Childhood marriage 3 !! Part- 27
এক বছর পর…
ক্রিং…ক্রিং…ক্রিং…ক্রিং…
– হ্যালো
– হ্যালো মিস মায়া,Red allert,স্যার চলে এসেছন…
– What!এখনই!Oh my god,এখনওতো আমার প্রিপারেশনের কিছুই কমপ্লিট হয়নি,কি হবে এখন?আলম ভাই,জাকির,রোজি…
জাকিরঃ জ্বি ম্যাডাম?
মায়াঃ ওদিকের কি খবর?কনফারেন্স রুম,রিসিপশন হল,অডিও ভিজুয়াল, ফ্লাওয়ার অ্যারেঞ্জমেন্ট,গেস্টদের আপ্যায়ন,ওভার অল ডেকোরেশন…
জাকিরঃ কনফারেন্স রুম আর অডিও ভিজুয়ালের দ্বায়িত্ব ছিল আমার,ওদিকে অলমোস্ট ডান।ফ্লাওয়ার আর রিসিপশনতো রোজি আপার…
রোজিঃ ফ্লাওয়ার অর্ডার দিয়ে দিয়েছি,টাইমলি চলে আসবে আর রিসিপশনের ব্যাপারটাও শেষের পথে
আলমঃ ওহ মায়া,ব্লু কালারের বেলুন শর্ট আই থিঙ্ক আরও ৫০-৬০ টার মতো আনাতে হবে তাহলেই হয়ে যাবে।আর স্ন্যাকসের ব্যাপারে একটু চেঞ্জ আনতে হবে,ওরা বলছিলো ফ্রেশ কাঁচাগোল্লা দিতে পারবে না,তার বদলে যদি অন্যকিছু…
মায়াঃ ওহ মাই গড,কোনদিকেইতো দেখছি কিছুই কমপ্লিট হয়নি!এখন কি হবে?আমিতো শেষ…
রোজিঃ কিন্তু ম্যাম,এখনওতো অনেক সময় আছে।আপনি চিন্তা করবেন না,টাইমলি সব হয়ে যাবে
মায়াঃ সময় আর কোথায়?সায়ন স্যার অলরেডি চলে এসেছেন,দারোয়ান ফোন দিয়ে বললো উনি যেকোন সময় ইন্টার করবেন
জাকিরঃ কিন্তু ম্যাম,মিটিংয়েরতো এখনও অলমোস্ট দু’ঘন্টা বাঁকি আছে,তাহলে উনি এতো আর্লি কেন…
মায়াঃ এ আর নতুন কি,স্যারকেতো এতদিন ধরে দেখছি টাইমের ব্যাপারে কতটা সিরিয়াস আর শুধু টাইমই না সবকিছু উনার পারফেক্ট চাই…কাজ ছাড়াতো উনি কিছুই বোঝেন না…
জাকিরঃ যা বলেছেন ম্যাম,উনার মতো কাজ পাগল আর পারফেকশন ফ্রিক মানুষ আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি
রোজিঃ কিন্তু তাই বলে দু’ঘন্টা আগে!এটা একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?
আলমঃ এটাইতো স্বাভাবিক,আফটার অল আর এস ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর মিস রিয়া নিজে আসছেন।এতো বড় একটা ডিল তাই..
মায়াঃ কিন্তু আলম ভাই,এখনওতো কিছুই হয়নি।স্যারতো আমাকে কাঁচাই খেয়ে ফেলবে…
আলমঃ ডোন্ট ওয়ারি মায়া,জাস্ট কুল ডাউন।আচ্ছা আমি বরং কাঁচাগোল্লার বদলে রসমালাই আর কাজু কাটলি অর্ডার করে দিচ্ছি আর বেলুনের ব্যাপারটাও আমিই দেখছি।জাকির আর রোজি তোমরা ঝটপট তোমাদের পার্টটা শেষ করো,দরকার পড়লে আরও দুই এক জনকে কাজে লাগাও কেমন?
জাকির+মায়াঃ ঠিক আছে আলম ভাই
আলমঃ মায়া,You just relax okay?
