Childhood marriage 2 !! Part- 41
#পর্ব-৪১
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
মোটামুটি লম্বা একটা ছুটির পর ক্যাম্পাস খুলেছে কয়েকদিন হলো,বরাবরের মতই স্টুডেন্টদের গতবাঁধা রুটিনমাফিক জীবনও স্বাভাবিকভাবেই চলছে।সবকিছু ঠিক থাকলেও ছোঁয়ার ব্যাপারটা কিন্তু অনেকটাই আলাদাভাবে শুরু হয়েছে,ট্যুর থেকে ফিরে আসার পর থেকেই ও কেমন যেন বদলে গেছে।জঙ্গলে কাটানো ওই কয়েকটা দিনের কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না,সবসময়ই মনে হচ্ছে খুব দামী একটা কিছু যেন ওখানেই ফেলে এসেছে,যখনই সায়ন আর ওর একান্তে কাটানো মুহূর্তগুলোর কথা মনে পড়ছে চোখে মুখে যেন অন্যরকম এক খুশির ঝলক ফুটে উঠছে,যেন অন্য কোন জগতে হারিয়ে যাচ্ছে ছোঁয়া।
আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি,এই পড়ন্ত বিকেলে রুমের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আপন মনেই মুচকি মুচকি হাসছে।তখনই লোপা এসে ওর পাশে দাঁড়ালো
লোপাঃ এতই যখন মিস করছিস তাহলে একটা ফোন দিলেইতো পারিস
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)মানে?
লোপাঃ মানেটা খুব পরিষ্কার ডিয়ার,আপনি প্রেমে পড়েছেন আর সেটা আর সে অন্য কেউ না আপনার একমাত্র বর আর আমাদের সবার প্রিয় সায়ন ভাই
ছোঁয়াঃ কি..ক..কি যা-তা বলছিস বলতো,আ..আমি কেন উনার…
লোপাঃ দেখ ছোঁয়া,তুই স্বীকার কর আর না কর প্রেমেতো তুই পড়ে গেছিস।ব্যপারটা যত তাড়াতাড়ি মেনে নিবি তোর জন্য ততই ভাল হবে
ছোঁয়াঃ তুই ভুল করছিস,বিশ্বাস কর এমন কোন ব্যাপার নেই
লোপাঃ এখন মানছিস না ভাল কথা কিন্তু যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যপারটা মেনে নিস,আবার এতটাও সময় নিস না যেন পরে পস্তাতে হয়
ছোঁয়াঃ আরে লোপা,কোথায় যাচ্ছিস?শোন না..
লোপাঃ ক্লাবে মিটিং আছে ভুলে গেছিস?আমি যাচ্ছি তুইও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে আয় বাই…
সায়নদের ক্লাব হাউজে আজকে জরুরী মিটিং ডাকা হয়েছে,উদ্দেশ্য সামনের ইন্টার ইউনিভার্সিটি ড্রামা কম্পিটিশন।গত দুই বছর ধরে ওরাই চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসছে তাই এবারেও ওদের টার্গেট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে।এবারে ওরা প্লে করবে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের রোমিও-জুলিয়েট,কে কোন রোল প্লে করবে সেটা ঠিক করতেই আজকের এই মিটিং।
মারুফঃ দোস্ত সব রোলইতো মোটামুটি ঠিক,এখন শুধু রোমিও আর জুলিয়েট বাদ থাকলো
সায়নঃ হুম
মারুফঃ রোমিও কি তুই প্লে করবি নাকি অন্য কাউকে ভেবে রেখেছিস?
(মারুফ যখন সায়নের সাথে কথা বলছে তখনই ওখানে রিয়া চলে আসলো)
রিয়াঃ অফকোর্স সায়নই করবে
মারুফঃ আর জুলিয়েট?তুই কি কি কিছু ভেবে রেখেছিস?
রিয়াঃ এটা নিয়ে এত ভাববার কি আছে,সায়ন রোমিও হলে অবভিউয়াসলি জুলিয়েটের রোলটা আমিই প্লে করব তাই না বেবি?
সায়নঃ জুলিয়েটের রোলটা ছোঁয়া করবে
রিয়াঃ হোয়াট!ইউ আর জাস্ট জোকিং রাইট?
