Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 28

রিয়াঃ If I am not wrong,তাহলে আপনার স্ত্রীতো এক বছর আগেই…
সায়নঃ খোঁজ খবরতো ভালোই নিয়েছেন দেখছি
রিয়াঃ তাতো একটু নিতেই হবে।আসলে কি বলুনতো,যাকে বিয়ে করার মতো এতো বড় একটা ডিসিশন নিচ্ছি তার ব্যাপারে একটু আধটু ইনকোয়ারি না করলে কি চলে?
সায়নঃ তা নিলেনই যখন তাহলে আরেকিটু ভালো করে নিলেইতো পারতেন…
রিয়াঃ মানে!
সায়নঃ মানে একটু ভালো করে খোঁজ নিলেই বুঝতে পারতেন আমার স্ত্রীকে আমি ঠিক কতোটা ভালোবাসি আর তাই এসব করে কোন লাভ নেই
রিয়াঃ কিন্তু উনিতো…
সায়নঃ ও একদম ঠিক আছে,সবসময় আমার সাথেই আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে
রিয়াঃ তবে কি আমি ভুল শুনেছি?
সায়নঃ নাহ,ভুল আপনি শোনেননি তবে বুঝতে একটু ভুল করেছেন
রিয়াঃ মানে?
সায়নঃ দেখুন আপনার অত মানের উত্তর আমি দিতে পারব না তবে একটা ফ্রি পরামর্শ দিতে পারি,শুধু শুধু আমার পেছনে টাইম ওয়েস্ট করবেন না।আমার জীবনে একজনই ছিল আর সারাজীবন সেই থাকবে,এ জীবনে তার জায়গাটা আর কাউকে আমি দিতে পারব না
রিয়াঃ আপনি কি যা বলছেন ভেবে বলছেন?
সায়নঃ এখানে আসলে ভাবাভাবির কিছু নেই,আমি আমার ডিসিশন অনেক আগেই নিয়ে ফেলেছি আর সেটা কখনও চেঞ্জ হওয়ার নয়
রিয়াঃ একবার ভেবে দেখুন আমাদের কোম্পানিটা ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে অনেক আগে থেকেই ওয়েল স্ট্যাবলিশড আর আপনাদেরটা সবে সে পথে পা দিয়েছে।আমার প্রস্তাবটা মেনে নিলে কিন্তু আপনারই লাভ…
সায়নঃ সবকিছু কি আর লাভ ক্ষতির পাল্লায় মাপা যায়?আপনি যাই বলুন না কেন,আমি আমার ডিসিশন থেকে এক চুলও নড়ব না।আই থিঙ্ক আপনার কথা শেষ সো…
রিয়াঃ আর আমি যদি ডিলটা ক্যান্সেল করে দেই?

সায়নঃ সে আপনি কখনোই করবেন না
রিয়াঃ আপনি এতো কনফিডেন্সের সাথে এটা কিভাবে বলতে পারেন!আমি চাইলেই কিন্তু ডিলটা…
সায়নঃ (মুচকি হেসে)দেখুন আমরা দুজনেই কিন্তু বিজনেস পার্সোনেল আর একজন বিজনেসম্যানের টপ প্রায়োরিটি থাকে তার বিজনেস।আর আমার মতো আপনিও খুব ভালো করেই জানেন যে এই ডিলটা ক্যান্সেল হলে আমাদের দুই কোম্পানিই যথেষ্ট ক্রাইসিস ফেস করবে আর এতো বড় একটা বোকামি নিশ্চয়ই আপনি…
রিয়াঃ তবুও যদি আমি ক্যান্সেল করে দেই?
সায়নঃ দেখুন আমি আপনাকে পার্সোনালিতো চিনিনা তবে এটা জানি যে আপনি একজন খুব ভালো বিজনেস পার্সোনালিটি।তাই পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফকে আপনি নিশ্চয়ই এক করে ফেলবেন না…
রিয়াঃ যদি করে ফেলি তখন?
