Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 21

বৃষ্টিঃ একি আপনি!এই ভর সন্ধ্যেবেলা এখানে!
লোপাঃ কে এসেছে রে বৃষ্টি?ওহ আপনি…কি চাই?
সায়নঃ তাস..আই মিন ছোঁয়া,ছোঁয়া কোথায়?
লোপাঃ কেন?কি দরকার ওর সাথে?
সায়নঃ সেটা নাহয় ওকেই বলবো,এখন কি ওকে একবার ডেকে দেবে?
বৃষ্টিঃ কিন্তু ও তো নিজের রুম থেকে…
লোপাঃ আহ বৃষ্টি,তোকে না চুপ থাকতে বলেছিলাম।তাহলে শুধু শুধু বকবক করছিস কেন?
বৃষ্টিঃ কিন্তু আমিতো…
(ওদের কথার মাঝেই সায়ন ভেতরে ঢুকে পড়লো)
লোপাঃ আরে আরে কি আশ্চর্য!আপনি ওদিকে কোথায় যাচ্ছেন?আপনি কিন্তু এভাবে জোর করে কারো বাসায় ঢুকে পড়তে পারেন না…
সায়নঃ ছোঁয়ার রুমের সামনে চলে এসেছি,দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।ছোঁয়া..ছোঁয়া..দরজাটা খোল প্লিজ…
লোপাঃ এই যে মি. এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।দেখছেনতো ও আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে না তারপরও আপনি…আপনার কিছু বলার থাকলে আমাকে বলতে পারেন

সায়নঃ না পারিনা কারণ এটা আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার আর তুমি নিশ্চয়ই আমার স্ত্রী না…
লোপাঃ দে..দেখুন আপনি কিন্তু…
বৃষ্টিঃ আহ লোপা,কি করছিস?আমার সাথে আয় প্লিজ…
লোপাঃ কিন্তু…
বৃষ্টিঃ আরে আয় না…
(লোপার হাত ধরে ওকে সাইডে নিয়ে আসলো বৃষ্টি)
লোপাঃ ছেড়ে দে বৃষ্টি,ওই লোকটাকেতো আমি…
বৃষ্টিঃ আহ লোপা,হচ্ছে টা কি?এসব বাড়াবাড়ির কোন মানে হয়…
লোপাঃ এটাকে তুই বাড়াবাড়ি বলছিস!তুই জানিস এই লোক কি করেছে?একবার না দু দুবার তাসুর সাথে…
বৃষ্টিঃ আমি জানি কিন্তু…
লোপাঃ সবকিছু মেনে নিলেও আমি এটা মানতে পারছি না,উনি বিয়ের রাতে তাসুকে একা ফেলে…
বৃষ্টিঃ কিন্তু সেটাতো উনি তাসনিয়াকে ভালোবাসেন বলেই…
লোপাঃ তাহলে বিয়েতে রাজি কেন হয়েছিলেন?আর বিয়েটা যখন হয়েই গেছে তাহলে বউটাকে একা রেখে কেন চলে গেলেন?আচ্ছা মেয়েটা যদি তাসনিয়া না হয়ে অন্য কেউ হতো…

বৃষ্টিঃ থাক না লোপা,ওদের স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার ওদেরকেই বুঝতে দে না..আমিরা আর শুধু শুধু এসবের মধ্যে না যাই কি বলিস?
লোপাঃ সেই জন্যেইতো এখনও চুপচাপ আছি নাহলে এতোক্ষণে ওই লোকটার মাথায়…
বৃষ্টিঃ লোপা…
লোপাঃ আচ্ছা ঠিক আছে,সবকিছু তাসনিয়ার উপরই ছেড়ে দিচ্ছি।ও যা চাইবে তাই হবে,আমি আর এসবে কোন বাঁধা দিব না
সায়নঃ ছোঁয়া..প্লিজ দরজাটা একবার খোল,জাস্ট একটা সুযোগ দাও আমাকে প্লিজ…