সায়নঃ তানি রাইট ডাউন কুইক
তানিঃ ইয়েস বস,ডান
রিয়াঃ বেবি প্লিজ ডোন্ট ডু দিস টু মি
সায়নঃ শাট আপ রিয়া,কতবার বলেছি ডোন্ট কল মি দ্যাট জাস্ট স্টে এওয়ে ফ্রম মি
তানিঃ একটা মেয়ে এতটা নির্লজ্জ কিভাবে হতে পারে!Shameless fellow…
রিয়াঃ শাট আপ…তোমাকেতো আমি পরে দেখে নিব আগে এই ছোঁয়ারতো একটা ব্যবস্থা করি
তানিঃ ব্যবস্থা করবে মানে!কি করবে তুমি ওর সাথে?
রিয়াঃ সেটা সময় হলেই দেখতে পাবে
তানিঃ দেখো নিজের ভালো চাওতো ছোঁয়ার থেকে দূরে থাকো নাহলে কিন্তু পরে তোমাকেই পস্তাতে হবে
রিয়াঃ কে পস্তাবে সেটাতো সময়ই বলে দেবে,তুমি বরং তোমার ব্যপারে মাথা ঘামাও অন্যের ব্যপারে নাক গলানোর কোন দরকার নেই
তানিঃ ওহ গড!এই ডাইনীটা আবার না জানি কি করে বসে,হে আল্লাহ মেয়েটাকে তুমি রক্ষা কর…
(কয়েকদিন পর)
আজ ক্যাম্পাসে একটু দেরিতেই ক্লাস ছিল সায়নের,ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় আসতে আরও দেরি হয়ে গেছে।সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর কাছাকাছি যেতেই ছোঁয়া দৌঁড়ে ওকে ক্রস করে চলে গেল,সায়ন কয়েকবার পেছন থেকে ডাকলেও ওর কোন সাড়া মিলল না
সায়নঃ ঘটনাটা কি হলো?ও এভাবে চলে গেল কেন আর চোখ দুটোও কেমন যেন ভেজা ভেজা মনে হল,হচ্ছে টা কি কিছুইতো বুঝতে পারছি না
(সায়ন যখন এসব ভাবছে তখনই দেখলো লোপা ছুটে আসছে)
লোপাঃ ছোঁয়া…যাস না প্লিজ,আমার কথাটা একবার শোন,টেনশন নিস না সব ঠিক হয়ে যাবে
সায়নঃ এক মিনিট লোপা
লোপাঃ ওহ ভাইয়া আপনি?
সায়নঃ ঘটনা কি,তোমরা হঠাৎ এভাবে ছুটছো কেন?আর ছোঁয়াকে দেখে মনে হল কান্না করছিল আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না
লোপাঃ এখন অতকিছু বলার সময় নেই,কিছু জানার থাকলে প্রত্যেকটা বিল্ডিংয়ের নোটিশবোর্ডে দেখেন আমি বরং ছোঁয়ার পিছনে যাই
(সায়নকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই লোপা চলে গেল)
সায়নঃ নোটিশ বোর্ড!মানে?
মানেটা সায়নের কাছে একটু পরেই পরিষ্কার হয়ে গেল,ছোঁয়াদের ডিপার্টমেন্টের নোটিশ বোর্ডের সামনেই বেশ বড়সড় জটলা।শুধু ওদের ডিপার্টমেন্টই না,আসার সময় যতগুলো নোটিশ বোর্ড চোখে পড়েছে তার সিবগুলোর সামনের দৃশ্যই এই একই রকম আর শুধু তাই না সবাই কেন জানি ওর দিকেও কেমন একটা অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে।ভীড় ঠেলে একটু সামনে যেতেই সায়নের চোখ কপালে উঠে গেল
পুরো নোটিশ বোর্ডের অর্ধেকটা জুড়ে ওর আর ছোঁয়ার কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি যার বেশিরভাগই কয়েকদিন আগে ওরা যেই জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিল সেখান থেকে তোলা।আর বোর্ডের বাঁকি জায়গাটা পূরণ করা হয়েছে ছোঁয়া আর আয়ানের ছবি দিয়ে যেগুলো এর আগেও একবার এভাবে ইউজ করা হয়েছিল।আশেপাশের সবার কথাগুলো এতক্ষণ খেয়াল না করলেও এবারে সবগুলো যেন ওর কানে ব্লাস্ট করতে লাগলো,সবাই নানাভাবে ছোঁয়ার ক্যারেক্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে,ওকে নিয়ে অনেক বাজে বাজে কমেন্ট করছে।
সায়নতো রাগে ফুঁসছে,কিছু বলতে যাবে তখনই মারুফ,রাকিবসহ সায়নের সব বন্ধুরা ছুটে আসলো আর ওদের সাথে এসেছে আয়ান।আয়ানকে দেখেইতো সায়নের মাথাটা আরও গরম হয়ে গেল
সায়নঃ তুই!তুই এখানে কি করছিস?