সায়নঃ Bye bye Miss Riya,See you soon in the signing ceremony…
রিয়াঃ আরেহ..এই লোকতো সত্যি সত্যিই চলে গেল!একটু বেশিই over confident but I like that.আমিতো এমন একজনকেই খুঁজছিলাম,He is just perfect for me…Interesting…very interesting…

রিয়াঃ কংগ্রাচুলেশনস মি.সায়ন
সায়নঃ বলেছিলাম না,আপনি ঠিক সাইন করবেন?
রিয়াঃ হুম শেষমেশ তাহলে আপনার কথাটাই সত্যি হলো!
সায়নঃ এতো হবারই ছিল,আফটার অল আমিও একজন বিজনেসম্যান
রিয়াঃ আগেই বলেছিলাম We are just made for each other…
সায়নঃ দেখুন আপনি…
রিয়াঃ আমার প্রস্তাবটা কিন্তু এখনও ভ্যালিড
সায়নঃ আর আমার ডিসিশনটাও…
রিয়াঃ এনি ওয়ে,আজ সন্ধ্যায় ফ্রি আছেন?যদি থাকেন তাহলে আজকের ডিনারটা…
সায়নঃ সরি আমার একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে
রিয়াঃ সত্যিই আছে নাকি আমাকে এ্যাভয়েড করার জন্য…
সায়নঃ কাউকে এ্যাভয়েড করার জন্য আমার কোন এক্সকিউজের দরকার হয় না মিস রিয়া,সেটা আমি সরাসরিই করতে পারি
রিয়াঃ রিয়েলি!আচ্ছা ঠিক আছে,আজকে নাহলে অন্যদিন বাট আমার ইনভাইটেশন কিন্তু আপনাকে রাখতেই হবে
সায়নঃ দেখুন মিস রিয়া…
রিয়াঃ ভয় পাচ্ছেন?ভাবছেন আমার কাছাকাছি আসলে ডিসিশনটা চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে?
সায়নঃ আমার ডিসিশন কখনও চেঞ্জ হয় না আর এই ব্যাপারেতো অবশ্যই না
রিয়াঃ Then prove it…
সায়নঃ আপনি কিন্তু…
রিয়াঃ আরে আপনি দেখছি সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছেন!আমিতো জাস্ট মজা করছিলাম…
সায়নঃ ওহ
রিয়াঃ তাহলে?পরশু ডিনারে আসছেনতো?
সায়নঃ আবার!
রিয়াঃ না না,আপনি ভুল বুঝছেন।আসলে এটা আমাদের ডিলটা কনফার্ম হওয়ার সাকসেস পার্টি,আপনারা সবাই ইনভাইটেড
সায়নঃ কিন্তু পরশুতো…
রিয়াঃ আসলে আমাকেতো ফিরতে হবে,হাতে বেশি সময় নেই তাই…আপনি প্লিজ আর না করবেন না…
সায়নঃ ঠিক আছে,আমি আসবো…

রিয়াঃ Okay then see you…
সায়নঃ হুম,তাহলে এখন আসি…
রিয়াঃ আমাকে আপনি চিনেন না মি.সায়ন,আমি যেই জিনিস চাই সেটাকে হাসিল করে তবেই দম নেই।আসুন না একবার পার্টিতে,দেখি আমার হাত থেকে কিভাবে বেঁচে ফেরেন।এই রিয়ার জাদু কারো উপর চলে না,হতেই পারে না…(মনে মনে)
(বাইরেই ওয়েট করছিলো মায়া,সায়নকে আসতে দেখেই ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো)
সায়নঃ আহ মিস মায়া,আমার পরশুর সিডিউলটা একটু চেঞ্জ হবে
মায়াঃ পরশু?এক মিনিট স্যার,কিন্তু পরশুতো আপনার…
সায়নঃ আমি জানি,সন্ধ্যার প্রোগ্রামিটা সকালে কনভার্ট করবেন আর সারাদিনের সব প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করে দিন
মায়াঃ সকাল থেকেতো তেমন কিছুই নেই,শুধু নতুন কন্সট্রাকশন সাইটের সাইট লিডারদের সাথে..আসলে আপনিইতো ওইদিন অন্যকিছু রাখতে…
সায়নঃ ওটা তাহলে কালকে দিয়ে দিন
মায়াঃ ওকে স্যার
সায়নঃ আর হ্যাঁ,পরশু বিকেল থেকে নিজের সিডিউল ফ্রি রাখবেন
মায়াঃ কেন..স্যার?