রাকিবঃ কি রে,কি বুঝছিস?
মারুফঃ অবস্থাতো খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না,নাহলে এসে পর্যন্ত এমন মূর্তির মতো একই জায়গায় বসে থাকতো না
রাকিবঃ কিন্তু ও যে হ্যাঁ না কিছুই বলছে না,কি হয়েছে একবার জিজ্ঞেস কর না…
মারুফঃ হ্যাঁ সায়ন…
সায়নঃ একবার চিন্তা কর,এতো বার রিকুয়েষ্ট করলাম,দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে হাত দুটো ব্যথা হয়ে গেল তবুও ম্যাডাম দরজা খুললো না!
মারুফঃ ঠিকইতো করেছে,তোর জন্য কি দরজা খোলা উচিত?শালা বাসররাতে মেয়েটাকে একা একা ফেলে পালানোর সময় মনে ছিল না?
সায়নঃ দোস্ত তুইও!ওদিকে তোর উনি আমার সাথে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে আর এদিকে তুই,You guys are just made for each other
মারুফঃ খালি কি তোর সাথে,তোর জন্য ওতো আমার সাথেও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষণা করেছে
রাকিবঃ তবে যাই বলিস,এ ব্যাপারে আমিও ওদের সাথে একমত।তোকে এতো সহজে ছাড়া মোটেও উচিত না
সায়নঃ শালা তোরা বন্ধু নাকি শত্রু রে!কোথায় একটু আমাকে সান্তনা দিবি তা না…
মারুফঃ তা এখন কি করবি?
সায়নঃ কি আবার,ম্যাডামের রাগ ভাঙাতে হবে।হাজার হোক আমারইতো বউ…
রাকিবঃ আমার কিন্তু মনে হয় না ব্যাপারটা এতোটা ইজি হবে
সায়নঃ আমাকে কি তোর ইজি মনে হয়?ওর নাম,ঠিকানা কিছুই জানতাম না,কোনদিন দেখা পাবার আশাও ছিল না তবুও হাল ছাড়িনি আর এখনতো ও আমারই,এখন এতো সহজে ছেড়ে দিব!ইম্পসিবল,আজ নাহয় কাল ওর মানতো আমি ভাঙাবোই,পারতে যে আমাকে হবেই…
মারুফঃ কিন্তু কিভাবে?কোন উপায় পেয়েছিস?
সায়নঃ হুম একটা উপায়তো বের করেছিই কিন্তু তার জন্য…মারুফ,তোকে একটা কাজ করতে হবে
মারুফঃ কি কাজ?
সায়নঃ মারুফকে সবকিছু বুঝিয়ে দিলাম।কি রে পারবিতো?
মারুফঃ চিন্তা করিস না,সব সময়মতো হয়ে যাবে
সায়নঃ ব্যাস তাহলেই হবে,মাই ডিয়ার ওয়াইফ জাস্ট আর একটু অপেক্ষা করো তারপরইতো…

