…ওর নাম্বারটা বন্ধ পাচ্ছি তাই…
সায়ন : তাসু!!!
লোপা : তাসু মানে ছোঁয়া,আমরা ওকে তাসু বলেই ডাকিতো…
সায়ন : ছোঁয়ার সাথে আবার তাসুর মিল কোথায়?
লোপা : ও আপনি বুঝবেন না,আচ্ছা এবার ম্যাডামকে ফোনটা দিন তো…
সায়ন : আচ্ছা ওয়েট…

ছোঁয়া : জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম তখনই…
সায়ন : এই নাও ধর…
ছোঁয়া : জ্বি?
সায়ন : লোপা ফোন দিয়েছে,কথা বল…
ছোঁয়া : জ্বি..
উনি ফোনটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন,আমি কথা বলতে লাগলাম
লোপা : কি রে,তুই এখনও ভাইয়াকে সবকিছু খুলে বলিস নি?
ছোঁয়া : না রে…
লোপা : কিন্তু কেন?
ছোঁয়া : আসলে আমি চাই উনি নিজে থেকেই সবকিছু জানুক।আমি তাসনিয়া হওয়ার বেনিফিট নিয়ে উনাকে পেতে চাইনা,আমি চাই উনি ছোঁয়াকেই ভালোবাসুক তাসনিয়াকে নয়
লোপা : উনি যাকেই ভালোবাসুন একইতো ব্যাপার হল তাইনা?
ছোঁয়া : নাহ্ এক ব্যাপার না,উনি তাসনিয়াকে ভালোবাসেন।ওর আচার-আচরণ,কার্যকলাপকে ভালোবাসেন,ওর শান্ত-শিষ্ট স্বভাবকে ভালোবাসেন যেটা আমার ক্যারেক্টার না।তোরাতো জানিস আমি কতটা চঞ্চল আর দুষ্টু,শুধুমাত্র প্রকৃতির কাছে গেলেই আসি অমন চুপচাপ হয়ে যাই…
লোপা : হ্যাঁ কিন্তু…
ছোঁয়া : দেখ লোপা আমি চাই আমি যেমন আমাকে উনি সেভাবেই আপন করে নিক,মিথ্যে মোহে পড়ে আমাকে ভালোবাসুন সেটা আমি চাই না…
লোপা : তুই কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করছিস তাসু…
ছোঁয়া : শোন না উনি আসছেন,এখন রাখছি বাই…
লোপা : তাসু…যাহ্ পাগলীটা ফোনটাই কেটে দিল
সায়ন : কথা শেষ?
ছোঁয়া : জ্বি
সায়ন : আচ্ছা আমি অফিসে যাচ্ছি,তুমি কিন্তু ঠিকঠাক খাবার আর ঔষধ খেয়ে নিও
ছোঁয়া : কিন্তু আপনিতো কিছুই খেলেন না…
সায়ন : আমি অফিসে খেয়ে নেব,নাউ বাই…
ছোঁয়া : আচ্ছা বাই…
উনি চলে গেলেন,একবার পেছন ফিরে তাকালেনও না!কবে যে উনি বুঝবেন?আমারওতো ইচ্ছে হয় আমার স্বামী অফিসে যাওয়ার সময় আমার কপালে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দেবে,যাওয়ার আগে পেছন ফিরে মুচকি হাসি দিয়ে বলবে,”চিন্তা কর না তাড়াতাড়ি চলে আসব…”

অফিসে নিজের রুমে বসে আছে সায়ন,একমনে কি যেন ভাবছে
সায়ন : আচ্ছা,ছোয়া এখন কি করছে?ও কি ঠিকমত ঔষধ খেয়েছে?মেয়েটা যে রকম ইরেসপন্সিবল!মনেতো হয় না ঠিকমত নিজের খেয়াল রাখছে…
আচ্ছা একবার ফোন দিব?না না দরকার নেই।
আচ্ছা আমি হঠাৎ ওকে নিয়ে এত চিন্তা করছি কেন?আজকাল তাসনিয়াকেই আর খোঁজার চেষ্টা করছি না!কিন্তু কেন?তবে কি আমি কোন মায়ায় আটকা পড়ছি…
না না এ কিছুতেই হতে পারে না…
আমাকে এই মোহ থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে,কিছুতেই ওর প্রতি উইক হওয়া যাবে না।ওকে দূরে সরিয়ে দিতেই হবে…
ছোঁয়া : সকালেতো উনি কোন রকমে আমার থেকে পালিয়েছেন,রাতে যেন না পালাতে পারেন তার ব্যবস্থা আমি করব।কিন্তু কি করি কি করি?আইডিয়া…

(রাতে)
সন্ধ্যা হতেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে বসেছে ছোঁয়া।একটা আকাশী কালারের শাড়ি,তার সাথে ম্যাচ করে এ্যান্টিক্সের ঝুমকো কানের দুল,গলায় পেনডেন্ট আর দুহাত ভর্তি কাঁচের রেশমি চুড়ি।সাজুগুজু বলতে চোখে গাঢ় করে কাজল,ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক আর কপালে আকাশী রঙের ছোট্ট একটা টিপ আর তারসাথে হালকা একটু মেকাপ।ব্যাস এতেই ওর দিক থেকে চোখ ফেরানো দায়…
ছোঁয়া আয়নায় নিজের দিকে একবার তাকিয়েই আনমনে হাসল তারপর মনে মনে বলল,”এবার আপনি কি করবেন পতিদেব?আমার থেকে পালাবেন কিভাবে?”