(মায়া কিছু বলার আগেই সায়নকে দেখা গেলো,মায়া ছুটে চলে গেল ওদিকে)
মায়াঃ গুড মর্নিং স্যার
সায়নঃ ওহ মিস মায়া,দশ মিনিটের মধ্যে পুরো অ্যারেঞ্জমেন্টের প্রগ্রেস রিপোর্ট নিয়ে আমার রুমে আসুন
মায়াঃ ইয়েস স্যার
সায়নঃ আর হ্যাঁ,আজকের বিজিনেস ডিলে বাবাও কিন্তু উপস্থিত থাকবেন
মায়াঃ কিহ বড় স্যার!কিন্তু উনিতো কখনও কোন মিটিংয়ে…
মায়াঃ কিন্তু আজকে থাকবেন,আর আপনার দ্বায়িত্ব হচ্ছে বাবাকে টাইমলি এখানে নিয়ে আসা।দেখবেন কোন ভুল যেন না হয়…
মায়াঃ জ্বি স্যার
কি হচ্ছে বুঝতে পারছেন না তাইতো?ঠিক আছে,আমিই বুঝিয়ে বলছি।ছোঁয়াকে দেয়া কথা রাখতেই সায়ন চৌধুরী ইণ্ডাষ্ট্রিজের দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে আর শুধু তুলে নিয়েছে বললেও ভুল হবে,এই এক বছরে কোম্পানির প্রগ্রেসটাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যা হয়তো মহসিন সাহেব পাঁচ বছরেও কল্পনা করতে পারেননি।শুধু দেশের মধ্যেই না ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটেও তাই চৌধুরী ইণ্ডাষ্ট্রিজ আজ খুব পরিচিত একটা নাম।এর পুরো ক্রেডিটটাও সায়নের,জয়েনিংয়ের পর পরই বেশিরভাগ স্ট্রেটিজি চেঞ্জ আর পুরনো এমপ্লয়িদের পাশাপাশি নতুনদের জায়গা করে দেওয়াতেই এসব সম্ভব হয়েছে।
আর একটু আগে যেই মেয়েটিকে ছুটোছুটি করতে দেখলেন,সে হচ্ছে মায়া,ডিরেক্টর মাহবুব হাসান সায়নের পার্সোনাল সেক্রেটারি।সায়ন কোম্পানির হাল ধরার দু মাসের মাথায় মায়া এখানে নিয়োগ পেয়েছে আর পিএ হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছে গত ছয় মাস ধরে।সায়নের হট টেম্পার,স্ট্রিক্ট রুলস আর মাত্রাতিরিক্ত ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করতে শুরুতে একটু প্রবলেম হলেও ধীরে ধীরে সবই মানিয়ে নিয়েছে মেয়েটা।তবে আজকের ব্যাপারটা একটু ভিন্ন,এতো বড় একটা ডিল এই প্রথম পার্সোনালি হ্যাণ্ডেল করছে তাই একটু নার্ভাস।যাই হোক এবারে গল্পে ফেরা যাক,মায়া একটা ব্লু কালারের ফাইল নিয়ে সায়নের রুমে ঢুকেছে আর সায়ন খুটিয়ে খুটিয়ে সবকিছু দেখছে
সায়নঃ মিস মায়া
মায়াঃ জ্বি স্যার?
সায়নঃ আমার পিএ হিসেবে আপনার কতদিন হলো?
মায়াঃ জ্বি স্যার!ওহ এ..এই ছয়..মাসের..মতো…
সায়নঃ তাতো বেশ অনেকদিন
মায়াঃ জ্বি স্যার
সায়নঃ তো এতদিনেও এই কমন সেন্সটুকু গেইন করতে পারলেন না!
মায়াঃ জ্বি..স্যার!আ..আমি কি কোন ভুল…
সায়নঃ একটু!এতো পুরোটাই ভুল।আমাদের কনফারেন্স রুমটাতে যে বাইরে থেকে কোন আলো যায় না সেটা জানতেন না?তাহলে শুধু শুধু এতো কালারফুল বেলুন কেন ইউজ করছেন,লাইটের আলোতেতো ওগুলোর কালার রিফ্লেক্ট করবে
মায়াঃ সরি স্যার,আমি আসলে…
সায়নঃ Change it with only white ones
মায়াঃ জ্বি স্যার
সায়নঃ আর এই রজনীগন্ধা আর গোলাপের আইডিয়াটা কার?