সায়নঃ মিস রিয়া আমাদের ডিনারে ইনভাইট করেছেন
মায়াঃ ওহ,আচ্ছা স্যার
সায়নঃ এই ডিলটার সাথে যারা যারা জড়িত ছিল সবাইকেই টাইমলি জানিয়ে দেবেন
মায়াঃ ওকে স্যার,এখন কি অফিসে যাবেন নাকি বাসায়?ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলি?
আসিফঃ অফিস!অফিসে আবার কি করতে যাবি?আর বাসায়!সেটা একটু বেশিই তাড়াতাড়ি হয়ে গেল না?
মায়াঃ আরে!আসিফ ভাইয়া আপনি!
আসিফঃ কি করব বলো,এই গাধাটা যে…
সায়নঃ (গলা খাকারি দিয়ে)আসিফ…
আসিফঃ ওহ,সরি..আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম যে মায়া তোর স্টাফ…
সায়নঃ ফাইযলামি বাদ দিয়ে বাইকের চাবিটা দে
মায়াঃ বাইক!কিন্তু কেন?
আসিফঃ আরে ওটার জন্যইতো আমার এখানে আসা,ফোন দিয়ে বললো বাইকটা নিয়ে চলে আসতে,জনাবের নাকি বাইকে চড়ার শখ হয়েছে!
সায়নঃ ফালতু প্যাঁচাল না পেড়ে ঝটপট চাবিটা দে
আসিফঃ জো হুকুম জাহাপনা
সায়নঃ থ্যাঙ্ক ইউ…ওহ মিস মায়া…

মায়াঃ জ্বি স্যার?
সায়নঃ আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি,আপনাকে অফিসে নামিয়ে দেবে…
আসিফঃ ওকে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না,ওকে আমিই পৌঁছে দিব
সায়নঃ রিয়েলি!ঠিক আছে,তাহলে তাই কর
মায়াঃ কিন্তু স্যার,আপনি কোথায় যাচ্ছেন?আই মিন বড় স্যার জানতে চাইলে কি বলবো?
সায়নঃ কিছু বলতে হবে না,শুধু বলবেন আমি হসপিটালে গেছি,বাবা সব বুঝে যাবে
মায়াঃ হসপিটাল!কিন্তু কেন?
(মায়ার আর প্রশ্নটার উত্তর পাওয়া হলো না কারণ ততক্ষণে সায়ন বাইকে স্টার্ট দিয়ে দিয়েছে)
মায়াঃ হসপিটাল!স্যার হঠাৎ হসপিটালে কেন?আচ্ছা উনার আবার শরীর খারাপ করলো নাতো?
আসিফঃ জ্বি না,ওর শরীর ঠিকই আছে
মায়াঃ তাহলে হসপিটাল কেন?আচ্ছা আপনি কি কিছু জানেন?
আসিফঃ আচ্ছা মিস মায়া,সায়নের সাথে তুমি কতদিন ধরে কাজ করছো?
মায়াঃ তা প্রায় বছর হতে চললো
আসিফঃ তোমার কি মনে হয় না যে এতদিনে তোমার বসের সম্পর্কে এইটুকু জানার দরকার ছিল
মায়াঃ কি করে জানবো,স্যারতো কাজের কথা ছাড়া কারো সাথে আর একটা কথাও বলেন না তাই শুধু আমিই না নতুন স্টাফদের মধ্যে কেউই উনার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেনা
আসিফঃ সেটা অবশ্য ঠিকই বলেছো কিন্তু তবুও পিএ হিসেবে এইটুকুতো
মায়াঃ তাহলে আপনিই বলে দিন না প্লিজ…প্লিজ ভাইয়া…
আসিফঃ ইশ রে..তোমাকে না কতবার বলেছি,আমাকে ভাইয়া বলবে না
মায়াঃ তাহলে কি বলবো?স্যার?