আয়ানঃ দেখ সায়ন,এখন নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করার টাইম নেই আগে ছোঁয়াকে খুঁজে বের করতে হবে।প্রিন্সিপাল স্যারের রুম থেকে বের হয়ে মেয়েটা যে কোথায় গেল…
সায়নঃ প্রিন্সিপাল স্যার মানে?এরমধ্যে আবার প্রিন্সিপাল আসছে কেন?
মারুফঃ আসছে কারণ ক্যম্পাসের এটমোস্ফিয়ার নষ্ট করার অপরাধে ছোঁয়াকে সাসপেণ্ড করা হয়েছে
সায়নঃ What the…এটা কোন কথা!ফাযলামির একটা লিমিটেশন থাকা উচিত,যার তার কথায় উনি এমনটা করতে পারেন না।এর শাস্তিতো উনাকে পেতেই হবে আর যে এই কাজটা করেছে তাকেতো আমি…
তানিঃ আমি জানি কে করেছে
সায়নঃ কিহ!তুই জানিস তাহলে এতক্ষণ বলিসনি কেন?
তানিঃ কারণ আমি সিওর জানিনা I am just guessing
সায়নঃ সিওর হওয়া লাগবে না,তুই বল সত্যিটা আমিই বের করে নিব
তানিঃ রিয়া
সায়নঃ হোয়াট!
তানিঃ হ্যাঁ সেদিন তুই ছোঁয়াকে জুলিয়েটের রোলটা দেওয়ার পর ও অনেক রেগে ছিল আর ছোঁয়ার একটা ব্যবস্থা করার কথা বলছিল
সায়নঃ রিয়া…এবার আর এই মেয়েকে ছাড়ছি না,একটা উচিত শিক্ষা দিয়ে তবেই ছাড়ব
রাকিবঃ ওসব পরেও করা যাবে আগে ছোঁয়াকে খুঁজে বের কর তারপর অন্য ব্যপারে ভাবা যাবে
(ওরা বিল্ডিং থেকে বের হতে যাবে তখনই রিয়ার সাথে দেখা,সায়নেরতো ওকে দেখেই মাথায় রক্ত চেপে গেছে,মারুফ কোন রকমে ওকে আটকে রেখেছে)
মারুফঃ এখন কিছু করতে যাস না কারণ আমাদের হাতে কোন প্রমাণ নেই(ফিসফিস করে)
সায়নঃ হুম
রিয়াঃ আরে,তোমরা সবাই একসাথে!
সায়নঃ তুমি এখানে!কেন এসেছো?
রিয়াঃ Baby are you okey?
সায়নঃ রিয়া…
রিয়াঃ উফস সরি,আসলে ওই নির্লজ্জ বেহায়া মেয়েটা যা করলো তারপরতো…
সায়নঃ শাট আপ রিয়া
রিয়াঃ কি রকম অসভ্য মেয়ে,একসাথে আর কতগুলো ছেলের সাথে…অবশ্য একদিক দিয়ে ভালোই হল সবার সামনে সত্যিটা চলে আসলো এখন আর চাইলেও ও কারো জীবন নিয়ে খেলতে পারবে না।কি বেহায়া মেয়ে ভাবা যায়!ওর জায়গায় আমি হলেতো এই মুখ আর কাউকে দেখাতেই পারতাম না…
(সায়ন আর কিছু না বলে রিয়ার হাত ধরে ওকে টানতে টানতে সাইডে নিয়ে আসলো)
রিয়াঃ কি ব্যপার বলতো,সাইডে নিয়ে আসলে যে?
সায়নঃ কি বলছিলে তুমি,ছোঁয়ার এখন কি করা উচিত?
রিয়াঃ ঠিকইতো বলেছি,পুরো ক্যম্পাসে সবার সামনে এভাবে চরিত্রহীনা প্রমাণ হওয়ার পরো ও কিভাবে সবার সামনে এসে দাঁড়াবে?ওরতো হয় গভীর রাতে এই ক্যম্পাস ত্যাগ করা উচিত নয়তো সুইসাইড করা উচিত
সায়নঃ (চিৎকার করে)শাট আপ…
(সায়ন রাগের চোটে সামনের ওয়ালে একটা ঘুষি দিল,রিয়া অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে)
সায়নঃ জাস্ট মেয়ে বলে ছেড়ে দিলাম নাহলে…ছোঁয়ার ব্যপারে আর একটা বাজে কথাও বলেছো তাহলে কিন্তু আমাকে ব্লেম করতে পারবে না সো বি কেয়ারফুল
রিয়াঃ তুত..তুমি!!!