এদিকে অফিস থেকে ঠিক সময়ে বের হলেও বাসায় ফিরতে পারেনি সায়ন,কি করবে?অফিস থেকে বের হবে তখনই এক কলিগ এক রকম জোর করেই ওকে নিজের সঙ্গে নিয়ে গেছে।বেচারার কিছুদিন পরেই বিয়ে,সেই উপলক্ষেই আজকে অফিসের সবার জন্য পার্টির এ্যারেঞ্জ করেছে।ইন্সটেন্ট পার্টি তাই কেউই আগে থেকে কিছু জানতো না…
ডিনার শেষে সবাই মিলে ইচ্ছেমত ড্রিংক করছে কিন্তু সায়ন কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না দেখে একজন গোপনে ওর অরেঞ্জ জুসের সাথে কিছুটা হুইস্কি মিশিয়ে দিল…
সায়ন সবার থেকে বিদায় নিয়ে কোন রকমে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল।এ্যালকোহলের রিয়্যাকশনে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওর মাথা ঝিম ঝিম করতে লাগল কিন্তু এমন কেন হচ্ছে সেটা কিছুতেই বুঝতে পারল না।বাসায় এসে একবার কলিংবেল চাপতেই ছোঁয়া ছুটে এসে দরজা খুলে দিল,ওর দিকে চোখ পড়তেই সায়নের চোখ কপালে উঠে গেল
সায়ন : কে দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে?মনে হচ্ছে যেন স্বর্গের কোন অপ্সরী!মেয়েটা যে এত সুন্দর আগেতো খেয়াল করিনি…কিন্তু আমি সবকিছু এমন ঝাপসা কেন দেখছি?মনে হচ্ছে যেন সবকিছু অনেক অনেক দূরে কিন্তু…
(সায়ন পড়ে যাচ্ছিল,ছোঁয়া ওকে জাপটে ধরল)
ছোঁয়া : আরে আরে কি হল আপনার?আ..আপনার কি শরীর খারাপ লাগছে?
সায়ন : (বিড়বিড় করে)কোথায় তু..ত..তুমি এত সুন..দর…
ছোঁয়া : চুপ একদম চুপ,কোন কথা বলবেন না।দেখি আমার কাঁধে হাত দিয়ে ধরুনতো,আমি আপনাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছি…
সায়ন ছোঁয়ার কথামতই কাজ করল,ছোঁয়া ওকে বিছানায় শুইয়ে দিল,ওর গায়ের জামা আর জুতো খুলে দিল।তারপর একটা ভেজা কাপড় দিয়ে ওর হাত-মুখ মুছে দিয়ে বিছানায় ভাল করে শুইয়ে দিল।নিজে পাশের রুমে গিয়ে ঘুমাবে ভেবে যেই উঠতে নিল অমনি হাতে একটা টান অনুভব করল…
ছোঁয়া : পেছন ফিরে দেখলাম উনি আমার হাত চেপে ধরে মুচকি মুচকি হাসছেন।কি করছেন ছাড়ুন,আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাব…
সায়ন : ওর কথা শুনে ওকে এক ঝটকায় নিজের কাছে টেনে নিলাম।ওর উন্মুক্ত কোমড় পেঁচিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম তারপর ওর চুলের ভেতর নাক ডুবিয়ে দিলাম।অদ্ভূত একটা গন্ধ আছে ওর চুলে যা আমাকে পুচণ্ড রকমে আকর্ষণ করছে,আমি যেন তার মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি…
ছোঁয়া : উনি আরো নিবিড়ভাবে আমাকে জড়িয়ে নিচ্ছেন,আমার নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে ভারি হয়ে আসছে।আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেললাম,অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করছে কিন্তু উনি হঠাৎ এমন কেন করছেন!আচ্ছা আমি কি উনাকে বাঁধা দিব?না থাক একটা রাতের জন্যে না হয় একটু স্বার্থপর হলাম…
সায়ন : ওর চুল ছেড়ে চিবুকে নিজের ঠোঁটজোড়া স্পর্শ করলাম,ও দেখলাম হালকা একটু কেঁপে উঠল।আমি যেন কোন মোহে পড়ে গেছি,ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর কপালে একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিলাম তারপর ওর দিকে তাকালাম…
ছোঁয়া : আমার পুরো শরীর থর থর করে কাঁপছে আর আমি চোখ বুঁজে শুধু উনার আদরগুলো উপভোগ করছি
সায়ন : ও এখনও চোখ বন্ধ করে রেখেছে,আমি অবাক চোখে ওর সৌন্দর্য উপভোগ করছি।হঠাৎ দেখলাম ওর ঠোঁটজোড়া অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে,আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না,ওকে আরো কাছে টেনে ওর ঠোঁটের দখল নিয়ে নিলাম…
তারপর…?
তারপর আর কিছু শুনতে হবে না।এই যে পাঠকরা,আপনাদের কি লজ্জা-শরম নেই নাকি?ওদেরকে একটু একা থাকতে দিন,ওদের যা ইচ্ছে হয় করুক।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনাদের থাকতে ইচ্ছে হলে থাকেন,আমি বাবা গেলাম,আমার লজ্জা লাগছে।কাল সকালে ওরা ঘুম থেকে উঠলে নাহয় আবার আসবো….
চলবে.