আসিফঃ ধ্যাত,তোমার সাথে কথা বলাটাই আমার ঘাট হয়েছে।কিচ্ছু বলতে হবে না,চলুন আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসি
মায়াঃ আরে আপনি রাগ করছেন কেন?ঠিক আছে আর আপনাকে ভাইয়া বলবো না,স্যারও না,এবারতো বলুন…
আসিফঃ ঠিক আছে,চলো যেতে যেতে বলছি।ট্যাক্সি…
মায়াঃ ট্যাক্সি কেন?স্যারতো গাড়িতে করে…
আসিফঃ আরে ওটাতো সায়নের দ্বায়িত্ব ছিল বাট আমি তোমাকে কিভাবে পৌঁছে দিব সেটা আমার ব্যাপার সো..
মায়াঃ ঠিক আছে ঠিক আছে চলুন

(দুদিন পর)
শহরের যান্ত্রিকতা থেকে খানিকটা দূরে বিশাল এরিয়ার উপর গড়ে তোলা তিনতলা একটা বিল্ডিং।সবুজে ঘেরা অনেকটা আবাসিক এরিয়ার মতো করে গড়ে তোলা বাড়িটা দেখে বোঝার বিন্দুমাত্রও উপায় নেই যে এটা আসলে একটা হসপিটাল।শুধু মাঝে মাঝে সাদা অ্যাপ্রোন পরিহিত ডক্টরদের আনাগোনা দেখেই সেটা গেস করা সম্ভব।
মহসিন চৌধুরীর দীর্ঘদিনের বন্ধু ডক্টর এহসান আহমেদের একমাত্র সন্তান ডক্টর ইফতেখার আহমেদ নিজ অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন এই হসপিটালটি।শুধু হসপিটাল বললেও ভুল হবে এটা আসলে একটা রিহেবিলাইটেশন সেন্টারও,ডক্টর ইফতেখারের মতে রোগীর সুস্থতার পেছনে পরিবেশ একটা বড় ফ্যাক্ট,তাইতো শহরের যান্ত্রিকতা থেকে দূরে নিরিবিলি এই জায়গাটা বেছে নিয়েছেন।বাবা-ছেলে এখন এখানেই থাকেন আর রোগীদের সেবা করেন।
বাইকটা পার্ক করে সোজা দোতলায় উঠে গেল সায়ন,তারপর বামে মোড় নিয়ে দক্ষিণ দিকের একেবারে কর্ণারের রুমটায় গিয়ে ঢুকে পড়লো।রুমের মধ্যে থাকা নার্সটা সায়নকে দেখেই মুচকি হেসে বেরিয়ে গেল আর যাওয়ার সময় দরজাটা বন্ধ করে যেতেও একদম ভুললো না।বেডের দিকে এগিয়ে গেলো সায়ন,মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো…
সায়নঃ কেমন আছো ছোঁয়া?
চলবে…
#নোটঃ স্যাড ইণ্ডিং আমার নিজেরও পছন্দ না,তাইতো আমার কোন গল্পেই এখনও স্যাড ইণ্ডিং আনিনি,এটাতেও হয়তো…তবে গল্পের প্র‍য়োজনে যদি কখনও কোন গল্পে ইন্ডিংটা স্যাড দিতেই হয় তাহলেতো আমার আর কিছুই করার থাকবে না।গল্পটাকে ঠিকমতো সাজাতে পারছি কিনা জানিনা,কোন পরামর্শ থাকলে জানাবেন।কিন্তু কারো যদি ভালো না নাগে তাহলে সিম্পলি এ্যাভয়েড করে যাবেন,কমেন্টে বা পার্সোনালি মেসেজ দিয়ে আমার রাইটিং স্কিল নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না প্লিজ।অনেক কষ্ট করে গল্প লিখি,একটা গল্প লিখতে অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়।হয়তো মাঝে মাঝেই চিন্তাগুলো খাপছাড়া হয়ে যায় কিন্তু তাই বলে উল্টো পাল্টা কথা শোনানোর কোন মানে হয়?