সায়নঃ আর হ্যাঁ যদি জানতে পারি যে এসবের পেছনে তোমার হাত আছে তাহলে আই স্যয়ার,আমি কিন্তু তোমাকে ছাড়ব না…
(সায়ন চলে গেল,রিয়া সায়নের বিহেভে এতটাই অবাক হয়ে গেছে যে ঠিক কি রিয়্যাক্ট করা উচিত সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না তাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে)
(কিছুক্ষণ পর)
লাইব্রেরীর পেছনের পুকুরপাড়ে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে ছোঁয়া,নিঃশব্দে চোখের জল ফেলে যাচ্ছে আর সেগুলো ফোঁটায় ফোঁটায় পুকুরের পানির সাথে গিয়ে মিশছে।তখনই…
সায়নঃ জানতাম তুমি এখানেই থাকবে
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)আ..আপনি!
সায়নঃ কেন অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করছিলে নাকি?
ছোঁয়াঃ না তো,আমি আবার কাকে এক্সপেক্ট করব?আমার মত খারাপ,চরিত্রহীন একটা মেয়েকে…
সায়নঃ শাট আপ ছোঁয়া,আর একবার যদি এসব বলেছো তাহলে কিন্তু…
ছোঁয়াঃ কিন্তু কি?কি করবেন আমার সাথে?কেন শুধু শুধু আমাকে নিয়ে ভাবছেন বলুনতো,সবার মত আপনিও বলুন না আমার মত নির্লজ্জ,বেহায়া,নষ্টা মেয়ের এখানে থাকার কোন অধিকার নেই।আমার উচিত এক্ষুণি সব ছেড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাওয়া
সায়নঃ হুম বুঝলাম,দেখি উঠোতো
ছোঁয়াঃ উঠব মানে!
সায়নঃ মানে আর একটা কথাও না বলে চলো আমার সাথে
ছোঁয়াঃ যাব মানে,কোথায় যাব?
সায়নঃ শসসস…বলেছি না,কোন প্রশ্ন না চুপচাপ চলো
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ নিজে থেকে যাবে নাকি কোলে তুলে নিয়ে যাব?
ছোঁয়াঃ না না তার আর দরকার হবে না,আমি একাই যেতে পারব
সায়নঃ দ্যাটস লাইক মাই গার্ল
কিছুক্ষণ আগেই ভার্সিটির প্রতিটা বিল্ডিংয়ে এনাউন্সমেন্ট করা হয়েছে সবাইকে অডিটোরিয়ামে জড়ো হতে বলা হচ্ছে,সবাই এখন অডিটোরিয়ামে দাঁড়িয়ে আছে,কি হচ্ছে কেন সবাইকে ডাকা হয়েছে বোঝার চেষ্টা করছে।এমন সময় সায়ন ছোঁয়ার হাত ধরে মঞ্চে উঠে গেল,সবার মধ্যে হালকা একটা গুঞ্জন শোনা গেল।সবাই ছোঁয়াকে ওখান থেকে চলে যেতে বলছে,ওর সম্পর্কে অনেকে অনেক আজেবাজে কথা বলতে লাগলো।সায়ন সবাইকে থামাতে এবার বেশ জোরেই চিৎকার দিয়ে উঠলো…
সায়নঃ সাইলেন্স…
(সায়নের কণ্ঠ শুনে সবাই একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গেল)
সায়নঃ সরি ছোঁয়া,এটা ছাড়া আপাতত আমার হাতে আর কোন উপায় নেই সো…
ছোঁয়াঃ মানে!