মায়াঃ কেন..স্যার?(ভয়ে ভয়ে)
সায়নঃ মিস রিয়ার গোলাপ ফুলে অ্যালার্জি,আপনাকেতো উনার ফুল ডিটেইলস দেওয়া হয়েছিল,পড়ে দেখেননি?
মায়াঃ সরি স্যার,পড়েতো ছিলাম কিন্তু কিভাবে যেন…
সায়নঃ পড়লে এসব ভুল হলো কিভাবে?
সায়নঃ সরি বললেই সব শেষ তাইনা?আমি যদি ব্যাপারটা খেয়াল না করতাম তাহলে কি হতো একবার ভেবে দেখেছেন?
মায়াঃ সরি স্যার,ভুল হয়ে গেছে (কাঁপা গলায়)
সায়নঃ জারবেরা আর কসমস দিয়ে রিপ্লেস করতে বলেন আর হ্যাঁ ওই রসমালাইটাও রিপ্লেস করতে হবে তার বদলে সুগার ফ্রি কোন আইটেম
মায়াঃ জ্বি স্যার
সায়নঃ এভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে এক্ষুণি কাজ শুরু করুন,হাতে কিন্তু আর বেশি সময় নেই।আর শুনুন,আপনার এই ভুলগুলোর হিসাব আমি পরে নিব,এসব কিন্তু আমি মোটেও টলারেট করব না…
রোজিঃ কি রে,এভাবে কি দেখছিস?
ইরাঃ হিরো,বলিউড না না হলিউডের হিরো
রোজিঃ মানে!ওই তোর মাথার ঠিক আছে তো?কি যা-তা বলছিস!
ইরাঃ ইয়ে মানে…বলছিলাম কি,আমাদের স্যার,উনাকে ঠিক সিনেমার হিরোর মতো দেখতে না?
রোজিঃ দেখতে হিরোর মতো হলে কি হবে,বেটাতো আসলে একটা আস্ত ভিলেন।আমারতো বেচারি মায়া ম্যাডামের জন্য মায়া হয়,সারাদিন ওই ডেভিলটার পিছু পিছু ঘুরতে হয়!
ইরাঃ ইশ!আমি যদি এমন সুযোগ পেতাম…ইয়ে মানে আপু,তুমি কখনও স্যারকে হাসতে দেখেছো?
রোজিঃ কই নাতো,আর শুধু আমি কেন আই থিঙ্ক এখানকার কেউই উনাকে কখনও হাসতে দেখেনি।উনিতো সবসময়ই একটা রাগী রাগী এটিটিউড নিয়ে থাকেন,দেখলেই ভয়ে বুকের ভেতরটা কেঁপে কেঁপে উঠে
ইরাঃ হুম আমারও,আচ্ছা আপু আমাদের মতো এমন কিউট কিউট সুন্দরী মেয়েগুলোকে দেখেও কি উনার মনে বিন্দুমাত্র…
রোজিঃ আমার কি মনে হয় জানিস,উনি আসলে গে…
আসিফঃ কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে,আমিও কি জানত পারি?
(পেছন থেকে কথাটা কানে আসতেই ভয়ে রোজি আর ইরার গলা শুকিয়ে গেলো,চমকে উঠে পেছনে তাকালো দুজনে।আসিফকে দাঁত বের করে হাসতে দেখে দুজনেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো)
রোজিঃ আরে আসিফ ভাইয়া!থ্যাঙ্ক গড আপনি,আমারতো ভয়ে একটা হার্টবিট মিসই হয়ে গেছে
আসিফঃ কেন?আবারও কি উল্টো পাল্টা কিছু বলছিলে নাকি?
রোজিঃ অনেকটা অমনই বলতে পারেন
আসিফঃ তাই যদি হয় তাহলে এমন কাজ করো কেন?
রোজিঃ সে যাই হোক,আপনি এখন এখানে!
আসিফঃ মিস রোজি,তুমি কি ভুলে গেছো আমিও কিন্তু কোম্পানির একজন শেয়ার হোল্ডার সো…
ইরাঃ তার মানে আপনিও কি আজকের মিটিংয়ে থাকবেন?
আসিফঃ উহু সে ইচ্ছে নেই,আমি আসলে সায়নের সাথে..ইডিয়টটা কি ভেতরেই আছে?