সকাল ৬টা…
আড়মোড়া ভেঙ্গে পাশ ফিরতেই চমকে উঠলো ছোঁয়া,মনে হচ্ছে ওর পাশেই কেউ শুয়ে আছে।ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে তাকাতেই ভীষণ জোরে একটা চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো
ছোঁয়াঃ আ..আপনি!আপনি এখানে কি করছেন?
সায়নঃ চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসলাম।কি হলো?সাত সকালে এভাবে চিৎকার করছো কেন?
ছোঁয়াঃ হেয়ালি ছেড়ে আসল কথায় আসুন,আপনি এখানে কি করছেন?আপনারতো এখানে থাকার কথা না…
সায়নঃ আগেতো জানতাম তোমার মাথার স্ক্রু একটু ঢিলা কিন্তু এখনতো দেখছি তার সাথে সাথে চোখটার অবস্থাও খারাপ
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে দেখতেইতো পাচ্ছো ঘুমাচ্ছি তারপরও জিজ্ঞেস করছো আমি কি করছি!চোখটাতো মনে হচ্ছে একটু না পুরোপুরিই গেছে…
ছোঁয়াঃ দেখুন আপনি কিন্তু…কেন এসেছেন এখানে?আর কিভাবে?আমিতো রুমটা ভেতর থেকে লক করে রেখেছিলাম তাহলে…
সায়নঃ (মুচকি হেসে)এই যে এটা দিয়ে
ছোঁয়াঃ আরে,এটাতো আমার রুমের এডিশনাল ডোর কি কিন্তু এটা আপনার কাছে কিভাবে…
সায়নঃ I have my way.তুমি কি ভেবেছিলে,দরজা না খুললেই পার পেয়ে যাবে?আমি আর ভেতরে ঢুকতে পারবো না?
ছোঁয়াঃ কে দিয়েছে আপনাকে এই চাবি?লোপা নাকি বৃষ্টি…
সায়নঃ Sorry no comments
ছোঁয়াঃ ঠিক আছে বলতে হবে না বাট প্লিজ আর কোন কথা না বলে এখান থেকে যান
সায়নঃ উহু আমার প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে সো…ধপ করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম
ছোঁয়াঃ আরেহ!কি আশ্চর্য!আপনি…ভালোই ভালোই যাবেন নাকি আমি…
সায়নঃ নাকি তুমি?কি করবে হুম…
ছোঁয়াঃ নাহ আপনি দেখছি এভাবে শুনবেন না,ঠিক আছে আমিও দেখছি আপনি কিভাবে থাকেন।বেরোন..বেরিয়ে যান বলছি…
সায়নঃ মেয়েটা রীতিমতো আমার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে।ওর বোধহয় কোন ধারণাই নেই যে আমার শক্তির সাথে ওর লাগতে আসাটা নিতান্তই বোকামী ছাড়া আর কিছুই না।মুচকি হেসে হ্যাঁচকা একটা টান দিলাম,ব্যাস ম্যাডাম ভূলুণ্ঠিত আই মিন আমার উপরেই…
ছোঁয়াঃ কিছু বুঝে উঠার আগেই উনার বুকের উপর…ছাড়া পাওয়ার জন্য সমানে হাত পা ছুড়ছি,ছাড়ুন…ছাড়ুন বলছি…দেখুন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু…
সায়নঃ মুচকি হেসে আরেকটা টান দিলাম,এবারে ও নিচে আর আমি উপরে।কে বলেছে?যা হচ্ছে সবটাই…কয়েকটা চুল ছোঁয়ার চোখের সামনে এসে উঁকি দিচ্ছে,আলতো হাতে সেগুলো সরিয়ে দিলাম
ছোঁয়াঃ অস্বস্তি লাগছে এভাবে থাকতে,ছাড়া পাওয়ার জন্য আবারও লাফালাফি শুরু করলাম কিন্তু উনিও কিছুতেই ছাড়ছেন না!রীতিমতো ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়ে গেছে কিন্তু তখনই…