সায়নঃ Ladies and gentleman,let me introduce to you all to my beautiful wife Mrs Tasnia Mahbub Chowa…
(পুরো অডিটোরিয়ামে মনে হলো একটা খুব শক্তিশালী কোন বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে,এমনভাবে সবাই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো।ছোঁয়া অবাক হয়ে সায়নের দিকে তাকিয়ে আছে,কি বলবে বুঝতে পারছে না।সায়ন একবার ছোঁয়ার দিকে তাকিয়েই আবার বলতে শুরু করলো)
সায়নঃ কারো যদি সন্দেহ থাকে তাহলে লেট মি ক্লিয়ার আউট,মারুফ…
(সায়নের ইশারা পেয়ে মারুফ আর বাঁকিরা সবাইকে একটা করে কাগজ ধরিয়ে দিতে লাগলো,এটা আসলে সিম্পল কোন কাগজ ন্য এটা সায়ন আর ছোঁয়ার বিয়ের কাবিননামা।সায়নের নির্দেশে টগর স্ক্যান করে পাঠিয়েছে আর মারুফরা প্রিন্ট করে নিয়ে এসেছে)
সায়নঃ অন্য সব হাজবেণ্ডের মতই আমার স্ত্রীকে কেউ অপমান করুক সেটা আমি কিছুতেই সহ্য করব না,সো নেক্সট টাইম ওর ব্যপারে আজেবাজে কিছু বলার আগে You better be talking to me…
(সবার মধ্যে আবারও একটা কোলাহল শোনা গেল)
সায়নঃ আর হ্যাঁ আয়ানের সাথে ওর ব্যপারটা অনেক আগেই ক্লিয়ার হয়ে গেছে সো শুধু শুধু ওকে এসবের মধ্যে না আনাই ভালো
(কথাগুলো বলেই সায়ন ছোঁয়াকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো আর সোজা ক্লাব হাউজে নিয়ে থামলো।সবাইকে বলা আছে এখন আর কেউ এদিকে পা বাড়াবে না,সায়ন ওর অফিস রুমে ঢুকেই দরজা আটকে দিল)
ছোঁয়াঃ একি,আপনি কি করছেন?
সায়নঃ কই আমি আবার কি করলাম?
ছোঁয়াঃ দরজা লাগাচ্ছেন কেন?
সায়নঃ বউয়ের সাথে রোমান্স করব তাই
ছোঁয়াঃ মা..ম..মানে?
সায়নঃ মানে…আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি,ওর ঠোঁট জোড়া অসম্ভব রকম কাঁপছে যা আমাকে আরও বেশি ওর দিকে আকর্ষণ করছে
ছোঁয়াঃ উনি হঠাৎ করেই আমার কাছে আসতে লাগলেন,আমি কি করব বুঝতে পারছি না,পেছাচ্ছিলাম কিন্তু দেয়ালের কারণে আর পেছাতে পারছি না।উনি এতটাই কাছে চলে এসেছেন যে উনার গরম নিঃশ্বাসের শব্দও শুনতে পাচ্ছি,আর কিছু না ভেবেই চোখদুটো বন্ধ করে ফেললাম
সায়নঃ পাগলিটা ভয় পেয়েছে,এভাবে ওকে যেন আরও বেশি আকর্ষণীয় লাগছে।অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম,ঠোঁট ছেড়ে সোজা ওর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গেলাম তারপর ফিসফিস করে বললাম,লাভ ইউ সো মাচ বউ…
ছোঁয়াঃ হঠাৎ কথাটা শুনেই চমকে উঠলাম,ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম উনি খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন,চোখে মুখে দুষ্টুমির হাসি ফুটে উঠছে
সায়নঃ এত অবাক হওয়ার কিছু নেই,বলেছি না তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করব না।আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তোমার উত্তরের জন্য আমি সারাজীবন ওয়েট করতে পারি
ছোঁয়াঃ না মানে আমি আসলে…
সায়নঃ ইট’স ওকে,You can take your time ভালো করে ভেবে চিন্তে তারপর উত্তর দিও কেমন?
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ কাল রাতে একবার আসবে এখানে?
ছোঁয়াঃ আ..আমি কিন্তু কিভাবে…
সায়নঃ তোমার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করব,একটু ভাল করে ভেবে দেখো কেমন?
ছোঁয়াঃ আচ্ছা আমি তাহলে আসছি
(ছোঁয়া চলে যাচ্ছিল সায়ন ওর হাত চেপে ধরলো তারপর এক ঝটকায় ওকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে আসলো,ওর কপালে আলতো করে একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিল তারপর ওকে ছেড়ে দিয়েই হনহন করে রুমের বাইরে চলে গেল)
ছোঁয়াঃ(অবাক হয়ে)এ..এটা কি হল!আমিতো কিছুই বুঝলাম না…কিন্তু কাল রাতে উনাকে কি জবাব দিব?
(সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ছোঁয়াও চলে গেল,এদিকে রিয়া রুমের বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল।এতক্ষণ রুমে কি হচ্ছিল দরজায় কান পেতে তার সবই শুনেছে ও।ছোঁয়া চলে যেতেই আড়াল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসলো)
রিয়াঃ কাল রাতে তোমরা কি করবে জানিনা কিন্তু আমাকে ঠিক কি করতে হবে তা কিন্তু আমার বেশ ভালোভাবেই জানা আছে…তোমাদের প্ল্যান কিভাবে ভেস্তে দিতে হয় সেটাও আমি বেশ ভালো করেই জানি,You guys just wait and watch…
চলবে…