ইরাঃ হ্যাঁ মায়া ম্যাডামকে লেকচার দিচ্ছে,আল্লাহই জানে বেচারীর কি অবস্থা…
রোজিঃ আহ ইরা…
আসিফঃ মায়া!এই স্টুপিডটাতো..ঠিক আছে লেটস সি…আহ ইরা…
ইরাঃ জ্বি ভাইয়া?
আসিফঃ দুকাপ স্পেশাল কফি,জাস্ট পাঁচ মিনিট পর ওকে?
ইরাঃ ঠিক আছে ভাইয়া,পাঠিয়ে দিব…
কোম্পানির কনফারেন্স রুম…
লম্বা টেবিলটার এক পাশে আর এস ইন্টারন্যাশনালসের সাত সদস্যের একটা কমিটি বসে আছে আর অন্যপাশে চৌধুরী গ্রুপের কমিটি।টেবিলের ঠিক মাঝামাঝি বসে আছেন মহসিন চৌধুরী আর তার দুপাশে দুটো চেয়ারের একটাতে সায়ন আর অন্যটাতে মিস রিয়া রিদওয়ান খান,আর এস গ্রুপের বর্তমান ডিরেক্টর।
রিয়াঃ থ্যাঙ্ক ইউ মি. চৌধুরী,We ar quite satisfied with your proposal.আই থিঙ্ক আমাদের দুপক্ষের জন্যেই এটা যথেষ্ট বেনিফিশিয়াল হবে…
সায়নঃ তাহলে ডিলটার সাইনিং…
রিয়াঃ সেটা নাহয় অন্য একদিন…
মহসিনঃ অন্য দিন!কিন্তু কেন?
রিয়াঃ আসলে মি. সায়নের সাথে আমার আরও কিছু কথা ছিলো
সায়নঃ বলুন না,এতো বড় একটা ডিল তাই সবকিছু একেবারে ক্লিয়ার হয়ে যাওয়ায় ভালো
রিয়াঃ পার্সোনালি…
সায়নঃ ওহ আচ্ছা ঠিক আছে,মিস মায়া…
মায়াঃ ইয়েস স্যার,আমি বড়স্যারকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।চলুন স্যার
মহসিনঃ কিন্তু খোকা…
সায়নঃ চিন্তা করো না,আমি সবকিছু ম্যানেজ করে নিব…
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ হ্যাঁ মিস রিয়া,এবার বলুন কি বলবেন
রিয়াঃ এখানে!আমিতো ভাবছিলাম কোন রেস্টুরেন্ট অর কফিশপে…
সায়নঃ কেন?এখানে কি প্রবলেম?আপনি প্রাইভেট স্পেস চাইছিলেন আর তার ব্যবস্থা আমি করে দিয়েছি,এখন এখানে আমি আর আপনি ছাড়া আর কেউ নেই সো…
রিয়াঃ Okay..then just come to the point আমার আবার ওসব ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলা পছন্দ না তাই ডিরেক্ট আসল কথাটাই বলছি।আমার আপনাকে পছন্দ হয়েছে আর আমি চাই আপনি আর আমি…
সায়নঃ হোয়াট!কি যা-তা বলছেন!
রিয়াঃ কেন কি সমস্যা?আপনি সুন্দর সুদর্শন,হ্যাণ্ডসাম,ওয়েল এডুকেটেড আর আমিও যথেষ্ট সুন্দরী,স্মার্ট,অ্যাট্রাকটিভ একটা মেয়ে আর তাছাড়া আমাদের স্ট্যাটাসও সেম যাকে বলে একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ সো…
সায়নঃ দেখুন মিস রিয়া,আপনি ভুল করছেন।আমি অলরেডি একজনকে ভালোবাসি আর তাই আমার পক্ষে অন্য কাউকে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়
রিয়াঃ জানি,আপনি আপনার স্ত্রীর কথা বলছেনতো?কিন্তু সেতো বছর খানেক আগেই…
সায়নঃ স্টপ ইট,এই ব্যাপারে আমি আর কোন কথাই শুনতে চাই না
রিয়াঃ আপনি শুনতে না চাইলেইতো আর সত্যিটা মিথ্যে হয়ে যাবে না আর সত্যি এটাই যে আপনার স্ত্রী…
চলবে….