সায়নঃ ব্যালেন্স রাখতে পারিনি,হুট করেই ঘটনাটা ঘটে গেল,ছোঁয়ার নরম ঠোঁটের স্পর্শ!এক মুহুর্তের জন্য যেন সবকিছু ভুলে গেলাম
ছোঁয়াঃ প্রচণ্ড আনইজি লাগছে,কি করব বুঝতে পারছি না।জড়োসড়ো হয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম
সায়নঃ নিজেকে সামলে নিলাম,ওকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসলাম
ছোঁয়াঃ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম,উনি ছেড়ে দিতেই লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।কেন এসেছেন এখানে?কি চান আমার কাছে?
সায়নঃ (দুষ্টুমির হাসি হেসে)আমাকে জিজ্ঞেস করেছো করেছো কিন্তু এই কথাটা আর কোন ছেলেকে কখনও জিজ্ঞেস করবে না,বিশেষ করে যখন এই রকম পরিস্থিতিতে তার সাথে একা এক রুমে…
ছোঁয়াঃ দে..দ..দেখুন আ..আপনি কিন্তু..আ..আমি আসলে ওটা…কথা না ঘুরিয়ে সরাসরি বলবেন এখানে কেন এসেছে?আপনার উদ্দেশ্যটা কি?
সায়নঃ কি করব বলো,বউ যেখানে আমারওতো সেখানেই থাকা উচিত তাইনা?
ছোঁয়াঃ কে আপনার বউ?আমি কারো বউ টউ না
সায়নঃ তাই নাকি!ঠিক আছে সেটা নাহয় পরেই দেখা যাবে,এখন যাওতো এক কাপ চা করে নিয়ে আসো
ছোঁয়াঃ চা মাই ফুট,এই উঠুনতো..উঠুন বলছি..এক্ষুণি এখান থেকে চলে যান,আর কক্ষণো আসবেন না
সায়নঃ আসবো না মানে!আমিতো এখন থেকে এখানেই থাকবো…
ছোঁয়াঃ এখানে থাকবেন মানে!কি যা-তা বলছেন?
সায়নঃ যা-তা না যা বলছি ঠিকই বলছি,এই যে দেখো ব্যাগ প্যাক সব সাথে নিয়ে এসেছি
ছোঁয়াঃ উনি যেদিকে ইশারা করলেন সেদিকে তাকালাম।আরে,সত্যিইতো এসবতো উনারই…একেবারে রেডি হয়েই এসেছেন তার মানে।এই যে..এসবের মানে কি?
সায়নঃ কি করব বলো বউ যখন বরের কাছে যাবেই না তখন বরকেইতো বউয়ের কাছে…জাস্ট লাইক ঘরজামাই ইউ নো…
ছোঁয়াঃ আ..আপনি..উফ অসহ্য..লোপা…বৃষ্টি…
সায়নঃ আরেহ কি আশ্চর্য!ওদেরকে আবার শুধু শুধু এসবের মধ্যে টানার কি দরকার?
ছোঁয়াঃ সেসব আমি বুঝবো,লোপা…বৃষ্টি…
(ছোঁয়ার চেঁচামেচির চোটে লোপা আর বৃষ্টি দুজনেরই ঘুম ভেঙ্গে গেছে,চোখ ডলতে ডলতেই ওরা ওদের রুম থেকে বেরিয়ে আসলো)
বৃষ্টিঃ কি রে এই সাত সকালে এভাবে চেঁচাচ্ছিস কেন?ভাবলাম আজকে একটু বেলা করে ঘুমাবো তা না…
লোপাঃ চুপ করে আছিস কেন?কি হয়েছে বল…
ছোঁয়াঃ এই যে এই লোকটা,ইনি এখানে কি করছেন?কিভাবে আসলেন?
বৃষ্টিঃ আরে সায়ন ভাইয়া!আপনি কখন আসলেন?
সায়নঃ এইতো কাল রাতে…

ছোঁয়াঃ আপনি চুপ করুন,সত্যি করে বল তোদের মধ্যে কে উনাকে এ বাড়ির চাবি দিয়েছিস?
লোপাঃ সে আমরা কিভাবে বলবো?সেতো তোরই ভালো জানার কথা,এনি ওয়ে আপনি এখানে কি করছেন?কোন বিশেষ কারণে এসেছেন বুঝি?
সায়নঃ বিশেষ কারণ?তা অবশ্য বলতেই পারো,আসলে এখন থেকে আমি এখানেই থাকবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি
লোপা+বৃষ্টিঃ এ্যাহ!তার মানে?কি রে তাসু এসব কি সত্যি?
চলবে…